বাইডেনের অভিষেককে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে আরও সহিংসতার শঙ্কা

যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার স্থাপনাসমূহে যে নজিরবিহীন অনুপ্রবেশ, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, তার হুমকি আগে থেকেই ছিল। অনলাইনে উগ্র ডানপন্থি এবং ট্রাম্প সমর্থকেরা যেসব কথাবার্তা বলছিলেন তাতেই তা স্পষ্ট ছিল। তারা তাদের পোস্টে ‘হয় যুদ্ধ নয় ট্রাম্প’, ‘গুলি চালাতে না জানলে শিখে নিন, এখনই,’ এমনকি ‘আমরা সরকারি ভবনে ঢুকে সরকারি কর্মীদের মেরে, নিরাপত্তা কর্মীদের মেরে, ভোট পুনর্গণনা চাইব’ এসব কথাবার্তা কয়েক সপ্তাহ ধরেই লিখে আসছিল। এসব গ্রুপগুলো গৃহযুদ্ধ ছাড়ানো, আইন প্রণেতাদের হত্যা করা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করার কথা বলে আসছিল। এখন যখন তারা তাদের হুমকি বাস্তবায়ন করে ফেলেছে, তখন তা শেষ হয়ে গেছে বলে মনে করার কোন কারণ নেই বলে এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

কেননা জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান যত ঘনিয়ে আসছে, সহিংসতার সম্ভাবনা আরও বাড়ছে বলেই মনে হচ্ছে। এন্টি ডিফেমেশন লীগের জনাথন গ্রীনব্ল্যাট সিএনএনকে বলেন, শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী এবং ডান চরমপন্থিদের যেসব কথাবার্তা শুনছি, তাতে মনে হচ্ছে বুধবারের ঘটনার পর তাদের সাহস আরও বেড়েছে। মনে হচ্ছে পরিস্থিতি আরও খারাপ বই ভালো হবে বলে মনে হচ্ছে না, বলেন তিনি। বুধবার ক্যাপিটল হিলে হামলার পর ট্রাম্প তার সমর্থকদের বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। সব দিক থেকে তাদের সমালোচনা হয়। এমনকি মাইক পেন্সসহ রিপাবলিকান নেতারা তাদের কঠিন ভাষায় ওই ঘটনার নিন্দা করেন। তারপরও এসব প্রতিক্রিয়া এবং আইনি পদক্ষেপে উগ্র ডানপন্থিদের ওপর তেমন প্রভাব পড়েছে বলে মনে হচ্ছে না।

ট্রাম্পের সমর্থকদের চালানো একটি ওয়েবসাইটে তাই বলা হচ্ছে আগামী ২০ তারিখে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পই আবার শপথ নেবেন। ‘দ্যডনাল্ডডটউইন’ নামের ওয়েবসাইটে তারা বলেছে, আমরা কমিউনিস্টদের জিততে দেব না, যদি ওয়াশিংটন ডিসি জ্বালিয়ে দিয়ে মাটিয়ে মিশিয়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে। আমরা আবার ওয়াশিংটন ডিসি দখলে নেব এবং আমরা আমাদের দেশ বুঝে নেব। ইউনিভার্সিটি অব টরোন্টোর সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে গবেষণা করে সিটিজেন ল্যাব নামে একটি সংগঠন। তার গবেষক জন স্কট রেইলটন বলেন, অভিষেক অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি খুবই চিন্তিত। তার পর্যবেক্ষণ যদিও অধিকাংশ মানুষ ক্যাপিটল হিলের ঘটনা নিয়ে ক্ষুব্ধ, তারপরও কিছু কিছু গোষ্ঠী সেটাকে তাদের বিজয় হিসেবে দেখে। বুধবার ঘটনার আগেও ট্রাম্প সমর্থকদের বিক্ষোভ যে সহিংসতায় রূপ নিতে পারে তার স্পষ্ট লক্ষণ ছিল। সরকার পরিচালনা নিয়ে চিন্তা করে এমন একটি সংগঠন অ্যাডভান্স ডেমোক্র্যাসি লক্ষ্য করে ক্যাপিটল হিলের ঘটনার ছয় দিন আগে থেকে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রাম্পের পক্ষে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ছড়াছড়ি।

আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাপে রীতিমতো যুদ্ধংদেহী আবহ ছড়িয়ে দেয় ডানপন্থিরা। সেখানে এমন ঘোষণাও দেয়া হয়- যুদ্ধ শুরু (বুধবার) থেকে।

সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১ , ২৭ পৌষ ১৪২৭, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

বাইডেনের অভিষেককে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রে আরও সহিংসতার শঙ্কা

image

গত বুধবার ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প সমর্থকদের নজিরবিহীন ভয়াবহ হামলার দৃশ্য -রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার স্থাপনাসমূহে যে নজিরবিহীন অনুপ্রবেশ, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে, তার হুমকি আগে থেকেই ছিল। অনলাইনে উগ্র ডানপন্থি এবং ট্রাম্প সমর্থকেরা যেসব কথাবার্তা বলছিলেন তাতেই তা স্পষ্ট ছিল। তারা তাদের পোস্টে ‘হয় যুদ্ধ নয় ট্রাম্প’, ‘গুলি চালাতে না জানলে শিখে নিন, এখনই,’ এমনকি ‘আমরা সরকারি ভবনে ঢুকে সরকারি কর্মীদের মেরে, নিরাপত্তা কর্মীদের মেরে, ভোট পুনর্গণনা চাইব’ এসব কথাবার্তা কয়েক সপ্তাহ ধরেই লিখে আসছিল। এসব গ্রুপগুলো গৃহযুদ্ধ ছাড়ানো, আইন প্রণেতাদের হত্যা করা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করার কথা বলে আসছিল। এখন যখন তারা তাদের হুমকি বাস্তবায়ন করে ফেলেছে, তখন তা শেষ হয়ে গেছে বলে মনে করার কোন কারণ নেই বলে এক প্রতিবেদনে জানাচ্ছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

কেননা জো বাইডেনের অভিষেক অনুষ্ঠান যত ঘনিয়ে আসছে, সহিংসতার সম্ভাবনা আরও বাড়ছে বলেই মনে হচ্ছে। এন্টি ডিফেমেশন লীগের জনাথন গ্রীনব্ল্যাট সিএনএনকে বলেন, শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদী এবং ডান চরমপন্থিদের যেসব কথাবার্তা শুনছি, তাতে মনে হচ্ছে বুধবারের ঘটনার পর তাদের সাহস আরও বেড়েছে। মনে হচ্ছে পরিস্থিতি আরও খারাপ বই ভালো হবে বলে মনে হচ্ছে না, বলেন তিনি। বুধবার ক্যাপিটল হিলে হামলার পর ট্রাম্প তার সমর্থকদের বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। সব দিক থেকে তাদের সমালোচনা হয়। এমনকি মাইক পেন্সসহ রিপাবলিকান নেতারা তাদের কঠিন ভাষায় ওই ঘটনার নিন্দা করেন। তারপরও এসব প্রতিক্রিয়া এবং আইনি পদক্ষেপে উগ্র ডানপন্থিদের ওপর তেমন প্রভাব পড়েছে বলে মনে হচ্ছে না।

ট্রাম্পের সমর্থকদের চালানো একটি ওয়েবসাইটে তাই বলা হচ্ছে আগামী ২০ তারিখে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পই আবার শপথ নেবেন। ‘দ্যডনাল্ডডটউইন’ নামের ওয়েবসাইটে তারা বলেছে, আমরা কমিউনিস্টদের জিততে দেব না, যদি ওয়াশিংটন ডিসি জ্বালিয়ে দিয়ে মাটিয়ে মিশিয়ে দেয়ার প্রয়োজন পড়ে। আমরা আবার ওয়াশিংটন ডিসি দখলে নেব এবং আমরা আমাদের দেশ বুঝে নেব। ইউনিভার্সিটি অব টরোন্টোর সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে গবেষণা করে সিটিজেন ল্যাব নামে একটি সংগঠন। তার গবেষক জন স্কট রেইলটন বলেন, অভিষেক অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে তিনি খুবই চিন্তিত। তার পর্যবেক্ষণ যদিও অধিকাংশ মানুষ ক্যাপিটল হিলের ঘটনা নিয়ে ক্ষুব্ধ, তারপরও কিছু কিছু গোষ্ঠী সেটাকে তাদের বিজয় হিসেবে দেখে। বুধবার ঘটনার আগেও ট্রাম্প সমর্থকদের বিক্ষোভ যে সহিংসতায় রূপ নিতে পারে তার স্পষ্ট লক্ষণ ছিল। সরকার পরিচালনা নিয়ে চিন্তা করে এমন একটি সংগঠন অ্যাডভান্স ডেমোক্র্যাসি লক্ষ্য করে ক্যাপিটল হিলের ঘটনার ছয় দিন আগে থেকে সোশ্যাল মিডিয়া ট্রাম্পের পক্ষে ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ছড়াছড়ি।

আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাপে রীতিমতো যুদ্ধংদেহী আবহ ছড়িয়ে দেয় ডানপন্থিরা। সেখানে এমন ঘোষণাও দেয়া হয়- যুদ্ধ শুরু (বুধবার) থেকে।