নাখালপাড়ায় ২ বোনকে কুপিয়ে হত্যা

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে রনি নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে সাবেক স্ত্রী ও শ্যালিকাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেনÑ ইয়াসমিন আক্তার (২৮) ও তার বোন সিমু (১৭)। গতকাল তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়ার বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়াসমিনের সাবেক স্বামী রিকশাচালক রনি মিয়াকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী। জানা গেছে, ইয়াসমিন পোশাক কর্মী আর সীমু সম্প্রতি নাবিস্কো এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। তাদের বাড়ি নরসিংদীতে, আর রনির বাড়ি জামালপুরে। পুলিশ বলছে নিহত ইয়াসমিন রনিকে তালাক দেয়। এই ক্ষোভে রনি ইয়াসমিনকে কুপিয়ে এবং শ্যালিকা সিমুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে রনি।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি বিপ্লব কিশোর শীল জানান, গতকাল দুপুর ১টায় ২৫৩/৩ পূর্ব নাখালপাড়ায় একটি ভবনের তৃতীয় তলায় একটি কক্ষে রনি ইয়াসমিনকে দা দিয়ে কোপাচ্ছিল, যা আশপাশের লোকজন জানালা দিয়ে দেখতে পান। তখন তারা ভবন মালিককে ফোন করে বিষয়টি জানান। আশপাশের লোকজন সেখানে জড়ো হন। লোকজনের উপস্থিত টের পেয়ে রনি ভেতর দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে দরজা ভেঙে কক্ষে প্রবেশ করেন আশপাশের লোকজন। ঘরে ঢুকে তারা ইয়াসমিন ও সিমুর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এরইমধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে রনিকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা।

ওসি জানান, নিহত ইয়াসমিন রিকশাচালক রনির সঙ্গে দুই মেয়ে নিয়ে থাকতেন। পারিবারিক কলহের জেরে প্রায় চার মাস আগে ইয়াসমিন রনিকে তালাক দেয়। এরপর তারা নতুন বাসা নিয়ে ২৫৩/৩ পূর্ব নাখালপাড়ায় থাকতে শুরু করেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ইয়াসমিনের নতুন বাসার ঠিকানা খুঁজে পায় রনি। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে রনি ওই বাসায় যায়। তখন সিমু বাসায় ছিলেন। সিমুকে বাসায় একা পেয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ খাটে শুইয়ে রাখে রনি। এর কিছুক্ষণ পর স্ত্রী ইয়াসমিন গার্মেন্ট থেকে দুপুরের খাবার খেতে বাসায় আসে। বাসায় ঢোকার পরপরই রনি ইয়াসমিনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে। ইয়াসমিন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পুলিশ দু’জনের লাশ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নিহতদের আরেক বোন বিথী জানান, দীর্ঘদিনের পারিবারিক কলহের জেরে মাসে চারেক আগে ইয়াসমিন রনিকে তালাক দেয়। দুই বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি (বিথী) এবং তার ভাগ্নি (নিহত ইয়াসমিনের বড় মেয়ে) রোকসানা থানায় ছুটে আসেন। এ ঘটনায় তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১ , ২৬ পৌষ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

নাখালপাড়ায় ২ বোনকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে রনি নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে সাবেক স্ত্রী ও শ্যালিকাকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেনÑ ইয়াসমিন আক্তার (২৮) ও তার বোন সিমু (১৭)। গতকাল তেজগাঁওয়ের নাখালপাড়ার বাসায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়াসমিনের সাবেক স্বামী রিকশাচালক রনি মিয়াকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী। জানা গেছে, ইয়াসমিন পোশাক কর্মী আর সীমু সম্প্রতি নাবিস্কো এলাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। তাদের বাড়ি নরসিংদীতে, আর রনির বাড়ি জামালপুরে। পুলিশ বলছে নিহত ইয়াসমিন রনিকে তালাক দেয়। এই ক্ষোভে রনি ইয়াসমিনকে কুপিয়ে এবং শ্যালিকা সিমুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে রনি।

তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ওসি বিপ্লব কিশোর শীল জানান, গতকাল দুপুর ১টায় ২৫৩/৩ পূর্ব নাখালপাড়ায় একটি ভবনের তৃতীয় তলায় একটি কক্ষে রনি ইয়াসমিনকে দা দিয়ে কোপাচ্ছিল, যা আশপাশের লোকজন জানালা দিয়ে দেখতে পান। তখন তারা ভবন মালিককে ফোন করে বিষয়টি জানান। আশপাশের লোকজন সেখানে জড়ো হন। লোকজনের উপস্থিত টের পেয়ে রনি ভেতর দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে দরজা ভেঙে কক্ষে প্রবেশ করেন আশপাশের লোকজন। ঘরে ঢুকে তারা ইয়াসমিন ও সিমুর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এরইমধ্যে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে রনিকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা।

ওসি জানান, নিহত ইয়াসমিন রিকশাচালক রনির সঙ্গে দুই মেয়ে নিয়ে থাকতেন। পারিবারিক কলহের জেরে প্রায় চার মাস আগে ইয়াসমিন রনিকে তালাক দেয়। এরপর তারা নতুন বাসা নিয়ে ২৫৩/৩ পূর্ব নাখালপাড়ায় থাকতে শুরু করেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর ইয়াসমিনের নতুন বাসার ঠিকানা খুঁজে পায় রনি। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে রনি ওই বাসায় যায়। তখন সিমু বাসায় ছিলেন। সিমুকে বাসায় একা পেয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ খাটে শুইয়ে রাখে রনি। এর কিছুক্ষণ পর স্ত্রী ইয়াসমিন গার্মেন্ট থেকে দুপুরের খাবার খেতে বাসায় আসে। বাসায় ঢোকার পরপরই রনি ইয়াসমিনকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করে। ইয়াসমিন ঘটনাস্থলেই মারা যায়। পুলিশ দু’জনের লাশ উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নিহতদের আরেক বোন বিথী জানান, দীর্ঘদিনের পারিবারিক কলহের জেরে মাসে চারেক আগে ইয়াসমিন রনিকে তালাক দেয়। দুই বোনের মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি (বিথী) এবং তার ভাগ্নি (নিহত ইয়াসমিনের বড় মেয়ে) রোকসানা থানায় ছুটে আসেন। এ ঘটনায় তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।