ব্যবস্থাপনার অভাবে ৮০ টাকার টমেটো ৫ টাকায় বিক্রি চাষিরা দিশেহারা

বাগেরহাটের চিতলমারীতে বাম্পার ফলনের টমেটোতে মূল্য বিপর্যয় ঘটেছে। মৌসুমের শুরুতে টমেটোর দাম ছিল প্রতিকেজি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। এখন ৪ থেকে ৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় হঠাৎ করে এ দরপতনে চাষিরা হতাশায় ভুগছেন। গত শুক্রবার সকালে উপজেলার খাসের হাটবাজার, চিতলমারী বাজার, উমাজুড়ি মোড়, বোয়ালিয়া বাজার, ঘুরে দেখা যায় ১৬০ থেকে ২০০ টাকা দরে ভালো টমেটো বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের টমেটোর দাম ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। এছাড়া ছোট সাইজের টমেটো ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পিঁপড়ার ডাঙ্গা গ্রামের টমেটো চাষি সুনিল গুহ জানায়, তার তিনটি ঘেরে প্রায় চার হাজার টমেটো গাছ রয়েছে। সিজনের শুরুতে কয়েকদিন মাত্র ভাল দাম পেয়েছি। এখন ভরা মৌসুমে টমেটোর দাম কমে যাওয়ায় বিপদে পড়ে গিয়েছি। টমেটো তুলতে শ্রমিক মূল্য ও বহন খরচ যা আসে টমেটোর মূল্যতে তা পোশায় না। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের দিকে নজর দেয়া উচিত। বোয়ালিয়া গ্রামের টমেটো চাষি প্রমথ রঞ্জনবালা বলেন, আমি ১২ বিঘা জমিতে সাড়ে ৬ হাজার টমেটো গাছ লাগিয়েছি। সিজনের শুরুতে কয়েকদিন ভালো দাম পেয়েছি। কিন্তু গতকাল ৩৭ মণ টমেটো তুলে বিক্রি করতে গিয়ে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। তাও টাকা এখনো পাইনি। টমেটো তুলতে শ্রমিক খরচ ও বহন খরচের টাকা এখন টমেটো বিক্রি করে হচ্ছে না। এই চাষ করতে সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বাবদ দেড় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। কালকের বাজার দর দেখে মাথায় বাজ পড়েছে আমার।

স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী মনি মোল্লা, লিপন মজুমদার ও চাঁদপুরের ব্যাপারী নাসির মিয়া জানায়, হঠাৎ মালের মালের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে। মূলত সব জায়গায় একই সঙ্গে টমেটো পেঁকেছে। অত্র চিতলমারী এলাকায় সিজনের প্রথমেই টমেটো উঠলে আমরাই ৮০-৮৫ টাকা দরে কেজি ক্রয় করেছি। যার কারণে অনেক চাষি এ বছর ভাল দাম পেয়েছে। এখন মোকামের চাহিদা মোতাবেক আমরা কম দামে মালকিনতে বাধ্য হচ্ছি। সামনেও দাম বাড়তে পারে। চিতলমারী উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার বিধানরাণা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর টমেটোর উৎপাদন অনেক বেশি। যার কারণে দাম কমে গিয়েছে। তবে সামনে দাম বাড়ার সম্ভাবনা আছে।

image
আরও খবর
সদরপুরে স্কুল-জনবসতির কাছে ইটভাটা : হুমকিতে জনস্বাস্থ্য
খুলনায় করোনা ভ্যাকসিনের প্রাথমিক চাহিদা ৯৭ হাজার
ঘুষ না পেয়ে জেলেকে হরিণ শিকারি সাজিয়ে মামলা দেয়ার অভিযোগ
কর্মশালায় বক্তারা কিশোরগঞ্জে করোনা পরিস্থিতি অনেক জেলার তুলনায় ভালো
চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৯ জুয়াড়ি আটক
শরীয়তপুরে মনোরম পরিবেশে বই পড়ার আয়োজন!
আধুনিকতার ছোঁয়ায় কদর নেই হোগলা পাটির
কুড়িয়ে পাওয়া ‘পরিনা’ই মা-বাবার শেষ ভরসা
২ ভাটা জরিমানা ৩ লাখ টাকা
বালিয়ামারী বর্ডার হাট খুলে দিতে ভারতের চিঠি
চকরিয়ায় সওজের জায়গায় নির্মিত ২শ’ দোকান উচ্ছেদ
বালিয়াকান্দিতে হত্যা মামলার আসামির মরদেহ উদ্ধার
রাসিকে দেড়শ’ দোকান উচ্ছেদ

শনিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২১ , ২ মাঘ ১৪২৭, ২ জমাদিউস সানি ১৪৪২

ব্যবস্থাপনার অভাবে ৮০ টাকার টমেটো ৫ টাকায় বিক্রি চাষিরা দিশেহারা

গোবিন্দ মজুমদার, চিতলমারী (বাগেরহাট)

image

বাগেরহাটের চিতলমারীতে বাম্পার ফলনের টমেটোতে মূল্য বিপর্যয় ঘটেছে। মৌসুমের শুরুতে টমেটোর দাম ছিল প্রতিকেজি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা। এখন ৪ থেকে ৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকায় হঠাৎ করে এ দরপতনে চাষিরা হতাশায় ভুগছেন। গত শুক্রবার সকালে উপজেলার খাসের হাটবাজার, চিতলমারী বাজার, উমাজুড়ি মোড়, বোয়ালিয়া বাজার, ঘুরে দেখা যায় ১৬০ থেকে ২০০ টাকা দরে ভালো টমেটো বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি সাইজের টমেটোর দাম ১২০ থেকে ১৫০ টাকা। এছাড়া ছোট সাইজের টমেটো ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পিঁপড়ার ডাঙ্গা গ্রামের টমেটো চাষি সুনিল গুহ জানায়, তার তিনটি ঘেরে প্রায় চার হাজার টমেটো গাছ রয়েছে। সিজনের শুরুতে কয়েকদিন মাত্র ভাল দাম পেয়েছি। এখন ভরা মৌসুমে টমেটোর দাম কমে যাওয়ায় বিপদে পড়ে গিয়েছি। টমেটো তুলতে শ্রমিক মূল্য ও বহন খরচ যা আসে টমেটোর মূল্যতে তা পোশায় না। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের দিকে নজর দেয়া উচিত। বোয়ালিয়া গ্রামের টমেটো চাষি প্রমথ রঞ্জনবালা বলেন, আমি ১২ বিঘা জমিতে সাড়ে ৬ হাজার টমেটো গাছ লাগিয়েছি। সিজনের শুরুতে কয়েকদিন ভালো দাম পেয়েছি। কিন্তু গতকাল ৩৭ মণ টমেটো তুলে বিক্রি করতে গিয়ে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। তাও টাকা এখনো পাইনি। টমেটো তুলতে শ্রমিক খরচ ও বহন খরচের টাকা এখন টমেটো বিক্রি করে হচ্ছে না। এই চাষ করতে সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মূল্য বাবদ দেড় লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। কালকের বাজার দর দেখে মাথায় বাজ পড়েছে আমার।

স্থানীয় সবজি ব্যবসায়ী মনি মোল্লা, লিপন মজুমদার ও চাঁদপুরের ব্যাপারী নাসির মিয়া জানায়, হঠাৎ মালের মালের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দাম কমেছে। মূলত সব জায়গায় একই সঙ্গে টমেটো পেঁকেছে। অত্র চিতলমারী এলাকায় সিজনের প্রথমেই টমেটো উঠলে আমরাই ৮০-৮৫ টাকা দরে কেজি ক্রয় করেছি। যার কারণে অনেক চাষি এ বছর ভাল দাম পেয়েছে। এখন মোকামের চাহিদা মোতাবেক আমরা কম দামে মালকিনতে বাধ্য হচ্ছি। সামনেও দাম বাড়তে পারে। চিতলমারী উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার বিধানরাণা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর টমেটোর উৎপাদন অনেক বেশি। যার কারণে দাম কমে গিয়েছে। তবে সামনে দাম বাড়ার সম্ভাবনা আছে।