দুবলার শুঁটকিপল্লীতে অব্যবস্থাপনা ব্যাহত মানসম্পন্ন শুঁটকি উৎপাদন

শুঁটকির ভরা মৌসুম চলছে এখন সুন্দরবনের দুবলার চরে। চলতি বছরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। সে ক্ষেত্রে এ মৌসুমে রাজস্ব ঘাটতির তেমন আশঙ্কা নেই। তবে বন-বিভাগের দাবি মাছ নেই সাগরে।

মাছ ধরা, বাছাই, গ্রেডিংসহ প্রক্রিয়াজাত করণে বর্তমানে অনেকটা ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। তবে, চর গুলোতে উন্নত পরিবেশ না থাকার পাশাপাশি নানা অব্যবস্থাপনার কারনে মানসম্পন্ন শুঁটকি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, ব্যবসায়ীদের মতে ,উন্নত মানের শুঁটকি উৎপাদন করা গেলে সরকারি রাজস্ব বহু গুনে বেড়ে যাবে এবং দুবলায় তৈরি শুঁটকি বিদেশে ও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

অপরদিকে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিতে দুবলা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্ট রেঞ্জার প্রলাদ চন্দ্র রায় জানান, সাগরে মাছ নেই, এমন কথা বললেও তা একেবারে সঠিক নয়। চলতি বছরে শুঁটকিপল্লীতে প্রায় ১৫ হাজার জেলের থাকার জন্য ৭৬৫টি ও মহাজনদের প্রায় ৪০টি বসতঘর রয়েছে এবং মৎস আহরণ কাজে ব্যবহারের জন্য প্রায় দেড় হাজার ট্রলারসহ শতাধিক নৌকার অনুমোদন দিয়েছে বনবিভাগ। এছাড়া প্রতিটি ঘর ২৭ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থ অনুসারে তৈরির নিয়ম থাকলেও বাস্তবে তাতে নানা অনিয়ম রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় দুবলার চর, মেহের আলীর চর, আলোরকোল, শেলার চর ও মাঝের কিল্লাসহ ৫-৬টি চরে কয়েক যুগ ধরে চলছে দুবলা শুঁটকিপল্লী। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ মাস চালু থাকে শুঁটকি তৈরির এ মৌসুম। এতে উপকূলীয় এলাকা খুলনা, সাতক্ষীরা, শরণখোলা, বাগেরহাট, মোংলা, রামপাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম,কক্্রবাজার, কুতুবদিয়া, বাঁশখালীসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার জেলে ও ব্যবসায়ী ওই সকল চরে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

শুঁটকিপল্লীর জেলে, মহাজনসহ বনরক্ষীদের কয়েকজন বলেন, দুবলায় কর্মরত বন- কর্মকর্তা প্রলাদ চন্দ্র রায় জেলে ও মহাজনদের নিকট থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে নানাভাবে অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। এমনকি সুন্দরবনের কোন বনজ সম্পদ ব্যাবহারের নিয়ম না থাকলেও অস্থায়ী বসতি স্থাপনের ক্ষেত্রে তা ভঙ্গ করেছেন জেলে ও তাদের মহাজনরা।

জেলেপল্লীতে অবস্থানরত কয়েক হাজার জেলে তাদের দৈনন্দিন রান্না-বান্নার কাজে বনের নানা প্রজাতির গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন। যার ফলে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সুন্দরবন। সরকারি রাজস্ব ছাড়াও ব্যবসার তহবিল অনুসারে ৮-১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত গুনতে হয় ব্যাবসায়ীদের। এছাড়া প্রতিটি ট্রলার থেকে ১৪-১৫ হাজার টাকা আদায় করলেও রশিদ দেন (সিটি কাটেন) মাত্র ৫-৬ হাজার টাকার। এছাড়া জেলে ও তাদের মহাজনদের কাছ থেকে বিভিন্ন কায়দায় আদায়কৃত কোন টাকা পয়সার রশিদ দেয় না দুবলার (ওসি) প্রলাদ।

এ বিষয়ে দুবলা টহল ফাঁড়ির (ইনচার্জ) প্রলাদ চন্দ্র রায় কোনো জবাব না দিয়ে বলেন, আপনারা শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তার (এসিএফ) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি সব কিছুই জানেন।

image
আরও খবর
টঙ্গীতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভে পুলিশের লাঠি : আহত ৩
কাঁঠালিয়ায় স্কুল ও মাদ্রাসার জমি দখল করে বিএনপি নেতার বাগান-খামার
ময়মনসিংহে মাদকাসক্ত শনাক্তে ডোপ টেস্ট শুরু
কর্ণফুলী নদী থেকে নারীর দেহ উদ্ধার
ডুলাহাজারা সাফারিতে ডেরা গেড়েছে ২৩ বন্য হাতি : আতঙ্ক
করিমগগঞ্জে দুটি তক্ষকসহ আটক ১
ভেজাল খেজুরের গুড়ে বাজার সয়লাব হুমকিতে জনস্বাস্থ্য
ঈশ্বরদীতে করোনাকালে ৩৯৫ মাদক মামলা আসামি ৪৬৫
মহেশখালীতে পানচাষিকে কুপিয়ে হত্যা
চান্দিনা ও গাংনীতে সহিংসতা : আহত ২৫
বোরো মৌসুমের শুরুতেই শ্রমিক সংকট : চাষাবাদ ব্যাহতের আশংঙ্কা
ইয়াবাসহ ধৃত এক প্রতিনিধি, বান্দরবান
গোপালগঞ্জে দুটি ইট ভাটা গুঁড়াল প্রশাসন

বুধবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২১ , ২৯ পৌষ ১৪২৭, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২

দুবলার শুঁটকিপল্লীতে অব্যবস্থাপনা ব্যাহত মানসম্পন্ন শুঁটকি উৎপাদন

এমদাদুল হক শামীম, শরণখোলা (বাগেরহাট)

image

শুঁটকির ভরা মৌসুম চলছে এখন সুন্দরবনের দুবলার চরে। চলতি বছরে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে প্রচুর বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। সে ক্ষেত্রে এ মৌসুমে রাজস্ব ঘাটতির তেমন আশঙ্কা নেই। তবে বন-বিভাগের দাবি মাছ নেই সাগরে।

মাছ ধরা, বাছাই, গ্রেডিংসহ প্রক্রিয়াজাত করণে বর্তমানে অনেকটা ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা। তবে, চর গুলোতে উন্নত পরিবেশ না থাকার পাশাপাশি নানা অব্যবস্থাপনার কারনে মানসম্পন্ন শুঁটকি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে, ব্যবসায়ীদের মতে ,উন্নত মানের শুঁটকি উৎপাদন করা গেলে সরকারি রাজস্ব বহু গুনে বেড়ে যাবে এবং দুবলায় তৈরি শুঁটকি বিদেশে ও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।

অপরদিকে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিতে দুবলা টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফরেস্ট রেঞ্জার প্রলাদ চন্দ্র রায় জানান, সাগরে মাছ নেই, এমন কথা বললেও তা একেবারে সঠিক নয়। চলতি বছরে শুঁটকিপল্লীতে প্রায় ১৫ হাজার জেলের থাকার জন্য ৭৬৫টি ও মহাজনদের প্রায় ৪০টি বসতঘর রয়েছে এবং মৎস আহরণ কাজে ব্যবহারের জন্য প্রায় দেড় হাজার ট্রলারসহ শতাধিক নৌকার অনুমোদন দিয়েছে বনবিভাগ। এছাড়া প্রতিটি ঘর ২৭ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থ অনুসারে তৈরির নিয়ম থাকলেও বাস্তবে তাতে নানা অনিয়ম রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় দুবলার চর, মেহের আলীর চর, আলোরকোল, শেলার চর ও মাঝের কিল্লাসহ ৫-৬টি চরে কয়েক যুগ ধরে চলছে দুবলা শুঁটকিপল্লী। প্রতি বছর অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ মাস চালু থাকে শুঁটকি তৈরির এ মৌসুম। এতে উপকূলীয় এলাকা খুলনা, সাতক্ষীরা, শরণখোলা, বাগেরহাট, মোংলা, রামপাল, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম,কক্্রবাজার, কুতুবদিয়া, বাঁশখালীসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েক হাজার জেলে ও ব্যবসায়ী ওই সকল চরে শুঁটকি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

শুঁটকিপল্লীর জেলে, মহাজনসহ বনরক্ষীদের কয়েকজন বলেন, দুবলায় কর্মরত বন- কর্মকর্তা প্রলাদ চন্দ্র রায় জেলে ও মহাজনদের নিকট থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে নানাভাবে অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি রাজস্ব কমানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। এমনকি সুন্দরবনের কোন বনজ সম্পদ ব্যাবহারের নিয়ম না থাকলেও অস্থায়ী বসতি স্থাপনের ক্ষেত্রে তা ভঙ্গ করেছেন জেলে ও তাদের মহাজনরা।

জেলেপল্লীতে অবস্থানরত কয়েক হাজার জেলে তাদের দৈনন্দিন রান্না-বান্নার কাজে বনের নানা প্রজাতির গাছ জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছেন। যার ফলে প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সুন্দরবন। সরকারি রাজস্ব ছাড়াও ব্যবসার তহবিল অনুসারে ৮-১০ হাজার টাকা অতিরিক্ত গুনতে হয় ব্যাবসায়ীদের। এছাড়া প্রতিটি ট্রলার থেকে ১৪-১৫ হাজার টাকা আদায় করলেও রশিদ দেন (সিটি কাটেন) মাত্র ৫-৬ হাজার টাকার। এছাড়া জেলে ও তাদের মহাজনদের কাছ থেকে বিভিন্ন কায়দায় আদায়কৃত কোন টাকা পয়সার রশিদ দেয় না দুবলার (ওসি) প্রলাদ।

এ বিষয়ে দুবলা টহল ফাঁড়ির (ইনচার্জ) প্রলাদ চন্দ্র রায় কোনো জবাব না দিয়ে বলেন, আপনারা শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তার (এসিএফ) সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি সব কিছুই জানেন।