রাজধানীতে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ চাই

গত ১৯ বছরে ঢাকায় কমেছে ১২৬টি খেলার মাঠ। সে হিসাবে প্রতি বছর হারিয়ে যাচ্ছে ছয়টি করে মাঠ। গত শনিবার প্রকাশিত একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, কোন এলাকায় প্রতি পাঁচ হাজার মানুষের জন্য একটি করে খেলার মাঠ প্রয়োজন। যে মাঠের আকার হবে এক একরের। সে হিসাবে ঢাকায় বসবাসরত মানুষের জন্য মাঠের প্রয়োজন প্রায় পাঁচ হাজার। অথচ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সর্বশেষ জরিপে দেখা যায়, ঢাকায় মাঠের সংখ্যা ২৩০। এর মধ্যে ১৪০টি প্রাতিষ্ঠানিক মাঠ, যেগুলো প্রতিষ্ঠানের কম্পাউন্ডের ভেতরে অবস্থিত। অর্থাৎ ঢাকা শহরে এখন যত লোক বাস করেন, তাদের জন্য যে সংখ্যক খেলার মাঠ বা পার্ক দরকার, এখন তার ৫ শতাংশেরও কম আছে। যেটুকু আছে দখল-দূষণে তাও প্রায় পরিত্যক্ত।

ঢাকার অনেক শিশুই নিরানন্দের শৈশব পার করছে। নেই পর্যাপ্ত খেলার মাঠ। নেই সুস্থ বিনোদনের সুযোগ। গৃহবন্দী জীবন শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করছে। সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী, প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে খেলার মাঠ থাকার কথা। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নীতিমালা অনুযায়ী, আবাসিক এলাকার প্রতিটি সেক্টরে একটি করে খেলার মাঠ থাকবে। কোন ক্ষেত্রেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। মাঠ, উন্মুক্ত স্থান ও জলাশয় রক্ষায় আইন আছে, কিন্তু এর কোন বাস্তবায়ন নেই।

শুধু শিশুর অধিকার রক্ষার জন্যই নয়, রাজধানীতে স্বস্তিকর পরিবেশ বজায় রাখতেও উন্মুক্ত স্থান থাকা দরকার। নগর পরিকল্পনা বা শহরের ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে উন্মুক্ত জায়গা রাখার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।

রাজধানীর অধিকাংশ মাঠ ও পার্ক বেদখল অবস্থায় রয়েছে। এগুলো দখলমুক্ত করে শিশুদের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। যারা ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীস্বার্থে খেলার মাঠ দখল করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

নতুন এলাকার ডিজাইনে সেই এলাকার জনসংখ্যাকে মাথায় রেখে খেলার মাঠের পরিকল্পনা করা উচিত সিটি করপোরেশনের। প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ বছরে যদি একটি করে খেলার মাঠ করার চিন্তা করা হয় তাহলে শতাধিক নতুন মাঠ পাওয়া যাবে। সদিচ্ছা থাকলে জায়গা কিনেও এটা করা যায়।

রবিবার, ১০ জানুয়ারী ২০২১ , ২৬ পৌষ ১৪২৭, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

রাজধানীতে পর্যাপ্ত খেলার মাঠ চাই

গত ১৯ বছরে ঢাকায় কমেছে ১২৬টি খেলার মাঠ। সে হিসাবে প্রতি বছর হারিয়ে যাচ্ছে ছয়টি করে মাঠ। গত শনিবার প্রকাশিত একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, কোন এলাকায় প্রতি পাঁচ হাজার মানুষের জন্য একটি করে খেলার মাঠ প্রয়োজন। যে মাঠের আকার হবে এক একরের। সে হিসাবে ঢাকায় বসবাসরত মানুষের জন্য মাঠের প্রয়োজন প্রায় পাঁচ হাজার। অথচ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সর্বশেষ জরিপে দেখা যায়, ঢাকায় মাঠের সংখ্যা ২৩০। এর মধ্যে ১৪০টি প্রাতিষ্ঠানিক মাঠ, যেগুলো প্রতিষ্ঠানের কম্পাউন্ডের ভেতরে অবস্থিত। অর্থাৎ ঢাকা শহরে এখন যত লোক বাস করেন, তাদের জন্য যে সংখ্যক খেলার মাঠ বা পার্ক দরকার, এখন তার ৫ শতাংশেরও কম আছে। যেটুকু আছে দখল-দূষণে তাও প্রায় পরিত্যক্ত।

ঢাকার অনেক শিশুই নিরানন্দের শৈশব পার করছে। নেই পর্যাপ্ত খেলার মাঠ। নেই সুস্থ বিনোদনের সুযোগ। গৃহবন্দী জীবন শিশুর স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করছে। সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী, প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে খেলার মাঠ থাকার কথা। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) নীতিমালা অনুযায়ী, আবাসিক এলাকার প্রতিটি সেক্টরে একটি করে খেলার মাঠ থাকবে। কোন ক্ষেত্রেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। মাঠ, উন্মুক্ত স্থান ও জলাশয় রক্ষায় আইন আছে, কিন্তু এর কোন বাস্তবায়ন নেই।

শুধু শিশুর অধিকার রক্ষার জন্যই নয়, রাজধানীতে স্বস্তিকর পরিবেশ বজায় রাখতেও উন্মুক্ত স্থান থাকা দরকার। নগর পরিকল্পনা বা শহরের ভূমি ব্যবহারের ক্ষেত্রে উন্মুক্ত জায়গা রাখার বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে।

রাজধানীর অধিকাংশ মাঠ ও পার্ক বেদখল অবস্থায় রয়েছে। এগুলো দখলমুক্ত করে শিশুদের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। যারা ব্যক্তি কিংবা গোষ্ঠীস্বার্থে খেলার মাঠ দখল করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

নতুন এলাকার ডিজাইনে সেই এলাকার জনসংখ্যাকে মাথায় রেখে খেলার মাঠের পরিকল্পনা করা উচিত সিটি করপোরেশনের। প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ বছরে যদি একটি করে খেলার মাঠ করার চিন্তা করা হয় তাহলে শতাধিক নতুন মাঠ পাওয়া যাবে। সদিচ্ছা থাকলে জায়গা কিনেও এটা করা যায়।