শীতজনিত কারণে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে বাড়তে শুরু করেছে শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর চাপ। মেহেরপুর ২৫০ শয্যার হাসপাতালের বহির্বিভাগে এখন রোগীর চাপ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালটিতে ভর্তি রোগী ও আউটডোরে চিকিৎসা নেয়া ৩৫ শতাংশই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। যতই বাড়তে শুরু করেছে শীতের সময়, ততই হাসপাতালে বাড়ছে শ্বাসজনিত রোগীর চাপ। অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অ্যালার্জি, সর্দি-কাশি যেন আঁকড়ে ধরেছে মানুষকে।
যদিও শীতের তীব্রতা এখন কম তারপরও প্রতিদিনিই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। আগে দৈনিক ৩০-৪০ জন সেবা নিলেও গত কিছুদিন ধরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০-২০০ জনে। আর হাসপাতালটিতে ভর্তি থাকা রোগীর ৩৫ শতাংশই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। আর গত এক সপ্তাহে হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি হয়েছে ৯৮ জন ঠা-াজনিত সমস্যা নিয়ে। এছাড়াও প্রতিদিন গড়ে ৩০-৩৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি যাচ্ছে ২০-২৫ জন। বর্তমানে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১০ বেডের বিপরীতে ৩২ জন, পুরুষ ও শিশু ওয়ার্ডে ৪০ বেডের বিপরীতে ৯৮ জন মহিলা ও গাইনি ওয়ার্ডে ৪০ বেডের বিপরীতে ৮৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছে। নতুন রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। তাই শীতে বাড়তি সতর্কতারও পরামর্শ চিকিৎসকদের।
এদিকে ১০০ শয্যার হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নিত করার বয়স হয়েছে প্রায় ১ যুগেরও বেশি। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল ও সরঞ্জাম এখনো পৌঁছায়নি হাসপাতালে। এতে রোগীর সংখ্যা যে হারে বাড়ছে তাতে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা। অন্যদিকে নিচের পুরুষ ওয়ার্ডটি করোনা ওয়ার্ড করায় পুরুষ রোগীদের শিফট করা হয়েছে শিশু ওয়ার্ডে এতে রোগীর চাপে পা ফেলার জায়গা নেই সেখানে।
জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আশীষ কুমার দেবনাথ জানান, কদিন আগেও হাসপাতালে রোগীর চাপ কম ছিল। কিন্তু দুয়েকদিন ধরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আবহাওয়াজনিত কারণে মানুষরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালের কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. মাহবুবা তাজমিলা জানান, ঠা-াজনিত সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, এলার্জি, একিউট ব্রঙ্ক্রকিউলাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগের প্রকোপ এখন বেশি। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুরা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মকলেছুর রহমান জানান, বর্তমানে হাসপাতালে রোগীর চাপ একটু বেশি। প্রতিবছরই এই সময়টাতে মানুষ বিভিন্ন রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। আমাদের জনবল সঙ্কট, তারপরও চেষ্টা করছি, যাতে রোগীরা সঠিক সেবা পাই।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে সিনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, শিশু, সার্জারি, কার্ডিওলজি, জুনিয়র অর্থ সার্জারি, চক্ষু, গাইনি, এনেসথেসিয়া, প্যাথলোজি, রেডিওলজি, চর্ম ও যৌন, আরএমও, রেডিওলজিস্ট, প্যাথলোজিস্ট, মেডিকেল অফিসারসহ অন্যান্য পদে ৪২টি সৃষ্ট পদ থাকলেও আছে মাত্র ১৭ জন। ফাঁকা রয়েছে ২৫টি পদ। এদের মধ্যে ১১ জন মেডিকেল অফিসারের মধ্যে রয়েছে মাত্র ২ জন।
সঙ্কট আর সমস্যা নিয়েই হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা চালু রাখা হয়েছে। তবে জনবল কম থাকলেও রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি।
বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২১ , ৩০ পৌষ ১৪২৭, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪২
প্রতিনিধি, মেহেরপুর
শীতজনিত কারণে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে বাড়তে শুরু করেছে শ্বাসকষ্টজনিত রোগীর চাপ। মেহেরপুর ২৫০ শয্যার হাসপাতালের বহির্বিভাগে এখন রোগীর চাপ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। কর্তৃপক্ষ বলছে, হাসপাতালটিতে ভর্তি রোগী ও আউটডোরে চিকিৎসা নেয়া ৩৫ শতাংশই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। যতই বাড়তে শুরু করেছে শীতের সময়, ততই হাসপাতালে বাড়ছে শ্বাসজনিত রোগীর চাপ। অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অ্যালার্জি, সর্দি-কাশি যেন আঁকড়ে ধরেছে মানুষকে।
যদিও শীতের তীব্রতা এখন কম তারপরও প্রতিদিনিই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। আগে দৈনিক ৩০-৪০ জন সেবা নিলেও গত কিছুদিন ধরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫০-২০০ জনে। আর হাসপাতালটিতে ভর্তি থাকা রোগীর ৩৫ শতাংশই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত। আর গত এক সপ্তাহে হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি হয়েছে ৯৮ জন ঠা-াজনিত সমস্যা নিয়ে। এছাড়াও প্রতিদিন গড়ে ৩০-৩৫ জন নতুন রোগী ভর্তি হচ্ছে এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি যাচ্ছে ২০-২৫ জন। বর্তমানে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ১০ বেডের বিপরীতে ৩২ জন, পুরুষ ও শিশু ওয়ার্ডে ৪০ বেডের বিপরীতে ৯৮ জন মহিলা ও গাইনি ওয়ার্ডে ৪০ বেডের বিপরীতে ৮৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছে। নতুন রোগীদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু ও বৃদ্ধ। তাই শীতে বাড়তি সতর্কতারও পরামর্শ চিকিৎসকদের।
এদিকে ১০০ শয্যার হাসপাতালকে ২৫০ শয্যায় উন্নিত করার বয়স হয়েছে প্রায় ১ যুগেরও বেশি। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল ও সরঞ্জাম এখনো পৌঁছায়নি হাসপাতালে। এতে রোগীর সংখ্যা যে হারে বাড়ছে তাতে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা। অন্যদিকে নিচের পুরুষ ওয়ার্ডটি করোনা ওয়ার্ড করায় পুরুষ রোগীদের শিফট করা হয়েছে শিশু ওয়ার্ডে এতে রোগীর চাপে পা ফেলার জায়গা নেই সেখানে।
জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আশীষ কুমার দেবনাথ জানান, কদিন আগেও হাসপাতালে রোগীর চাপ কম ছিল। কিন্তু দুয়েকদিন ধরে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আবহাওয়াজনিত কারণে মানুষরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালের কনসালটেন্ট (শিশু) ডা. মাহবুবা তাজমিলা জানান, ঠা-াজনিত সর্দি-কাশি, ডায়রিয়া, এলার্জি, একিউট ব্রঙ্ক্রকিউলাইটিস, নিউমোনিয়া ইত্যাদি রোগের প্রকোপ এখন বেশি। বিশেষ করে বয়স্ক ও শিশুরা এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মকলেছুর রহমান জানান, বর্তমানে হাসপাতালে রোগীর চাপ একটু বেশি। প্রতিবছরই এই সময়টাতে মানুষ বিভিন্ন রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। আমাদের জনবল সঙ্কট, তারপরও চেষ্টা করছি, যাতে রোগীরা সঠিক সেবা পাই।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রফিকুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে সিনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, শিশু, সার্জারি, কার্ডিওলজি, জুনিয়র অর্থ সার্জারি, চক্ষু, গাইনি, এনেসথেসিয়া, প্যাথলোজি, রেডিওলজি, চর্ম ও যৌন, আরএমও, রেডিওলজিস্ট, প্যাথলোজিস্ট, মেডিকেল অফিসারসহ অন্যান্য পদে ৪২টি সৃষ্ট পদ থাকলেও আছে মাত্র ১৭ জন। ফাঁকা রয়েছে ২৫টি পদ। এদের মধ্যে ১১ জন মেডিকেল অফিসারের মধ্যে রয়েছে মাত্র ২ জন।
সঙ্কট আর সমস্যা নিয়েই হাসপাতালটিতে চিকিৎসা সেবা চালু রাখা হয়েছে। তবে জনবল কম থাকলেও রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছি।