কবিতায় স্বদেশ ও মানবিক চেতনা

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে অনিমেষ বনিকের নতুন কাব্যগ্রন্থ ‘কাব্য নব নব’। প্রকাশ করেছে আাবষ্কার প্রকাশনী।

চার ফর্মার গ্রন্থটিতে মোট ৫৬টি কবিতা রয়েছে। কবিতাগুলো পাঠ করলে অন্য এক অনিমেষ বনিককে খুঁজে পাওয়া যায়। যার মধ্যে রয়েছে একটি বাউল স্বভাব। পেশায় চিকিৎসক এই লেখকের গোছানো জীবনে এভাবে কবিতার সঙ্গে সংসার করার ব্যাপারটা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক। তবে তিনি যে জীবনের শুরু থেকেই গান ভালো বাসতেন, এবং সেখান থেকেই যে কবিতার ছন্দের প্রতি আকর্ষণ তা তিনি স্বীকার করেছেন।

তার কবিতার একটি উল্লেখযোগ্য দিক দেশপ্রেম ও ভাষা প্রেম। গ্রন্থের শুরুতেই তিনি মুক্তিযুদ্ধ, একাত্তর, একুশে ফেব্রুয়ারি- এসব জাতীয় বিশেষ দিবস নিয়ে কবিতা লিখেছেন। এছাড়া তার কবিতায় রয়েছে জীবন যন্ত্রণা, প্রেম, প্রতিবাদ, বাস্তবতা ও প্রবল কল্পনার মিশেল। এসব কিছু মিলে যেন একজন অনিমেষকেই খুঁজে পাওয়া যাবে গ্রন্থে, যে অনিমেষ শুধু ডাক্তারি বিদ্যায় নিবেদিত নন, ঘুরে বেড়ান জীবনের অলিগলিতে। বাস্তবতার শাখা প্রশাখায়।

তার কবিতায় স্থান পেয়েছে, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বঙ্গবন্ধু, মহাত্মা গান্ধীর মতো বড় মানুষেরা। ‘আমি রবি ঠাকুরকে দেখিনি; / কিন্তু শুনেছি তাঁর লেখা গান।’ কিংবা ‘আমি শেখ মুজিবকে দেখিনি; কিন্তু শুনেছি তার হিমালয়সম নেতৃত্বের কথা’ এভাবে অনিমেষ কাব্যে ধারণ করেছেন এই মহামানবগুলোকে। নারী ফুল বৃক্ষ- ঠাঁই পেয়েছে তার কবিতায়। মৃত্যুচিন্তা এসেছে তার কবিতায়।

সমসাময়িক বিষয় করোনাও তার কবিতায় ঠাঁই পেয়েছে: ‘করোনা না হয় এবার তুমি একটু ক্ষান্ত হও/ মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নেবার এবার সুযোগ দাও।’

আমরা অনিমেষের পরবর্তী বইয়ের অপেক্ষায় থাকলাম, যেখানে অনিমেষের কবিতা আরো সমসাময়িক ভাষা ও বোধকে ধারণ করবে। এ গ্রন্থে ‘মোর’ ‘মোদের’ জাতীয় শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে, যা আজকাল আর ব্যবহৃত হয় না। আশা করি অনিমেষ ভাষার ক্ষেত্রে এ জাতীয় ক্লিশে ব্যাপারগুলো এড়িয়ে যাবেন। আরো সচেতন হবেন। অনিমেষের জন্য অনেক শুভ কামনা।

- সাময়িকী প্রতিবেদক

বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২১ , ৭ মাঘ ১৪২৭, ৭ জমাদিউস সানি ১৪৪২

কবিতায় স্বদেশ ও মানবিক চেতনা

image

সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে অনিমেষ বনিকের নতুন কাব্যগ্রন্থ ‘কাব্য নব নব’। প্রকাশ করেছে আাবষ্কার প্রকাশনী।

চার ফর্মার গ্রন্থটিতে মোট ৫৬টি কবিতা রয়েছে। কবিতাগুলো পাঠ করলে অন্য এক অনিমেষ বনিককে খুঁজে পাওয়া যায়। যার মধ্যে রয়েছে একটি বাউল স্বভাব। পেশায় চিকিৎসক এই লেখকের গোছানো জীবনে এভাবে কবিতার সঙ্গে সংসার করার ব্যাপারটা বেশ কৌতূহল উদ্দীপক। তবে তিনি যে জীবনের শুরু থেকেই গান ভালো বাসতেন, এবং সেখান থেকেই যে কবিতার ছন্দের প্রতি আকর্ষণ তা তিনি স্বীকার করেছেন।

তার কবিতার একটি উল্লেখযোগ্য দিক দেশপ্রেম ও ভাষা প্রেম। গ্রন্থের শুরুতেই তিনি মুক্তিযুদ্ধ, একাত্তর, একুশে ফেব্রুয়ারি- এসব জাতীয় বিশেষ দিবস নিয়ে কবিতা লিখেছেন। এছাড়া তার কবিতায় রয়েছে জীবন যন্ত্রণা, প্রেম, প্রতিবাদ, বাস্তবতা ও প্রবল কল্পনার মিশেল। এসব কিছু মিলে যেন একজন অনিমেষকেই খুঁজে পাওয়া যাবে গ্রন্থে, যে অনিমেষ শুধু ডাক্তারি বিদ্যায় নিবেদিত নন, ঘুরে বেড়ান জীবনের অলিগলিতে। বাস্তবতার শাখা প্রশাখায়।

তার কবিতায় স্থান পেয়েছে, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, বঙ্গবন্ধু, মহাত্মা গান্ধীর মতো বড় মানুষেরা। ‘আমি রবি ঠাকুরকে দেখিনি; / কিন্তু শুনেছি তাঁর লেখা গান।’ কিংবা ‘আমি শেখ মুজিবকে দেখিনি; কিন্তু শুনেছি তার হিমালয়সম নেতৃত্বের কথা’ এভাবে অনিমেষ কাব্যে ধারণ করেছেন এই মহামানবগুলোকে। নারী ফুল বৃক্ষ- ঠাঁই পেয়েছে তার কবিতায়। মৃত্যুচিন্তা এসেছে তার কবিতায়।

সমসাময়িক বিষয় করোনাও তার কবিতায় ঠাঁই পেয়েছে: ‘করোনা না হয় এবার তুমি একটু ক্ষান্ত হও/ মুক্ত বাতাসে নিশ্বাস নেবার এবার সুযোগ দাও।’

আমরা অনিমেষের পরবর্তী বইয়ের অপেক্ষায় থাকলাম, যেখানে অনিমেষের কবিতা আরো সমসাময়িক ভাষা ও বোধকে ধারণ করবে। এ গ্রন্থে ‘মোর’ ‘মোদের’ জাতীয় শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে, যা আজকাল আর ব্যবহৃত হয় না। আশা করি অনিমেষ ভাষার ক্ষেত্রে এ জাতীয় ক্লিশে ব্যাপারগুলো এড়িয়ে যাবেন। আরো সচেতন হবেন। অনিমেষের জন্য অনেক শুভ কামনা।

- সাময়িকী প্রতিবেদক