শিক্ষাদান কার্যক্রম : বিকল্প রূপরেখা

মো. ছোলজার রহমান

১৬ মার্চ ২০১৯ থেকে শিক্ষা গ্রহণ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। বিকল্প উপায় হিসেবে অনলাইন ক্লাসকে বেছে নেয়া হয়েছে। ইন্টারনেট সেবার সুবিধা, ব্যাপ্তি, মান, মূল্য, গতি, নেটওয়ার্ক ও সক্ষমতা বিচারে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই নগণ্য। আই কন্ট্যাক্ট, প্রশ্নকরণ ও প্রশ্নোত্তর, দেয় পাঠ সমাপনের বাধ্যবাধকতা, সহপাঠীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতাহীনতা ও পরীক্ষা উত্তীর্ণের দায়িত্ব না থাকায় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষার্থীকে অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করছে। ক্রমাগত বাড়ির চার দেয়ালের মধ্যে থেকে বাবা-মার একটানা পড়তে বলাটা একঘেয়েমিতে পরিণত হয়েছে। উচ্চ স্তরসমূহে কম-বেশি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশা ও বাধ্যবাধকতা শুরু হওয়ায় উচ্চশিক্ষা স্তরের শিক্ষার্থীরা কিছুটা পড়াশোনায় ফিরতে শুরু করেছে। কিছু কিছু অভিভাবক অনলাইন কোচিং ও প্রাইভেট ব্যবস্থায় বাড়তি ব্যয় গুনছেন। কোচিং ও প্রাইভেট শিক্ষাদান কার্যক্রম অনলাইনের গ-ি পেরিয়ে সরাসরি (ফেস-টু-ফেস) হতে শুরু করেছে। যানবাহনে বিধিনিষেধ তুলে নেয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই ভিড় ও অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন পুরোদমে চলছে। চলছে না কেবল শিক্ষা কার্যক্রম। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা থাকলেও তা মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর কথা শোনা যাচ্ছে। বৎসরের প্রথম দুসপ্তাহেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর পাঠ্য বই গ্রহণ সম্পন্ন হবে। তাই শিক্ষা কার্যক্রমেও সচল অবস্থা প্রবর্তন প্রয়োজন। সামাজিক দূরত্ব মেনে জানুয়ারির ১৬ তারিখ থেকে পরিকল্পিত উপায়ে শ্রেণী কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে, তার একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা হলো।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রতিটি বিদ্যালয়ে কমপক্ষে ৫টি শ্রেণী রয়েছে। কোন কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাসরুম সংখ্যা সর্বনিম্ন ৩টি রয়েছে, কোন কোনটিতে একই শ্রেণীতে একাধিক সেকশন থাকায় কার্যত শ্রেণী সংখ্যা ৫-এর বেশি রয়েছে, সবচেয়ে কমসংখ্যক শিক্ষকের প্রাথমিক বিদ্যালয়েও কমপক্ষে তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তিনটি শ্রেণী, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কমপক্ষে ৫টি শ্রেণী রয়েছে। একই শ্রেণীতে একাধিক সেকশন ও ধারা (সাইন্স, আর্টস, বাণিজ্য, কারিগরি, কৃষি) থাকায় অনেক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণী সংখ্যা ৫-এর বেশি রয়েছে। নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের সংখ্যা কমপক্ষে ৩টি এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কমপক্ষে ৫টি রয়েছে, একাধিক সেকশন ও ধারাবিশিষ্ট বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের সংখ্যা ৬ বা তার বেশি হয়ে থাকে। শ্রেণীকক্ষের ক্ষেত্রফল ও বসার ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততা ও তারতম্য যা-ই থাকুক না কেন, শিক্ষক সংখ্যা যত কমই হোক না কেন, করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্বের পরিকল্পনা করে সরাসরি শিক্ষাদান কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।

সপ্তাহে ৬ দিনের শিক্ষা কার্যক্রমে প্রতিদিন মাত্র ১টি করে শ্রেণীর শিক্ষার্থী স্কুলে উপস্থিত হবে। প্রাথমিক স্তরে প্রতিদিন একটি বিদ্যালয়ে একটি শ্রেণীর ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের ৫-৬টি ক্লাস থাকবে। একটি শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ক্লাসরুম সংখ্যা ও শিক্ষক সংখ্যার ভিত্তিতে ১০-১৫ জনের ৩/৪/৫টি ক্ষুদ্র ভাগে ভাগ করে ৩/৪/৫ জন শিক্ষক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পাঠদান করবেন যাতে একজন বিষয় শিক্ষক প্রতিটি ক্ষুদ্রভাগে একই পাঠের ক্লাস নিবেন। অর্থাৎ, ইংরেজির শিক্ষক ১ম পিরিয়ডে ৫ম শ্রেণীর একটি ভাগের শিক্ষার্থীকে জেন্ডার পড়ালে ২য় পিরিয়ডে আর একটি ভাগে, ৩য় পিরিয়ডে আর একটি ভাগে জেন্ডার পড়াবেন। এভাবে একজন বিষয় শিক্ষক ওইদিনই সব ভাগের পৃথক পৃথক ক্লাসে একই পাঠ পড়াবেন। ওই দিনের শেষ পিরিয়ডে ৩০ মিনিটের একটি এক বিষয়ের এক অধ্যায়ের ৫ বা ১০ নম্বরের পরীক্ষা গ্রহণ করবেন যাতে ৫টি আধা/অল্প বর্ণনামূলক প্রশ্ন থাকবে এবং কোন বিকল্প বা অতিরিক্ত প্রশ্ন থাকবে না। শ্রেণী ও সেকশন সংখ্যা ৫ এর বেশি না হলে ৬ষ্ঠ দিনটিতে পরীক্ষা নেয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের অধ্যায়ভিত্তিক বাড়ির কাজ দেবেন এবং এক এক সপ্তাহে এক এক শ্রেণীর পরীক্ষা গ্রহণ করবেন। শিক্ষক সংখ্যা কম হলে প্রধান শিক্ষকগণও পাঠদান করবেন অথবা রোস্টার/রুটিন পরিকল্পনা, ক্লাস মনিটরিং এবং পরীক্ষার নম্বর সংরক্ষণ করবেন।

মাধ্যমিক স্তরে বিভিন্ন শাখা ও ধারা না থাকলে কিংবা শ্রেণী ও শাখা সংখ্যা ৬ এর কম থাকলে প্রাথমিকের জন্য বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করা যাবে। শ্রেণী ও শাখা সংখ্যা ৬-এর বেশি থাকলে শ্রেণীকক্ষ সংখ্যা ও শিক্ষক সংখ্যার ভিত্তিতে প্রতিটি শ্রেণীর মোট শিক্ষার্থীকে কয়েকটি ক্ষুদ্র শাখা/ভাগে ভাগ করে সামাজিক দূরত্ব মেনে বসার ব্যবস্থা করে প্রতিদিন একটি করে শ্রেণীর জন্য ক্লাস পরিচালনা করবেন। এক্ষেত্রেও একজন বিষয় শিক্ষক একটি দিনে একই পাঠ ঐ শ্রেণীর সকল ভাগে/শাখায় প্রদান করবেন। এক্ষেত্রেও সর্বশেষ পিরিয়ডে ৩০-৪০ মিনিটের একটি লিখিত পরীক্ষা ৫-১০ নম্বরের জন্য অধ্যায়ভিত্তিক অল্প/আধা বর্ণনামূলক বিকল্প প্রশ্নবিহীন গ্রহণ করবেন, এবং এক এক সপ্তাহে এক এক বিষয়ের একটিমাত্র পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ল্যাবরেটরিতে সমস্যা সমাধানকে প্রাধান্য দিতে হবে। পরীক্ষার জন্য পাঠদান সমাপ্ত হওয়া অধ্যায়কে মনোনীত করে শিক্ষার্থীদের পূর্বের সপ্তাহে জানিয়ে দিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ/অনিবার্য বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য কারণ ও প্রমাণ ব্যতিরেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর শূন্য দিয়ে হিসাব করতে হবে।

উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য/ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের জন্য প্রতি সপ্তাহে প্রতি গ্রুপের জন্য দুই দিন করে ক্লাস রাখা সম্ভব হবে এবং প্রতিদিন সর্বাধিক ৬টি ক্লাস রাখা যাবে। প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে একটি বিষয়ের পাঠদান সমাপ্ত একটি অধ্যায়ের ১০-২০ নম্বরের একটি ১ ঘণ্টার পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে যাতে প্রচলিত বিভিন্ন দৈর্ঘ্যরে অতিরিক্ত প্রশ্নহীন ৫-১০টি প্রশ্ন থাকবে। বিজ্ঞানের ও আইসিটি বিষয়ের ব্যবহারিক বিষয়ের জন্য ল্যাবের ক্লাসকে প্রাধান্য দিতে হবে। অধ্যক্ষগণ রোস্টার/রুটিন পরিকল্পনা, ক্লাস মনিটরিং এবং পরীক্ষার নম্বর সংরক্ষণ করবেন।

[লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, ভূগোল ও পরিবেশ, সরকারি এমএম কলেজ, যশোর]

মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১ , ২৮ পৌষ ১৪২৭, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

শিক্ষাদান কার্যক্রম : বিকল্প রূপরেখা

মো. ছোলজার রহমান

১৬ মার্চ ২০১৯ থেকে শিক্ষা গ্রহণ কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। বিকল্প উপায় হিসেবে অনলাইন ক্লাসকে বেছে নেয়া হয়েছে। ইন্টারনেট সেবার সুবিধা, ব্যাপ্তি, মান, মূল্য, গতি, নেটওয়ার্ক ও সক্ষমতা বিচারে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই নগণ্য। আই কন্ট্যাক্ট, প্রশ্নকরণ ও প্রশ্নোত্তর, দেয় পাঠ সমাপনের বাধ্যবাধকতা, সহপাঠীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতাহীনতা ও পরীক্ষা উত্তীর্ণের দায়িত্ব না থাকায় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শিক্ষার্থীকে অংশগ্রহণে নিরুৎসাহিত করছে। ক্রমাগত বাড়ির চার দেয়ালের মধ্যে থেকে বাবা-মার একটানা পড়তে বলাটা একঘেয়েমিতে পরিণত হয়েছে। উচ্চ স্তরসমূহে কম-বেশি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশা ও বাধ্যবাধকতা শুরু হওয়ায় উচ্চশিক্ষা স্তরের শিক্ষার্থীরা কিছুটা পড়াশোনায় ফিরতে শুরু করেছে। কিছু কিছু অভিভাবক অনলাইন কোচিং ও প্রাইভেট ব্যবস্থায় বাড়তি ব্যয় গুনছেন। কোচিং ও প্রাইভেট শিক্ষাদান কার্যক্রম অনলাইনের গ-ি পেরিয়ে সরাসরি (ফেস-টু-ফেস) হতে শুরু করেছে। যানবাহনে বিধিনিষেধ তুলে নেয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই ভিড় ও অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন পুরোদমে চলছে। চলছে না কেবল শিক্ষা কার্যক্রম। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা থাকলেও তা মার্চ পর্যন্ত বাড়ানোর কথা শোনা যাচ্ছে। বৎসরের প্রথম দুসপ্তাহেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থীর পাঠ্য বই গ্রহণ সম্পন্ন হবে। তাই শিক্ষা কার্যক্রমেও সচল অবস্থা প্রবর্তন প্রয়োজন। সামাজিক দূরত্ব মেনে জানুয়ারির ১৬ তারিখ থেকে পরিকল্পিত উপায়ে শ্রেণী কার্যক্রম শুরু করা যেতে পারে, তার একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা হলো।

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে প্রতিটি বিদ্যালয়ে কমপক্ষে ৫টি শ্রেণী রয়েছে। কোন কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাসরুম সংখ্যা সর্বনিম্ন ৩টি রয়েছে, কোন কোনটিতে একই শ্রেণীতে একাধিক সেকশন থাকায় কার্যত শ্রেণী সংখ্যা ৫-এর বেশি রয়েছে, সবচেয়ে কমসংখ্যক শিক্ষকের প্রাথমিক বিদ্যালয়েও কমপক্ষে তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তিনটি শ্রেণী, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কমপক্ষে ৫টি শ্রেণী রয়েছে। একই শ্রেণীতে একাধিক সেকশন ও ধারা (সাইন্স, আর্টস, বাণিজ্য, কারিগরি, কৃষি) থাকায় অনেক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণী সংখ্যা ৫-এর বেশি রয়েছে। নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের সংখ্যা কমপক্ষে ৩টি এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কমপক্ষে ৫টি রয়েছে, একাধিক সেকশন ও ধারাবিশিষ্ট বিদ্যালয়ে শ্রেণীকক্ষের সংখ্যা ৬ বা তার বেশি হয়ে থাকে। শ্রেণীকক্ষের ক্ষেত্রফল ও বসার ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততা ও তারতম্য যা-ই থাকুক না কেন, শিক্ষক সংখ্যা যত কমই হোক না কেন, করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্বের পরিকল্পনা করে সরাসরি শিক্ষাদান কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে।

সপ্তাহে ৬ দিনের শিক্ষা কার্যক্রমে প্রতিদিন মাত্র ১টি করে শ্রেণীর শিক্ষার্থী স্কুলে উপস্থিত হবে। প্রাথমিক স্তরে প্রতিদিন একটি বিদ্যালয়ে একটি শ্রেণীর ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের ৫-৬টি ক্লাস থাকবে। একটি শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে ক্লাসরুম সংখ্যা ও শিক্ষক সংখ্যার ভিত্তিতে ১০-১৫ জনের ৩/৪/৫টি ক্ষুদ্র ভাগে ভাগ করে ৩/৪/৫ জন শিক্ষক ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পাঠদান করবেন যাতে একজন বিষয় শিক্ষক প্রতিটি ক্ষুদ্রভাগে একই পাঠের ক্লাস নিবেন। অর্থাৎ, ইংরেজির শিক্ষক ১ম পিরিয়ডে ৫ম শ্রেণীর একটি ভাগের শিক্ষার্থীকে জেন্ডার পড়ালে ২য় পিরিয়ডে আর একটি ভাগে, ৩য় পিরিয়ডে আর একটি ভাগে জেন্ডার পড়াবেন। এভাবে একজন বিষয় শিক্ষক ওইদিনই সব ভাগের পৃথক পৃথক ক্লাসে একই পাঠ পড়াবেন। ওই দিনের শেষ পিরিয়ডে ৩০ মিনিটের একটি এক বিষয়ের এক অধ্যায়ের ৫ বা ১০ নম্বরের পরীক্ষা গ্রহণ করবেন যাতে ৫টি আধা/অল্প বর্ণনামূলক প্রশ্ন থাকবে এবং কোন বিকল্প বা অতিরিক্ত প্রশ্ন থাকবে না। শ্রেণী ও সেকশন সংখ্যা ৫ এর বেশি না হলে ৬ষ্ঠ দিনটিতে পরীক্ষা নেয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের অধ্যায়ভিত্তিক বাড়ির কাজ দেবেন এবং এক এক সপ্তাহে এক এক শ্রেণীর পরীক্ষা গ্রহণ করবেন। শিক্ষক সংখ্যা কম হলে প্রধান শিক্ষকগণও পাঠদান করবেন অথবা রোস্টার/রুটিন পরিকল্পনা, ক্লাস মনিটরিং এবং পরীক্ষার নম্বর সংরক্ষণ করবেন।

মাধ্যমিক স্তরে বিভিন্ন শাখা ও ধারা না থাকলে কিংবা শ্রেণী ও শাখা সংখ্যা ৬ এর কম থাকলে প্রাথমিকের জন্য বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করা যাবে। শ্রেণী ও শাখা সংখ্যা ৬-এর বেশি থাকলে শ্রেণীকক্ষ সংখ্যা ও শিক্ষক সংখ্যার ভিত্তিতে প্রতিটি শ্রেণীর মোট শিক্ষার্থীকে কয়েকটি ক্ষুদ্র শাখা/ভাগে ভাগ করে সামাজিক দূরত্ব মেনে বসার ব্যবস্থা করে প্রতিদিন একটি করে শ্রেণীর জন্য ক্লাস পরিচালনা করবেন। এক্ষেত্রেও একজন বিষয় শিক্ষক একটি দিনে একই পাঠ ঐ শ্রেণীর সকল ভাগে/শাখায় প্রদান করবেন। এক্ষেত্রেও সর্বশেষ পিরিয়ডে ৩০-৪০ মিনিটের একটি লিখিত পরীক্ষা ৫-১০ নম্বরের জন্য অধ্যায়ভিত্তিক অল্প/আধা বর্ণনামূলক বিকল্প প্রশ্নবিহীন গ্রহণ করবেন, এবং এক এক সপ্তাহে এক এক বিষয়ের একটিমাত্র পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য ল্যাবরেটরিতে সমস্যা সমাধানকে প্রাধান্য দিতে হবে। পরীক্ষার জন্য পাঠদান সমাপ্ত হওয়া অধ্যায়কে মনোনীত করে শিক্ষার্থীদের পূর্বের সপ্তাহে জানিয়ে দিতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ/অনিবার্য বিশ্বাসযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য কারণ ও প্রমাণ ব্যতিরেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করলে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর শূন্য দিয়ে হিসাব করতে হবে।

উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য/ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপের জন্য প্রতি সপ্তাহে প্রতি গ্রুপের জন্য দুই দিন করে ক্লাস রাখা সম্ভব হবে এবং প্রতিদিন সর্বাধিক ৬টি ক্লাস রাখা যাবে। প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে একটি বিষয়ের পাঠদান সমাপ্ত একটি অধ্যায়ের ১০-২০ নম্বরের একটি ১ ঘণ্টার পরীক্ষা গ্রহণ করতে হবে যাতে প্রচলিত বিভিন্ন দৈর্ঘ্যরে অতিরিক্ত প্রশ্নহীন ৫-১০টি প্রশ্ন থাকবে। বিজ্ঞানের ও আইসিটি বিষয়ের ব্যবহারিক বিষয়ের জন্য ল্যাবের ক্লাসকে প্রাধান্য দিতে হবে। অধ্যক্ষগণ রোস্টার/রুটিন পরিকল্পনা, ক্লাস মনিটরিং এবং পরীক্ষার নম্বর সংরক্ষণ করবেন।

[লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, ভূগোল ও পরিবেশ, সরকারি এমএম কলেজ, যশোর]