চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন : ভোটের আর দু’দিন

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় নগরবাসী

প্রচারণায় আ’লীগ-বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী এগিয়ে

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনে এবার ৭ জন মেয়র প্রার্থীসহ মোট ২৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নগরবাসীর উদ্বেগ উৎকণ্ঠার শেষ নেই। বিশেষ করে কে হচ্ছেন নগর পিতা এ একটি প্রশ্ন তাদের ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে এবার যে হবেন নগর পিতা তার কাছে নগরবাসীর অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসেবে সবার কাছে গ্রহণযোগত্যা রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনেরও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সবার কাছে। সব মিলিয়ে কে হচ্ছেন এ নগরের শাসক এ নিয়ে নগরবাসীর কৌতুহলের শেষ নেই।

আর মাত্র দুটি দিন। এরপরই শুরু হবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নগরবাসী নির্বাচন করবে তাদের অভিভাবক। পুরো নগরজুড়ে এখন তারই গুঞ্জন।

গতকাল শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে ভোটারসহ নানা বয়সী মানুষের কোলাহল। সবার মুখে একই কথা কে হচ্ছেন কে হবেন নগর পিতা? বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ কৌতুহল লক্ষ্য করা গেছে।

শহরের আনাচে-কানাচে, গলির মুখে ছোট-ছোট দলে বিভক্ত হয়ে চলছে মানুষের নির্বাচনী ভাবনা আর বিশ্লেষণ। স্বতঃস্ফূর্তভাবে সবাই মেয়র প্রার্থীদের নানা ধরনের দোষগুণের পর্যালোচনা করছেন। তবে সব শঙ্কা, ভয়কে জয় করে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারবেন এমনই প্রত্যাশা নগরবাসীর। এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে নগরের বাসিন্দারা আগামী পাঁচ বছরের জন্য তাদের প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করবেন।

নগরবাসীদের চোখ এখন ব্যালট পেপারের দিকে। প্রস্তুত হয়েছে ভোটের নগর চট্টগ্রাম। আগামী বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনকে ঘিরে নগরে ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্নের কথা জানিয়েছেন সিসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এদিকে শান্তি, শৃঙ্খলায় এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দেখতে ২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করা সময়ের দাবি উল্লেখ করে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনে চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে স্মরকলিপি দেয়া হয়। এদিকে প্রধান দুই দল নগর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আন্তঃকোন্দল থাকলেও আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই দলই নিজেদের ভেদাভেদ ভুলে নিজের দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরইমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী গত শনিবার ‘রূপসী চট্টগ্রাম আমার আপনার অহংকার, অঙ্গীকার সবার যোগে সাজবে এ নগর, এ অঙ্গীকারে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ৩৭ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। একই দিন বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং চট্টগ্রাম নাগরিক ঐক্য পরিষদ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন নিরাপদ চট্টগ্রাম, সাম্য সম্প্রীতির চট্টগ্রাম, জলাবদ্ধতামুক্ত পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্য শিক্ষাবান্ধব, তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ ও নান্দনিক পর্যটন নগরী গড়তে নগরবাসীর প্রতি ধনের শীষে ভোট দেয়ার আহবান জানিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা মামলা-হমলার কারণে বেকাদায় রয়েছে। অন্যদিকে সম্প্রতি নির্বাচনী সহিংসতায় চট্টগ্রাম মহানগরীতে দু’জন নিহত হয়েছেন।

তবে নগরবাসীর এ নির্বাচনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, নির্বাচন আসলে উত্তাপ থাকে। এ উত্তাপ যেন আত্মঘাতী না হয়। এ উত্তাপ যেন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবস্থাপনা, সংস্কৃতিকে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না করে। ইচ্ছে করলে মিছিল মিটিং ছাড়াও নির্বাচন করা যায়। এখন মিডিয়ার যুগ। ফেসবুকের যুগ। ম্যাসেজ পাঠাতে পারেন। আমি মনে করি, যতটুকু হয়ে গেছে, আর কোথাও যেন সহিংসতা না হয়। সবাই প্রশাসনকে সাহায্য করুন।

তবে আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির ৩৪ প্রার্থী ২৩৮ মামলা কাঁধে নিয়ে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ভাঙচুর, সহিংসতা, হত্যাসহ নানা মামলা মাথায় নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বিএনপির এসব প্রার্থীরা। সেই তালিকায় মেয়র প্রার্থী নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের পাশাপাশি রয়েছেন ৫ নারী ও ২৮ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী। এই তিন পদে বিএনপির ৩৪ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মোট মামলা রয়েছে ২৩৮টি।

তবে মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সমর্থনে বাংলাদেশের খ্যাতনামা চলচ্চিত্র তারকা শিল্পীরা গতকাল বেলা ১২টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে থেকে প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করছেন। এদিকে বিএনপির ভোট কারচুপিকে নাকচ করে দিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, ইভিএম হলো একটি বাড়তি সুযোগ। ইভিএম থাকলে যারা ভোট দিচ্ছেন তাদের জন্য যেমন সুবিধা তেমনি যারা নিচ্ছেন তাদের জন্যও সুবিধা। তাছাড়া ইভিএমে ভোট হলে জালিয়াতি করার সুযোগ এবং ভোট বাক্স ছিনতাইয়ের সুযোগ থাকে না।

তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন বানচাল করার জন্য আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে।

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি এবার ভোটের আগে পরে ৫ দিনের জন্য ২০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নিয়োগপ্রাপ্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচন শুরুর দুই দিন আগে থেকে পরের দুই দিনও মাঠে থাকবেন।

এদিকে বিভিন্ন সংগঠন ও নির্বাচনী কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত চসিক মেয়র পদপ্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল সকাল ১১টায় তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শিক্ষকদের প্যানেল হলুদ দলের উদ্যোগে প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনাতনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এরপর তিনি আগ্রাবাদ এক্সেস রোডস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত উত্তর ও দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের নৌকার সমর্থনে নির্বাচনী এজেন্টদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন। বিকেল সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পীদের ব্যানারে নৌকার সমর্থনে শুরু করা গণসংযোগ ও নির্বাচনী প্রচারণা  কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের জনসাধারণকে নৌকার পক্ষে শিল্পীদের মধ্যে রিয়াজ আহমেদ, তানভীন সুইটি, অরুনা বিশ্বাস, মীর সাব্বির, তারিন, বিজরী বরকতউল্লাহ, মাহিয়া মাহি, অপু বিশ্বাস, সায়মন সাদিকসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সোমবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২১ , ১১ মাঘ ১৪২৭, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪২

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন : ভোটের আর দু’দিন

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় নগরবাসী

প্রচারণায় আ’লীগ-বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী এগিয়ে

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম

image

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন আগামী ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আসন্ন নির্বাচনে এবার ৭ জন মেয়র প্রার্থীসহ মোট ২৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নগরবাসীর উদ্বেগ উৎকণ্ঠার শেষ নেই। বিশেষ করে কে হচ্ছেন নগর পিতা এ একটি প্রশ্ন তাদের ঘুরপাক খাচ্ছে। তবে এবার যে হবেন নগর পিতা তার কাছে নগরবাসীর অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী প্রবীণ রাজনীতিবিদ হিসেবে সবার কাছে গ্রহণযোগত্যা রয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনেরও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে সবার কাছে। সব মিলিয়ে কে হচ্ছেন এ নগরের শাসক এ নিয়ে নগরবাসীর কৌতুহলের শেষ নেই।

আর মাত্র দুটি দিন। এরপরই শুরু হবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে নগরবাসী নির্বাচন করবে তাদের অভিভাবক। পুরো নগরজুড়ে এখন তারই গুঞ্জন।

গতকাল শহরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেছে ভোটারসহ নানা বয়সী মানুষের কোলাহল। সবার মুখে একই কথা কে হচ্ছেন কে হবেন নগর পিতা? বেশ কয়েকটি এলাকা ঘুরে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ কৌতুহল লক্ষ্য করা গেছে।

শহরের আনাচে-কানাচে, গলির মুখে ছোট-ছোট দলে বিভক্ত হয়ে চলছে মানুষের নির্বাচনী ভাবনা আর বিশ্লেষণ। স্বতঃস্ফূর্তভাবে সবাই মেয়র প্রার্থীদের নানা ধরনের দোষগুণের পর্যালোচনা করছেন। তবে সব শঙ্কা, ভয়কে জয় করে নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারবেন এমনই প্রত্যাশা নগরবাসীর। এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে নগরের বাসিন্দারা আগামী পাঁচ বছরের জন্য তাদের প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করবেন।

নগরবাসীদের চোখ এখন ব্যালট পেপারের দিকে। প্রস্তুত হয়েছে ভোটের নগর চট্টগ্রাম। আগামী বুধবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচনকে ঘিরে নগরে ছয় স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্নের কথা জানিয়েছেন সিসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এদিকে শান্তি, শৃঙ্খলায় এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে দেখতে ২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করা সময়ের দাবি উল্লেখ করে চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশনে চট্টগ্রাম সাংস্কৃতিক ঐক্যজোটের পক্ষ থেকে স্মরকলিপি দেয়া হয়। এদিকে প্রধান দুই দল নগর আওয়ামী লীগ ও বিএনপির আন্তঃকোন্দল থাকলেও আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দুই দলই নিজেদের ভেদাভেদ ভুলে নিজের দলীয় মেয়র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরইমধ্যে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরী গত শনিবার ‘রূপসী চট্টগ্রাম আমার আপনার অহংকার, অঙ্গীকার সবার যোগে সাজবে এ নগর, এ অঙ্গীকারে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে ৩৭ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। একই দিন বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং চট্টগ্রাম নাগরিক ঐক্য পরিষদ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন নিরাপদ চট্টগ্রাম, সাম্য সম্প্রীতির চট্টগ্রাম, জলাবদ্ধতামুক্ত পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্য শিক্ষাবান্ধব, তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ ও নান্দনিক পর্যটন নগরী গড়তে নগরবাসীর প্রতি ধনের শীষে ভোট দেয়ার আহবান জানিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। এদিকে বিএনপি নেতাকর্মীরা মামলা-হমলার কারণে বেকাদায় রয়েছে। অন্যদিকে সম্প্রতি নির্বাচনী সহিংসতায় চট্টগ্রাম মহানগরীতে দু’জন নিহত হয়েছেন।

তবে নগরবাসীর এ নির্বাচনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠার মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, নির্বাচন আসলে উত্তাপ থাকে। এ উত্তাপ যেন আত্মঘাতী না হয়। এ উত্তাপ যেন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান, ব্যবস্থাপনা, সংস্কৃতিকে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না করে। ইচ্ছে করলে মিছিল মিটিং ছাড়াও নির্বাচন করা যায়। এখন মিডিয়ার যুগ। ফেসবুকের যুগ। ম্যাসেজ পাঠাতে পারেন। আমি মনে করি, যতটুকু হয়ে গেছে, আর কোথাও যেন সহিংসতা না হয়। সবাই প্রশাসনকে সাহায্য করুন।

তবে আসন্ন নির্বাচনে বিএনপির ৩৪ প্রার্থী ২৩৮ মামলা কাঁধে নিয়ে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ভাঙচুর, সহিংসতা, হত্যাসহ নানা মামলা মাথায় নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন বিএনপির এসব প্রার্থীরা। সেই তালিকায় মেয়র প্রার্থী নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের পাশাপাশি রয়েছেন ৫ নারী ও ২৮ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী। এই তিন পদে বিএনপির ৩৪ প্রার্থীদের বিরুদ্ধে মোট মামলা রয়েছে ২৩৮টি।

তবে মেয়র প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম চৌধুরীর সমর্থনে বাংলাদেশের খ্যাতনামা চলচ্চিত্র তারকা শিল্পীরা গতকাল বেলা ১২টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে থেকে প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করছেন। এদিকে বিএনপির ভোট কারচুপিকে নাকচ করে দিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেছেন, ইভিএম হলো একটি বাড়তি সুযোগ। ইভিএম থাকলে যারা ভোট দিচ্ছেন তাদের জন্য যেমন সুবিধা তেমনি যারা নিচ্ছেন তাদের জন্যও সুবিধা। তাছাড়া ইভিএমে ভোট হলে জালিয়াতি করার সুযোগ এবং ভোট বাক্স ছিনতাইয়ের সুযোগ থাকে না।

তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন বানচাল করার জন্য আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে।

নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ১৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি এবার ভোটের আগে পরে ৫ দিনের জন্য ২০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। নিয়োগপ্রাপ্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা নির্বাচন শুরুর দুই দিন আগে থেকে পরের দুই দিনও মাঠে থাকবেন।

এদিকে বিভিন্ন সংগঠন ও নির্বাচনী কেন্দ্র পরিচালনা কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত চসিক মেয়র পদপ্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। গতকাল সকাল ১১টায় তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শিক্ষকদের প্যানেল হলুদ দলের উদ্যোগে প্রেসক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনাতনে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। এরপর তিনি আগ্রাবাদ এক্সেস রোডস্থ একটি কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত উত্তর ও দক্ষিণ আগ্রাবাদ ওয়ার্ডের নৌকার সমর্থনে নির্বাচনী এজেন্টদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন। বিকেল সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে থেকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন শিল্পীদের ব্যানারে নৌকার সমর্থনে শুরু করা গণসংযোগ ও নির্বাচনী প্রচারণা  কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের জনসাধারণকে নৌকার পক্ষে শিল্পীদের মধ্যে রিয়াজ আহমেদ, তানভীন সুইটি, অরুনা বিশ্বাস, মীর সাব্বির, তারিন, বিজরী বরকতউল্লাহ, মাহিয়া মাহি, অপু বিশ্বাস, সায়মন সাদিকসহ অন্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।