ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে বসবাসরত প্যালেস্টাইনিদের ওপর জাতিগতভাবে বৈষম্যমূলক শাসনব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে খোদ ইসরায়েলেরই শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা বে’তসেলেম।
তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, এসব জায়গায় ইসরায়েলিরা পূর্ণ অধিকার ভোগ করে। আর ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণাধীন চারটি এলাকায় ফিলিস্তিনিদের জন্য আরেক পরিস্থিতি। তাদের অবস্থান সেসব জায়গায় সবসময়ই ইসরায়েলিদের নিচে।
তবে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে উল্লিখিত জাতিগত বৈষম্যের ধারণাটি জোরালোভাবে নাকচ করে দিয়েছে ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও সমর্থকরা।
বে’তসেলেমের ডিরেক্টর হাগাই এল-আদ বলেন, ‘কথা হচ্ছে জর্ডান নদী থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত এলাকা নিয়ে। এখানে গণতন্ত্র ও দখল নয়, প্যালেস্টাইনিদের ওপর জাতিগত বৈষম্য চলছে।’
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরো এলাকাজুড়ে ইহুদি আধিপত্য প্রতিষ্ঠা ও সংহত করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে ইসরায়েল।
‘সে লক্ষ্যেই ওই এলাকাটিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছে ইসরায়েল। সেখানে একেক অংশে প্যালেস্টাইনিদের অধিকার একেকরকম, তবে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই তা ইসরায়েলিদের তুলনায় নিচু স্তরে।’
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিস্থিতিতে অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যেমন আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার।
ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন চারটি এলাকা হচ্ছে দখলকৃত পশ্চিম তীর যেখানে প্যালেস্টাইনিরা বেশ কয়েকটি ছিটমহলে কঠোর সামরিক শাসনের মধ্যে বাস করে।
দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম যেখানে প্যালেস্টাইনিদের স্থায়ী বাসিন্দা বলা হলেও তাদের নাগরিক মর্যাদা নেই। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা যেটা ইসরায়েল বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ইসরায়েলের সীমানার মধ্যকার এলাকা।
ইসরায়েল বলার চেষ্টা করে তারা গণতান্ত্রিক দেশ এবং তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে যে প্যালেস্টাইনিরা বাস করে তারা সমান অধিকার ভোগ করে। ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার মোট জন সংখ্যার ২০ শতাংশ প্যালেস্টাইনি।
কিন্তু বাস্তবে এসব প্যালেস্টাইনিদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আলজাজিরার সংবাদে জানা যায়, ইসরায়েলের এমন অন্তত ৬০টি আইন আছে যার মাধ্যমে আবাসন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়।
চার ক্ষেত্রে ইসরায়েল তাদের আধিপত্য কায়েম করছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয় - চলাচলের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, অভিবাসন ও অধিগ্রহণ - তারা ইসরায়েলিদের জন্য প্যালেস্টাইনিদের কাছ থেকে জমি কেড়ে নিয়ে তাদের ছিটমহলের মধ্যে অবরুদ্ধ করেছে।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের কট্টর সমালোচকরা সবসময়ই জাতিগত বৈষম্য শব্দ দুটি ব্যবহার করেছে প্যালেস্টাইনিদের সঙ্গে ইসরায়েলিরা যা করছে সেটা বোঝাতে। ইংরেজি যা অ্যাপার্থেইড - ব্যবহৃত হতো দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ শাসনকে বোঝাতে যার অধীনে কালোরা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হতো।
শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২১ , ১ মাঘ ১৪২৭, ১ জমাদিউস সানি ১৪৪২
ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে বসবাসরত প্যালেস্টাইনিদের ওপর জাতিগতভাবে বৈষম্যমূলক শাসনব্যবস্থা কায়েম করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে খোদ ইসরায়েলেরই শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থা বে’তসেলেম।
তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেছে, এসব জায়গায় ইসরায়েলিরা পূর্ণ অধিকার ভোগ করে। আর ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণাধীন চারটি এলাকায় ফিলিস্তিনিদের জন্য আরেক পরিস্থিতি। তাদের অবস্থান সেসব জায়গায় সবসময়ই ইসরায়েলিদের নিচে।
তবে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে উল্লিখিত জাতিগত বৈষম্যের ধারণাটি জোরালোভাবে নাকচ করে দিয়েছে ইসরায়েলের ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও সমর্থকরা।
বে’তসেলেমের ডিরেক্টর হাগাই এল-আদ বলেন, ‘কথা হচ্ছে জর্ডান নদী থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত এলাকা নিয়ে। এখানে গণতন্ত্র ও দখল নয়, প্যালেস্টাইনিদের ওপর জাতিগত বৈষম্য চলছে।’
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরো এলাকাজুড়ে ইহুদি আধিপত্য প্রতিষ্ঠা ও সংহত করার লক্ষ্যে এগোচ্ছে ইসরায়েল।
‘সে লক্ষ্যেই ওই এলাকাটিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করেছে ইসরায়েল। সেখানে একেক অংশে প্যালেস্টাইনিদের অধিকার একেকরকম, তবে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই তা ইসরায়েলিদের তুলনায় নিচু স্তরে।’
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, এই পরিস্থিতিতে অনেক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যেমন আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার।
ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন চারটি এলাকা হচ্ছে দখলকৃত পশ্চিম তীর যেখানে প্যালেস্টাইনিরা বেশ কয়েকটি ছিটমহলে কঠোর সামরিক শাসনের মধ্যে বাস করে।
দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেম যেখানে প্যালেস্টাইনিদের স্থায়ী বাসিন্দা বলা হলেও তাদের নাগরিক মর্যাদা নেই। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা যেটা ইসরায়েল বাইরে থেকে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ইসরায়েলের সীমানার মধ্যকার এলাকা।
ইসরায়েল বলার চেষ্টা করে তারা গণতান্ত্রিক দেশ এবং তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে যে প্যালেস্টাইনিরা বাস করে তারা সমান অধিকার ভোগ করে। ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকার মোট জন সংখ্যার ২০ শতাংশ প্যালেস্টাইনি।
কিন্তু বাস্তবে এসব প্যালেস্টাইনিদের দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
আলজাজিরার সংবাদে জানা যায়, ইসরায়েলের এমন অন্তত ৬০টি আইন আছে যার মাধ্যমে আবাসন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়।
চার ক্ষেত্রে ইসরায়েল তাদের আধিপত্য কায়েম করছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয় - চলাচলের স্বাধীনতা, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ, অভিবাসন ও অধিগ্রহণ - তারা ইসরায়েলিদের জন্য প্যালেস্টাইনিদের কাছ থেকে জমি কেড়ে নিয়ে তাদের ছিটমহলের মধ্যে অবরুদ্ধ করেছে।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েলের কট্টর সমালোচকরা সবসময়ই জাতিগত বৈষম্য শব্দ দুটি ব্যবহার করেছে প্যালেস্টাইনিদের সঙ্গে ইসরায়েলিরা যা করছে সেটা বোঝাতে। ইংরেজি যা অ্যাপার্থেইড - ব্যবহৃত হতো দক্ষিণ আফ্রিকায় শ্বেতাঙ্গ শাসনকে বোঝাতে যার অধীনে কালোরা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হতো।