ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ৩ জন গ্রেপ্তার

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মাণাধীন টার্মিনাল-৩’র বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দর্পণ গ্রুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম সোহাগ ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেনা জহির এবং ম্যানেজার মিল্টন রায় ওরফে অপূর্ব রায় মিলে গড়ে তোলে এ প্রতারণার প্রতিষ্ঠান। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে প্রায় দেড়শ’ মানুষ চাকরির প্রত্যাশায় আবেদন করে বায়োডাটা জমা দেন। সিকিউরিটি হিসেবে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে চাকরি প্রত্যাশিত ব্যক্তিরা গিয়ে দেখেন তাদের যে নিয়োগ পত্র দেয়া হয়েছে পুরোটাই ভুয়া। এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে প্রতারক প্রতিষ্ঠান দর্পণ গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির ঢাকা মেট্টো পূর্ব বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমার তত্ত্বাবধায়নে সহকারী পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক জানান, ভাটারা থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার সূত্র ধরে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় ক/২৪/৪ নম্বর রোডে সরকার মার্কেটের তৃতীয় তলায় অভিযান চালানো হয়। অভিযান চালিয়ে দর্পণ গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। প্রতারকরা ভুয়া নিয়োগপত্র ধরিয়ে দিয়ে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে। এভাবে দেড়শ’র বেশি চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

শেখ ওমর ফারুক বলেন, ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠানটি স্যামসাং গ্রুপর নামে একটি ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার প্রস্তুত করে তাদের অফিসের সামনে ডিজিটাল ব্যানারে ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩-এ দক্ষ ও অদক্ষ লেবার ও সুপারভাইজার নিয়োগ দেয়া হবে’ এমন একটি বিজ্ঞাপন ঝুলিয়ে রাখে। এমন চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেখে চাকরি প্রত্যাশী ভুক্তভোগী অনেকেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে লেবার পদে নিয়োগ দিতে ৫০ হাজার টাকা এবং সুপারভাইজার পদে এক লাখ টাকা করে নিতে থাকে তারা। সেইসঙ্গে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে চাকরির প্রত্যাশীদের আশ্বস্ত করে প্রতারকরা।

পুলিশ সুপর কানিজ ফাতেমা বলেন, তার অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ক ওর্ডার পাওয়া গেছে। এসব ওয়ার্ক অর্ডারের বিপরীতে ৭ হাজার লোক নিয়োগ দেয়ার প্রমাণ মিলেছে। অর্থাৎ যেসব ওয়ার্ক অর্ডার মিলেছে সেখানে দর্পণ গ্রুপের নামে অ্যাড্রেস করে কোনটিতে ২৫শ’ কোনটিতে ১ হাজার, কোনটিতে ৫শ’ এভাবে মোট ৭ হাজার লোক দেয়ার ঠিকাদারি সে পেয়েছে। ওই ওয়ার্ক অর্ডারগুলো সবই ভুয়া। এসব ওয়ার্ক অর্ডার সে নিজেই তৈরি করত।

অভিযানের তত্ত্ববধায়নকারী সিআইডির পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমা বলেন, দর্পণ গ্রুপের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম সোহাগের একাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দর্পণ সার্ভিস নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আছে। এছাড়া এইচআর নামে একটি সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান আছে। ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গত ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ দিয়ে আসছিল সে। এছাড়া নিজের নামে জহির ফাউন্ডেশন করেছে। এ প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে সে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের বিষয়টি প্রচার করত। মোট কথা একাধিক প্রতিষ্ঠান খুলে সে প্রতারণা করত। সাপ্তাহিক দর্পণ নামে তার একটি গণমাধ্যমও রয়েছে। তার নামে প্রতারণার অভিযোগে একাধিক মামলা আছে বলে তথ্য পেয়েছে সিআইডি।

আরও খবর
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্বরূপে ফিরে আসুক প্রধানমন্ত্রী
সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে সরকারি দল
মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘গণ্ডি’
আরণ্যক নাট্যদলের প্রযোজনা ‘কহে ফেসবুক’
টাকা দিলেই জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস সার্টিফিকেট
চীনের মধ্যস্থতায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হবে প্রতিমন্ত্রী
পিকে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধা ও মেয়ে অনিন্দিতা রিমান্ডে
দেশকে নতজানু রাখার পরিকল্পনা রুখে দিতে হবে মির্জা ফখরুল
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে বাধা
চৌমুহনী পৌর নির্বাচন হত্যার আসামি গ্রেপ্তার

শুক্রবার, ২২ জানুয়ারী ২০২১ , ৮ মাঘ ১৪২৭, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২

ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ ৩ জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মাণাধীন টার্মিনাল-৩’র বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়া হবে বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে দর্পণ গ্রুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম সোহাগ ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেনা জহির এবং ম্যানেজার মিল্টন রায় ওরফে অপূর্ব রায় মিলে গড়ে তোলে এ প্রতারণার প্রতিষ্ঠান। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখে প্রায় দেড়শ’ মানুষ চাকরির প্রত্যাশায় আবেদন করে বায়োডাটা জমা দেন। সিকিউরিটি হিসেবে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়। কিন্তু নির্ধারিত তারিখে চাকরি প্রত্যাশিত ব্যক্তিরা গিয়ে দেখেন তাদের যে নিয়োগ পত্র দেয়া হয়েছে পুরোটাই ভুয়া। এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে প্রতারক প্রতিষ্ঠান দর্পণ গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির ঢাকা মেট্টো পূর্ব বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমার তত্ত্বাবধায়নে সহকারী পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেনের নেতৃত্বে চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক জানান, ভাটারা থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার সূত্র ধরে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় ক/২৪/৪ নম্বর রোডে সরকার মার্কেটের তৃতীয় তলায় অভিযান চালানো হয়। অভিযান চালিয়ে দর্পণ গ্রুপের চেয়ারম্যানসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। প্রতারকরা ভুয়া নিয়োগপত্র ধরিয়ে দিয়ে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিয়েছে। এভাবে দেড়শ’র বেশি চাকরি প্রত্যাশীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

শেখ ওমর ফারুক বলেন, ‘ভুয়া প্রতিষ্ঠানটি স্যামসাং গ্রুপর নামে একটি ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার প্রস্তুত করে তাদের অফিসের সামনে ডিজিটাল ব্যানারে ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩-এ দক্ষ ও অদক্ষ লেবার ও সুপারভাইজার নিয়োগ দেয়া হবে’ এমন একটি বিজ্ঞাপন ঝুলিয়ে রাখে। এমন চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেখে চাকরি প্রত্যাশী ভুক্তভোগী অনেকেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে লেবার পদে নিয়োগ দিতে ৫০ হাজার টাকা এবং সুপারভাইজার পদে এক লাখ টাকা করে নিতে থাকে তারা। সেইসঙ্গে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে চাকরির প্রত্যাশীদের আশ্বস্ত করে প্রতারকরা।

পুলিশ সুপর কানিজ ফাতেমা বলেন, তার অফিসে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কয়েকটি ওয়ার্ক ওর্ডার পাওয়া গেছে। এসব ওয়ার্ক অর্ডারের বিপরীতে ৭ হাজার লোক নিয়োগ দেয়ার প্রমাণ মিলেছে। অর্থাৎ যেসব ওয়ার্ক অর্ডার মিলেছে সেখানে দর্পণ গ্রুপের নামে অ্যাড্রেস করে কোনটিতে ২৫শ’ কোনটিতে ১ হাজার, কোনটিতে ৫শ’ এভাবে মোট ৭ হাজার লোক দেয়ার ঠিকাদারি সে পেয়েছে। ওই ওয়ার্ক অর্ডারগুলো সবই ভুয়া। এসব ওয়ার্ক অর্ডার সে নিজেই তৈরি করত।

অভিযানের তত্ত্ববধায়নকারী সিআইডির পুলিশ সুপার কানিজ ফাতেমা বলেন, দর্পণ গ্রুপের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম সোহাগের একাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। দর্পণ সার্ভিস নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আছে। এছাড়া এইচআর নামে একটি সিকিউরিটি প্রতিষ্ঠান আছে। ওই প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গত ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সিকিউরিটি গার্ড নিয়োগ দিয়ে আসছিল সে। এছাড়া নিজের নামে জহির ফাউন্ডেশন করেছে। এ প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে সে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের বিষয়টি প্রচার করত। মোট কথা একাধিক প্রতিষ্ঠান খুলে সে প্রতারণা করত। সাপ্তাহিক দর্পণ নামে তার একটি গণমাধ্যমও রয়েছে। তার নামে প্রতারণার অভিযোগে একাধিক মামলা আছে বলে তথ্য পেয়েছে সিআইডি।