৭ দিনেও আইনি নোটিশের জবাব দেয়নি কর্তৃপক্ষ

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুর রব ও এসএসিএমও আসমা বেগমের অবহেলাজনিত কারণে দীর্ঘমেয়াদী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণকারী লিপি আক্তার (৩৫) নামের এক সেবা গ্রহিতা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এমন অভিযোগে দৈনিক ‘সংবাদ’ পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে উচ্চ আদালতের এক আইনজীবী স্বপ্রণোদিত হয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরকে ৭ দিনের মধ্যে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনী নোটিস দিলেও তার কোন তোয়াক্কাই করছে না জেলা কর্তৃপক্ষ। নোটিস পেয়ে রহস্যজনকভাবে অবসরে গিয়েছেন জেলা উপ-পরিচালক সারোয়ার আলম। স্বেচ্ছায় অন্যত্র বদলি হয়েছেন ডা. রব। অপরদিকে হয়রানির অভিযোগ থেকে বাঁচতে এসএসিএমও আসমা বেগম মুন্নি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে গণস্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা করছেন।

এলাকাবাসী ও দফতর সূত্রে জানা গেছে, বৈদ্যেরবাজার ইউপির গাবতলী এলাকার কৃষক মজিবুর রহমানের ২য় স্ত্রী লিপি আক্তার গতবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুর রবের কাছে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদী (৩ বছর) জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি (ইমপ্লান্ট) গ্রহণ করেন। পরে জুলাই মাসে তার শারীরিক গুরুতর সমস্যার কারণে ডা. আ. রব ও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) আসমা বেগম মুন্নীর কাছে তার জীবন বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে একাধিকবার ইমপ্লান্ট পদ্ধতি খুলে দিতে বললেও ডা. আ. রব ভুক্তভোগীর বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে তাকে সুখী পিল সেবন করতে বলে ধমকিয়ে বিদায় করেন। ইমপ্লান্ট গ্রহণে ভুক্তভোগীর শরীরে পানি জমে ফুলে ও অনবরত রক্তক্ষরণের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে বৈদ্যেরবাজার ইউপির পরিবার কল্যাণ সহকারী (এসএসিএমও) আসমা বেগম মুন্নির কাছে গেলে তিনি চাকরির নিয়মের অজুহাতে ‘রোগীর জীবনের চাইতে তার চাকরির মূল্য বেশি’ বলে দুর্ব্যবহার করে ফিরিয়ে দেন। তাদের অবহেলায় শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে আগস্ট মাসে স্ট্রোক করে মারা যায় লিপি আক্তার।

এই ঘটনায় গত ১৩ ডিসেম্বর দৈনিক ‘সংবাদ’ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে স্ব-প্রণোদিত হয়ে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. বশির আহম্মেদের পক্ষে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগকে ৭ দিনের মধ্যে ঘটনার তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী খন্দকার মোহাম্মদ মিকাঈল গত ২১ ডিসেম্বর আইনী নোটিস দেন। নোটিস প্রাপ্তির পর প.প. বিভাগীয় পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব শরিফুল ইসলাম না’গঞ্জ জেলা উপ-পরিচালক সারোয়ার আলমকে মৌখিকভাবে ঘটনার তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও রহস্যজনক কারণে সারোয়ার আলম কালক্ষেপণ করে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর অবসরে গেছেন। এদিকে সেবা গ্রহিতার মৃৃত্যু, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ ও নোটিসের খবর পেয়ে স্বেচ্ছায় সোনারগাঁ ছেড়ে অন্যত্র (সদর-নাঃগঞ্জ) বদলি হয়েছেন ডা. আ. রব। অপরদিকে হয়রানির অভিযোগ থেকে বাঁচতে ও তার চাকরি চলে যাবে বলে এলাকাবাসীদের ভুল বুুঝিয়ে লিপি আক্তারের মৃত্যুর সঙ্গে তাদের হয়রানির সম্পর্ক নেই মর্মে সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে গণস্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা করেছেন এসএসিএমও আসমা বেগম মুন্নি। পরবর্তীতে স্থানীয় মেম্বার বিষয়টি বুঝতে পেরে তার কাছ থেকে গণস্বাক্ষরের কাগজটি ফেরত নিয়ে নেন। এই বিষয়ে অবসরে যাওয়া জেলা উপ-পরিচালক সারোয়ার আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। সদ্য যোগদান করা জেলা উপ-পরিচালক মুজিবর রহমান জানান বিষয়টি শুনেছি, এলাকায় গিয়ে বিস্তারিত জেনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। কারো দ্বারা মানুষ হয়রানির শিকার হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও খবর
কৃষি প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কাগজে আছে বাস্তবে নেই
বরিশালে হঠাৎ তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় কৃষিতে বিরূপ প্রভাব
গজারিয়ায় হত্যাকাণ্ডের ১০ ঘণ্টার ব্যবধানে রহস্য উদঘাটন গ্রেফতার ৩
সবজিসহ কাঁচাপণ্য বহনে রেলে চালু হচ্ছে লাগেজ ভ্যানের স্টপিজ
খুলনায় গরুর ক্ষুরা রোগ কমেছে দুধ মাংস
নিখোঁজের ১১ মাস পর প্রেমিকের সেপটিক ট্যাংকে প্রেমিকার মরদেহ
রাস্তার ৭০ ভাগ সম্পন্ন ২ ব্যক্তির বাধায় ব্যর্থ গ্রামবাসীর উদ্যোগ
সাতক্ষীরায় সড়কে হত ২, আহত ১০
সাতক্ষীরায় ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব ১২ শয্যায় ভর্তি শতাধিক
চারঘাট বাজারের আধিপত্য বিবাদে সংঘর্ষ : নিহত ১
রাজশাহী বিভাগে করোনায় মৃত্যু ২
ঝিনাইদহে ১৪ বছর পর চালু সরকারি শিশু হাসপাতাল

সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১ , ২৭ পৌষ ১৪২৭, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

সোনারগাঁয়ে অবহেলায় জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবাগ্রহীতার মৃত্যু

৭ দিনেও আইনি নোটিশের জবাব দেয়নি কর্তৃপক্ষ

প্রতিনিধি, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ)

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুর রব ও এসএসিএমও আসমা বেগমের অবহেলাজনিত কারণে দীর্ঘমেয়াদী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণকারী লিপি আক্তার (৩৫) নামের এক সেবা গ্রহিতা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এমন অভিযোগে দৈনিক ‘সংবাদ’ পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে উচ্চ আদালতের এক আইনজীবী স্বপ্রণোদিত হয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরকে ৭ দিনের মধ্যে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনী নোটিস দিলেও তার কোন তোয়াক্কাই করছে না জেলা কর্তৃপক্ষ। নোটিস পেয়ে রহস্যজনকভাবে অবসরে গিয়েছেন জেলা উপ-পরিচালক সারোয়ার আলম। স্বেচ্ছায় অন্যত্র বদলি হয়েছেন ডা. রব। অপরদিকে হয়রানির অভিযোগ থেকে বাঁচতে এসএসিএমও আসমা বেগম মুন্নি প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে গণস্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা করছেন।

এলাকাবাসী ও দফতর সূত্রে জানা গেছে, বৈদ্যেরবাজার ইউপির গাবতলী এলাকার কৃষক মজিবুর রহমানের ২য় স্ত্রী লিপি আক্তার গতবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুর রবের কাছে গিয়ে দীর্ঘমেয়াদী (৩ বছর) জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি (ইমপ্লান্ট) গ্রহণ করেন। পরে জুলাই মাসে তার শারীরিক গুরুতর সমস্যার কারণে ডা. আ. রব ও উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) আসমা বেগম মুন্নীর কাছে তার জীবন বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে একাধিকবার ইমপ্লান্ট পদ্ধতি খুলে দিতে বললেও ডা. আ. রব ভুক্তভোগীর বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে তাকে সুখী পিল সেবন করতে বলে ধমকিয়ে বিদায় করেন। ইমপ্লান্ট গ্রহণে ভুক্তভোগীর শরীরে পানি জমে ফুলে ও অনবরত রক্তক্ষরণের অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে বৈদ্যেরবাজার ইউপির পরিবার কল্যাণ সহকারী (এসএসিএমও) আসমা বেগম মুন্নির কাছে গেলে তিনি চাকরির নিয়মের অজুহাতে ‘রোগীর জীবনের চাইতে তার চাকরির মূল্য বেশি’ বলে দুর্ব্যবহার করে ফিরিয়ে দেন। তাদের অবহেলায় শারীরিক যন্ত্রণা নিয়ে আগস্ট মাসে স্ট্রোক করে মারা যায় লিপি আক্তার।

এই ঘটনায় গত ১৩ ডিসেম্বর দৈনিক ‘সংবাদ’ পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে স্ব-প্রণোদিত হয়ে বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ড. বশির আহম্মেদের পক্ষে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগকে ৭ দিনের মধ্যে ঘটনার তদন্তপূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সুপ্রীমকোর্টের আইনজীবী খন্দকার মোহাম্মদ মিকাঈল গত ২১ ডিসেম্বর আইনী নোটিস দেন। নোটিস প্রাপ্তির পর প.প. বিভাগীয় পরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব শরিফুল ইসলাম না’গঞ্জ জেলা উপ-পরিচালক সারোয়ার আলমকে মৌখিকভাবে ঘটনার তদন্ত কমিটি করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিলেও রহস্যজনক কারণে সারোয়ার আলম কালক্ষেপণ করে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে গত ৩১ ডিসেম্বর অবসরে গেছেন। এদিকে সেবা গ্রহিতার মৃৃত্যু, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ ও নোটিসের খবর পেয়ে স্বেচ্ছায় সোনারগাঁ ছেড়ে অন্যত্র (সদর-নাঃগঞ্জ) বদলি হয়েছেন ডা. আ. রব। অপরদিকে হয়রানির অভিযোগ থেকে বাঁচতে ও তার চাকরি চলে যাবে বলে এলাকাবাসীদের ভুল বুুঝিয়ে লিপি আক্তারের মৃত্যুর সঙ্গে তাদের হয়রানির সম্পর্ক নেই মর্মে সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে গণস্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা করেছেন এসএসিএমও আসমা বেগম মুন্নি। পরবর্তীতে স্থানীয় মেম্বার বিষয়টি বুঝতে পেরে তার কাছ থেকে গণস্বাক্ষরের কাগজটি ফেরত নিয়ে নেন। এই বিষয়ে অবসরে যাওয়া জেলা উপ-পরিচালক সারোয়ার আলমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। সদ্য যোগদান করা জেলা উপ-পরিচালক মুজিবর রহমান জানান বিষয়টি শুনেছি, এলাকায় গিয়ে বিস্তারিত জেনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে। কারো দ্বারা মানুষ হয়রানির শিকার হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।