গ্রামে বসে পাইপে সুপেয় পানি পাচ্ছেন সাড়ে ৩ হাজার পরিবার

গোপালগঞ্জে পাইপ লাইনে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহের মাধ্যমে শহরের সুবিধা পাচ্ছে গ্রামের সাড়ে ৩ হাজার পরিবার। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে এ প্রকল্প শুরু করা হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পরিবারে পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া, কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এ প্লান্ট স্থাপন করে পানি সরবাহ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তর।

গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার জানান, প্রায় ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া উপজেলা ও পৌরসভাসমূহে নিরাপদপানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী ও কুশলী ইউনিয়নে ২টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। পাটগাতী প্লান্ট থেকে ঘণ্টায় ১ লাখ ৫০ হাজার লিটার নিরাপদ পানি উত্তোলন করে সকাল বিকেল ২ হাজার পরিবারকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সংযোগ দিয়ে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া কুশলী প্লান্টে ঘন্টায় ৫০ হাজার লিটার পানি উত্তোলন করা হবে। কুশলী প্লান্টের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এখন সরবরাহ লাইনের কাজ শেষ হয়েছে। এখান থেকে চলতি জানুয়ারি মাসের শেষদিকে কুশলী ও বর্ণি ইউনয়নের ১ হাজার ৫শ’ পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ প্রকল্প সম্প্রসারণ করে গোটা জেলার সব গ্রামকে নিরাপদ পানির আওতায় আনা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী গ্রামে শহরের সুবিধা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এটি বাস্তবায়ন করতে আমরা সারাদেশের মধ্যে টুঙ্গিপাড়া থেকে প্রথম প্লান্ট স্থাপন ও পাইপ লাইনের মাধ্যমে সুপেয় ও নিরাপদ পানি গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছি। এরমধ্য দিয়ে গ্রামের মানুষ শহরের সুবিধা পাচ্ছেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রদীপ মজুমদার বলেন, পাটগাতী, কুশলী ও বর্ণি ইউনিয়নে গভীর নলকূপ স্থাপন করা যায় না। এসব ইউনিয়নের অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আয়রণ ও আর্সেনিক রয়েছে। এছাড়া খালের পানিতে শুষ্ক মৌসুমে লবণ চলে আসে। নিরাপদ পানির অভাবে ৩টি ইউনিয়নের ১০ ভাগ মানুষ ডায়রিয়া, আমাশয়, টায়ফয়েডসহ পানি বাহিত রোগে ভুগছিলেন। এছাড়া ৩ ইউনিয়নের সব মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ২টি পানির প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। এ প্লান্টে ৪ স্তরে পানি ফিল্টার করা হয়। এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে ২ হাজার পরিবার সুপেয় পানির আওতায় এসেছে। আরো ১ হাজার ৫শ’ পরিবার দ্রুত এ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ৩ ইউনিয়নের আরো কয়েক হাজার পরিবারকে এর আওতায় আনা হবে। সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে।

পাটাগাতী ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা গ্রামের মো. হাফিজ বিশ্বাস বলেন, আমাদের ইউনিয়নের সুপেয় ও নিরাপদ পানির বড় অভাব ছিল। এখন পানির প্লান্ট স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ পানির স্বাদ-গন্ধ চমৎকার। পান করতেও ভাল লাগছে। এ পানি আমাদের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে।

image
আরও খবর
পবিস কর্তাদের যোগসাজশে বাড়ির সংযোগে সেচযন্ত্রে বিদ্যুৎ : মৃত্যু ৩
সিলেটে বিচারককে ঘুষ দেয়ার চেষ্টা এসআই ক্লোজড
ভাণ্ডারিয়ায় বধ্যভূমি দখলে বাধা দেয়ায় মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের ওপর হামালা
চাটমোহরে মেয়র কাউন্সিলর শপথ
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে টেন্ডার অনিয়মের অভিযোগ
ছাত্র আন্দোলনে সংশ্লিষ্ট থাকায় অপসারণ হচ্ছেন খুবির তিন শিক্ষক
টেকনাফে অস্ত্রসহ ৫ রোহিঙ্গা আটক
নড়াইলে শ্রমিককে হত্যার অভিযোগ
মির্জাপুরে জমি বিবাদে বোন খুন ভাই আটক
৩ কোটি টাকার কারেন্ট জাল জব্দ
বিষমুক্ত সবজি ফেরি ৪৫ বছর ধরে ক্রেতার ভরসা আরশেদ-গফুর
রাস্তায় ফেলে রাখা বৃদ্ধার পাশে ঠাকুরগাঁও রিপোর্টার্স ইউনিটি-ইউএনও
ফসলি জমিতে পুকুর খননের হিড়িক : উৎপাদন হুমকিতে
৪ জেলায় সুখের নীড় পাচ্ছে ১২৭০ গৃহহীন পরিবার

শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী ২০২১ , ৮ মাঘ ১৪২৭, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২

গ্রামে বসে পাইপে সুপেয় পানি পাচ্ছেন সাড়ে ৩ হাজার পরিবার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, গোপালগঞ্জ

image

গোপালগঞ্জে পাইপ লাইনে নিরাপদ ও সুপেয় পানি সরবরাহের মাধ্যমে শহরের সুবিধা পাচ্ছে গ্রামের সাড়ে ৩ হাজার পরিবার। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে এ প্রকল্প শুরু করা হয়েছে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পরিবারে পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া, কাশিয়ানী ও মুকসুদপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে এ প্লান্ট স্থাপন করে পানি সরবাহ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তর।

গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার জানান, প্রায় ১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া উপজেলা ও পৌরসভাসমূহে নিরাপদপানি সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী ও কুশলী ইউনিয়নে ২টি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। পাটগাতী প্লান্ট থেকে ঘণ্টায় ১ লাখ ৫০ হাজার লিটার নিরাপদ পানি উত্তোলন করে সকাল বিকেল ২ হাজার পরিবারকে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সংযোগ দিয়ে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া কুশলী প্লান্টে ঘন্টায় ৫০ হাজার লিটার পানি উত্তোলন করা হবে। কুশলী প্লান্টের কাজ সমাপ্ত হয়েছে। এখন সরবরাহ লাইনের কাজ শেষ হয়েছে। এখান থেকে চলতি জানুয়ারি মাসের শেষদিকে কুশলী ও বর্ণি ইউনয়নের ১ হাজার ৫শ’ পরিবারে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ প্রকল্প সম্প্রসারণ করে গোটা জেলার সব গ্রামকে নিরাপদ পানির আওতায় আনা হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।

গোপালগঞ্জ জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক চন্দ্র তালুকদার বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী গ্রামে শহরের সুবিধা দিতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এটি বাস্তবায়ন করতে আমরা সারাদেশের মধ্যে টুঙ্গিপাড়া থেকে প্রথম প্লান্ট স্থাপন ও পাইপ লাইনের মাধ্যমে সুপেয় ও নিরাপদ পানি গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছি। এরমধ্য দিয়ে গ্রামের মানুষ শহরের সুবিধা পাচ্ছেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী প্রদীপ মজুমদার বলেন, পাটগাতী, কুশলী ও বর্ণি ইউনিয়নে গভীর নলকূপ স্থাপন করা যায় না। এসব ইউনিয়নের অগভীর নলকূপের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আয়রণ ও আর্সেনিক রয়েছে। এছাড়া খালের পানিতে শুষ্ক মৌসুমে লবণ চলে আসে। নিরাপদ পানির অভাবে ৩টি ইউনিয়নের ১০ ভাগ মানুষ ডায়রিয়া, আমাশয়, টায়ফয়েডসহ পানি বাহিত রোগে ভুগছিলেন। এছাড়া ৩ ইউনিয়নের সব মানুষের জন্য বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে ২টি পানির প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। এ প্লান্টে ৪ স্তরে পানি ফিল্টার করা হয়। এর মাধ্যমে ইতোমধ্যে ২ হাজার পরিবার সুপেয় পানির আওতায় এসেছে। আরো ১ হাজার ৫শ’ পরিবার দ্রুত এ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এ ৩ ইউনিয়নের আরো কয়েক হাজার পরিবারকে এর আওতায় আনা হবে। সে লক্ষ্যেই কাজ চলছে।

পাটাগাতী ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা গ্রামের মো. হাফিজ বিশ্বাস বলেন, আমাদের ইউনিয়নের সুপেয় ও নিরাপদ পানির বড় অভাব ছিল। এখন পানির প্লান্ট স্থাপন করে পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ পানির স্বাদ-গন্ধ চমৎকার। পান করতেও ভাল লাগছে। এ পানি আমাদের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে।