ছাত্রলীগ নেতার টেন্ডার বাণিজ্যের ভিডিও ভাইরাল

সম্প্রতি লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাবেদ হোসেন বক্করের টেন্ডার বাণিজ্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে হাসপাতালের কাজের একটি টেন্ডার ফেলা নিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বক্কর ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুল্লাহ বাহার রোহিদের নেতৃত্বে একদল ছাত্রলীগ নেতা নির্ধারিত সময়ের পর টেন্ডার ফেলতে গিয়ে ব্যাপক হট্টগোল ও কর্তৃপক্ষকে গালিগালাজ করেন।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জাবেদ হোসেন বক্কর দলবল নিয়ে দরপত্রে অংশ নিতে লালমনিরহাট জেলা সদরের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে নির্ধারিত সময়ের পরে যান। প্রথমে কর্তৃপক্ষ সময় চলে গেছে এমনটা বললে বক্কর, রোহিদসহ তাদের অনুসারীরা ব্যাপক গালাগাল ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন।

জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলা সদরে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ২০২০-২১ অর্থবছরের এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের নিমিত্তে গত বছরের ২ ডিসেম্বর দরপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দরপত্র গ্রহণের শেষ সময় ছিল ৩ জানুয়ারি বেলা ১১টা পর্যন্ত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলা সভাপতি বক্কর নির্ধারিত সময়ের পরে দলবল নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সামনেই জোরপূর্বক তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে প্রবেশ করে টেন্ডারে অংশ নেয়ার প্রচেষ্টা চালান। নির্ধারিত সময়ের পরে দরপত্রে অংশ নিতে গেলে কর্তৃপক্ষ তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি কারও কথায় কর্ণপাত না করে বিধিবহির্ভূতভাবে দরপত্রে অংশ নেয়ার প্রচেষ্টা চালান। এ সময় একজনকে পা ধরে তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। এ সময় তার সঙ্গে লালমনিরহাট পৌর ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত থেকে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন।

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ সভাপতি জাবেদ হোসেন বক্কর বলেন, আমার কোন টেন্ডারবাজি করার ইতিহাস নেই। আমার নিজের কোন লাইসেন্সও নেই। তবে আমার বাবা ঠিকাদারি ব্যবসা করেন। কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উল্টো আমার বাবাকেই নানাভাবে তার ঠিকাদারি কাজে বাধাগ্রস্ত করছেন।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিবাহিত, চাকরিজীবী, মামলার আসামি, ব্যবসায়ী আর জনপ্রতিনিধি দিয়ে চলছে সংগঠনটি। বেশিরভাগ নেতাই ঘর সামলাতে ব্যস্ত। ফলে সংগঠনটির দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।

সম্প্রতি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেছেন, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে চলতে পারবেন তাদের মধ্য থেকে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। সেভাবে আমরা কাজ করছি। যারা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হতে চায়, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি করে নিজের স্বার্থে সংগঠনকে বিপদে ফেলতে চায়, বিতর্কিত করতে চায় তাদের কোনভাবেই ছাত্রলীগে জায়গা দেয়া হবে না। হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, তাদের সময় শেষ।

সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১ , ২৭ পৌষ ১৪২৭, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

ছাত্রলীগ নেতার টেন্ডার বাণিজ্যের ভিডিও ভাইরাল

প্রতিনিধি, লালমনিরহাট

সম্প্রতি লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাবেদ হোসেন বক্করের টেন্ডার বাণিজ্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে হাসপাতালের কাজের একটি টেন্ডার ফেলা নিয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি বক্কর ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাবিবুল্লাহ বাহার রোহিদের নেতৃত্বে একদল ছাত্রলীগ নেতা নির্ধারিত সময়ের পর টেন্ডার ফেলতে গিয়ে ব্যাপক হট্টগোল ও কর্তৃপক্ষকে গালিগালাজ করেন।

ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি জাবেদ হোসেন বক্কর দলবল নিয়ে দরপত্রে অংশ নিতে লালমনিরহাট জেলা সদরের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে নির্ধারিত সময়ের পরে যান। প্রথমে কর্তৃপক্ষ সময় চলে গেছে এমনটা বললে বক্কর, রোহিদসহ তাদের অনুসারীরা ব্যাপক গালাগাল ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন।

জানা গেছে, লালমনিরহাট জেলা সদরে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ২০২০-২১ অর্থবছরের এমএসআর সামগ্রী ক্রয়ের নিমিত্তে গত বছরের ২ ডিসেম্বর দরপত্র আহ্বান করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দরপত্র গ্রহণের শেষ সময় ছিল ৩ জানুয়ারি বেলা ১১টা পর্যন্ত।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলা সভাপতি বক্কর নির্ধারিত সময়ের পরে দলবল নিয়ে পুলিশ প্রশাসনের সামনেই জোরপূর্বক তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে প্রবেশ করে টেন্ডারে অংশ নেয়ার প্রচেষ্টা চালান। নির্ধারিত সময়ের পরে দরপত্রে অংশ নিতে গেলে কর্তৃপক্ষ তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু তিনি কারও কথায় কর্ণপাত না করে বিধিবহির্ভূতভাবে দরপত্রে অংশ নেয়ার প্রচেষ্টা চালান। এ সময় একজনকে পা ধরে তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতে দেখা গেছে। এ সময় তার সঙ্গে লালমনিরহাট পৌর ছাত্রলীগের অন্যান্য নেতাকর্মী উপস্থিত থেকে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেন।

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ সভাপতি জাবেদ হোসেন বক্কর বলেন, আমার কোন টেন্ডারবাজি করার ইতিহাস নেই। আমার নিজের কোন লাইসেন্সও নেই। তবে আমার বাবা ঠিকাদারি ব্যবসা করেন। কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে উল্টো আমার বাবাকেই নানাভাবে তার ঠিকাদারি কাজে বাধাগ্রস্ত করছেন।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে লালমনিরহাট জেলা ছাত্রলীগে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বিবাহিত, চাকরিজীবী, মামলার আসামি, ব্যবসায়ী আর জনপ্রতিনিধি দিয়ে চলছে সংগঠনটি। বেশিরভাগ নেতাই ঘর সামলাতে ব্যস্ত। ফলে সংগঠনটির দৃশ্যমান কোন কার্যক্রম চোখে পড়ছে না।

সম্প্রতি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেছেন, যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে চলতে পারবেন তাদের মধ্য থেকে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। সেভাবে আমরা কাজ করছি। যারা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হতে চায়, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি করে নিজের স্বার্থে সংগঠনকে বিপদে ফেলতে চায়, বিতর্কিত করতে চায় তাদের কোনভাবেই ছাত্রলীগে জায়গা দেয়া হবে না। হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, তাদের সময় শেষ।