এক হাজার ৫৭ কোটি টাকা জব্দ
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদারে (পিকে হালদার) অনিয়মে ৬২ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইতোমধ্যে তাদের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গতকাল দুদক সচিব মু. আনোয়ারুল হাওলাদার বলেন, হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের অনুসন্ধানে এখন পর্যন্ত পিকে হালদারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতায় এই ৬২ জনের নাম পেয়েছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। দুদকের উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান এই অনুসন্ধান করছেন।
দুদক সচিব বলেন, আসলে পিকে হালদারের বিষয়টি এখন অনেক বড়। দেখা যাচ্ছে, তার বিভিন্নজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে। আমরা ইতোমধ্যে অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। মোটামুটি জানা গেছে ৬২ ব্যক্তির সঙ্গে তার লিঙ্ক বা সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এই ৬২ জনের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা দুদক জব্দ করেছে বলে জানান আনোয়ারুল হাওলাদার। গত বছরের জানুয়ারিতে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করে দুদক। এই মামলাটির তদন্ত করছেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিন।
এই মামলার তদন্তে নেমে গত বুধবার পিকে হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেপ্তার করে তিনদিনের রিমান্ডে পেয়েছে দুদক। এক প্রশ্নে দুদক সচিব আনোয়ারুল হাওরাদার বলেন, অবন্তিকা বড়ালকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। হয়তো পরে জানা যাবে পিকে হালদারের সহযোগিতায় তার কী পরিমাণ অবৈধ সম্পদ রয়েছে। এর আগে মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় গত ৪ জানুয়ারি পিকে হালদারের আরেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী শংখ ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। শংখ ব্যাপারীর নামে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া যায়, যা পিকে হালদারের অর্থায়নে কেনা হয়েছে বলে দুদকের এক কর্মকর্তা জানান।
দুদক সচিব মু আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও বাড়ির মালিক বাংলাদেশিদের তালিকা চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। উচ্চ আদালত নির্দেশনা দেয়ার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সচিবের কাছে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি দুদক মহাপরিচালক (মানিলন্ডারিং) আ ন ম আল ফিরোজের স্বাক্ষরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মাসুদ বিন মোমেনের কাছে চিঠিটি পাঠানো হয়। চিঠি পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব আনোয়ার বলেন, কানাডা, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে যারা অবৈধ সম্পদের মাধ্যমে বাড়ি-ঘর করেছে বলে জানা গেছে, তাদের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা তাদের স্ব স্ব এজেন্সির মাধ্যমে জেনে আমাদের অবহিত করবেন। এজন্য তাদের (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) চিঠি দেয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তথ্যগুলো দুদককে সরবরাহ করতে মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।
শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২১ , ১ মাঘ ১৪২৭, ১ জমাদিউস সানি ১৪৪২
এক হাজার ৫৭ কোটি টাকা জব্দ
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে বিদেশে পালিয়ে থাকা প্রশান্ত কুমার হালদারে (পিকে হালদার) অনিয়মে ৬২ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ইতোমধ্যে তাদের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। গতকাল দুদক সচিব মু. আনোয়ারুল হাওলাদার বলেন, হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের অনুসন্ধানে এখন পর্যন্ত পিকে হালদারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতায় এই ৬২ জনের নাম পেয়েছেন অনুসন্ধান কর্মকর্তা। দুদকের উপপরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান এই অনুসন্ধান করছেন।
দুদক সচিব বলেন, আসলে পিকে হালদারের বিষয়টি এখন অনেক বড়। দেখা যাচ্ছে, তার বিভিন্নজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা আছে। আমরা ইতোমধ্যে অনেককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। মোটামুটি জানা গেছে ৬২ ব্যক্তির সঙ্গে তার লিঙ্ক বা সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। এই ৬২ জনের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা দুদক জব্দ করেছে বলে জানান আনোয়ারুল হাওলাদার। গত বছরের জানুয়ারিতে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে ২৭৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগে একটি মামলা করে দুদক। এই মামলাটির তদন্ত করছেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিন।
এই মামলার তদন্তে নেমে গত বুধবার পিকে হালদারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী অবন্তিকা বড়ালকে গ্রেপ্তার করে তিনদিনের রিমান্ডে পেয়েছে দুদক। এক প্রশ্নে দুদক সচিব আনোয়ারুল হাওরাদার বলেন, অবন্তিকা বড়ালকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। হয়তো পরে জানা যাবে পিকে হালদারের সহযোগিতায় তার কী পরিমাণ অবৈধ সম্পদ রয়েছে। এর আগে মামলার তদন্তে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় গত ৪ জানুয়ারি পিকে হালদারের আরেক ঘনিষ্ঠ সহযোগী শংখ ব্যাপারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। শংখ ব্যাপারীর নামে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সন্ধান পাওয়া যায়, যা পিকে হালদারের অর্থায়নে কেনা হয়েছে বলে দুদকের এক কর্মকর্তা জানান।
দুদক সচিব মু আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানান, কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও বাড়ির মালিক বাংলাদেশিদের তালিকা চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। উচ্চ আদালত নির্দেশনা দেয়ার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সচিবের কাছে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে। গত ১১ জানুয়ারি দুদক মহাপরিচালক (মানিলন্ডারিং) আ ন ম আল ফিরোজের স্বাক্ষরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মাসুদ বিন মোমেনের কাছে চিঠিটি পাঠানো হয়। চিঠি পাঠানোর বিষয়ে জানতে চাইলে দুদক সচিব আনোয়ার বলেন, কানাডা, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে যারা অবৈধ সম্পদের মাধ্যমে বাড়ি-ঘর করেছে বলে জানা গেছে, তাদের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা তাদের স্ব স্ব এজেন্সির মাধ্যমে জেনে আমাদের অবহিত করবেন। এজন্য তাদের (পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়) চিঠি দেয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তথ্যগুলো দুদককে সরবরাহ করতে মন্ত্রণালয়ের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।