অনলাইনে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার উদ্যোগ নিচ্ছে বিএসইসি

বিনিয়োগকারীদের ভোগান্তি কমাতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বেনিফিসিয়ারি অ্যাকাউন্ট (বিও হিসাব) খোলার উদ্যোগ নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই পদ্ধতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) দিয়ে ঘরে বসে অর্থাৎ অনলাইনে এক পাতার ফরম পূরণ করেই বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন বিনিয়োগকারীরা। বিএসইসি আশা করছে, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই এই পদ্ধিততে বিও হিসাব খোলা শুরু হবে। অনলাইনে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে ফি হবে মাত্র ৪৫০ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৪৫০ টাকা দিয়ে বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসে তাদের পছন্দের ব্রোকারেজ হাউসে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ পাবেন। সিডিবিএলের পক্ষে নতুন এ ব্যবস্থা তৈরির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বিভাগের প্রধান রাকিবুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেন, বর্তমানে বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে যেসব কাগজপত্র লাগে, তার সবই লাগবে অনলাইনের ক্ষেত্রেও। বিও অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য যে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি জমা করা যাবে আর্থিক লেনদেনের যেকোন গেটওয়ে ব্যবহার করে। একজন বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের মোবাইল নম্বর ও ইমেইল দিয়ে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার প্রথম ধাপে লগ ইন করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে ওই বিনিয়োগকারীর মোবাইল ও ইমেইলে একটি গোপন পাসওয়ার্ড চলে যাবে। সেটি একবারই ব্যবহার করা যাবে, এ কারণে সেটি ওটিপি বা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড হিসেবে পরিচিত। ওই পাসওয়ার্ড দিয়ে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে ওই একজন বিনিয়োগকারীকে। কয়েকটি ধাপে বিনিয়োগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, ব্যাংক হিসাব নম্বর, ব্যাংক চেকের কপি, বিনিয়োগকারীর ছবি, স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে।

এরপর বিনিয়োগকারীকে বেছে নিতে হবে তার পছন্দের ব্রোকারেজ হাউজ। এরপর ওই আবেদন চলে যাবে বিনিয়োগকারীর পছন্দের ব্রোকারেজ হাউজে। ব্রোকারেজ হাউজের পক্ষ থেকে যাচাই বাছাইয়ের পর সব ঠিকঠাক থাকলে সেই আবেদন গ্রহণ করা হবে। তখন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে একটি নোটিফিকেশন চলে যাবে বিনিয়োগকারীর মোবাইল ও ইমেইলে। সেই নোটিফিকেশন পাওয়ার পর বিনিয়োগকারীকে বিও ফি জমা দিতে হবে। বিও ফি জমা হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজ সিডিবিএলের সিস্টেমে তা আপলোড করে দেবে। আর বিনিয়োগকারী মোবাইল ও ই–মেইলে পেয়ে যাবেন ‘সাকসেসফুল’ বার্তা।

উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজারে বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় পৌনে ২৬ লাখ। যেগুলোর মধ্যে সোয়া ৭ লাখ বিও অ্যাকাউন্টের কোন শেয়ার নেই। সাধারণত এসব বিও অ্যাকাউন্টের বড় অংশ শুধু আইপিও আবেদনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নতুন নিয়ম করেছে, আইপিও আবেদন করতে হলে সেকেন্ডারি বাজারে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে। আগামী এপ্রিল থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে কিছু বিও অ্যাকাউন্ট কমে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে অনলাইনে ঘরে বসে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা চালু হলে এবং বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকলে তাতে নতুন করে কিছু বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বাড়তে পারে।

বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১ , ৬ মাঘ ১৪২৭, ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

অনলাইনে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার উদ্যোগ নিচ্ছে বিএসইসি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

বিনিয়োগকারীদের ভোগান্তি কমাতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে বেনিফিসিয়ারি অ্যাকাউন্ট (বিও হিসাব) খোলার উদ্যোগ নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এই পদ্ধতিতে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) দিয়ে ঘরে বসে অর্থাৎ অনলাইনে এক পাতার ফরম পূরণ করেই বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন বিনিয়োগকারীরা। বিএসইসি আশা করছে, ফেব্রুয়ারির মধ্যেই এই পদ্ধিততে বিও হিসাব খোলা শুরু হবে। অনলাইনে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার ক্ষেত্রে ফি হবে মাত্র ৪৫০ টাকা। অর্থাৎ মাত্র ৪৫০ টাকা দিয়ে বিনিয়োগকারীরা ঘরে বসে তাদের পছন্দের ব্রোকারেজ হাউসে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ পাবেন। সিডিবিএলের পক্ষে নতুন এ ব্যবস্থা তৈরির তত্ত্বাবধানে রয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস বিভাগের প্রধান রাকিবুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেন, বর্তমানে বিও অ্যাকাউন্ট খুলতে যেসব কাগজপত্র লাগে, তার সবই লাগবে অনলাইনের ক্ষেত্রেও। বিও অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য যে ফি নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটি জমা করা যাবে আর্থিক লেনদেনের যেকোন গেটওয়ে ব্যবহার করে। একজন বিনিয়োগকারীকে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে নিজের মোবাইল নম্বর ও ইমেইল দিয়ে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার প্রথম ধাপে লগ ইন করতে হবে। সঙ্গে সঙ্গে ওই বিনিয়োগকারীর মোবাইল ও ইমেইলে একটি গোপন পাসওয়ার্ড চলে যাবে। সেটি একবারই ব্যবহার করা যাবে, এ কারণে সেটি ওটিপি বা ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড হিসেবে পরিচিত। ওই পাসওয়ার্ড দিয়ে পরবর্তী ধাপে যেতে হবে ওই একজন বিনিয়োগকারীকে। কয়েকটি ধাপে বিনিয়োগকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র, ব্যাংক হিসাব নম্বর, ব্যাংক চেকের কপি, বিনিয়োগকারীর ছবি, স্বাক্ষরের স্ক্যান কপি আপলোড করতে হবে।

এরপর বিনিয়োগকারীকে বেছে নিতে হবে তার পছন্দের ব্রোকারেজ হাউজ। এরপর ওই আবেদন চলে যাবে বিনিয়োগকারীর পছন্দের ব্রোকারেজ হাউজে। ব্রোকারেজ হাউজের পক্ষ থেকে যাচাই বাছাইয়ের পর সব ঠিকঠাক থাকলে সেই আবেদন গ্রহণ করা হবে। তখন স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে একটি নোটিফিকেশন চলে যাবে বিনিয়োগকারীর মোবাইল ও ইমেইলে। সেই নোটিফিকেশন পাওয়ার পর বিনিয়োগকারীকে বিও ফি জমা দিতে হবে। বিও ফি জমা হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউজ সিডিবিএলের সিস্টেমে তা আপলোড করে দেবে। আর বিনিয়োগকারী মোবাইল ও ই–মেইলে পেয়ে যাবেন ‘সাকসেসফুল’ বার্তা।

উল্লেখ্য, বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজারে বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় পৌনে ২৬ লাখ। যেগুলোর মধ্যে সোয়া ৭ লাখ বিও অ্যাকাউন্টের কোন শেয়ার নেই। সাধারণত এসব বিও অ্যাকাউন্টের বড় অংশ শুধু আইপিও আবেদনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নতুন নিয়ম করেছে, আইপিও আবেদন করতে হলে সেকেন্ডারি বাজারে ন্যূনতম ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ থাকতে হবে। আগামী এপ্রিল থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। নতুন এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে কিছু বিও অ্যাকাউন্ট কমে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে অনলাইনে ঘরে বসে বিও অ্যাকাউন্ট খোলার সুবিধা চালু হলে এবং বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকলে তাতে নতুন করে কিছু বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা বাড়তে পারে।