বাঁধ সংস্কারে অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করুন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোমস্তাপুরে বাঁধ সংস্কারে চরম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাঁধের ওপর রোপণ করা বন বিভাগের গাছ কেটে নেয়া হয়েছে বাঁধ সংস্কারের নামে। গত রোববার প্রকাশিত সংবাদের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে গোমস্তাপুরে প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কারের জন্য ৭৯ লাখ ২৭ হাজার ৫৪৪ টাকা বাঁধ কমিটির নামে বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু কাজের শর্তানুযায়ী আড়াই মিটার দূর থেকে মাটি উত্তোলনের কথা থাকলেও তা না করে মেশিন দিয়ে কৃষিজমি থেকে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে বড় বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় জমিগুলো চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছেÑ বাঁধে বনবিভাগের রোপণকৃত বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছ কেটে ফেলেছে বাঁধ কমিটি।

অনিয়মের এমন অভিযোগ শুধু গোমস্তাপুরে নয়; সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে দৃশ্যমান হচ্ছে। বাঁধ সংস্কারের জন্য সরকারিভাবে যে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে, তা দিয়ে ভালোভাবে কাজ করলে সেগুলো টেকসই হতো। সেটা করা হচ্ছে না। উল্টো অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে। অর্থের অপচয় হচ্ছে। বৃক্ষ নিধন হচ্ছে। কৃষিজমি বিনষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক।

বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতি বছর সারাদেশের বেড়িবাঁধগুলো বিধ্বস্ত হয়। এজন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং সংস্কার বাবদ বাজেটে মোটা অঙ্কের বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে বঁাঁধ সংস্কারের ক্ষেত্রে সরকারি এ বরাদ্দের একটা বড় অংশ নয়ছয় হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতির ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বাড়ছে। যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে না এবং প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে। যেনতেন কাজ দেখিয়ে পকেট ভারি হচ্ছে ঠিকাদার, প্রকৌশলীসহ কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির। ঠিকমতো কাজ না করার ফলে বাঁধগুলো আবার ভেঙে যাচ্ছে।

অনিয়মের সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। বাঁধ সংস্কারের অব্যবস্থাপনায় চাষযোগ্য জমি অনাবাদি থাকার বিষয়টি মেনে নেয়া যায় না। চাষাবাদের প্রতিবন্ধকতাগুলো দ্রুত দূর করতে হবে। মাটি ফেলে গর্ত ভরাট করতে হবে। এজন্য স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের উদ্যোগী হতে হবে।

সোমবার, ১১ জানুয়ারী ২০২১ , ২৭ পৌষ ১৪২৭, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

বাঁধ সংস্কারে অনিয়ম-দুর্নীতি দূর করুন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে গোমস্তাপুরে বাঁধ সংস্কারে চরম অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাঁধের ওপর রোপণ করা বন বিভাগের গাছ কেটে নেয়া হয়েছে বাঁধ সংস্কারের নামে। গত রোববার প্রকাশিত সংবাদের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে গোমস্তাপুরে প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার বাঁধ সংস্কারের জন্য ৭৯ লাখ ২৭ হাজার ৫৪৪ টাকা বাঁধ কমিটির নামে বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু কাজের শর্তানুযায়ী আড়াই মিটার দূর থেকে মাটি উত্তোলনের কথা থাকলেও তা না করে মেশিন দিয়ে কৃষিজমি থেকে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে বড় বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় জমিগুলো চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অভিযোগ রয়েছেÑ বাঁধে বনবিভাগের রোপণকৃত বনজ, ফলদ ও ঔষধি গাছ কেটে ফেলেছে বাঁধ কমিটি।

অনিয়মের এমন অভিযোগ শুধু গোমস্তাপুরে নয়; সিলেট, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলে দৃশ্যমান হচ্ছে। বাঁধ সংস্কারের জন্য সরকারিভাবে যে অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে, তা দিয়ে ভালোভাবে কাজ করলে সেগুলো টেকসই হতো। সেটা করা হচ্ছে না। উল্টো অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে। অর্থের অপচয় হচ্ছে। বৃক্ষ নিধন হচ্ছে। কৃষিজমি বিনষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক।

বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রতি বছর সারাদেশের বেড়িবাঁধগুলো বিধ্বস্ত হয়। এজন্য বেড়িবাঁধ নির্মাণ এবং সংস্কার বাবদ বাজেটে মোটা অঙ্কের বরাদ্দ দেয়া হয়। তবে বঁাঁধ সংস্কারের ক্ষেত্রে সরকারি এ বরাদ্দের একটা বড় অংশ নয়ছয় হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। অনিয়ম-দুর্নীতির ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় বাড়ছে। যথাসময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে না এবং প্রকল্পের ব্যয়ও বেড়ে যাচ্ছে। যেনতেন কাজ দেখিয়ে পকেট ভারি হচ্ছে ঠিকাদার, প্রকৌশলীসহ কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির। ঠিকমতো কাজ না করার ফলে বাঁধগুলো আবার ভেঙে যাচ্ছে।

অনিয়মের সঙ্গে যারাই জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। বাঁধ সংস্কারের অব্যবস্থাপনায় চাষযোগ্য জমি অনাবাদি থাকার বিষয়টি মেনে নেয়া যায় না। চাষাবাদের প্রতিবন্ধকতাগুলো দ্রুত দূর করতে হবে। মাটি ফেলে গর্ত ভরাট করতে হবে। এজন্য স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের উদ্যোগী হতে হবে।