করোনার অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর প্রায় ১০ মাস পর দেশে করোনার অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অনেক দিনের দাবি ছিল অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দেয়ার। এখন এটা চালু করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছি। আপনাদের যখন বললাম তখন থেকেই এটা চালু হয়ে গেল।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের দেয়া অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিন বিশ্বের সবচেয়ে সহনশীল ও কার্যকর হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। এই ভ্যাকসিন ভারত ও ইউকেতে পরীক্ষা শেষেই দেশে এসেছে। অন্যান্য ভ্যাকসিনের তুলনায় আমাদের দেশের আবহাওয়ায় এই ভ্যাকসিন সবচেয়ে বেশি মানানসই। এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, যেকোন ভ্যাকসিন প্রয়োগে সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতেই পারে। তাছাড়া বর্তমানে সরকার দেশব্যাপী নয় ধরনের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করছে। সেখানেও ছোটখাটো কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। ভ্যাকসিন প্রয়োগে কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তার জন্য স্বাস্থ্যখাতের টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভ্যাকসিন পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে টেলিমেডিসিন সেবার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সুতরাং সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ে করোনার মতো প্রাণঘাতী ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা না নেয়ার কোন কারণ নেই।

এর আগে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা একাধিকবার অ্যান্টিবডি পরীক্ষার দাবি জানিয়ে এসেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, দেশে ভ্যাকসিন দেয়ার আগে অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু করা দরকার। গত ১৭ সেপ্টেম্বর পরামর্শক কমিটিও তাদের সভায় অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের ওপর গুরুত্বারোপ করে। কমিটি তাদের সভা শেষে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তখন বলেছিল, বর্তমানে পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে, যার পরিমাণ তুলনামূলক কম। কোভিড-১৯ পরীক্ষা বৃদ্ধি করতে পারলে কোভিড-১৯ সংক্রমণ আরও বেশি শনাক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য জাতীয় পরামর্শক কমিটি অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের জন্য একাধিকবার পরামর্শ দেয়।

জাতীয় পরামর্শক কমিটি মনে করে, তিন পদ্ধতিতে (পিসিআর, অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্ট) কোভিড-১৯ পরীক্ষা কার্যক্রম পাশাপাশি থাকলে তা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সরকার দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমতি দেয়। এর আগে গত ৩ জুন কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি করোনা শনাক্তে র‌্যাপিড টেস্টের জন্য সুপারিশ করে। তারা আরটি পিসিআর (রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ পলিমারেজ রিঅ্যাকশন) পরীক্ষার সঙ্গে অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করার পক্ষেও মত দেন। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, এখন সেরোসার্ভিল্যান্স নিয়ে কাজ করার সময় এসে গেছে, যার জন্য অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু করাও প্রয়োজন। এটা করা গেলে বিশ্ব মহামারী নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সংক্রমণ পরিস্থিতির একটি পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, সংক্রমণ বুঝতে হলে অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করা জরুরি। সেরোসার্ভিল্যান্স ছাড়াও অ্যান্টিবডি টেস্টের গুরুত্ব রয়েছে প্লাজমা থেরাপির জন্য।

আরও খবর
গ্যাস সিলিন্ডারে বেলুন ফোলানো বন্ধে অভিযান চালান
করোনায় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল বিশ্বে অনন্য উদাহরণ সরকারি দল
বিএনপি টিকা ব্যবস্থাপনা নিয়েও অপপ্রচার চালাচ্ছে কাদের
টিকা গ্রহণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারণা বৃদ্ধির সুপারিশ
মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৭তম জন্মবার্ষিকী আজ
পর্দা নামলো ‘উনবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের’
রংপুরে শিশু ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন
জেল সুপার রত্মা রায় ও জেলার নূর মোহাম্মদকে প্রত্যাহার
ভারতে পাচার করে দেয়া যুবকের পরিবারের কাছে মুক্তিপণ দাবি
বেড়েছে জরিমানার অঙ্ক, কমেনি দুর্ঘটনা
মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া সবচেয়ে বড় দুর্নীতি মির্জা ফখরুল
বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান হলেন এহছানে এলাহী
ঘন কুয়াশায় ফের ১২ ঘণ্টা ফেরি বন্ধ ছিল
দৈনিক সংবাদে কোন সংবাদদাতা নিয়োগ করা হচ্ছে না

সোমবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২১ , ১১ মাঘ ১৪২৭, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪২

করোনার অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর প্রায় ১০ মাস পর দেশে করোনার অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, অনেক দিনের দাবি ছিল অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দেয়ার। এখন এটা চালু করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছি। আপনাদের যখন বললাম তখন থেকেই এটা চালু হয়ে গেল।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতের দেয়া অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিন বিশ্বের সবচেয়ে সহনশীল ও কার্যকর হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। এই ভ্যাকসিন ভারত ও ইউকেতে পরীক্ষা শেষেই দেশে এসেছে। অন্যান্য ভ্যাকসিনের তুলনায় আমাদের দেশের আবহাওয়ায় এই ভ্যাকসিন সবচেয়ে বেশি মানানসই। এক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মালেক বলেন, যেকোন ভ্যাকসিন প্রয়োগে সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতেই পারে। তাছাড়া বর্তমানে সরকার দেশব্যাপী নয় ধরনের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করছে। সেখানেও ছোটখাটো কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে। ভ্যাকসিন প্রয়োগে কোন ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তার জন্য স্বাস্থ্যখাতের টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ভ্যাকসিন পরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে টেলিমেডিসিন সেবার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সুতরাং সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয়ে করোনার মতো প্রাণঘাতী ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা না নেয়ার কোন কারণ নেই।

এর আগে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা একাধিকবার অ্যান্টিবডি পরীক্ষার দাবি জানিয়ে এসেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, দেশে ভ্যাকসিন দেয়ার আগে অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু করা দরকার। গত ১৭ সেপ্টেম্বর পরামর্শক কমিটিও তাদের সভায় অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের ওপর গুরুত্বারোপ করে। কমিটি তাদের সভা শেষে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তখন বলেছিল, বর্তমানে পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে, যার পরিমাণ তুলনামূলক কম। কোভিড-১৯ পরীক্ষা বৃদ্ধি করতে পারলে কোভিড-১৯ সংক্রমণ আরও বেশি শনাক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য জাতীয় পরামর্শক কমিটি অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের জন্য একাধিকবার পরামর্শ দেয়।

জাতীয় পরামর্শক কমিটি মনে করে, তিন পদ্ধতিতে (পিসিআর, অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্ট) কোভিড-১৯ পরীক্ষা কার্যক্রম পাশাপাশি থাকলে তা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সরকার দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমতি দেয়। এর আগে গত ৩ জুন কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি করোনা শনাক্তে র‌্যাপিড টেস্টের জন্য সুপারিশ করে। তারা আরটি পিসিআর (রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ পলিমারেজ রিঅ্যাকশন) পরীক্ষার সঙ্গে অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করার পক্ষেও মত দেন। কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, এখন সেরোসার্ভিল্যান্স নিয়ে কাজ করার সময় এসে গেছে, যার জন্য অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু করাও প্রয়োজন। এটা করা গেলে বিশ্ব মহামারী নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সংক্রমণ পরিস্থিতির একটি পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, সংক্রমণ বুঝতে হলে অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করা জরুরি। সেরোসার্ভিল্যান্স ছাড়াও অ্যান্টিবডি টেস্টের গুরুত্ব রয়েছে প্লাজমা থেরাপির জন্য।