নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও সন্ত্রাসীদের রুখতে সাড়ে দশ হাজার গাবের লাঠি ও সাড়ে দশ হাজার ঝাড়ু প্রস্তুত করেছে ভোটাররা।
আগামী শনিবার বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে বানচাল ও প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নোয়াখালী ও ফেনী থেকে অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে এবং নির্বাচনের দিন কেন্দ্র দখল ও বানচাল করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে বিভিন্ন সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা তার কর্মী সমর্থকদের প্রস্তুত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রত্যেক পুরুষ ভোটার একটি করে গাবের লাঠি এবং মহিলা ভোটার ১টি করে ঝাড়ু ও কাড়ুয়া জুতা (পুরাতন ছেড়া জুতা) সংগ্রহ করে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ফেনী বা কবিরহাট থেকে কোন সন্ত্রাসী এসে ভোটকে বানচাল করার চেষ্টা করলে বা এলাকার কোন সন্ত্রাসী ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করলে তাদের ধরে গিরার নিছে ছেচি হালাইতো অইবে (ছেচি ফেলতে হবে) তার এ আহ্বানে বসুরহাট পৌর এলাকার ১০ হাজার ৬২১ জন ভোটার প্রত্যেকে ১টি করে গাবের লাঠি তৈরি করে ফেলছে এবং মহিলা ১০ হাজার ৪৯৪ ভোটার বাজার থেকে ১টি করে ঝাড়ু সংগ্রহ করছে।
পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের প্রবীণ ভোটার আবদুল আলিম (৯১) বলেন, কাদের মির্জার ভোটে কেহ চুদুর বুদুর করলে গাবের লাডি দি হিডি আড্ডি গুড্ডি ভাঙি হালাইয়ুম। কাদের মির্জা কইছে ভোট দিন চলি যাইতো আমরা ভোট গনার আগে যাইতাম নয়। ভোট গনি মির্জা কাদেরের গলায় জয়ের মালা হরাই রাইতে আইউম। এর হর শেখ হাসিনার লই দু’ই রাকাত নফল নামাজ হড়ি দোয়া করিয়ুম। এ সময় পাশে থাকা ৩০/৩৫ জন নারী পুরুষ জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে তাকে সমর্থন জানান।
নারী ভোটার আনজুমান আরা (৪৫) জানান, মির্জা কাদেরের ডাকে ভোট কেন্দ্রের পাশে ঝাড়ু নিয়ে বসে থাকাব, যদি সন্ত্রাসী আসে তাদের বাপের নাম ভুলিয়ে দেব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, গাবের লাঠি তৈরি ও ঝাড়ুর কথা তারাও শুনেছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা পুনরায় বলেছেন, শনিবার অনুষ্ঠিত বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে যদি রক্ত ঝরে, যদি কোন মায়ের বুক খালি হয়, যদি আমার কোন কর্মীর বাড়িঘরে আগুন লাগানো হয় তাহলে নোয়াখালীর ডিসি, এসপি ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এর দায়দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, ভোট ডাকাতির জন্য, ভোট বানচালের জন্য ভোটে অনিয়ম করার কোন চেষ্টা করলে কোম্পানীগঞ্জের মাটি থেকে আপনাদের ফিরে যেতে দেয়া হবে না।
প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের প্রতি অনুরোধ করে বলেন, আমি ভোটে কারচুপি করব না কাউকে করতেও দেব না। আমি যদি কারচুপি করি ওই দিনই যেন আমার মৃত্যু হয়। তিনি বলেন, দয়া করে নির্বাচনে থাকবেন। ১২টার জন্য বয়কট করে চলে যাবেন না, জয়লাভ করলে ভালো ভোট, হেরে যাওয়ার আশঙ্কা দেখলে বর্জন এ প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।
বসুরহাট পৌরসভার আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জার ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় যথেষ্ট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে তিনি নিজে বা তার নেতাকর্মীদের উদগ্রীব হওয়ার কোন কারণ নেই।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানান, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা তার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করার পর থেকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তার প্রতি নজর রাখা হচ্ছে, এমনকি তার বাসা ও অফিস পুলিশ পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, শুধু মির্জা আবদুল কাদের নয়, অন্য মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিরাপত্তায়ও পুলিশ যথেষ্ট সজাগ রয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেছেন।
শুক্রবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২১ , ১ মাঘ ১৪২৭, ১ জমাদিউস সানি ১৪৪২
প্রতিনিধি, নোয়াখালী
নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও সন্ত্রাসীদের রুখতে সাড়ে দশ হাজার গাবের লাঠি ও সাড়ে দশ হাজার ঝাড়ু প্রস্তুত করেছে ভোটাররা।
আগামী শনিবার বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে বানচাল ও প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য নোয়াখালী ও ফেনী থেকে অস্ত্র সরবরাহ করা হচ্ছে এবং নির্বাচনের দিন কেন্দ্র দখল ও বানচাল করার ষড়যন্ত্র চলছে বলে বিভিন্ন সভায় আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা তার কর্মী সমর্থকদের প্রস্তুত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। প্রত্যেক পুরুষ ভোটার একটি করে গাবের লাঠি এবং মহিলা ভোটার ১টি করে ঝাড়ু ও কাড়ুয়া জুতা (পুরাতন ছেড়া জুতা) সংগ্রহ করে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ফেনী বা কবিরহাট থেকে কোন সন্ত্রাসী এসে ভোটকে বানচাল করার চেষ্টা করলে বা এলাকার কোন সন্ত্রাসী ভোটকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করলে তাদের ধরে গিরার নিছে ছেচি হালাইতো অইবে (ছেচি ফেলতে হবে) তার এ আহ্বানে বসুরহাট পৌর এলাকার ১০ হাজার ৬২১ জন ভোটার প্রত্যেকে ১টি করে গাবের লাঠি তৈরি করে ফেলছে এবং মহিলা ১০ হাজার ৪৯৪ ভোটার বাজার থেকে ১টি করে ঝাড়ু সংগ্রহ করছে।
পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের প্রবীণ ভোটার আবদুল আলিম (৯১) বলেন, কাদের মির্জার ভোটে কেহ চুদুর বুদুর করলে গাবের লাডি দি হিডি আড্ডি গুড্ডি ভাঙি হালাইয়ুম। কাদের মির্জা কইছে ভোট দিন চলি যাইতো আমরা ভোট গনার আগে যাইতাম নয়। ভোট গনি মির্জা কাদেরের গলায় জয়ের মালা হরাই রাইতে আইউম। এর হর শেখ হাসিনার লই দু’ই রাকাত নফল নামাজ হড়ি দোয়া করিয়ুম। এ সময় পাশে থাকা ৩০/৩৫ জন নারী পুরুষ জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে তাকে সমর্থন জানান।
নারী ভোটার আনজুমান আরা (৪৫) জানান, মির্জা কাদেরের ডাকে ভোট কেন্দ্রের পাশে ঝাড়ু নিয়ে বসে থাকাব, যদি সন্ত্রাসী আসে তাদের বাপের নাম ভুলিয়ে দেব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, গাবের লাঠি তৈরি ও ঝাড়ুর কথা তারাও শুনেছেন।
এদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌরসভার আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা পুনরায় বলেছেন, শনিবার অনুষ্ঠিত বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে যদি রক্ত ঝরে, যদি কোন মায়ের বুক খালি হয়, যদি আমার কোন কর্মীর বাড়িঘরে আগুন লাগানো হয় তাহলে নোয়াখালীর ডিসি, এসপি ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এর দায়দায়িত্ব নিতে হবে। তিনি বলেন, ভোট ডাকাতির জন্য, ভোট বানচালের জন্য ভোটে অনিয়ম করার কোন চেষ্টা করলে কোম্পানীগঞ্জের মাটি থেকে আপনাদের ফিরে যেতে দেয়া হবে না।
প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের প্রতি অনুরোধ করে বলেন, আমি ভোটে কারচুপি করব না কাউকে করতেও দেব না। আমি যদি কারচুপি করি ওই দিনই যেন আমার মৃত্যু হয়। তিনি বলেন, দয়া করে নির্বাচনে থাকবেন। ১২টার জন্য বয়কট করে চলে যাবেন না, জয়লাভ করলে ভালো ভোট, হেরে যাওয়ার আশঙ্কা দেখলে বর্জন এ প্রবণতা বন্ধ করতে হবে।
বসুরহাট পৌরসভার আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জার ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় যথেষ্ট প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে তিনি নিজে বা তার নেতাকর্মীদের উদগ্রীব হওয়ার কোন কারণ নেই।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানান, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র ও আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা তার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করার পর থেকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তার প্রতি নজর রাখা হচ্ছে, এমনকি তার বাসা ও অফিস পুলিশ পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, শুধু মির্জা আবদুল কাদের নয়, অন্য মেয়র প্রার্থী ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিরাপত্তায়ও পুলিশ যথেষ্ট সজাগ রয়েছেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করেছেন।