ফেনীর ফুলগাজীতে দেদারসে চলছে কৃষি জমির মাটি কর্তন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন উপরিভাগের মাটি বিক্রি করা কৃষির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। এতে কমে যাচ্ছে আবাদি জমির উৎপাদন। ফলে অধিক চাষাবাদেও ফলন কম হচ্ছে। একবার টপ সয়েল কেটে নিলে তা পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসতে কমপক্ষে এক যুগ সময় লাগে। অথচ থামছে না মাটি কাটার মচ্ছব! ফুলগাজীর সদরের বৈরাগপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, ঘনিয়ামোড়া, মুন্সিরহাট ইউনিয়নের তারালিয়া, নোয়াপুর, বদরপুর, কুতুবপুর, জিএমহাট ইউনিয়নের নুরপুর, শরীফপুর, আমজাদহাটে আবাদি জমির উপরিভাগের মাটি কাটছে। এমন অভিযোগে গত ২০ ডিসেম্বর জিএমহাট ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে মাটি কাটার ৩টি এস্কেভেটর মেশিন ও ২শ ফুট পাইপসহ ৪টি ডেজার মেশিন জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একাধিক ভূমি মালিক জানান, ব্যবসায়ীরা তাদের মাটি বিক্রিতে উৎসাহিত করছে।
মাটি ক্রেতারা বলছে, টপ সয়েল কাটলে জমির কোনও ক্ষতি হবে না। এক বছরের মধ্যেই বর্ষা এলে জমির সেই মাটি পূরণ হয়ে ফসল ফলানো যাবে বলেও জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ভূমি মালিক। ফুলগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা জানান, মাটির উপরিভাগের (টপ সয়েল) ১৪ সেন্টিমিটার (৬ ইঞ্চি) মাটিতে উর্বরতা শক্তি থাকে। কিন্তু ফসলি জমির এ মাটি কাটা হলে ফলনে ঘাটতি হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিবে। কৃষি জমির উপরিভাগ কাটা বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ ফেনীর উপ-পরিচালক তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে মাটি সবচেয়ে মূল্যবান। উপরিভাগের ৬ হতে ৭ ইঞ্চিতেই থাকেই সব ধরনের জৈব গুণাগুণ এবং উৎপাদনশীলতা। অথচ কেটে ফেলা হচ্ছে প্রায় এক ফুট মাটি। এর ফলে জমির উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। ফুলগাজী উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব থাকা পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসমিন আক্তার জানান, এসব বিষয়ে ফুলগাজী থানা পুলিশের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সঠিক তথ্য পেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উপজেলা ব্রিকফিল্ড মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ হারুন মজুমদার জানান, মাটি ছাড়া ইট উৎপাদন সম্ভব না। কারও জমি থেকে জোর করে মাটি কাটা হচ্ছে না, জমির মালিক বিক্রি করছে বলেই ব্রিকফিল্ড কর্তৃপক্ষ মাটি ক্রয় করেছে। ইট উৎপাদন না হলে দেশের অবকাঠামো, স্কুল-কলেজ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, ড্রেন-কালভার্টসহ সরকারের সকল উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। এত নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে ব্রিকফিল্ডগুলোর লাইসেন্স বাতিল করে উন্নত দেশের মতো রাস্তাঘাট, অবকাঠামো নির্মাণে ইটের বিকল্প তৈরি করা হোক।
রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১ , ২৬ পৌষ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২
প্রতিনিধি, ফেনী
ফেনীর ফুলগাজীতে দেদারসে চলছে কৃষি জমির মাটি কর্তন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন উপরিভাগের মাটি বিক্রি করা কৃষির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি। এতে কমে যাচ্ছে আবাদি জমির উৎপাদন। ফলে অধিক চাষাবাদেও ফলন কম হচ্ছে। একবার টপ সয়েল কেটে নিলে তা পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসতে কমপক্ষে এক যুগ সময় লাগে। অথচ থামছে না মাটি কাটার মচ্ছব! ফুলগাজীর সদরের বৈরাগপুর, দক্ষিণ দৌলতপুর, ঘনিয়ামোড়া, মুন্সিরহাট ইউনিয়নের তারালিয়া, নোয়াপুর, বদরপুর, কুতুবপুর, জিএমহাট ইউনিয়নের নুরপুর, শরীফপুর, আমজাদহাটে আবাদি জমির উপরিভাগের মাটি কাটছে। এমন অভিযোগে গত ২০ ডিসেম্বর জিএমহাট ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে মাটি কাটার ৩টি এস্কেভেটর মেশিন ও ২শ ফুট পাইপসহ ৪টি ডেজার মেশিন জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একাধিক ভূমি মালিক জানান, ব্যবসায়ীরা তাদের মাটি বিক্রিতে উৎসাহিত করছে।
মাটি ক্রেতারা বলছে, টপ সয়েল কাটলে জমির কোনও ক্ষতি হবে না। এক বছরের মধ্যেই বর্ষা এলে জমির সেই মাটি পূরণ হয়ে ফসল ফলানো যাবে বলেও জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ভূমি মালিক। ফুলগাজী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা জানান, মাটির উপরিভাগের (টপ সয়েল) ১৪ সেন্টিমিটার (৬ ইঞ্চি) মাটিতে উর্বরতা শক্তি থাকে। কিন্তু ফসলি জমির এ মাটি কাটা হলে ফলনে ঘাটতি হওয়ার সম্ভবনা দেখা দিবে। কৃষি জমির উপরিভাগ কাটা বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ ফেনীর উপ-পরিচালক তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে মাটি সবচেয়ে মূল্যবান। উপরিভাগের ৬ হতে ৭ ইঞ্চিতেই থাকেই সব ধরনের জৈব গুণাগুণ এবং উৎপাদনশীলতা। অথচ কেটে ফেলা হচ্ছে প্রায় এক ফুট মাটি। এর ফলে জমির উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে। ফুলগাজী উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব থাকা পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইয়াসমিন আক্তার জানান, এসব বিষয়ে ফুলগাজী থানা পুলিশের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সঠিক তথ্য পেলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
উপজেলা ব্রিকফিল্ড মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ হারুন মজুমদার জানান, মাটি ছাড়া ইট উৎপাদন সম্ভব না। কারও জমি থেকে জোর করে মাটি কাটা হচ্ছে না, জমির মালিক বিক্রি করছে বলেই ব্রিকফিল্ড কর্তৃপক্ষ মাটি ক্রয় করেছে। ইট উৎপাদন না হলে দেশের অবকাঠামো, স্কুল-কলেজ, রাস্তাঘাট, ব্রিজ, ড্রেন-কালভার্টসহ সরকারের সকল উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে। এত নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে ব্রিকফিল্ডগুলোর লাইসেন্স বাতিল করে উন্নত দেশের মতো রাস্তাঘাট, অবকাঠামো নির্মাণে ইটের বিকল্প তৈরি করা হোক।