কীটনাশক ও কৃষি রাসায়নিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নিন

উন্নয়নশীল দেশগুলোয় কৃষিতে অনিয়ন্ত্রিত রাসায়নিকের ব্যবহারে কৃষকদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে। কৃষি রাসায়নিকের মাত্রাহীন ও অরক্ষিত ব্যবহারে বাংলাদেশেও কৃষকের মধ্যে ক্যান্সারের প্রকোপ তুলনামূলক বেশি বলে খবর মিলেছে। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (এনআইসিআরএইচ) সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ক্যান্সার রেজিস্ট্রি রিপোর্ট : ২০১৫-১৭’ প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর হাসপাতালটিতে যত রোগী ক্যান্সার আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন, তাদের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশই কৃষক।

ফসলের বাণিজ্যিক উৎপাদনে বালাইনাশকের ব্যবহার কৃষিতে নতুন কোনো বিষয় নয়। বিভিন্ন ধরনের রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন বালাইনাশকের পরিকল্পিত ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা আছে। কিন্তু সঠিক জ্ঞানের অভাবে সুরক্ষা উপকরণ ছাড়াই কীটনাশক ব্যবহার করছেন কৃষকরা।

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) ও গুড এগ্রিকালচার প্র্যাকটিস (জিএপি) নীতিমালার পরামর্শ হলো-রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহারের সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার ও শরীরের অন্যান্য অংশে কীটনাশকের অনুপ্রবেশ রোধের প্রতিরোধক ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া বাতাসের উল্টো দিকে তা প্রয়োগ করা যাবে না; কিন্তু সিংহভাগ কৃষকই এসব পরামর্শ মানছেন না।

অভিযোগ রয়েছে, কীটনাশক কোম্পানিগুলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে কীটনাশক বিপণন ও প্রচারনার মাধ্যমে কৃষককে বিভ্রান্ত করছে। এ ধরনের অনিয়ন্ত্রিত বিপণন ও প্রচারনার ফাঁদে পড়ে কৃষকরা যথেচ্ছভাবে কীটনাশক ও রাসায়নিক ব্যবহার করছেন। ফলে এসব রাসায়নিক ও কীটনাশকের ক্ষতিকারক সূক্ষ্ম উপাদানগুলো দেহে প্রবেশ করে মরণব্যাধির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

দেশে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ঘাটতি আছে। এগুলো নিশ্চিত করতে পারলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যাবে। মানমাত্রা অনুযায়ী যেন কৃষি রাসায়নিকের দায়িত্বশীল ব্যবহার করা যায়, তার জন্য কৃষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা যেতে পারে। পাশাপাশি কীটনাশক কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। কৃষি বিভাগের নিয়মানুযায়ী সহনীয় পর্যায়ে কীটনাশক প্রয়োগ করা উচিত, তাহলে তা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি বয়ে আনবে না।

সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সুরক্ষা উপকরণে ব্যয়ের একটা বিষয় আছে। দাম বেশি হলে কৃষকরা তা ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হবেন। এগুলো কীভাবে যৌক্তিক দামে সরবরাহ করা যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে।

মঙ্গলবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২১ , ৫ মাঘ ১৪২৭, ৫ জমাদিউস সানি ১৪৪২

কীটনাশক ও কৃষি রাসায়নিকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নিন

উন্নয়নশীল দেশগুলোয় কৃষিতে অনিয়ন্ত্রিত রাসায়নিকের ব্যবহারে কৃষকদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে। কৃষি রাসায়নিকের মাত্রাহীন ও অরক্ষিত ব্যবহারে বাংলাদেশেও কৃষকের মধ্যে ক্যান্সারের প্রকোপ তুলনামূলক বেশি বলে খবর মিলেছে। জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের (এনআইসিআরএইচ) সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ক্যান্সার রেজিস্ট্রি রিপোর্ট : ২০১৫-১৭’ প্রতিবেদনের পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছর হাসপাতালটিতে যত রোগী ক্যান্সার আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন, তাদের মধ্যে প্রায় এক-তৃতীয়াংশই কৃষক।

ফসলের বাণিজ্যিক উৎপাদনে বালাইনাশকের ব্যবহার কৃষিতে নতুন কোনো বিষয় নয়। বিভিন্ন ধরনের রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে ফসলকে রক্ষা করার জন্য বিভিন্ন বালাইনাশকের পরিকল্পিত ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা আছে। কিন্তু সঠিক জ্ঞানের অভাবে সুরক্ষা উপকরণ ছাড়াই কীটনাশক ব্যবহার করছেন কৃষকরা।

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা (আইপিএম) ও গুড এগ্রিকালচার প্র্যাকটিস (জিএপি) নীতিমালার পরামর্শ হলো-রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহারের সময় মুখে মাস্ক ব্যবহার ও শরীরের অন্যান্য অংশে কীটনাশকের অনুপ্রবেশ রোধের প্রতিরোধক ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া বাতাসের উল্টো দিকে তা প্রয়োগ করা যাবে না; কিন্তু সিংহভাগ কৃষকই এসব পরামর্শ মানছেন না।

অভিযোগ রয়েছে, কীটনাশক কোম্পানিগুলো অনিয়ন্ত্রিতভাবে কীটনাশক বিপণন ও প্রচারনার মাধ্যমে কৃষককে বিভ্রান্ত করছে। এ ধরনের অনিয়ন্ত্রিত বিপণন ও প্রচারনার ফাঁদে পড়ে কৃষকরা যথেচ্ছভাবে কীটনাশক ও রাসায়নিক ব্যবহার করছেন। ফলে এসব রাসায়নিক ও কীটনাশকের ক্ষতিকারক সূক্ষ্ম উপাদানগুলো দেহে প্রবেশ করে মরণব্যাধির কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

দেশে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা ও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ঘাটতি আছে। এগুলো নিশ্চিত করতে পারলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে যাবে। মানমাত্রা অনুযায়ী যেন কৃষি রাসায়নিকের দায়িত্বশীল ব্যবহার করা যায়, তার জন্য কৃষককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনা যেতে পারে। পাশাপাশি কীটনাশক কোম্পানিগুলোকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। কৃষি বিভাগের নিয়মানুযায়ী সহনীয় পর্যায়ে কীটনাশক প্রয়োগ করা উচিত, তাহলে তা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতি বয়ে আনবে না।

সুরক্ষা উপকরণ ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সুরক্ষা উপকরণে ব্যয়ের একটা বিষয় আছে। দাম বেশি হলে কৃষকরা তা ব্যবহারে নিরুৎসাহিত হবেন। এগুলো কীভাবে যৌক্তিক দামে সরবরাহ করা যায়, সে ব্যবস্থা করতে হবে।