চাঁদপুরে অবৈধভাবে চলছে নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র

চাঁদপুর শহরে অনুমোদনহীন নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের কার্যক্রম চলছে।ফলে এর সেবা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন জন্মেছে। ছোট্ট দুটা কক্ষে দুই-তিনজন মিলে ঠিক কি ধরনের সেবা দিচ্ছে- এ নিয়েও নানা কৌতুহল শহরজুড়ে। সরেজমিনে ঘটনা জানতে শহরের বিল্লাল টাওয়ারের অপজিটে বহু খোঁজাখুঁজি করে কিছুটা ভেতরে এক চিপা গলিতে সাইনবোর্ডবিহীন একটি বিল্ডিংয়ে গিয়ে খোঁজ মিললল নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের। যেখানে গিয়ে দেখা গেল ৩ জন লোক ১টি ল্যাপটপ নিয়ে বসে রয়েছেন এবং আলাপ-আলোচনা করছেন। তবে এরা কেউই কোন মনোচিকিৎসক, চিকিৎসক বা ওয়ার্ডবয় নয়। বিষয়টি নিশ্চিত করলো নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে পরিচয় দেয়া পিএম বিল্লাল। তিনি দৈনিক সংবাদকে জানান, এটি তাদের মূল মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র নয়। তাদের মূল কেন্দ্রটি শহরের অদূরে গাছতলা ব্রিজ সংলগ্ন ছিদ্দিক ভিলার ২য় তলায়। সেখানে ২০ বেডের কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। এখানে গেল ২-৩ মাস আগে থেকে শুধু প্রচারের জন্য অস্থায়ীভাবে ভাড়ায় ২ কক্ষ বিশিষ্ট এই ফ্ল্যাট বাসাটি নেয়া হয়েছে। তিনি দৈনিক সংবাদকে আরো জানান, আইন অনুযায়ী নিরাময় কেন্দ্রে একজন মাদকাসক্ত রোগীর জন্য গড়ে কমপক্ষে ৮০ বর্গফুট জায়গা এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নিরিবিলি সুন্দর পরিবেশ থাকতে হবে। এতে একজন চিকিৎসক (মেডিকেল অফিসার), একজন মনোচিকিৎসক, একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, দুজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স, একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও জীবন রক্ষাকারী উপকরণ এবং ওষুধপথ্য থাকতে হবে। আমরা সব প্রস্তুতি নিয়ে এটিকে অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেছি। তাই এখানে যেহেতু এখনো চিকিৎসা দেয়া বা রোগী ভর্তি শুরু করা হয়নি।

সেহেতু এটি নিয়ে কেউ কোন বিভ্রান্ত হওয়ার কোন কারণ নেই। নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের সমন্বয়কের পরিচয় দেয়া গোলাম কিবরিয়া দৈনিক সংবাদকে জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানের অলিগলিতে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। সেখানে নিয়মিত চিকিৎসক, মনোচিকিৎসক, ওয়ার্ডবয় বা নার্স থাকেন না। সেখানে চিকিৎসায় মানা হয় না সরকারি নিয়মনীতি। শুধু তাই নয়, নিরাময় কেন্দ্রে রোগীকে মারধর, মানসিক নির্যাতন ও অপদস্থ করা নিয়মিত ঘটনাও আমাদের জানা রয়েছে। তবে আমরা এখানে অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা বৈজ্ঞানিক উপায়ে মাদকাসক্ত রোগীকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। কিন্তু আমরা অনুমোদন পাওয়ার আগ পর্যন্ত কোন রোগী ভর্তি নিচ্ছি না বলে সবাইকে কোনরুপ বিভ্রান্ত না হতে অনুরোধ করা হলো। তিনি দৈনিক সংবাদ কে আরও জানান, মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা হৃদরোগসহ অন্য কোন রোগে আক্রান্ত কিনা, তা নির্ণয়ের জন্য এক্স-রে, ইসিজিসহ নানা পরীক্ষার দরকার হয়। এসব পরীক্ষার সব রকমের ব্যবস্থা এবং কেন্দ্রটিতে জরুরী বিভাগের ব্যবস্থা রাখারও পরিকল্পনা করছি। এ সময় নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের সদস্য পরিচয় দেয়া আলি আমজাদ লিটন উপস্থিত ছিলেন। ৭ই জানুয়ারি শনিবার তাদের দেয়া কার্ডে ফোন করে এটির প্রতিষ্ঠাতা ড. আনোয়ারুজ্জামান রতনকে পাওয়া যায়নি। অথচ ওই কার্ডে তার নাম দেয়া রয়েছে। ওই কার্ডে তার নামের নিচে তার নাম্বার না দিয়ে অন্য লোকের নাম্বার দেয়াটা প্রতারণা কিনা জানতে চাইলে কল রিসিভ করা গোলাম কিবরিয়া দৈনিক সংবাদকে জানান, এটি সংগঠনের নামের কার্ড।

তাই সম্মানের জন্য প্রতিষ্ঠাতার নাম লেখা হয়েছে কিন্তু ওনার নাম্বার দেয়া হয়নি। এদিকে নানান আলোচিত অনুুুমোদনহীন এই নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র সম্পর্কে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এ কে এম দিদারুল আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি দৈনিক সংবাদকে জানান, আমাদের এইখানে লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করছিল। তারপর আমরা ওইখানে তাদের কার্যালয়ের পরিদর্শনে যাই। প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ওরা অনুমোদন পাবে না।

আরও খবর
জমির উর্বর মাটি দেদার বিক্রি ভাটায়! ফসলাবাদ হুমকিতে
মহেশপুরে ভূমিহীন ৬৪ পরিবার পেল খাস জমি
রাজিবপুরে ইয়াবা গ্রেফতার দুই
আমতলীতে ডায়েরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি, হাসপাতালে ওষুধ সংকট
ভিজিএফ কার্ডের আশ্বাসে গৃহবধূকে ধর্ষণ : ধৃত ২
কলমাকান্দায় আগুনে ভস্মীভূত বসতঘর
কিশোরগঞ্জে আয়শা খানম স্মরণে মোমবাতি প্রজ্বালন
সীমানা জটিলতায় ৯ বছর অভিভাবক শূন্য গোসাইরহাট
জগন্নাথপুরে ভোটের মাঠ সরগরম
দশমিনায় ট্রাক্টরসহ লোহার সেতু খালে : আহত দুই
নওগাঁয় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে গৃহহীনদের ১০৫৬ বাড়ি নির্মাণ
চাটখিলে প্রবাসীকে জিম্মি করে চাঁদা গ্রেফতার ৩
গোমস্তাপুরে ৮ কিমি. বাঁধ সংস্কারে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ

রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১ , ২৬ পৌষ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

চাঁদপুরে অবৈধভাবে চলছে নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র

সংবাদদাতা, চাঁদপুর

চাঁদপুর শহরে অনুমোদনহীন নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের কার্যক্রম চলছে।ফলে এর সেবা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন জন্মেছে। ছোট্ট দুটা কক্ষে দুই-তিনজন মিলে ঠিক কি ধরনের সেবা দিচ্ছে- এ নিয়েও নানা কৌতুহল শহরজুড়ে। সরেজমিনে ঘটনা জানতে শহরের বিল্লাল টাওয়ারের অপজিটে বহু খোঁজাখুঁজি করে কিছুটা ভেতরে এক চিপা গলিতে সাইনবোর্ডবিহীন একটি বিল্ডিংয়ে গিয়ে খোঁজ মিললল নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের। যেখানে গিয়ে দেখা গেল ৩ জন লোক ১টি ল্যাপটপ নিয়ে বসে রয়েছেন এবং আলাপ-আলোচনা করছেন। তবে এরা কেউই কোন মনোচিকিৎসক, চিকিৎসক বা ওয়ার্ডবয় নয়। বিষয়টি নিশ্চিত করলো নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক হিসেবে পরিচয় দেয়া পিএম বিল্লাল। তিনি দৈনিক সংবাদকে জানান, এটি তাদের মূল মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র নয়। তাদের মূল কেন্দ্রটি শহরের অদূরে গাছতলা ব্রিজ সংলগ্ন ছিদ্দিক ভিলার ২য় তলায়। সেখানে ২০ বেডের কেন্দ্র প্রস্তুত করা হচ্ছে। এখানে গেল ২-৩ মাস আগে থেকে শুধু প্রচারের জন্য অস্থায়ীভাবে ভাড়ায় ২ কক্ষ বিশিষ্ট এই ফ্ল্যাট বাসাটি নেয়া হয়েছে। তিনি দৈনিক সংবাদকে আরো জানান, আইন অনুযায়ী নিরাময় কেন্দ্রে একজন মাদকাসক্ত রোগীর জন্য গড়ে কমপক্ষে ৮০ বর্গফুট জায়গা এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নিরিবিলি সুন্দর পরিবেশ থাকতে হবে। এতে একজন চিকিৎসক (মেডিকেল অফিসার), একজন মনোচিকিৎসক, একজন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, দুজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স, একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও জীবন রক্ষাকারী উপকরণ এবং ওষুধপথ্য থাকতে হবে। আমরা সব প্রস্তুতি নিয়ে এটিকে অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করেছি। তাই এখানে যেহেতু এখনো চিকিৎসা দেয়া বা রোগী ভর্তি শুরু করা হয়নি।

সেহেতু এটি নিয়ে কেউ কোন বিভ্রান্ত হওয়ার কোন কারণ নেই। নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের সমন্বয়কের পরিচয় দেয়া গোলাম কিবরিয়া দৈনিক সংবাদকে জানান, দেশের বিভিন্ন স্থানের অলিগলিতে মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। সেখানে নিয়মিত চিকিৎসক, মনোচিকিৎসক, ওয়ার্ডবয় বা নার্স থাকেন না। সেখানে চিকিৎসায় মানা হয় না সরকারি নিয়মনীতি। শুধু তাই নয়, নিরাময় কেন্দ্রে রোগীকে মারধর, মানসিক নির্যাতন ও অপদস্থ করা নিয়মিত ঘটনাও আমাদের জানা রয়েছে। তবে আমরা এখানে অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা বৈজ্ঞানিক উপায়ে মাদকাসক্ত রোগীকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। কিন্তু আমরা অনুমোদন পাওয়ার আগ পর্যন্ত কোন রোগী ভর্তি নিচ্ছি না বলে সবাইকে কোনরুপ বিভ্রান্ত না হতে অনুরোধ করা হলো। তিনি দৈনিক সংবাদ কে আরও জানান, মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা হৃদরোগসহ অন্য কোন রোগে আক্রান্ত কিনা, তা নির্ণয়ের জন্য এক্স-রে, ইসিজিসহ নানা পরীক্ষার দরকার হয়। এসব পরীক্ষার সব রকমের ব্যবস্থা এবং কেন্দ্রটিতে জরুরী বিভাগের ব্যবস্থা রাখারও পরিকল্পনা করছি। এ সময় নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রের সদস্য পরিচয় দেয়া আলি আমজাদ লিটন উপস্থিত ছিলেন। ৭ই জানুয়ারি শনিবার তাদের দেয়া কার্ডে ফোন করে এটির প্রতিষ্ঠাতা ড. আনোয়ারুজ্জামান রতনকে পাওয়া যায়নি। অথচ ওই কার্ডে তার নাম দেয়া রয়েছে। ওই কার্ডে তার নামের নিচে তার নাম্বার না দিয়ে অন্য লোকের নাম্বার দেয়াটা প্রতারণা কিনা জানতে চাইলে কল রিসিভ করা গোলাম কিবরিয়া দৈনিক সংবাদকে জানান, এটি সংগঠনের নামের কার্ড।

তাই সম্মানের জন্য প্রতিষ্ঠাতার নাম লেখা হয়েছে কিন্তু ওনার নাম্বার দেয়া হয়নি। এদিকে নানান আলোচিত অনুুুমোদনহীন এই নবরূপ মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র সম্পর্কে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক এ কে এম দিদারুল আলমের সঙ্গে কথা হলে তিনি দৈনিক সংবাদকে জানান, আমাদের এইখানে লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করছিল। তারপর আমরা ওইখানে তাদের কার্যালয়ের পরিদর্শনে যাই। প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ওরা অনুমোদন পাবে না।