এলপিজি বিক্রি করতে হবে নির্ধারিত দরে

নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দেড় থেকে দুই গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি)। যে সিলিন্ডারের সরকারি মূল্য ৬০০ টাকা সেটার দাম বেসরকারি পর্যায়ে ৯৫০ থেকে ১২০০ টাকা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর যথেচ্ছাচারের শিকার হচ্ছেন ভোক্তা সাধারণ।

আবাসিক খাতেই এলপিজির ব্যবহার বেশি। আগামীতে এর ব্যবহার আরো বাড়বে। কারণ আবাসিকে প্রাকৃতিক গ্যাসের সংযোগ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দেশে এখন এলপিজির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে বছরে আমদানি ও বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন। চাহিদা ও জোগানে ভারসাম্য না থাকায় এর দাম যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আগামীতে চাহিদা বাড়লে এবং সে অনুপাতে আমদানি না বাড়লে এর দাম কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটা একটা প্রশ্ন।

বিইআরসি থেকে লাইসেন্স নেয়া এলপিজি কোম্পানি ২৭টি। এর মধ্যে গ্যাস সরবরাহ করছে ১৮টি কোম্পানি। বাকিগুলো সরবরাহ কাজ শুরু করেনি কেন, সেটা জানা দরকার। সব কোম্পানিকে সক্রিয় করা গেলে চাহিদা-সরবরাহের ফারাক কমানো যেত। সরকারিভাবে আমদানি-বিক্রি বাড়িয়েও দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা যায়। বর্তমানে মাত্র ২০ হাজার মেট্রিক টন এলপিজি সরকারিভাবে বিক্রি হয়, যা মোট চাহিদার মাত্র ২ শতাংশ।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এলপিজির মূল্যহার পুনঃনির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে। জানা গেছে, বেসরকারি কোম্পানিগুলো সরকারি কোম্পানির চেয়ে ৫৬ ভাগ বেশি দাম নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে। অযৌক্তিক দর যেন নির্ধারিত না হয় সেটা বিইআরসির গণশুনানিতে নিশ্চিত করতে হবে। সিলিন্ডারের ওপর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লিখতে বাধ্য করতে হবে। এক্ষেত্রে কারো কোন ওজর-আপত্তি থাকতে পারে না।

সব ভোক্তা যেন নির্ধারিত মূল্যে এলপিজি গ্যাস পান সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। ভোক্তা যদি নির্ধারিত দরে গ্যাস না পান তাহলে দর নির্ধারণের প্রয়োজন কী? ব্যবসায়ীরাই কি খেয়াল-খুশিমতো এর দাম নিয়ন্ত্রণ করবেন?

এলপিজি আমদানি বা বিক্রির ক্ষেত্রে পরিবহন ও বিপণন ব্যয় কীভাবে কমানো যায় সেটা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। কবে এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণ হবে, তারপর এর দাম কমবে- সেই আশায় বসে থাকলে চলবে না।

মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১ , ২৮ পৌষ ১৪২৭, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

এলপিজি বিক্রি করতে হবে নির্ধারিত দরে

নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দেড় থেকে দুই গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে লিকুইড পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি)। যে সিলিন্ডারের সরকারি মূল্য ৬০০ টাকা সেটার দাম বেসরকারি পর্যায়ে ৯৫০ থেকে ১২০০ টাকা। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর যথেচ্ছাচারের শিকার হচ্ছেন ভোক্তা সাধারণ।

আবাসিক খাতেই এলপিজির ব্যবহার বেশি। আগামীতে এর ব্যবহার আরো বাড়বে। কারণ আবাসিকে প্রাকৃতিক গ্যাসের সংযোগ স্থায়ীভাবে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দেশে এখন এলপিজির বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে বছরে আমদানি ও বিক্রি হচ্ছে প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন। চাহিদা ও জোগানে ভারসাম্য না থাকায় এর দাম যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আগামীতে চাহিদা বাড়লে এবং সে অনুপাতে আমদানি না বাড়লে এর দাম কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটা একটা প্রশ্ন।

বিইআরসি থেকে লাইসেন্স নেয়া এলপিজি কোম্পানি ২৭টি। এর মধ্যে গ্যাস সরবরাহ করছে ১৮টি কোম্পানি। বাকিগুলো সরবরাহ কাজ শুরু করেনি কেন, সেটা জানা দরকার। সব কোম্পানিকে সক্রিয় করা গেলে চাহিদা-সরবরাহের ফারাক কমানো যেত। সরকারিভাবে আমদানি-বিক্রি বাড়িয়েও দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা যায়। বর্তমানে মাত্র ২০ হাজার মেট্রিক টন এলপিজি সরকারিভাবে বিক্রি হয়, যা মোট চাহিদার মাত্র ২ শতাংশ।

বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) এলপিজির মূল্যহার পুনঃনির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে। জানা গেছে, বেসরকারি কোম্পানিগুলো সরকারি কোম্পানির চেয়ে ৫৬ ভাগ বেশি দাম নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে। অযৌক্তিক দর যেন নির্ধারিত না হয় সেটা বিইআরসির গণশুনানিতে নিশ্চিত করতে হবে। সিলিন্ডারের ওপর সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য লিখতে বাধ্য করতে হবে। এক্ষেত্রে কারো কোন ওজর-আপত্তি থাকতে পারে না।

সব ভোক্তা যেন নির্ধারিত মূল্যে এলপিজি গ্যাস পান সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। ভোক্তা যদি নির্ধারিত দরে গ্যাস না পান তাহলে দর নির্ধারণের প্রয়োজন কী? ব্যবসায়ীরাই কি খেয়াল-খুশিমতো এর দাম নিয়ন্ত্রণ করবেন?

এলপিজি আমদানি বা বিক্রির ক্ষেত্রে পরিবহন ও বিপণন ব্যয় কীভাবে কমানো যায় সেটা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। কবে এলপিজি টার্মিনাল নির্মাণ হবে, তারপর এর দাম কমবে- সেই আশায় বসে থাকলে চলবে না।