এবারও লো-ভোল্টেজ সমস্যা থাকবে

দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় লো-ভোল্টেজ সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বোর্ড চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন বলেছেন, সৈয়দপুরে নির্মাণাধীন এনার্জিপ্যাকের ১১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্রটি এপ্রিলের শেষে বা মে মাসের প্রথমে উৎপাদনে আসলে এই সংকট কিছুটা সহনীয় হতে পারে। অন্যথায় এই সমস্যা হবে প্রকট। গতকাল পাক্ষিক ম্যাগাজিন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার আয়োজিত ‘কোয়ালিটি পাওয়ার সাপ্লাই টু নর্দার্ন সিটিজ : চ্যালেঞ্জ ফর নেসকো’ ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় পিডিবি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

ভাচুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, নেসকোর চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম হুমায়ুন কবির, নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী জাকিউল ইসলাম প্রমুখ। বগুড়া চেম্বার অব কর্মস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহফুজুল ইসলাম রাজ, পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী, বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি লিয়াকত আলী প্রমুখ। এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নেসকো তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিরিন ইয়াসমিন।

মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সন্দেহ নেই দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলেও অনেক ভালো হয়েছে। কিন্তু এখানও শতভাগ নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন হয়নি। নেসকোর আন্ডারগ্রাউন্ড বিতরণ লাইন স্থাপনের পাইলট প্রকল্পের প্রশংসা করে পর্যায়েক্রমে নগরীর পুরো বিতরণ নেটওয়ার্ককে আন্ডারগ্রাউন্ড করার পরামর্শ দেন তিনি।

পিডিবির চেয়ারম্যান বলেন, উত্তরাঞ্চরে আগামী গ্রীষ্মকাল, রমজান মাস ও সেচ মৌসুমে সংকট যাতে আরও প্রকট না হয়, সেজন্য বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি ইউনিট চালু রেখে কয়লার মজুদ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ সময় প্রতিদিন ১৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) গ্যাস সরবরাহ পাওয়ার কথা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে ৭০০ এমএমসিএফডি। ফলে সিরাজগঞ্জের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকেও পুরোটা উৎপাদনে রাখা যাবে না। চেয়ারম্যান বলেন, উত্তরাঞ্চলের লো-ভোল্টেজ সংকট থেকে বেরিয়ে আসরা জন্য আরও ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগবে। এরমধ্যে সঞ্চালন নেটওয়ার্ক হওয়ার পাশাপাশি চালু হবে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, আদানির ঝড়খ- বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আসতে শুরু করবে, জিএমআইয়ের সঙ্গে চুক্তির আওতায় নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আসবে। এর আগ পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলের জন্য শতভাগ সুসংবাদ দেয়া যাবে না।

নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী জাকিউল ইসলাম বলেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে স্মাট মিটার স্থাপন শেষ করা সম্ভব হলে এবং পুরো ডিজিটাইজেশনের কাজ শেষ হলে সিস্টেমলস ৩ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এতে কোম্পানির বার্ষিক কমপক্ষে ৮৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। অন্যদিকে বর্তমানে নেসকোর ৪০ শতাংশ গ্রাহক অনলাইনে বিল পরিশোধ করছে। এটাকে পুরো পেপারলেস করা সম্ভব হলে বার্ষিক আরও ৫৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। তবে কোয়ালিটি বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়ার জন্য পিজিসিবির কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষার কোনও বিকল্প নেই।

রবিবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২১ , ৩ মাঘ ১৪২৭, ৩ জমাদিউস সানি ১৪৪২

উত্তরাঞ্চলে

এবারও লো-ভোল্টেজ সমস্যা থাকবে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়সহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় লো-ভোল্টেজ সমস্যা নিয়ে উদ্বিগ্ন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। বোর্ড চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন বলেছেন, সৈয়দপুরে নির্মাণাধীন এনার্জিপ্যাকের ১১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্রটি এপ্রিলের শেষে বা মে মাসের প্রথমে উৎপাদনে আসলে এই সংকট কিছুটা সহনীয় হতে পারে। অন্যথায় এই সমস্যা হবে প্রকট। গতকাল পাক্ষিক ম্যাগাজিন এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার আয়োজিত ‘কোয়ালিটি পাওয়ার সাপ্লাই টু নর্দার্ন সিটিজ : চ্যালেঞ্জ ফর নেসকো’ ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় পিডিবি চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।

ভাচুয়াল অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, নেসকোর চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব একেএম হুমায়ুন কবির, নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী জাকিউল ইসলাম প্রমুখ। বগুড়া চেম্বার অব কর্মস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহফুজুল ইসলাম রাজ, পিজিসিবির নির্বাহী পরিচালক ইয়াকুব ইলাহী চৌধুরী, বাংলাদেশ রেশম শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি লিয়াকত আলী প্রমুখ। এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার সম্পাদক মোল্লাহ আমজাদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নেসকো তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী শিরিন ইয়াসমিন।

মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, সন্দেহ নেই দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহে রাজশাহীসহ উত্তরাঞ্চলেও অনেক ভালো হয়েছে। কিন্তু এখানও শতভাগ নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন হয়নি। নেসকোর আন্ডারগ্রাউন্ড বিতরণ লাইন স্থাপনের পাইলট প্রকল্পের প্রশংসা করে পর্যায়েক্রমে নগরীর পুরো বিতরণ নেটওয়ার্ককে আন্ডারগ্রাউন্ড করার পরামর্শ দেন তিনি।

পিডিবির চেয়ারম্যান বলেন, উত্তরাঞ্চরে আগামী গ্রীষ্মকাল, রমজান মাস ও সেচ মৌসুমে সংকট যাতে আরও প্রকট না হয়, সেজন্য বড়পুকুরিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি ইউনিট চালু রেখে কয়লার মজুদ বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এ সময় প্রতিদিন ১৩০০ মিলিয়ন ঘনফুট (এমএমসিএফডি) গ্যাস সরবরাহ পাওয়ার কথা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে ৭০০ এমএমসিএফডি। ফলে সিরাজগঞ্জের বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকেও পুরোটা উৎপাদনে রাখা যাবে না। চেয়ারম্যান বলেন, উত্তরাঞ্চলের লো-ভোল্টেজ সংকট থেকে বেরিয়ে আসরা জন্য আরও ২ থেকে ৩ বছর সময় লাগবে। এরমধ্যে সঞ্চালন নেটওয়ার্ক হওয়ার পাশাপাশি চালু হবে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র, আদানির ঝড়খ- বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আসতে শুরু করবে, জিএমআইয়ের সঙ্গে চুক্তির আওতায় নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আসবে। এর আগ পর্যন্ত উত্তরাঞ্চলের জন্য শতভাগ সুসংবাদ দেয়া যাবে না।

নেসকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী জাকিউল ইসলাম বলেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে স্মাট মিটার স্থাপন শেষ করা সম্ভব হলে এবং পুরো ডিজিটাইজেশনের কাজ শেষ হলে সিস্টেমলস ৩ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। এতে কোম্পানির বার্ষিক কমপক্ষে ৮৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। অন্যদিকে বর্তমানে নেসকোর ৪০ শতাংশ গ্রাহক অনলাইনে বিল পরিশোধ করছে। এটাকে পুরো পেপারলেস করা সম্ভব হলে বার্ষিক আরও ৫৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। তবে কোয়ালিটি বিদ্যুৎ সরবরাহ দেয়ার জন্য পিজিসিবির কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষার কোনও বিকল্প নেই।