উচ্ছেদ করুন, শাস্তি দিন

ইটভাটা নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম, পরিবেশ আইন বা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন কোন কাজেই আসছে না। খুলনার শিপসা, কপোতাক্ষ, ভদ্রা, হরিসহ বিভিন্ন নদীর পাড়ে ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। প্রভাবশালী ভাটামালিকরা প্রতি বছর নদীর তীর দখল করে ভাটার বিস্তৃতি বাড়াচ্ছেন।

ইটভাটা মালিকদের দখলের থাবা থেকে খুলনার নদীগুলো রক্ষা করা যাচ্ছে না। এ চিত্র শুধু খুলনায় নয়, রাজশাহী, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় দৃশ্যমান হচ্ছে। নদী দখল হওয়া ও নদীর জল কমে যাওয়ার ফলে মাটির তলায় পানির ওপর চাপ বাড়ছে, নামছে ভূগর্ভস্থ জল। নদী দখলের পর ভাটা মালিকরা নদীতে বাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরি করছেন। এভাবে বাঁধ দেয়ায় নদীর স্রোত কমে যাচ্ছে। পলি পড়ে নদী নাব্যতা হারাচ্ছে, পাল্টে যাচ্ছে গতিপথ।

২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৮(১) ধারা অনুযায়ী, আবাসিক এলাকা ও কৃষিজমির ওপর ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। অন্যদিকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৬(ঙ) ধারায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে জলাশয় ভরাট। প্রশ্ন হলো, আইনে যেখানে কারাদণ্ডের ও জরিমানার বিধান রয়েছে, সেখানে অবৈধ ইটভাটা তৈরি হয় কীভাবে আর দিনের পর দিন চলেই বা কীভাবে? আইনের প্রয়োগ নেই কেন? পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এজন্য জবাবদিহি করতে হবে।

যারা নদী দখল করছে বা অবৈধভাবে ভাটা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। যারা অনিয়ম করছে তাদের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। নদীতে যাতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠতে না পারে সেজন্য নজরদারি বাড়ানো দরকার। নদীর তীরবর্তী ইটভাটাগুলোর সীমানা নির্ধারণ করে দিতে হবে।

শনিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২১ , ২৫ পৌষ ১৪২৭, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

নদীতেও নেমেছে ইটভাটা

উচ্ছেদ করুন, শাস্তি দিন

ইটভাটা নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকারি নিয়ম, পরিবেশ আইন বা ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন কোন কাজেই আসছে না। খুলনার শিপসা, কপোতাক্ষ, ভদ্রা, হরিসহ বিভিন্ন নদীর পাড়ে ইটভাটা গড়ে তোলা হয়েছে। প্রভাবশালী ভাটামালিকরা প্রতি বছর নদীর তীর দখল করে ভাটার বিস্তৃতি বাড়াচ্ছেন।

ইটভাটা মালিকদের দখলের থাবা থেকে খুলনার নদীগুলো রক্ষা করা যাচ্ছে না। এ চিত্র শুধু খুলনায় নয়, রাজশাহী, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় দৃশ্যমান হচ্ছে। নদী দখল হওয়া ও নদীর জল কমে যাওয়ার ফলে মাটির তলায় পানির ওপর চাপ বাড়ছে, নামছে ভূগর্ভস্থ জল। নদী দখলের পর ভাটা মালিকরা নদীতে বাঁধ দিয়ে পুকুর তৈরি করছেন। এভাবে বাঁধ দেয়ায় নদীর স্রোত কমে যাচ্ছে। পলি পড়ে নদী নাব্যতা হারাচ্ছে, পাল্টে যাচ্ছে গতিপথ।

২০১৩ সালের ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনের ৮(১) ধারা অনুযায়ী, আবাসিক এলাকা ও কৃষিজমির ওপর ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। অন্যদিকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ৬(ঙ) ধারায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে জলাশয় ভরাট। প্রশ্ন হলো, আইনে যেখানে কারাদণ্ডের ও জরিমানার বিধান রয়েছে, সেখানে অবৈধ ইটভাটা তৈরি হয় কীভাবে আর দিনের পর দিন চলেই বা কীভাবে? আইনের প্রয়োগ নেই কেন? পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এজন্য জবাবদিহি করতে হবে।

যারা নদী দখল করছে বা অবৈধভাবে ভাটা চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। যারা অনিয়ম করছে তাদের লাইসেন্স বাতিল করতে হবে। নদীতে যাতে অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠতে না পারে সেজন্য নজরদারি বাড়ানো দরকার। নদীর তীরবর্তী ইটভাটাগুলোর সীমানা নির্ধারণ করে দিতে হবে।