চলতি বছরের প্রথমার্ধে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হচ্ছে না

দ্বিতীয়ার্ধে সম্ভাবনা রয়েছে : পররাষ্ট্র সচিব চীনের মধ্যস্থতায় ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক ফেব্রুয়ারিতে

মায়ানমারের পূর্ণ প্রস্তুতি না থাকায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হচ্ছে না। দ্বিতীয়ার্ধে শুরু করা যাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, ‘চীনের মধ্যস্থতায় মায়ানমারের সঙ্গে বৈঠকের পর চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা যাবে। তবে এর আগে প্রত্যাবাসন শুরু করার পরিবেশ তৈরিতে চীনের মধ্যস্থতায় ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক, তারপর সচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং প্রয়োজন হলে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হবে। সবগুলো বৈঠকেই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সঙ্গে থাকবে চীন। এই প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কেউ যুক্ত হতে চাইলে তাদের স্বাগত জানানো হবে।’

গতকাল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ, চীন ও মায়ানমারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। ভার্চুয়াল এই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাশফি বিনতে শামস, রোহিঙ্গা ডেস্কের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেনসহ জাতিসংঘ ও পূর্ব এশিয়া ডেস্কের মহাপরিচালক। চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুও জাওহুইয়ের সভাপতিত্বে বৈঠকে মায়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা উপমন্ত্রী হাউ দো সুয়ান।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ত্রিপক্ষীয় ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হবে। এই বৈঠকও ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে এই পর্যায়ের বৈঠক বাংলাদেশ-মায়ানমারের মহাপরিচলাক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হতো। এবার এর পরিধি বাড়ানো হয়েছে, যেখানে চীনের একজন প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকবেন। প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি দুই দেশের (বাংলাদেশ-মায়ানমার) মহাপরিচালক পর্যায়ে হটলাইন চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

আগামী মাসেই আবার ত্রিপক্ষীয় সচিব পর্যায়ের বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে- এ তথ্য জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কোন দেশ যুক্ত হতে চাইলে তাদের স্বাগত জানাতে বৈঠকে সবাই রাজি হয়েছে। এছাড়া ত্রিপক্ষীয় মহাপরিচালক ও সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে প্রয়োজন হলে ত্রিপক্ষীয় মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’ চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে প্রত্যাবাসন শুরু করার আশা করছি- এমন জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমরা চলতি বছরের প্রথম ভাগে প্রত্যাবাসন শুরু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মায়ানমার বলেছে তাদের পূর্ণ প্রস্তুতি নেই। তারা বছরের দ্বিতীয়ার্ধের কথা বলেছে। আমরা আশাবাদী।’

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় যে চুক্তি আছে, তা যদি অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়, সেখানে ১০ লাখের বেশি মানুষকে নিয়ে যেতে বছরের পর বছর লেগে যাবে। গত তিন বছরে ৯০ হাজার নতুন বাচ্চাও জন্মগ্রহণ করেছে। সুতরাং এই টোটাল নম্বরটা বাড়তে থাকবে, অনেক জটিলতা আসতে থাকবে। দ্রুত শুরুর বিকল্প নাই। এখন অনেক ফ্যাক্টরস আছে, এসবগুলো ফ্যাক্টরস মাথায় রেখে, ইতোপূর্বে যেহেতু দুইটা ডেট দিয়ে আমরা সফল হতে পারিনি, এখন সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে কীভাবে সফল হওয়া যায়, সেই চেষ্টাই থাকবে আমাদের। আমরা সিনসিয়ারলি এঙ্গেজড থাকবো। ব্যক্তিগতভাবে আমি কশাসলি অপটিমিস্টিক, আমাদের ডিপ্লোমেটিক ভাষায় বলে-আমরা চেষ্টা করে যাব, উইথ অল আওয়ার হার্ট অ্যান্ড সউল।’

গ্রাম বা অঞ্চলভিত্তিক প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে প্রস্তাব দেয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘শেষের দিকে একটা ওয়ার্কিং গ্রুপের মিটিংয়ে পাইলট আকারে (প্রত্যাবাসন) করার কথা ছিল। আমরা সেটার ভিত্তিতে গ্রামভিত্তিক বা এলাকাভিত্তিক ব্যাচ বলি, সেটার আলোকে শুরু হবে। যদিও তাদের দিক থেকে কিছুটা ভিন্নতা হয়তো থাকতে পারে প্রস্তাবের। তারা বলেছে যে নমনীয়তা দেখাবে। আমাদের নিজেদের স্বার্থে নমনীয়তা দেখানো উচিত।’ রাখাইনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গঠনমূলক অংশগ্রহণে চীনের দিক থেকে বক্তব্য এলেও মায়ানমার এ বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেনি বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।

রোহিঙ্গা ডেস্কের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে রাখাইনের যে পরিস্থিতি, তাতে রোহিঙ্গারা এখনই মায়ানমারে ফিরে যেতে প্রস্তুত না। এছাড়া মায়ানমার যেসব রোহিঙ্গাদের ভেরিফিকেশন করেছে, তারা সবাই রাখাইনের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। যেমন- ৮৪০ জনকে মায়ানমার ভেরিফিকেশন করে পাঠিয়েছে, যারা ১২টি গ্রামের বাসিন্দা। এতে দেখা যাচ্ছে, কোন পরিবারের সব সদস্য একসঙ্গে মায়ানমারে ফিরতে পারছে না। ফলে রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনেও আগ্রহী হচ্ছে না। যে কারণে গত দুই বার প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার মায়ানমারকে বলেছি যে, প্রত্যাবাসনের জন্য ছোট ছোট গ্রাম বা গুচ্ছভিত্তিক রোহিঙ্গাদের নির্বাচন করতে হবে, যেন যারা ফিরে যাবে তাদের সবার মধ্যে পূর্বপরিচয় থাকে।’

বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১ , ৬ মাঘ ১৪২৭, ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

চলতি বছরের প্রথমার্ধে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হচ্ছে না

দ্বিতীয়ার্ধে সম্ভাবনা রয়েছে : পররাষ্ট্র সচিব চীনের মধ্যস্থতায় ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক ফেব্রুয়ারিতে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

মায়ানমারের পূর্ণ প্রস্তুতি না থাকায় চলতি বছরের প্রথমার্ধে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হচ্ছে না। দ্বিতীয়ার্ধে শুরু করা যাবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, ‘চীনের মধ্যস্থতায় মায়ানমারের সঙ্গে বৈঠকের পর চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করা যাবে। তবে এর আগে প্রত্যাবাসন শুরু করার পরিবেশ তৈরিতে চীনের মধ্যস্থতায় ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক, তারপর সচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং প্রয়োজন হলে মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক হবে। সবগুলো বৈঠকেই মধ্যস্থতাকারী হিসেবে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সঙ্গে থাকবে চীন। এই প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কেউ যুক্ত হতে চাইলে তাদের স্বাগত জানানো হবে।’

গতকাল রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ, চীন ও মায়ানমারের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। ভার্চুয়াল এই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাশফি বিনতে শামস, রোহিঙ্গা ডেস্কের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেনসহ জাতিসংঘ ও পূর্ব এশিয়া ডেস্কের মহাপরিচালক। চীনের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুও জাওহুইয়ের সভাপতিত্বে বৈঠকে মায়ানমার প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন দেশটির আন্তর্জাতিক সহযোগিতা উপমন্ত্রী হাউ দো সুয়ান।

বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘চীনের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ত্রিপক্ষীয় ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হবে। এই বৈঠকও ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে এই পর্যায়ের বৈঠক বাংলাদেশ-মায়ানমারের মহাপরিচলাক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হতো। এবার এর পরিধি বাড়ানো হয়েছে, যেখানে চীনের একজন প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকবেন। প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি দুই দেশের (বাংলাদেশ-মায়ানমার) মহাপরিচালক পর্যায়ে হটলাইন চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

আগামী মাসেই আবার ত্রিপক্ষীয় সচিব পর্যায়ের বৈঠক করার সিদ্ধান্ত হয়েছে- এ তথ্য জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কোন দেশ যুক্ত হতে চাইলে তাদের স্বাগত জানাতে বৈঠকে সবাই রাজি হয়েছে। এছাড়া ত্রিপক্ষীয় মহাপরিচালক ও সচিব পর্যায়ের বৈঠক শেষে প্রয়োজন হলে ত্রিপক্ষীয় মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’ চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে প্রত্যাবাসন শুরু করার আশা করছি- এমন জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমরা চলতি বছরের প্রথম ভাগে প্রত্যাবাসন শুরু করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মায়ানমার বলেছে তাদের পূর্ণ প্রস্তুতি নেই। তারা বছরের দ্বিতীয়ার্ধের কথা বলেছে। আমরা আশাবাদী।’

মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘দ্বিপক্ষীয় যে চুক্তি আছে, তা যদি অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়, সেখানে ১০ লাখের বেশি মানুষকে নিয়ে যেতে বছরের পর বছর লেগে যাবে। গত তিন বছরে ৯০ হাজার নতুন বাচ্চাও জন্মগ্রহণ করেছে। সুতরাং এই টোটাল নম্বরটা বাড়তে থাকবে, অনেক জটিলতা আসতে থাকবে। দ্রুত শুরুর বিকল্প নাই। এখন অনেক ফ্যাক্টরস আছে, এসবগুলো ফ্যাক্টরস মাথায় রেখে, ইতোপূর্বে যেহেতু দুইটা ডেট দিয়ে আমরা সফল হতে পারিনি, এখন সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে কীভাবে সফল হওয়া যায়, সেই চেষ্টাই থাকবে আমাদের। আমরা সিনসিয়ারলি এঙ্গেজড থাকবো। ব্যক্তিগতভাবে আমি কশাসলি অপটিমিস্টিক, আমাদের ডিপ্লোমেটিক ভাষায় বলে-আমরা চেষ্টা করে যাব, উইথ অল আওয়ার হার্ট অ্যান্ড সউল।’

গ্রাম বা অঞ্চলভিত্তিক প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়ে প্রস্তাব দেয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘শেষের দিকে একটা ওয়ার্কিং গ্রুপের মিটিংয়ে পাইলট আকারে (প্রত্যাবাসন) করার কথা ছিল। আমরা সেটার ভিত্তিতে গ্রামভিত্তিক বা এলাকাভিত্তিক ব্যাচ বলি, সেটার আলোকে শুরু হবে। যদিও তাদের দিক থেকে কিছুটা ভিন্নতা হয়তো থাকতে পারে প্রস্তাবের। তারা বলেছে যে নমনীয়তা দেখাবে। আমাদের নিজেদের স্বার্থে নমনীয়তা দেখানো উচিত।’ রাখাইনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গঠনমূলক অংশগ্রহণে চীনের দিক থেকে বক্তব্য এলেও মায়ানমার এ বিষয়ে কিছু উল্লেখ করেনি বলে জানান পররাষ্ট্র সচিব।

রোহিঙ্গা ডেস্কের মহাপরিচালক দেলোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে রাখাইনের যে পরিস্থিতি, তাতে রোহিঙ্গারা এখনই মায়ানমারে ফিরে যেতে প্রস্তুত না। এছাড়া মায়ানমার যেসব রোহিঙ্গাদের ভেরিফিকেশন করেছে, তারা সবাই রাখাইনের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দা। যেমন- ৮৪০ জনকে মায়ানমার ভেরিফিকেশন করে পাঠিয়েছে, যারা ১২টি গ্রামের বাসিন্দা। এতে দেখা যাচ্ছে, কোন পরিবারের সব সদস্য একসঙ্গে মায়ানমারে ফিরতে পারছে না। ফলে রোহিঙ্গারা প্রত্যাবাসনেও আগ্রহী হচ্ছে না। যে কারণে গত দুই বার প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার মায়ানমারকে বলেছি যে, প্রত্যাবাসনের জন্য ছোট ছোট গ্রাম বা গুচ্ছভিত্তিক রোহিঙ্গাদের নির্বাচন করতে হবে, যেন যারা ফিরে যাবে তাদের সবার মধ্যে পূর্বপরিচয় থাকে।’