পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অফিসারকে পিটিয়ে আহত করল ছাত্রলীগ কর্মী

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার (সাময়িক বহিস্কৃত) নগেন্দ্র নাথ রায়কে (৩৯) পিটিয়ে আড়াই লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। আহত নগেন্দ্র নাথ রায় আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের টিপার বাজার এলাকার রমনী কান্ত রায়ের ছেলে। তিনি আদিতমারী উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার পদে কর্মরত। পসামবার উপজেলার গ্রামীণ ব্যাংক সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে আহত ব্যাংক কর্মকর্তা নগেন্দ্রনাথ রায়কে সোমবার রাতেই গুরুতর আহত অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অভিযুক্তরা আদিতমারী গ্রামের মালেকুল ইসলাম কেচুর ছেলে সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন মামুন ও একই এলাকার মদিনা বেকারির মালিক আবদুস সোবহান ভূঁইয়ার ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটির কার্যকরী সদস্য শাহীন ভুঁইয়াসহ অজ্ঞাত আরও দুই যুবক।

হাসপাতালে বেডে থাকা ব্যাংক অফিসার নগেন্দ্র নাথ রায় জানান, অফিসের চেক নিয়ে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তুলে পাশের হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে বসেন তিনি। খাবার শেষ হলে ছাত্রলীগের শাহীন ও মামুনসহ অজ্ঞাত দুইজন এসে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট টাকা আড়াই লাখ করে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। স্থানীয়রা সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আহত নগেন্দ্র নাথকে উদ্ধার করে আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করেন। জ্ঞান ফিরে দেখেন তিনি হাসপাতালে ভর্তি। জ্যাকেটের পকেটে থাকা অফিসের আড়াই লাখ টাকাও খোয়া গেছে বলে তিনি দাবি করেন। পরে বিষয়টি ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তাদের জানানো হলে সন্ধ্যায় খবর পেয়ে হাসপাতালে আহত ব্যাংক কর্মকর্তাকে দেখতে আসেন আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন। এ সময় তার চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং থানা পুলিশকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সদস্য শাহীন ভুঁইয়া বলেন, রড দিয়ে মারপিট নয়, হাতাহাতি হয়েছে মাত্র। অন্যজন ফরহাদ হোসেন মামুন বলেন, নগেন্দ্র নাথ রায়ের কাছে তিনি এক লাখ ১৩ হাজার টাকা পেতেন। আজ না কাল বলে টাকা দিতে টালবাহনা করেন। তিনি আরও বলেন, পাওনা টাকা নিয়ে কথাকাটাকাটির পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে রড দিয়ে পেটানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. তাসনিম কবির বলেন, আহত নগেন্দ্র নাথ রায় মাথার পিছনের অংশে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন। ক্ষতস্থানে রক্ত জমাট বেঁধেছে। চিকিৎসা চলছে, সুস্থ হতে বেশ সময় লাগবে। তাকে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।

বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১ , ৬ মাঘ ১৪২৭, ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

লালমনিরহাটে

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অফিসারকে পিটিয়ে আহত করল ছাত্রলীগ কর্মী

প্রতিনিধি, লালমনিরহাট

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার (সাময়িক বহিস্কৃত) নগেন্দ্র নাথ রায়কে (৩৯) পিটিয়ে আড়াই লাখ টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। আহত নগেন্দ্র নাথ রায় আদিতমারী উপজেলার সারপুকুর ইউনিয়নের টিপার বাজার এলাকার রমনী কান্ত রায়ের ছেলে। তিনি আদিতমারী উপজেলা পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের জুনিয়র অফিসার পদে কর্মরত। পসামবার উপজেলার গ্রামীণ ব্যাংক সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এদিকে আহত ব্যাংক কর্মকর্তা নগেন্দ্রনাথ রায়কে সোমবার রাতেই গুরুতর আহত অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অভিযুক্তরা আদিতমারী গ্রামের মালেকুল ইসলাম কেচুর ছেলে সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফরহাদ হোসেন মামুন ও একই এলাকার মদিনা বেকারির মালিক আবদুস সোবহান ভূঁইয়ার ছেলে উপজেলা ছাত্রলীগ কমিটির কার্যকরী সদস্য শাহীন ভুঁইয়াসহ অজ্ঞাত আরও দুই যুবক।

হাসপাতালে বেডে থাকা ব্যাংক অফিসার নগেন্দ্র নাথ রায় জানান, অফিসের চেক নিয়ে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা তুলে পাশের হোটেলে দুপুরের খাবার খেতে বসেন তিনি। খাবার শেষ হলে ছাত্রলীগের শাহীন ও মামুনসহ অজ্ঞাত দুইজন এসে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি মারপিট টাকা আড়াই লাখ করে ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। স্থানীয়রা সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আহত নগেন্দ্র নাথকে উদ্ধার করে আদিতমারী হাসপাতালে ভর্তি করেন। জ্ঞান ফিরে দেখেন তিনি হাসপাতালে ভর্তি। জ্যাকেটের পকেটে থাকা অফিসের আড়াই লাখ টাকাও খোয়া গেছে বলে তিনি দাবি করেন। পরে বিষয়টি ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তাদের জানানো হলে সন্ধ্যায় খবর পেয়ে হাসপাতালে আহত ব্যাংক কর্মকর্তাকে দেখতে আসেন আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন। এ সময় তার চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং থানা পুলিশকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। অভিযুক্ত ছাত্রলীগের সদস্য শাহীন ভুঁইয়া বলেন, রড দিয়ে মারপিট নয়, হাতাহাতি হয়েছে মাত্র। অন্যজন ফরহাদ হোসেন মামুন বলেন, নগেন্দ্র নাথ রায়ের কাছে তিনি এক লাখ ১৩ হাজার টাকা পেতেন। আজ না কাল বলে টাকা দিতে টালবাহনা করেন। তিনি আরও বলেন, পাওনা টাকা নিয়ে কথাকাটাকাটির পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে রড দিয়ে পেটানোর বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল অফিসার ডা. তাসনিম কবির বলেন, আহত নগেন্দ্র নাথ রায় মাথার পিছনের অংশে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন। ক্ষতস্থানে রক্ত জমাট বেঁধেছে। চিকিৎসা চলছে, সুস্থ হতে বেশ সময় লাগবে। তাকে রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।