আইডিআরএ’র নির্দেশনার পর বিমা খাতে বড় উত্থান

পরিশোধিত মূলধন এবং মূলধনের ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত আইডিআরএ’র দেয়া নির্দেশনার ফলে গতকাল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের ৪৯টির কোম্পানির মধ্যে ৪৬টির বা ৯৪ শতাংশের শেয়ার দর বেড়েছে। এমনকি প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) টপটেন গেইনার তালিকায় শতভাগ দখলে নিয়েছে বীমা খাত।

গত সোমবার দেশে নিবন্ধিত লাইফ ইন্সুরেন্স এবং নন-লাইফ ইন্সুরেন্সগুলোকে আগামী এক মাসের মধ্যে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণ এবং পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণ আইন পরিপালনের নির্দেশনা জারি করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এই নির্দেশনার পর গতকাল শেয়ারবাজারের লেনদেন শুরু থেকেই বীমা খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দর সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছায়। বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করার জন্য বিনিয়োগকারী থাকলেও বিক্রেতার দেখা মেলেনি। যার ফলে দিন শেষে দেখা গেছে ডিএসইতে গতকালকের টপটেন গেইনার তালিকায় থাকা সবগুলো কোম্পানি বীমা খাতের।

গতকাল ডিএসইতে টপটেন গেইনারের শীর্ষে উঠে আসে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স। গত রোববার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৩১ টাকায়। গতকাল লেনদেন শেষে এর শেয়ারে ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ৩৪.১০ টাকায়। অর্থাৎ গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩.১০ টাকা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে। ডিএসইতে টপটেন গেইনারের উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে গ্রিনডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ১০ শতাংশ, প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ১০ শতাংশ, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৮ শতাংশ, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৭ শতাংশ, ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৭ শতাংশ, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৫ শতাংশ, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৫ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৫ শতাংশ এবং রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৯.৯৪ শতাংশ বেড়েছে।

আইডিআরএ-এর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০১০-এর ২১ (৩) ধারা পরিপালনপূর্বক আগামী এক মাসের মধ্যে তফসিল-১ অনুযায়ী ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইডিআরএ’কে অবহিত করতে বলা হয়েছে। বীমা আইন, ২০১০-এর ২১ (৩) ধারায় বলা হয়, লাইফ ইন্সুরেন্সের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। যার ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তা কর্তৃক প্রদত্ত হবে। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অন্যদিকে, নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৪০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। যার ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তা কর্তৃক প্রদত্ত হবে। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৪৯টি ইন্সুরেন্সের মধ্যে নন-লাইফ ইন্সুরেন্স ৩৭টি এবং লাইফ ইন্সুরেন্স ১২টি। এর মধ্যে নন-লাইফ ইন্সুরেন্সের মধ্যে পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে ৪টির। কোম্পানিগুলো হলোÑ অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, ইসলামিক ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিগুলো মধ্যে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ২৯ কোটি ৭০ লাখ ২৬ হাজার টাকা, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ৩০ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকা, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ৩৩ কোটি ৮৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং ইসলামিক ইন্স্যুরেন্সের ৩৭ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অন্যদিকে, লাইফ ইন্স্যুরেন্সগুলোর মধ্যে পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে ২টির। কোম্পানি ২টির মধ্যে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের রয়েছে ১৬ কোটি ৬৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২৯ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।

বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১ , ৬ মাঘ ১৪২৭, ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

আইডিআরএ’র নির্দেশনার পর বিমা খাতে বড় উত্থান

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

পরিশোধিত মূলধন এবং মূলধনের ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণ সংক্রান্ত আইডিআরএ’র দেয়া নির্দেশনার ফলে গতকাল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বীমা খাতের ৪৯টির কোম্পানির মধ্যে ৪৬টির বা ৯৪ শতাংশের শেয়ার দর বেড়েছে। এমনকি প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) টপটেন গেইনার তালিকায় শতভাগ দখলে নিয়েছে বীমা খাত।

গত সোমবার দেশে নিবন্ধিত লাইফ ইন্সুরেন্স এবং নন-লাইফ ইন্সুরেন্সগুলোকে আগামী এক মাসের মধ্যে ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণ এবং পরিশোধিত মূলধনের ৬০ শতাংশ শেয়ার ধারণ আইন পরিপালনের নির্দেশনা জারি করেছে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এই নির্দেশনার পর গতকাল শেয়ারবাজারের লেনদেন শুরু থেকেই বীমা খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দর সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছায়। বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ক্রয় করার জন্য বিনিয়োগকারী থাকলেও বিক্রেতার দেখা মেলেনি। যার ফলে দিন শেষে দেখা গেছে ডিএসইতে গতকালকের টপটেন গেইনার তালিকায় থাকা সবগুলো কোম্পানি বীমা খাতের।

গতকাল ডিএসইতে টপটেন গেইনারের শীর্ষে উঠে আসে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স। গত রোববার কোম্পানিটির শেয়ারের ক্লোজিং দর ছিল ৩১ টাকায়। গতকাল লেনদেন শেষে এর শেয়ারে ক্লোজিং দর দাঁড়ায় ৩৪.১০ টাকায়। অর্থাৎ গতকাল কোম্পানিটির শেয়ার দর ৩.১০ টাকা বা ১০ শতাংশ বেড়েছে। এর মাধ্যমে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স ডিএসইর টপটেন গেইনার তালিকার শীর্ষে উঠে আসে। ডিএসইতে টপটেন গেইনারের উঠে আসা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে গ্রিনডেল্টা ইন্স্যুরেন্সের ১০ শতাংশ, প্রগতি ইন্স্যুরেন্সের ১০ শতাংশ, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৮ শতাংশ, ঢাকা ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৭ শতাংশ, ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৭ শতাংশ, ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৫ শতাংশ, এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৫ শতাংশ, পিপলস ইন্স্যুরেন্সের ৯.৯৫ শতাংশ এবং রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর ৯.৯৪ শতাংশ বেড়েছে।

আইডিআরএ-এর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০১০-এর ২১ (৩) ধারা পরিপালনপূর্বক আগামী এক মাসের মধ্যে তফসিল-১ অনুযায়ী ন্যূনতম পরিশোধিত মূলধন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইডিআরএ’কে অবহিত করতে বলা হয়েছে। বীমা আইন, ২০১০-এর ২১ (৩) ধারায় বলা হয়, লাইফ ইন্সুরেন্সের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৩০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। যার ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তা কর্তৃক প্রদত্ত হবে। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অন্যদিকে, নন-লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৪০ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধন থাকতে হবে। যার ৬০ শতাংশ উদ্যোক্তা কর্তৃক প্রদত্ত হবে। অবশিষ্ট ৪০ শতাংশ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৪৯টি ইন্সুরেন্সের মধ্যে নন-লাইফ ইন্সুরেন্স ৩৭টি এবং লাইফ ইন্সুরেন্স ১২টি। এর মধ্যে নন-লাইফ ইন্সুরেন্সের মধ্যে পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে ৪টির। কোম্পানিগুলো হলোÑ অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স, ইসলামিক ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স। কোম্পানিগুলো মধ্যে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্সের পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ২৯ কোটি ৭০ লাখ ২৬ হাজার টাকা, অগ্রণী ইন্স্যুরেন্সের ৩০ কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার টাকা, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্সের ৩৩ কোটি ৮৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং ইসলামিক ইন্স্যুরেন্সের ৩৭ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। অন্যদিকে, লাইফ ইন্স্যুরেন্সগুলোর মধ্যে পরিশোধিত মূলধন ৩০ কোটি টাকার নিচে রয়েছে ২টির। কোম্পানি ২টির মধ্যে প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্সের রয়েছে ১৬ কোটি ৬৪ লাখ ৩২ হাজার টাকা এবং রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ২৯ কোটি ৪২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা।