চাই চীনের জোরালো ভূমিকা ও মায়ানমারের আন্তরিকতা

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আগামী মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন-মায়ানমার ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন আশা করছেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হবে।

মায়ানমার রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা দিয়ে কথা না রাখার ধারা বজায় রেখে চলেছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে দেশটি ২০১৭ সালের শেষ দিকে প্রত্যাবাসন চুক্তি করলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সাড়ে আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছে। এর মধ্যে মায়ানমার যাচাই করেছে মাত্র ৪২ হাজার জনকে।

সমস্যা সমাধানে চীন উদ্যোগী হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা গিয়েছিল। গত বছর জানুয়ারিতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছিল। তবে গত এক বছরে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর কাজে মায়ানমারের আন্তরিকতা দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। শরণার্থী শিবিরগুলোতে প্রতি বছর ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্মগ্রহণ করছে। রোহিঙ্গার সংখ্যা বাড়লেও, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পরিমাণ কমছে। এটা বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর বড় চাপ তৈরি করছে। শরণার্থী ক্যাম্পগুলোর আশপাশের পরিবেশ-প্রতিবেশ ধ্বংস হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে আঞ্চলিক নিরাপত্তা।

রোহিঙ্গা সংকট সৃষ্টি করেছে মায়ানমার, তাদেরকেই এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। আর টেকসই সমাধান হচ্ছে- প্রত্যাবাসন। সফল প্রত্যাবাসনের জন্য মায়ানমারকে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রাখাইনে তৈরি করতে হবে উপযুক্ত পরিবেশ।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। শুধু বৈঠক করে, বিবৃতি দিয়ে দায়িত্ব সারলে চলবে না। মায়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক অবোরধের মতো চাপ প্রয়োগ করার কথা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে হবে।

আমরা আশা করতে চাই, আসন্ন ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ফলপ্রসূ হবে। আলোচনার মাধ্যমে মায়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আন্তরিক পদক্ষেপ নেবে। এ নিয়ে তারা আর কোন কূটকৌশলের আশ্রয় নেবে না। সমস্যা সমাধানে চীন জোরালো ভূমিকা রাখছে সেটা আমরা দেখতে চাই।

রবিবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২১ , ৩ মাঘ ১৪২৭, ৩ জমাদিউস সানি ১৪৪২

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক

চাই চীনের জোরালো ভূমিকা ও মায়ানমারের আন্তরিকতা

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আগামী মঙ্গলবার ঢাকায় বাংলাদেশ-চীন-মায়ানমার ত্রিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন আশা করছেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হবে।

মায়ানমার রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা দিয়ে কথা না রাখার ধারা বজায় রেখে চলেছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে দেশটি ২০১৭ সালের শেষ দিকে প্রত্যাবাসন চুক্তি করলেও তা বাস্তবায়ন করেনি। প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সাড়ে আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা দিয়েছে। এর মধ্যে মায়ানমার যাচাই করেছে মাত্র ৪২ হাজার জনকে।

সমস্যা সমাধানে চীন উদ্যোগী হওয়ায় পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে আশা করা গিয়েছিল। গত বছর জানুয়ারিতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছিল। তবে গত এক বছরে রোহিঙ্গাদের ফেরানোর কাজে মায়ানমারের আন্তরিকতা দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। শরণার্থী শিবিরগুলোতে প্রতি বছর ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্মগ্রহণ করছে। রোহিঙ্গার সংখ্যা বাড়লেও, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পরিমাণ কমছে। এটা বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর বড় চাপ তৈরি করছে। শরণার্থী ক্যাম্পগুলোর আশপাশের পরিবেশ-প্রতিবেশ ধ্বংস হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে আঞ্চলিক নিরাপত্তা।

রোহিঙ্গা সংকট সৃষ্টি করেছে মায়ানমার, তাদেরকেই এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। আর টেকসই সমাধান হচ্ছে- প্রত্যাবাসন। সফল প্রত্যাবাসনের জন্য মায়ানমারকে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রাখাইনে তৈরি করতে হবে উপযুক্ত পরিবেশ।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা ইস্যুতে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। শুধু বৈঠক করে, বিবৃতি দিয়ে দায়িত্ব সারলে চলবে না। মায়ানমারের ওপর অর্থনৈতিক অবোরধের মতো চাপ প্রয়োগ করার কথা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করতে হবে।

আমরা আশা করতে চাই, আসন্ন ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ফলপ্রসূ হবে। আলোচনার মাধ্যমে মায়ানমার রোহিঙ্গাদের ফেরাতে আন্তরিক পদক্ষেপ নেবে। এ নিয়ে তারা আর কোন কূটকৌশলের আশ্রয় নেবে না। সমস্যা সমাধানে চীন জোরালো ভূমিকা রাখছে সেটা আমরা দেখতে চাই।