সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করুন

সারা দেশে গত বছর সড়ক, রেল ও নৌপথে ৪ হাজার ৯২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪ হাজার ৯৬৯ জন, আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৮৫ জন। সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩ হাজার ২৩২টি। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজার ৮০০ জন। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠন নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) ২০২০ সালের পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সড়কে এ বছর যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটা এক বছরের হিসাবে কম নয়। গত বছরের একটি সময় করোনার কারণে জরুরি যানবাহন ছাড়া অন্যান্য বাহন বন্ধ ছিল। এরপরও দুর্ঘটনা থামানো যায়নি।

জাতিসংঘ ২০১১ থেকে ২০২০ সালকে ‘সড়ক নিরাপত্তা দশক’ হিসেবে ঘোষণা করে। বাংলাদেশ এ সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছিল। এক্ষেত্রে আন্তরিক প্রচেষ্টা ছিল কিনা সে প্রশ্ন রয়েছে। সড়ক নিরাপত্তা দশক পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেনি।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সড়ক-দুর্ঘটনা ঘটে রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশে মহাসড়কগুলোতে। ঢাকা যানজটের শহর। এ শহরে পিক আওয়ারে গণপরিবহনের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার। সাধারণত গতি কম থাকলে দুর্ঘটনা কম হয়। অথচ কম গতির ঢাকায় এর উল্টো চিত্র দৃশ্যমান হচ্ছে।

আইনের কার্যকর প্রয়োগ সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশে চালক ও পথচারী উভয়ের জন্য কঠোর বিধান যুক্ত করে ২০১৯ সালে কার্যকর করা হয়েছে সড়ক পরিবহন আইন। দুঃখজনক হলো, আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগ নেই। সড়ক-মহাসড়কে ছোট ও ধীরগতির যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ হলেও অবলীলায় তা চলছে। দুর্ঘটনায় বেশি জড়িত মোটরসাইকেল, ট্রাক এবং বাস। এসব বাহনের চালকদের জন্য নানা নির্দেশনা রয়েছে। তা তারা মানছেন না। সড়ক-মহাসড়কে বেপরোয়া ও প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালানো বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে মানসম্মত যানবাহন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক এবং সিগন্যালিং ব্যবস্থা যুগোপযোগী করার বিষয়গুলোয় নজর দিতে হবে। রাস্তার পাশে যেসব স্থাপনা নিয়ম বা পরিকল্পনা-বহির্ভূতভাবে গড়ে উঠছে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। গাড়ির যাত্রী থেকে শুরু করে পথচারী- সব মানুষকে সড়ক নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। সড়ক আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে।

শুক্রবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২১ , ২৪ পৌষ ১৪২৭, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করুন

সারা দেশে গত বছর সড়ক, রেল ও নৌপথে ৪ হাজার ৯২টি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪ হাজার ৯৬৯ জন, আহত হয়েছেন ৫ হাজার ৮৫ জন। সড়কে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩ হাজার ২৩২টি। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩ হাজার ৮০০ জন। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত সংগঠন নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) ২০২০ সালের পরিসংখ্যানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সড়কে এ বছর যে দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেটা এক বছরের হিসাবে কম নয়। গত বছরের একটি সময় করোনার কারণে জরুরি যানবাহন ছাড়া অন্যান্য বাহন বন্ধ ছিল। এরপরও দুর্ঘটনা থামানো যায়নি।

জাতিসংঘ ২০১১ থেকে ২০২০ সালকে ‘সড়ক নিরাপত্তা দশক’ হিসেবে ঘোষণা করে। বাংলাদেশ এ সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছিল। এক্ষেত্রে আন্তরিক প্রচেষ্টা ছিল কিনা সে প্রশ্ন রয়েছে। সড়ক নিরাপত্তা দশক পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেনি।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সড়ক-দুর্ঘটনা ঘটে রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশে মহাসড়কগুলোতে। ঢাকা যানজটের শহর। এ শহরে পিক আওয়ারে গণপরিবহনের গতিবেগ ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার। সাধারণত গতি কম থাকলে দুর্ঘটনা কম হয়। অথচ কম গতির ঢাকায় এর উল্টো চিত্র দৃশ্যমান হচ্ছে।

আইনের কার্যকর প্রয়োগ সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশে চালক ও পথচারী উভয়ের জন্য কঠোর বিধান যুক্ত করে ২০১৯ সালে কার্যকর করা হয়েছে সড়ক পরিবহন আইন। দুঃখজনক হলো, আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগ নেই। সড়ক-মহাসড়কে ছোট ও ধীরগতির যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ হলেও অবলীলায় তা চলছে। দুর্ঘটনায় বেশি জড়িত মোটরসাইকেল, ট্রাক এবং বাস। এসব বাহনের চালকদের জন্য নানা নির্দেশনা রয়েছে। তা তারা মানছেন না। সড়ক-মহাসড়কে বেপরোয়া ও প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালানো বন্ধ করা সম্ভব হয়নি।

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে মানসম্মত যানবাহন, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক এবং সিগন্যালিং ব্যবস্থা যুগোপযোগী করার বিষয়গুলোয় নজর দিতে হবে। রাস্তার পাশে যেসব স্থাপনা নিয়ম বা পরিকল্পনা-বহির্ভূতভাবে গড়ে উঠছে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। গাড়ির যাত্রী থেকে শুরু করে পথচারী- সব মানুষকে সড়ক নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন করতে হবে। সড়ক আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। এক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে হবে।