কেন বই পড়ব

বইপড়া জীবনবিচ্ছিন্ন কাজ নয়। বই পড়তে হয় একাকী এবং তাতে অবসর ভরে ওঠে নির্মল আনন্দে। জীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে বই পাঠের সমন্বয় ঘটাতে হয়। বই পড়া থেকে আনন্দ, বুদ্ধি ও সক্ষমতা অর্জিত হয়। পাঠের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানের সফল প্রয়োগ ঘটাতে হয় বাস্তব জীবনে। এটিই বই পাঠের উদ্দেশ্য এবং এখানেই বই পাঠের স্বার্থকথা।

সঠিক ধরনের সাহিত্য আপনাকে যে কোন বিষয় সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিকোণ দিতে সক্ষম। যেটা কিনা আপনার মনকে সতেজ করে তুলতে সাহায্য করে। একটি বই মূলত আপনাকে যে বার্তাটি দেয়, সেটি হলো নিজের নীতিতে অটল থাকার। এ কারণে নানা ধরনের মানসিক পীড়া থেকে মুক্তি মেলে আর মন পুরো পরিশুদ্ধ নতুনের মতো হয়ে যায়।

একটি চলচ্চিত্র বা টিভি অনুষ্ঠানে আপনাকে ছবি দেখানো হয়, যেখানে একটি উপন্যাসের সাহায্যে আপনি সেই ছবি বা দৃশ্যপট নিজেই তৈরি করেন। সুতরাং বই আসলে অন্য যে কোন মাধ্যমের চাইতে অনেক শক্তিশালী। কারণ এতে আপনি অনেক বেশি জড়িত।

জীবনে চলার পথে মাঝে মাঝে পেছনের সময়গুলোতে টেনে নিতে পারে বইÑযা অনেক বড় একটি পাওয়া। একেকটি বই আমাদের মধ্যে একেকটি চোখ সৃষ্টি করে। যে যত বেশি বই পড়ে তার চোখ সংখ্যা ততবেশি। যার ফলে তার বিবেচনাবোধ সূক্ষ্ম হয় এবং সিদ্ধান্ত সঠিক হয়। সৈয়দ মুজতবা আলী তার ‘বইকেনা’ প্রবন্ধে বলেছেন, ‘আমার মনের চোখ তো মাত্র একটি কিংবা দুটি নয়। মনের চোখ বাড়ানো-কমানো তো সম্পূর্ণ আমার হাতে। নানা জ্ঞানবিজ্ঞান যতই আমি আয়ত্ত করতে থাকি, ততই এক-একটা করে আমার মনের চোখ ফুটতে থাকে।’

দক্ষতা হলো উদ্ভিদের মতো, কেটেছেঁটে যতœ নিতে হয়। বই সেই পরিচর্যার কাজটি করে। বইয়ের কোন অতিপ্রাকৃত গল্পের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে পারলে নিজের মনে থাকা নানা বিষয়কে এক জায়গায় এনে সমাধানের চেষ্টা করা যায়।

মাহবুবুর রহমান সাজিদ

বুধবার, ২০ জানুয়ারী ২০২১ , ৬ মাঘ ১৪২৭, ৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

কেন বই পড়ব

image

বইপড়া জীবনবিচ্ছিন্ন কাজ নয়। বই পড়তে হয় একাকী এবং তাতে অবসর ভরে ওঠে নির্মল আনন্দে। জীবনের অভিজ্ঞতার সঙ্গে বই পাঠের সমন্বয় ঘটাতে হয়। বই পড়া থেকে আনন্দ, বুদ্ধি ও সক্ষমতা অর্জিত হয়। পাঠের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানের সফল প্রয়োগ ঘটাতে হয় বাস্তব জীবনে। এটিই বই পাঠের উদ্দেশ্য এবং এখানেই বই পাঠের স্বার্থকথা।

সঠিক ধরনের সাহিত্য আপনাকে যে কোন বিষয় সম্পর্কে একটি নতুন দৃষ্টিকোণ দিতে সক্ষম। যেটা কিনা আপনার মনকে সতেজ করে তুলতে সাহায্য করে। একটি বই মূলত আপনাকে যে বার্তাটি দেয়, সেটি হলো নিজের নীতিতে অটল থাকার। এ কারণে নানা ধরনের মানসিক পীড়া থেকে মুক্তি মেলে আর মন পুরো পরিশুদ্ধ নতুনের মতো হয়ে যায়।

একটি চলচ্চিত্র বা টিভি অনুষ্ঠানে আপনাকে ছবি দেখানো হয়, যেখানে একটি উপন্যাসের সাহায্যে আপনি সেই ছবি বা দৃশ্যপট নিজেই তৈরি করেন। সুতরাং বই আসলে অন্য যে কোন মাধ্যমের চাইতে অনেক শক্তিশালী। কারণ এতে আপনি অনেক বেশি জড়িত।

জীবনে চলার পথে মাঝে মাঝে পেছনের সময়গুলোতে টেনে নিতে পারে বইÑযা অনেক বড় একটি পাওয়া। একেকটি বই আমাদের মধ্যে একেকটি চোখ সৃষ্টি করে। যে যত বেশি বই পড়ে তার চোখ সংখ্যা ততবেশি। যার ফলে তার বিবেচনাবোধ সূক্ষ্ম হয় এবং সিদ্ধান্ত সঠিক হয়। সৈয়দ মুজতবা আলী তার ‘বইকেনা’ প্রবন্ধে বলেছেন, ‘আমার মনের চোখ তো মাত্র একটি কিংবা দুটি নয়। মনের চোখ বাড়ানো-কমানো তো সম্পূর্ণ আমার হাতে। নানা জ্ঞানবিজ্ঞান যতই আমি আয়ত্ত করতে থাকি, ততই এক-একটা করে আমার মনের চোখ ফুটতে থাকে।’

দক্ষতা হলো উদ্ভিদের মতো, কেটেছেঁটে যতœ নিতে হয়। বই সেই পরিচর্যার কাজটি করে। বইয়ের কোন অতিপ্রাকৃত গল্পের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করতে পারলে নিজের মনে থাকা নানা বিষয়কে এক জায়গায় এনে সমাধানের চেষ্টা করা যায়।

মাহবুবুর রহমান সাজিদ