চলতি বছরে ৯০ শতাংশ সরকারি সেবা ডিজিটালাইজড করা হবে : আইসিটি প্রতিমন্ত্রী

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ৯০ শতাংশ সরকারি সেবা ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। তিনি বলেন, মানুষ সেবার পেছনে ছুটবে না, সেবা পৌঁছে যাবে মানুষের হাতের মুঠোয়। প্রতিমন্ত্রী গত ১৬ জানুয়ারি আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে বিসিসি অডিটরিয়ামে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ১২ বছর’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১২ বছরে দেশে একটি শক্তিশালী আইসিটি অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, যা গ্রাম এলাকা পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। দেশের ৩ হাজার ৮শ’ ইউনিয়ন এখন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির আওতায় এসেছে। ২০২১ সালের মধ্যে সকলের জন্য ইন্টারনেট নিশ্চিত করা হবে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, আইসিটি অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে করোনা মহামারিকালে অনলাইন/সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অফিস-আদালত, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ও ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনোদন এমনকি কোর্টের কার্যক্রমও চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে। সরকার করোনা পোর্টাল, কোভিড ট্রেসার, কোভিড ১৯ ট্রাকার, ফুড ফর ন্যাশন, হেলথ ফর ন্যাশনসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে করোনা মোকাবেলা করছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৮শ’ সরকারি সেবাকে ডিজিটালাইজড করার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ৬০০টি সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তর করা হয়েছে। সরকার অফিসের কার্যক্রমে কাগজ ও কালমের ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ই-অফিস কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/সরকারি অফিসে কাজের গতিশীলতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা আনয়নে ই-নথি চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ৮ হাজারেরও বেশি অফিসের প্রায় ৯০ হাজারেরও অধিক কর্মকর্তা ই-নথি ব্যবহার করছে। এখন পর্যন্ত, ১ কোটি ৪৩ লাখ ফাইল ই-নথি সিস্টেমের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে। ফ্রিল্যান্সাররা গ্রামগঞ্জে থেকেও বিদেশের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন গ্রামে বসেই মানুষ শহরের সকল সুবিধা ভোগ করতে পারছে। প্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমানে শহর এবং গ্রামের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ৬৭৯০টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ৫৪ কোটি ৮৫ লাখ মানুষকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। দেশে ৩৯টি হাইটেক/আইটি পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ৫টির র্নিমাণ শেষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ৮টি শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আরো ১২টির কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দেশের ৬৪ জেলায় পর্যায়ক্রমে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সৌদিআরবে ১৫টিসহ মোট প্রায় ৮ হাজারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ স্থাপন করা হয়েছে। আরও ৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব নির্মাণের কার্যক্রম চলছে। ৩০০টি স্কুল অব ফিউচার স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিগত বার বছরে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১৫ লক্ষ মানুষকে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে কমর্সংস্থানের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ২০ লক্ষ। পলক বলেন র্স্টাটআপ ও উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য ৪৪টি র্স্টাটআপ প্রতিষ্ঠানের ১১৮ জন স্টার্টআপ প্রতিনিধিকে কো-ওয়ার্কিং স্পেস বরাদ্দ এবং ১৩৮টি বিশ^বিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব তৈরি করা হয়েছে। প্যানেল আলোচনার শুরুতে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ১২ বছর’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পরে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম আরশাদ হোসেনসহ আইসিটি বিভাগ ও এর অধীন বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

সোমবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২১ , ৪ মাঘ ১৪২৭, ৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

চলতি বছরে ৯০ শতাংশ সরকারি সেবা ডিজিটালাইজড করা হবে : আইসিটি প্রতিমন্ত্রী

মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন

image

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ৯০ শতাংশ সরকারি সেবা ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। তিনি বলেন, মানুষ সেবার পেছনে ছুটবে না, সেবা পৌঁছে যাবে মানুষের হাতের মুঠোয়। প্রতিমন্ত্রী গত ১৬ জানুয়ারি আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে বিসিসি অডিটরিয়ামে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ১২ বছর’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১২ বছরে দেশে একটি শক্তিশালী আইসিটি অবকাঠামো তৈরি হয়েছে, যা গ্রাম এলাকা পর্যন্ত তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ঘটিয়েছে। দেশের ৩ হাজার ৮শ’ ইউনিয়ন এখন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট কানেক্টিভিটির আওতায় এসেছে। ২০২১ সালের মধ্যে সকলের জন্য ইন্টারনেট নিশ্চিত করা হবে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, আইসিটি অবকাঠামো গড়ে তোলার কারণে করোনা মহামারিকালে অনলাইন/সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অফিস-আদালত, চিকিৎসা সেবা, শিক্ষা ও ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনোদন এমনকি কোর্টের কার্যক্রমও চালু রাখা সম্ভব হচ্ছে। সরকার করোনা পোর্টাল, কোভিড ট্রেসার, কোভিড ১৯ ট্রাকার, ফুড ফর ন্যাশন, হেলথ ফর ন্যাশনসহ বিভিন্ন ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে করোনা মোকাবেলা করছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ২ হাজার ৮শ’ সরকারি সেবাকে ডিজিটালাইজড করার অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ৬০০টি সেবা ডিজিটাল সেবায় রূপান্তর করা হয়েছে। সরকার অফিসের কার্যক্রমে কাগজ ও কালমের ব্যবহার কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ই-অফিস কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/সরকারি অফিসে কাজের গতিশীলতা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা আনয়নে ই-নথি চালু করা হয়েছে। বর্তমানে ৮ হাজারেরও বেশি অফিসের প্রায় ৯০ হাজারেরও অধিক কর্মকর্তা ই-নথি ব্যবহার করছে। এখন পর্যন্ত, ১ কোটি ৪৩ লাখ ফাইল ই-নথি সিস্টেমের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়েছে। ফ্রিল্যান্সাররা গ্রামগঞ্জে থেকেও বিদেশের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন গ্রামে বসেই মানুষ শহরের সকল সুবিধা ভোগ করতে পারছে। প্রযুক্তির কল্যাণে বর্তমানে শহর এবং গ্রামের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। ৬৭৯০টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ৫৪ কোটি ৮৫ লাখ মানুষকে সেবা প্রদান করা হচ্ছে। দেশে ৩৯টি হাইটেক/আইটি পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ৫টির র্নিমাণ শেষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ৮টি শেখ কামাল আইটি ইনকিউবেশন ট্রেনিং সেন্টার প্রতিষ্ঠার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আরো ১২টির কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। দেশের ৬৪ জেলায় পর্যায়ক্রমে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সৌদিআরবে ১৫টিসহ মোট প্রায় ৮ হাজারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ স্থাপন করা হয়েছে। আরও ৫ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব নির্মাণের কার্যক্রম চলছে। ৩০০টি স্কুল অব ফিউচার স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। বিগত বার বছরে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ১৫ লক্ষ মানুষকে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করা হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে কমর্সংস্থানের সংখ্যা দাঁড়াবে প্রায় ২০ লক্ষ। পলক বলেন র্স্টাটআপ ও উদ্ভাবনী সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য ৪৪টি র্স্টাটআপ প্রতিষ্ঠানের ১১৮ জন স্টার্টআপ প্রতিনিধিকে কো-ওয়ার্কিং স্পেস বরাদ্দ এবং ১৩৮টি বিশ^বিদ্যালয়ে ইনোভেশন হাব তৈরি করা হয়েছে। প্যানেল আলোচনার শুরুতে ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার ১২ বছর’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। পরে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোসনে আরা বেগম, আইসিটি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম আরশাদ হোসেনসহ আইসিটি বিভাগ ও এর অধীন বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।