উপাচার্যের দীর্ঘ অনুপস্থিতি ও দুর্নীতির প্রতিবাদে উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ

শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অবস্থান-বিক্ষোভ

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দীর্ঘ অনুপস্থিতি ও দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকার দাবিতে উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারীরা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শরীফা সলোয়া ডীনা, অর্থ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক হাফিজুর রহমান সেলিম প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যের চেম্বারের পাশে সভাকক্ষে অবস্থান করার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষক সভাকক্ষে গিয়ে উপ-উপাচার্য ও অর্থ-পরিচালককে অবরুদ্ধ করে সেখানে অবস্থান নেয়। আর বাইরে অবস্থান নেয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

শিক্ষকদের অভিযোগ, উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ তার কর্মকালের ১৩শ’ দিনের মধ্যে ১১শ’ দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি। বাকি সময় ক্যাম্পাসে আসলেও সকালে এসে বিকেলে চলে গেছেন। তারা আরও অভিযোগ করেন, তার দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়াবহ প্রশাসনিক একাডেমিক দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। উনি ১৩শ’ দিনের মধ্যে ১১শ’ দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। মাঝে মাঝে আসেন। সকালে আসেন বিকেলে চলে যান। আমরা দুপুর ১২টা থেকে উপ-উপাচার্যের কাছে এসে অবস্থান করেছি। উপাচার্য না আসা পর্যন্ত আমাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনিয়ম দুর্নীতি বিশঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন সেগুলোকে মেরামতের জন্য উপাচার্যকে এখানে আসতে হবে। ওনাকে এসবের সুরাহা করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সহ-সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক তরিকুল ইসলাম বলেন, উনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে আসেন না তাকে না পেয়ে স্মারকলিপি চেম্বারে সাঁটিয়ে দিয়েছি। তার উপস্থিতির হাজিরা খাতা সাঁটিয়ে দিয়েছি। অনেকবার তাকে আমাদের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানিয়েছি। এখন উনি যা করছেন একের পর এক অন্যায় করে যাচ্ছেন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তিনি শিক্ষক নিয়োগ করছেন। প্রতিটি বিভাগকে তিনি ধ্বংস করে দিয়েছেন। উনি পরীক্ষা নিচ্ছেন অবৈধভাবে, রেজাল্ট দিচ্ছেন অবৈধভাবে। প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই বিভিন্ন কর্মকা- করছেন। আমরা অনেকবার তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি, আমাদের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেছি। উনি এসবের কোন তোয়াক্কা করছেন না। এর আগেও উপ-উপাচার্য আমাদের নানাবিধ আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু কোন কাজ হয়নি। আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি যতক্ষণ পর্যন্ত উপাচার্য এখানে না আসেন আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখব বলে জানান।

অন্যদিকে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মতিয়ার রহমান অভিযোগ করেন, উপাচার্য আইন মানেন না নিয়ম মানেন না একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছেন। নিয়োগ বাণিজ্যের নামে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করছেন কোন নিয়ম ছাড়াই। ওনার সময় যতো যতো অনিয়ম আর আইন অমান্যের ঘটনা ঘটেছে তা এর আগে কখনও ঘটেনি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করে আসছি, তার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছি, কিন্তু উনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না তাকে পাইনা। সে কারণে উপ-উপাচার্যকে আমরা অবরুদ্ধ করে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের দাবি উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে আসতে হবে তিনি যেসব অন্যায় অপকর্ম করছেন তার বিহিত না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শরীফা সলোয়া ডীনার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, বলেছেন তারা আমাকে বের হতে দিচ্ছে না, আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, তাদের দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি তাকে ফোনে পাচ্ছি না।

এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।

আরও খবর
বিদ্রোহী প্রার্থীদের সতর্ক করল আ’লীগ
’৭১-এ গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাওয়ার তাগিদ বাংলাদেশের
২০০ পরিবারের জীবিকার মাধ্যম গোলের রস
সরকারি অর্থের অপচয় : সিইসির বিরুদ্ধে তদন্ত দাবি ১০ আইনজীবীর
দেশপ্রিয় যতীন্দ্র মোহনের বাড়ি দখলের চেষ্টায় নেপথ্যে কে?
এসএমপির সব থানার ওসিকে একযোগে বদলির নতুন রেকর্ড
বোরো মৌসুমের সেচ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে
অপরিকল্পিত ঢাকা শহরকে বাসযোগ্য করতে সহযোগিতা চান মন্ত্রী
রাজাকারদের উত্তরাধিকারের আ’লীগের মনোনয়ন না দেয়ার দাবি মুক্তিযোদ্ধাদের
একটি স্কুলে আয়া নিয়োগে ১০ লাখ টাকা!
চলন্ত ট্রেন থেকে ছুড়ে নবজাতক হত্যা
করোনা আক্রান্ত রোগীদের বন্ধু ওসি মহসিন

শুক্রবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২১ , ২৪ পৌষ ১৪২৭, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

উপাচার্যের দীর্ঘ অনুপস্থিতি ও দুর্নীতির প্রতিবাদে উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ

শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অবস্থান-বিক্ষোভ

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, রংপুর

রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের দীর্ঘ অনুপস্থিতি ও দুর্নীতির প্রতিবাদে এবং সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে উপস্থিত থাকার দাবিতে উপ-উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষক, কর্মকর্তা- কর্মচারীরা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শরীফা সলোয়া ডীনা, অর্থ বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক হাফিজুর রহমান সেলিম প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যের চেম্বারের পাশে সভাকক্ষে অবস্থান করার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষক সভাকক্ষে গিয়ে উপ-উপাচার্য ও অর্থ-পরিচালককে অবরুদ্ধ করে সেখানে অবস্থান নেয়। আর বাইরে অবস্থান নেয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

শিক্ষকদের অভিযোগ, উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহ তার কর্মকালের ১৩শ’ দিনের মধ্যে ১১শ’ দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি। বাকি সময় ক্যাম্পাসে আসলেও সকালে এসে বিকেলে চলে গেছেন। তারা আরও অভিযোগ করেন, তার দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়টি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহমুদুল হক অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভয়াবহ প্রশাসনিক একাডেমিক দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। উনি ১৩শ’ দিনের মধ্যে ১১শ’ দিনই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না। মাঝে মাঝে আসেন। সকালে আসেন বিকেলে চলে যান। আমরা দুপুর ১২টা থেকে উপ-উপাচার্যের কাছে এসে অবস্থান করেছি। উপাচার্য না আসা পর্যন্ত আমাদের অবস্থান অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যে অনিয়ম দুর্নীতি বিশঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন সেগুলোকে মেরামতের জন্য উপাচার্যকে এখানে আসতে হবে। ওনাকে এসবের সুরাহা করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের সহ-সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক তরিকুল ইসলাম বলেন, উনি দীর্ঘদিন ধরে ক্যাম্পাসে আসেন না তাকে না পেয়ে স্মারকলিপি চেম্বারে সাঁটিয়ে দিয়েছি। তার উপস্থিতির হাজিরা খাতা সাঁটিয়ে দিয়েছি। অনেকবার তাকে আমাদের সঙ্গে কথা বলার অনুরোধ জানিয়েছি। এখন উনি যা করছেন একের পর এক অন্যায় করে যাচ্ছেন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই তিনি শিক্ষক নিয়োগ করছেন। প্রতিটি বিভাগকে তিনি ধ্বংস করে দিয়েছেন। উনি পরীক্ষা নিচ্ছেন অবৈধভাবে, রেজাল্ট দিচ্ছেন অবৈধভাবে। প্ল্যানিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই বিভিন্ন কর্মকা- করছেন। আমরা অনেকবার তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি, আমাদের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেছি। উনি এসবের কোন তোয়াক্কা করছেন না। এর আগেও উপ-উপাচার্য আমাদের নানাবিধ আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু কোন কাজ হয়নি। আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি যতক্ষণ পর্যন্ত উপাচার্য এখানে না আসেন আমরা আমাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখব বলে জানান।

অন্যদিকে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক মতিয়ার রহমান অভিযোগ করেন, উপাচার্য আইন মানেন না নিয়ম মানেন না একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছেন। নিয়োগ বাণিজ্যের নামে শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করছেন কোন নিয়ম ছাড়াই। ওনার সময় যতো যতো অনিয়ম আর আইন অমান্যের ঘটনা ঘটেছে তা এর আগে কখনও ঘটেনি। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করে আসছি, তার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছি, কিন্তু উনি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন না তাকে পাইনা। সে কারণে উপ-উপাচার্যকে আমরা অবরুদ্ধ করে অবস্থান নিয়েছি। আমাদের দাবি উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে আসতে হবে তিনি যেসব অন্যায় অপকর্ম করছেন তার বিহিত না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

সার্বিক বিষয়ে জানতে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক শরীফা সলোয়া ডীনার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, বলেছেন তারা আমাকে বের হতে দিচ্ছে না, আমাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে, তাদের দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি তাকে ফোনে পাচ্ছি না।

এ ব্যাপারে উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিম উল্লাহর সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।