নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনে স্থাপিত গভীর নলকুপের পানিতে ক্ষতিকর মাত্রাতিরিক্ত আয়রনের উপস্থিতি পাওয়ায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগকে ভবন হস্তান্তর করতে পারছে না গণপুর্ত বিভাগ। ফলে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনের ২৭মাস অতিবাহিত হলেও জনগণকে সেবা দিতে পারছে না স্টেশনটি।
২০১৮ সালের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্টেশনটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু গভীর নলকূপের পানিতে আয়রন থাকায় উদ্বোধনের ২৭মাস অতিবাহিত হলেও শুরু হয়নি এর সেবা কার্যক্রম। এতে আগুন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ৪ ইউনিয়নের ৩০ হাজার পরিবার। গত দু’ বছরে প্রায় দেড়’শ অগ্নিকা-ের ঘটনায় বাড়িঘর, গবাদিপশু, সঞ্চিত অর্থ, ধান, চাল ও আসবাবপত্রসহ প্রায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকার উপরে।
ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী গ্রামের জুয়েল চৌধুরী জানান, ডোমার উপজেলা শহরে একটি ফায়ার স্টেশন থাকলেও উত্তরের ভোগডাবুড়ি ও কেতকিবাড়ী ইউনিয়ন ভারত সীমান্ত পর্যন্ত এবং অপর দু’টি ইউনিয়ন জোড়াবাড়ী ও গোমনাতীর দুরত্ব প্রায় ২০ থেকে ২৩ কিলোমিটার। অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে ডোমার থেকে অগ্নিনির্বাপক গাড়ি আসার আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের চিলাহাটি এলাকার মিরাজ হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার পরেও ফায়ার স্টেশনের কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় গত ২৭মাসে আশেপাশে গ্রামের কয়েকটি বাড়ী, গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি, ধান, চাল, নগদ অর্থ ও আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। চিলাহাটি ফায়ার স্টেশনের সেবা কার্যক্রম চালু থাকলে এ ক্ষয়ক্ষতি হতো না।
চিলাহাটির কারেঙ্গাতলী নামক স্থানে ৩৩শতক জমিতে পুর্নাঙ্গ স্টেশন ভবন নির্মাণে বরাদ্ধ দেয়া হয় ৩কোটি ২২লাখ টাকা। নীলফামারী গণপুর্ত বিভাগ দরপত্র আহ্বান শেষে (মেসার্স খাজা বিলকিস রাব্বী, মহাখালি ঢাকা) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিগত ২০১৭ সালের ১০জানুয়ারী দেয়া হয় কার্যাদেশ। গত ২০১৮সালের ১০জুলাইর মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মূল ভবন, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ আর নিরাপদ পানির জন্য স্থাপন করে গভীর নলকুপ। স্থাপিত গভীর নলকূপের পানি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে রংপুর জোনাল ল্যাবটেরীতে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মাত্রাতিরিক্ত আয়রনের উপস্থিতি ধরা পড়ে। যা জনস্বাস্থ্য আর পানিবাহী গাড়ির রিজার্ভার ট্যাংকের জন্য ক্ষতিকর।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইড ইঞ্জিনিয়ার আবু জুয়েল জানান, ভবনের নির্মান কাজ শেষ করা হয়েছে। পানিতে সামান্য পরিমাণ আয়রন পাওয়া গেছে। এজন্য ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ ভবনটি বুঝে নিচ্ছেন না।
নীলফামারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম সরকার জানান, চিলাহাটি ফায়ার স্টেশনের জন্য জনবল ও গাড়ি মজুদ আছে। ফায়ার স্টেশনে স্থাপিত গভীর নলকূপের পানিতে ক্ষতিকর মাত্রাতিরিক্ত আয়রনের উপস্থিতির বিষয়টি সমাধানের জন্য গণপূর্ত বিভাগকে বারবার জানানো হলেও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
এ বিষয়ে নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুজ্জামান দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১ , ৬ মাঘ ১৪২৭, ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২
প্রতিনিধি, ডোমার (নীলফামারী)
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনে স্থাপিত গভীর নলকুপের পানিতে ক্ষতিকর মাত্রাতিরিক্ত আয়রনের উপস্থিতি পাওয়ায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগকে ভবন হস্তান্তর করতে পারছে না গণপুর্ত বিভাগ। ফলে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উদ্বোধনের ২৭মাস অতিবাহিত হলেও জনগণকে সেবা দিতে পারছে না স্টেশনটি।
২০১৮ সালের ১ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে স্টেশনটি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু গভীর নলকূপের পানিতে আয়রন থাকায় উদ্বোধনের ২৭মাস অতিবাহিত হলেও শুরু হয়নি এর সেবা কার্যক্রম। এতে আগুন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ৪ ইউনিয়নের ৩০ হাজার পরিবার। গত দু’ বছরে প্রায় দেড়’শ অগ্নিকা-ের ঘটনায় বাড়িঘর, গবাদিপশু, সঞ্চিত অর্থ, ধান, চাল ও আসবাবপত্রসহ প্রায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কোটি টাকার উপরে।
ডোমার উপজেলার ভোগডাবুড়ী গ্রামের জুয়েল চৌধুরী জানান, ডোমার উপজেলা শহরে একটি ফায়ার স্টেশন থাকলেও উত্তরের ভোগডাবুড়ি ও কেতকিবাড়ী ইউনিয়ন ভারত সীমান্ত পর্যন্ত এবং অপর দু’টি ইউনিয়ন জোড়াবাড়ী ও গোমনাতীর দুরত্ব প্রায় ২০ থেকে ২৩ কিলোমিটার। অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটলে ডোমার থেকে অগ্নিনির্বাপক গাড়ি আসার আগেই সব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের চিলাহাটি এলাকার মিরাজ হোসেন জানান, প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করার পরেও ফায়ার স্টেশনের কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় গত ২৭মাসে আশেপাশে গ্রামের কয়েকটি বাড়ী, গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি, ধান, চাল, নগদ অর্থ ও আসবাবপত্র আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। চিলাহাটি ফায়ার স্টেশনের সেবা কার্যক্রম চালু থাকলে এ ক্ষয়ক্ষতি হতো না।
চিলাহাটির কারেঙ্গাতলী নামক স্থানে ৩৩শতক জমিতে পুর্নাঙ্গ স্টেশন ভবন নির্মাণে বরাদ্ধ দেয়া হয় ৩কোটি ২২লাখ টাকা। নীলফামারী গণপুর্ত বিভাগ দরপত্র আহ্বান শেষে (মেসার্স খাজা বিলকিস রাব্বী, মহাখালি ঢাকা) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিগত ২০১৭ সালের ১০জানুয়ারী দেয়া হয় কার্যাদেশ। গত ২০১৮সালের ১০জুলাইর মধ্যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মূল ভবন, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ আর নিরাপদ পানির জন্য স্থাপন করে গভীর নলকুপ। স্থাপিত গভীর নলকূপের পানি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে রংপুর জোনাল ল্যাবটেরীতে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মাত্রাতিরিক্ত আয়রনের উপস্থিতি ধরা পড়ে। যা জনস্বাস্থ্য আর পানিবাহী গাড়ির রিজার্ভার ট্যাংকের জন্য ক্ষতিকর।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাইড ইঞ্জিনিয়ার আবু জুয়েল জানান, ভবনের নির্মান কাজ শেষ করা হয়েছে। পানিতে সামান্য পরিমাণ আয়রন পাওয়া গেছে। এজন্য ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ ভবনটি বুঝে নিচ্ছেন না।
নীলফামারী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আমিরুল ইসলাম সরকার জানান, চিলাহাটি ফায়ার স্টেশনের জন্য জনবল ও গাড়ি মজুদ আছে। ফায়ার স্টেশনে স্থাপিত গভীর নলকূপের পানিতে ক্ষতিকর মাত্রাতিরিক্ত আয়রনের উপস্থিতির বিষয়টি সমাধানের জন্য গণপূর্ত বিভাগকে বারবার জানানো হলেও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
এ বিষয়ে নীলফামারী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী তৌহিদুজ্জামান দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।