সরকারি অর্থের অপচয় : সিইসির বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি ১০ আইনজীবীর

প্রশিক্ষণ ভাতার নামে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নিয়ে ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা খরচের মাধ্যমে সরকারি অর্থের ক্ষতিসাধনের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্তের দাবি করেছে একদল আইনজীবী। গতকাল ১০ জন আইনজীবীর একটি দল এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

দুদকের একটি সূত্র জানায়, গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। তারা হলেনÑ মোহাম্মদ শিশির মনির, মো. আসাদ উদ্দিন, মো. মুজাহিদুল ইসলাম, মো. জুবায়েদুর রহমান, মো. আবদুস সবুর দেওয়ান, আর রেজা মো. আমির, আবদুল্লাহ হিল মারুফ ফাহিম, জিএম মুজাহিদুর রহমান, মুস্তাফিজুর রহমান ও মো. জহিরুল ইসলাম। এ বিষয়ে দুদক পরিচালক (মিডিয়া) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, দুদকের নিয়ম অনুযায়ী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ করা হলে সেটি প্রথমে যাচাই-বাচাই সেলে যায়। যার বরাবার অভিযোগ করা হয় সেখানে পাঠানো হয়। দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ হলে সেটি কমিশনের সিদ্ধান্তে অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়। আইনজীবীরা কোন অভিযোগ করে থাকলে সেটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় কমিশন ব্যবস্থা নিবে।

দুদকে অভিযোগ দায়ের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দুদকের কাছে আবেদন করেছি। এতে অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান ও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ দায়েরের আবেদনের সঙ্গে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, সংযুক্ত পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত পদ ছাড়াই ‘বিশেষ বক্তা’, ‘কোর্স পরিচালক’ ও ‘কোর্স উপদেষ্টা’ হিসেবে ভাতা নেয়া, নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ও খাত পরিবর্তন করে ভাতা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই অভিযোগের সঙ্গে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশনার, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সচিব, সদ্য সাবেক সচিব এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকে জড়িত ছিল বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

অভিযোগে বলা হয়, এসব ব্যক্তি সরকারের মোট ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা খরচের মাধ্যমে সরকারি অর্থের ক্ষতিসাধন করেছেন। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এ রকম কর্মকা- দ-বিধির ৪০৯/৪২০/৫১১/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি দমন আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটন করেছে। বিষয়টি উল্লেখ করে আবেদনে অভিযোগ আমলে নিয়ে সিইসিসহ ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ১৭(ক), ১৭(খ), এবং ১৭(গ) ধারা অনুযায়ী অনুসন্ধান, তদন্ত পরিচালনা এবং মামলা দায়েরের অনুরোধ জানানো হয়েছে । অভিযোগে তারা জানান, প্রশিক্ষণের নামে ও ভুয়া বিল ভাউচার করে ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা লোপাট করেছে ইসি। নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা না মেনে ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নিয়ে প্রশিক্ষণে কোর্স ভাতা দেয়া হয়েছে ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। যেখানে উপদেষ্টা পদে ১৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, বিশেষ বক্তা খাতে ১২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও কোর্স পরিচালক খাতে ১৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮০০ করা হয়। নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাতা দেয়া হয়েছে ১ কোটি ৩২ লাখ ১২ হাজার ২৮০ টাকা এবং নিয়মের বাইরে অর্থনৈতিক কোড পরিবর্তন করে ভাতা দেয়া হয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজার ৪৭৫ টাকা। এছাড়া, প্রশিক্ষণে অধিকসংখ্যক খাবার কিনে ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকা এবং ভুল বিল ভাউচারে ১০ লাখ তিন হাজার ২৫০ টাকা ব্যয় নিয়েও আপত্তি জানিয়েছিল অডিট অধিদফতর। গাড়ি মেরামতে ৬ লাখ ৬৬৬ টাকার ব্যয়ের অডিটও নিষ্পত্তি হয়নি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও খবর
বিদ্রোহী প্রার্থীদের সতর্ক করল আ’লীগ
’৭১-এ গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার তাগিদ বাংলাদেশের
২০০ পরিবারের জীবিকার মাধ্যম গোলের রস
দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহনের বাড়ি দখলের চেষ্টায় নেপথ্যে কে?
এসএমপির সব থানার ওসিকে একযোগে বদলির নতুন রেকর্ড
বোরো মৌসুমের সেচ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে
অপরিকল্পিত ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করতে সহযোগিতা চান মন্ত্রী
রাজাকারদের উত্তরাধিকারের আ’লীগের মনোনয়ন না দেয়ার দাবি মুক্তিযোদ্ধাদের
উপাচার্যের দীর্ঘ অনুপস্থিতি ও দুর্নীতির প্রতিবাদে উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ
একটি স্কুলে আয়া নিয়োগে ১০ লাখ টাকা!
চলন্ত ট্রেন থেকে ছুড়ে নবজাতক হত্যা
করোনা আক্রান্ত রোগীদের বন্ধু ওসি মহসিন

শুক্রবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২১ , ২৪ পৌষ ১৪২৭, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

প্রশিক্ষণ ভাতার নামে

সরকারি অর্থের অপচয় : সিইসির বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি ১০ আইনজীবীর

প্রশিক্ষণ ভাতার নামে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নিয়ে ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা খরচের মাধ্যমে সরকারি অর্থের ক্ষতিসাধনের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্তের দাবি করেছে একদল আইনজীবী। গতকাল ১০ জন আইনজীবীর একটি দল এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

দুদকের একটি সূত্র জানায়, গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর অভিযোগটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। তারা হলেনÑ মোহাম্মদ শিশির মনির, মো. আসাদ উদ্দিন, মো. মুজাহিদুল ইসলাম, মো. জুবায়েদুর রহমান, মো. আবদুস সবুর দেওয়ান, আর রেজা মো. আমির, আবদুল্লাহ হিল মারুফ ফাহিম, জিএম মুজাহিদুর রহমান, মুস্তাফিজুর রহমান ও মো. জহিরুল ইসলাম। এ বিষয়ে দুদক পরিচালক (মিডিয়া) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানান, দুদকের নিয়ম অনুযায়ী কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির বিষয়ে অভিযোগ করা হলে সেটি প্রথমে যাচাই-বাচাই সেলে যায়। যার বরাবার অভিযোগ করা হয় সেখানে পাঠানো হয়। দুদকের তফসিলভুক্ত অপরাধ হলে সেটি কমিশনের সিদ্ধান্তে অনুসন্ধান ও তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়। আইনজীবীরা কোন অভিযোগ করে থাকলে সেটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় কমিশন ব্যবস্থা নিবে।

দুদকে অভিযোগ দায়ের বিষয়টি জানিয়ে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচন কমিশনের দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দুদকের কাছে আবেদন করেছি। এতে অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান ও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ দায়েরের আবেদনের সঙ্গে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়। অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়, সংযুক্ত পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত পদ ছাড়াই ‘বিশেষ বক্তা’, ‘কোর্স পরিচালক’ ও ‘কোর্স উপদেষ্টা’ হিসেবে ভাতা নেয়া, নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ও খাত পরিবর্তন করে ভাতা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ওই অভিযোগের সঙ্গে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি), নির্বাচন কমিশনার, বর্তমান নির্বাচন কমিশন সচিব, সদ্য সাবেক সচিব এবং বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে অনেকে জড়িত ছিল বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

অভিযোগে বলা হয়, এসব ব্যক্তি সরকারের মোট ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা খরচের মাধ্যমে সরকারি অর্থের ক্ষতিসাধন করেছেন। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা এ রকম কর্মকা- দ-বিধির ৪০৯/৪২০/৫১১/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি দমন আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ সংঘটন করেছে। বিষয়টি উল্লেখ করে আবেদনে অভিযোগ আমলে নিয়ে সিইসিসহ ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ১৭(ক), ১৭(খ), এবং ১৭(গ) ধারা অনুযায়ী অনুসন্ধান, তদন্ত পরিচালনা এবং মামলা দায়েরের অনুরোধ জানানো হয়েছে । অভিযোগে তারা জানান, প্রশিক্ষণের নামে ও ভুয়া বিল ভাউচার করে ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা লোপাট করেছে ইসি। নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা না মেনে ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন না নিয়ে প্রশিক্ষণে কোর্স ভাতা দেয়া হয়েছে ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। যেখানে উপদেষ্টা পদে ১৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা, বিশেষ বক্তা খাতে ১২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ও কোর্স পরিচালক খাতে ১৪ লাখ ৯৩ হাজার ৮০০ করা হয়। নির্ধারিত হারের চেয়ে বেশি ভাতা দেয়া হয়েছে ১ কোটি ৩২ লাখ ১২ হাজার ২৮০ টাকা এবং নিয়মের বাইরে অর্থনৈতিক কোড পরিবর্তন করে ভাতা দেয়া হয়েছে ২ কোটি ৭৯ লাখ ৭০ হাজার ৪৭৫ টাকা। এছাড়া, প্রশিক্ষণে অধিকসংখ্যক খাবার কিনে ৩৭ লাখ ৫৩ হাজার টাকা এবং ভুল বিল ভাউচারে ১০ লাখ তিন হাজার ২৫০ টাকা ব্যয় নিয়েও আপত্তি জানিয়েছিল অডিট অধিদফতর। গাড়ি মেরামতে ৬ লাখ ৬৬৬ টাকার ব্যয়ের অডিটও নিষ্পত্তি হয়নি বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।