একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির তিন দশক

’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং সন্ত্রাসী, মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত সর্ববৃহৎ নাগরিক সংগঠন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ৩০ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে গতকাল কেন্দ্র ও বিভিন্ন শাখার উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সকালে কেন্দ্র ও মহানগরের নেতারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্মূল কমিটির ৩০তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানসূচি আরম্ভ হয়। বিকেলে সংগঠনের সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, নির্মূল কমিটির চিকিৎসাসহায়ক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব, নির্মূল কমিটির আইটি সেলের সভাপতি শহীদ সন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, নির্মূল কমিটির সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতশিল্পী জান্নাতুল ফেরদৌসী লাকী, সর্ব ইউরোপীয় নির্মূল কমিটির সভাপতি সমাজকর্মী তরুণ কান্তি চৌধুরী, সর্ব ইউরোপীয় নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমাজকর্মী আনসার আহমেদ উল্যাহ, ইন্দো-বাংলাদেশ ফোরাম ফর সেক্যুলার হিউম্যানিজমের সাধারণ সম্পাদক সমাজকর্মী বিদ্যুৎ দেবনাথ, নির্মূল কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শওকত বাঙালী, নির্মূল কমিটির আইনসহায়ক কমিটির দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবু ও নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমাজকর্মী কাজী মুকুল প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে শাহরিয়ার কবির ৩০ বছরের আন্দোলনের দীর্ঘ পদযাত্রায় বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত ও সাফল্যের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নির্মূল কমিটি আগামী এক বছরে বাংলাদেশের মাটিতে সংঘটিত ১৯৭১-এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের ৩০ লাখ নাগরিকের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে জাতিসংঘসহ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সরকারের কাছে পাঠাবে।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস পালন এবং বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ২০১৭ সালের মার্চে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হলেও সরকারিভাবে এ পর্যন্ত ’৭১-এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে যৌথভাবে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তান ও পাকিস্তানপন্থিরা প্রথম থেকেই ’৭১-এর গণহত্যার দায় শুধু অস্বীকার করছে না, বরং এই মুক্তিযুদ্ধকালে তথাকথিত পাকিস্তানিদের হত্যার জন্য বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীকে দায়ী করছে। নির্মূল কমিটি দীর্ঘকাল পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে ’৭১-এর নৃশংসতম গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে গণহত্যাকারীদের বিচারের পক্ষে দেশে ও বিদেশে জনমত সৃষ্টির কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও সরকার সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করলে অন্তিমে বাংলাদেশের গণহত্যা সম্পর্কে গণহত্যাকারী পাকিস্তানের মিথ্যা বয়ান সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং এজন্য আমাদের ৩০ লাখ শহীদ পরিবারসহ গোটা জাতির কাছে দায়ী থাকতে হবে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি না হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিটা গণমানুষের কাছে পৌঁছতে পারত না। গণমানুষ যদি আন্দোলিত না হতো তাহলে হয়ত আমাদের দল এবং সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে হয়তো এভাবে উদ্যোগ নিত না। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, কবি সুফিয়া কামাল, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরসহ যারা নির্মূল কমিটির আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের সবার প্রতি আমরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আজকে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়ে নির্মূল কমিটি যে প্রস্তাব করেছে সে প্রস্তাবের সঙ্গে আমি একমত পোষণ করি। দ্রুতই মন্ত্রীপরিষদে নির্মূল কমিটির এই দাবির বিষয়ে আমি কথা বলব।

নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, আর কোন সংগঠন একটানা ত্রিশ বছর একটি আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারেনি। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলন এমন একটি আন্দোলন যেখানে সব সময় দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষেরা যুক্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে নির্মূল কমিটি গর্ব করতেই পারে। আমাদের সফলতা অনেক, ব্যর্থতার দায় আমরা নেব না কারণ, যখন আমরা দেখি একজন শাহরিয়ার কবির এদেশে স্বাধীনতা পদক পান না, কিন্তু এমন অনেককে পদকটি দেয়া হয়েছে তাদের আমরা চিনি না, ফলে নির্মূল কমিটির যদি কোন ব্যর্থতা থেকে থাকে সেটি রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতার রাজনীতির বিষয়। নির্মূল কমিটি কখনও ক্ষমতা চায়নি, নির্মূল কমিটি ঘাতক-দালালদের বিচারের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছে, আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, নির্মূল কমিটির এই বিশাল কর্মকা-ে অনেকেই জড়িত। তাদের সবার কাছে এই দেশ কৃতজ্ঞ থাকবে। আমি শাহরিয়ার কবিরের নাম আলাদাভাবে মনে করিয়ে দিতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের জন্য একজন মানুষের এতো তীব্র ভালোবাসা থাকতে পারে, নিজের চোখে দেখেও বিশ্বাস হতে চায় না! জোট সরকারের আমলে প্রতিহিংসার কারণে শাহরিয়ার কবির জেল খেটেছেন। এই দেশকে ভালোবাসার জন্য একজন মানুষকে কত কষ্ট করতে হয়, আমি নিজের চোখে দেখেছি। যুদ্ধাপরাধী শর্ষিনার পীরকে স্বাধীনতা পদক দিয়ে এই দেশকে অনেক বড় অপমান করা হয়েছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য সম্মানিত করার বেলায় শাহরিয়ার কবিরকে কারও চোখে পড়ে না ভেবে আমি মাঝে মাঝে অবাক ও হতাশ হয়ে যাই। বিজ্ঞপ্তি।

বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১ , ৬ মাঘ ১৪২৭, ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির তিন দশক

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং সন্ত্রাসী, মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রাষ্ট্র ও সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে গঠিত সর্ববৃহৎ নাগরিক সংগঠন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ৩০ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে গতকাল কেন্দ্র ও বিভিন্ন শাখার উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সকালে কেন্দ্র ও মহানগরের নেতারা মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ অর্পণ ও শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নির্মূল কমিটির ৩০তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানসূচি আরম্ভ হয়। বিকেলে সংগঠনের সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি। অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরীন চৌধুরী, নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, নির্মূল কমিটির চিকিৎসাসহায়ক কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব, নির্মূল কমিটির আইটি সেলের সভাপতি শহীদ সন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, নির্মূল কমিটির সাংস্কৃতিক স্কোয়াডের সাধারণ সম্পাদক সঙ্গীতশিল্পী জান্নাতুল ফেরদৌসী লাকী, সর্ব ইউরোপীয় নির্মূল কমিটির সভাপতি সমাজকর্মী তরুণ কান্তি চৌধুরী, সর্ব ইউরোপীয় নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমাজকর্মী আনসার আহমেদ উল্যাহ, ইন্দো-বাংলাদেশ ফোরাম ফর সেক্যুলার হিউম্যানিজমের সাধারণ সম্পাদক সমাজকর্মী বিদ্যুৎ দেবনাথ, নির্মূল কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক শওকত বাঙালী, নির্মূল কমিটির আইনসহায়ক কমিটির দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান বাবু ও নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক সমাজকর্মী কাজী মুকুল প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে শাহরিয়ার কবির ৩০ বছরের আন্দোলনের দীর্ঘ পদযাত্রায় বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাত ও সাফল্যের সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নির্মূল কমিটি আগামী এক বছরে বাংলাদেশের মাটিতে সংঘটিত ১৯৭১-এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য বাংলাদেশ এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশের ৩০ লাখ নাগরিকের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে জাতিসংঘসহ সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সরকারের কাছে পাঠাবে।

শাহরিয়ার কবির বলেন, ২৫ মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস পালন এবং বাংলাদেশের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ২০১৭ সালের মার্চে জাতীয় সংসদে সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হলেও সরকারিভাবে এ পর্যন্ত ’৭১-এর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। এক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে যৌথভাবে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘পাকিস্তান ও পাকিস্তানপন্থিরা প্রথম থেকেই ’৭১-এর গণহত্যার দায় শুধু অস্বীকার করছে না, বরং এই মুক্তিযুদ্ধকালে তথাকথিত পাকিস্তানিদের হত্যার জন্য বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীকে দায়ী করছে। নির্মূল কমিটি দীর্ঘকাল পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে ’৭১-এর নৃশংসতম গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে গণহত্যাকারীদের বিচারের পক্ষে দেশে ও বিদেশে জনমত সৃষ্টির কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও সরকার সক্রিয় উদ্যোগ গ্রহণ করলে অন্তিমে বাংলাদেশের গণহত্যা সম্পর্কে গণহত্যাকারী পাকিস্তানের মিথ্যা বয়ান সত্য বলে প্রতিষ্ঠিত হবে এবং এজন্য আমাদের ৩০ লাখ শহীদ পরিবারসহ গোটা জাতির কাছে দায়ী থাকতে হবে।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি বলেন, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি না হলে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিটা গণমানুষের কাছে পৌঁছতে পারত না। গণমানুষ যদি আন্দোলিত না হতো তাহলে হয়ত আমাদের দল এবং সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে হয়তো এভাবে উদ্যোগ নিত না। শহীদ জননী জাহানারা ইমাম, কবি সুফিয়া কামাল, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরসহ যারা নির্মূল কমিটির আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তাদের সবার প্রতি আমরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আজকে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়ে নির্মূল কমিটি যে প্রস্তাব করেছে সে প্রস্তাবের সঙ্গে আমি একমত পোষণ করি। দ্রুতই মন্ত্রীপরিষদে নির্মূল কমিটির এই দাবির বিষয়ে আমি কথা বলব।

নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, আর কোন সংগঠন একটানা ত্রিশ বছর একটি আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারেনি। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আন্দোলন এমন একটি আন্দোলন যেখানে সব সময় দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষেরা যুক্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে নির্মূল কমিটি গর্ব করতেই পারে। আমাদের সফলতা অনেক, ব্যর্থতার দায় আমরা নেব না কারণ, যখন আমরা দেখি একজন শাহরিয়ার কবির এদেশে স্বাধীনতা পদক পান না, কিন্তু এমন অনেককে পদকটি দেয়া হয়েছে তাদের আমরা চিনি না, ফলে নির্মূল কমিটির যদি কোন ব্যর্থতা থেকে থাকে সেটি রাজনৈতিক দলগুলোর ক্ষমতার রাজনীতির বিষয়। নির্মূল কমিটি কখনও ক্ষমতা চায়নি, নির্মূল কমিটি ঘাতক-দালালদের বিচারের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ গড়ার জন্য আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছে, আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল বলেন, নির্মূল কমিটির এই বিশাল কর্মকা-ে অনেকেই জড়িত। তাদের সবার কাছে এই দেশ কৃতজ্ঞ থাকবে। আমি শাহরিয়ার কবিরের নাম আলাদাভাবে মনে করিয়ে দিতে চাই, মুক্তিযুদ্ধের জন্য একজন মানুষের এতো তীব্র ভালোবাসা থাকতে পারে, নিজের চোখে দেখেও বিশ্বাস হতে চায় না! জোট সরকারের আমলে প্রতিহিংসার কারণে শাহরিয়ার কবির জেল খেটেছেন। এই দেশকে ভালোবাসার জন্য একজন মানুষকে কত কষ্ট করতে হয়, আমি নিজের চোখে দেখেছি। যুদ্ধাপরাধী শর্ষিনার পীরকে স্বাধীনতা পদক দিয়ে এই দেশকে অনেক বড় অপমান করা হয়েছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য সম্মানিত করার বেলায় শাহরিয়ার কবিরকে কারও চোখে পড়ে না ভেবে আমি মাঝে মাঝে অবাক ও হতাশ হয়ে যাই। বিজ্ঞপ্তি।