বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান (৫৩) আর নেই। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, পাঁচ ভাই, তিন বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মিজানুর রহমান খান করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন। করোনার নমুনা পরীক্ষায় গত ২ ডিসেম্বর পজেটিভ রিপোর্ট আসে। প্রথমে গত ৫ ডিসেম্বর তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি হন। তার শারীরিক সমস্যা বাড়লে সেখান থেকে গত ১০ ডিসেম্বর তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জাহিদ আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান গত ১০ ডিসেম্বর এই হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে কোভিড-১৯ জোনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর আবার করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলে নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। পরে তাকে সবুজ জোনে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। এতদিন তাকে অক্সিজেন দিতে হয়েছে। গত ২৮ ডিসেম্বর সিটি স্ক্যান করে দেখা যায়, তার ফুসফুসের ৯৬ শতাংশ সংক্রমিত। তিনি অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন। ৯ জানুয়ারি তার অক্সিজেনের চাহিদা বাড়তে থাকে। ওইদিন বিকেল পৌনে পাঁচটায় তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট (কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস) দেয়া হয়। তার রক্তচাপও কমে যায়। এরমধ্যেই গতকাল সোয়া পাঁচটায় হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে প্রথম আলো পরিবার গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে। একই সঙ্গে তার শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে। সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান ১৯৬৭ সালের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠির নলছিটিতে জন্মগ্রহণ করেন।
মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে শোক :
বিশিষ্ট সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় প্রেসক্লাব, এডিটরস গিল্ড, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, (ডিআরইউ), ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ডিকাব)। গতকাল পৃথক বিবৃতিতে তারা সাংবাদিকের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ পরিচালক মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিবৃতিতে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে সাংবাদিকতার পাশাপাশি মেধাবী মিজানুর রহমান খানের রচিত গ্রন্থগুলো মানুষকে সংবিধান ও সরকার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করেছে। মিজানুর রহমান খান তার সাবলীল, বিশ্লেষণী লেখনী ও কথনের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
এক শোকবার্তায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘মরহুম মিজানুর রহমান খান ছিলেন অসাধারণ মেধাবী, স্পষ্টবাদী ও সত্য সন্ধানী সাংবাদিক।
জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান এক বিবৃতিতে মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। নেতারা শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু এক শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। শোকবার্তায় বলা হয়, মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম একজন অসাধারণ সাংবাদিককে হারিয়েছে যার বিশ্লেষণী ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে প্রভাব রাখত। অন্য এক শোক বার্তায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত আলম খান তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ এবং পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীদের প্রতি সমবেদনা জানান।
মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১ , ২৮ পৌষ ১৪২৭, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান (৫৩) আর নেই। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, পাঁচ ভাই, তিন বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মিজানুর রহমান খান করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছিলেন। করোনার নমুনা পরীক্ষায় গত ২ ডিসেম্বর পজেটিভ রিপোর্ট আসে। প্রথমে গত ৫ ডিসেম্বর তিনি গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি হন। তার শারীরিক সমস্যা বাড়লে সেখান থেকে গত ১০ ডিসেম্বর তাকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।
ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক জাহিদ আহমেদ সিদ্দিকী বলেন, সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান গত ১০ ডিসেম্বর এই হাসপাতালে ভর্তি হন। তাকে কোভিড-১৯ জোনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়। এরপর ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর আবার করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলে নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। পরে তাকে সবুজ জোনে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়। এতদিন তাকে অক্সিজেন দিতে হয়েছে। গত ২৮ ডিসেম্বর সিটি স্ক্যান করে দেখা যায়, তার ফুসফুসের ৯৬ শতাংশ সংক্রমিত। তিনি অক্সিজেন সাপোর্টে ছিলেন। ৯ জানুয়ারি তার অক্সিজেনের চাহিদা বাড়তে থাকে। ওইদিন বিকেল পৌনে পাঁচটায় তাকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট (কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস) দেয়া হয়। তার রক্তচাপও কমে যায়। এরমধ্যেই গতকাল সোয়া পাঁচটায় হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে প্রথম আলো পরিবার গভীর শোক প্রকাশ করেছে এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছে। একই সঙ্গে তার শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছে। সাংবাদিক মিজানুর রহমান খান ১৯৬৭ সালের ৩১ অক্টোবর ঝালকাঠির নলছিটিতে জন্মগ্রহণ করেন।
মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে শোক :
বিশিষ্ট সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জাতীয় প্রেসক্লাব, এডিটরস গিল্ড, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, (ডিআরইউ), ডিপ্লোমেটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ডিকাব)। গতকাল পৃথক বিবৃতিতে তারা সাংবাদিকের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
তথ্য মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ পরিচালক মীর আকরাম উদ্দীন আহম্মদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিবৃতিতে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে সাংবাদিকতার পাশাপাশি মেধাবী মিজানুর রহমান খানের রচিত গ্রন্থগুলো মানুষকে সংবিধান ও সরকার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী করেছে। মিজানুর রহমান খান তার সাবলীল, বিশ্লেষণী লেখনী ও কথনের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
এক শোকবার্তায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘মরহুম মিজানুর রহমান খান ছিলেন অসাধারণ মেধাবী, স্পষ্টবাদী ও সত্য সন্ধানী সাংবাদিক।
জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান এক বিবৃতিতে মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। নেতারা শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু এক শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকার্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। শোকবার্তায় বলা হয়, মিজানুর রহমান খানের মৃত্যুতে বাংলাদেশের গণমাধ্যম একজন অসাধারণ সাংবাদিককে হারিয়েছে যার বিশ্লেষণী ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা রাষ্ট্রীয় নীতি নির্ধারণে প্রভাব রাখত। অন্য এক শোক বার্তায় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত আলম খান তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ এবং পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীদের প্রতি সমবেদনা জানান।