পীরগাছায় ৪০ দিনের কর্মসূচির অর্থ জনপ্রতিনিধির পকেটে!

প্রশাসন নীরব

রংপুরের পীরগাছায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির শ্রমিক অনুপস্থিত থাকলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার যোগসাজসে উপস্থিত দেখিয়ে মজুরির টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। ফলে গ্রামীণ রাস্তাঘাটের মেরামত কার্যক্রম ভেস্তে যেতে বসেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৯ ইউনিয়নে গ্রামীণ রাস্তাঘাট মেরামতের জন্য ৪ হাজার ১শত ৪২ জন শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়। শ্রমিকের ভাতা হিসেবে বরাদ্দ দেয়া হয় ৩ কোটি ৩১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় প্রায় ইউনিয়নে শ্রমিকরা কাজ না করে অনুপস্থিত থাকেন। অনুপস্থিত শ্রমিকদের কৌশলে উপস্থিত দেখিয়ে শ্রমিকের মজুরি উত্তোলন করে তা আত্মসাত করে আসছেন। ফলে কয়েক দফায় বন্যায় উপজেলা গ্রামীণ রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও শুধু কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও তদারকি না করায় রাস্তাঘাটের মেরামত হয়নি। সরেজমিনে গত রোববার উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র, ওই ওয়ার্ডে বন্যার কারণে অনেক রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গেছে। ওই ওয়ার্ডে দুটি মৌজা মিলে শ্রমিক রয়েছে ৮৬ জন। বর্তমানে গাবুড়ার নেছাবউদ্দিন বাজারে পার্শের রাস্তার কাজ করছে ৪০ জন শ্রমিক। কর্মরত শ্রমিক আফসার আলী বলেন, ৮৬ জন শ্রমিকের মধ্যে আমরা ৪০ থেকে ৪২ জন শ্রমিক কাজ করছি। বাস্তবে সেখানে শ্রমিক পাওয়া যায় মাত্র ৩৫ জন।

সেখানে ৫১ জন শ্রমিক অনুপস্থিত থাকে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান। তারা আরো বলেন, অনুপস্থিত শ্রমিক উপস্থিত দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শ্রমিকের মজুরির টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন।

উপজেলা তাম্বুলপুর ইউনিয়নে কয়েকটি ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা গেল, তাম্বুলপুর ইউনিয়নের রহমতচর মৌজার ৭নং ওয়ার্ডের খোঁজ নিয়ে দেখা যায় তাদের শ্রমিকের সংখ্যা ৮০ জন। এর মধ্যে ৭০ জনের মতো নিয়মিত কাজ করলেও অজ্ঞাত কারণে মজুরি উত্তোলন হয় ৮০ জন শ্রমিকের। তাম্বুলপুর মৌজা ৯নং ওয়ার্ডে শ্রমিক ৭২ জন হলে নিয়মিত কাজ করেন ৫০ থেকে ৬০ জন। শ্রমিকের মজুরি উত্তোলন হয় ৭২ জনের। অপরদিকে তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শ্রমিক রয়েছে ৬৭ জন। এরমধ্যে সোনারায় মহিরিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ৪০ জন শ্রমিক ও মেম্বারের বাড়ি নিকটে কাজ করছে ৬ জন শ্রমিক বলে জানান ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল গফুর। বাকি ২১ জন শ্রমিকের বিষয়ে পশ্চিম সোনারায় সুশান্তের হরিবাসর এলাকায় কাজ করার কথা বললেও সেখানে কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। ৫নং ওয়ার্ডের শ্রমিক সরদার আতাউর রহমান কড়া ভাষায় বলেন, আপনার দেখার এখতিয়ার আছে, আপনি কেন এখানে আসছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ এই প্রতিনিধির কাছে অনুপস্থিত শ্রমিকদের তালিকা চান। তালিকা পেলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আরও খবর
গরু নেই, বাবা-ছেলের কাঁধে হালের জোয়াল
ফরিদপুরে ৮শ’ কম্বল পেলেন প্রতিবন্ধীরা
নৌকার মাঝি হতে চান গালাগাঁও চেয়ারম্যান জিয়াউল হক
রাজশাহীতে প্রি-পেইড মিটারে বাড়ছে গ্রাহক অসন্তোষ
খুলনায় ভাঙা হবে ২২৬ অবৈধ স্থাপনা
গ্রামীণফোনের ১৮০ কর্মীকে পুনর্বহালের দাবি
শার্শায় অপহৃত শিশুকে ৩ দিন পর উদ্ধার
চরফ্যাশন সরকারি হাসপাতালে দালাল চক্রে জিম্মি রোগীরা
বনকর্তাদের যোগসাজশে সামাজিক বনায়নের গাছ লুটের অভিযোগ
শীত-কুয়াশা উপেক্ষা করে হাওরে বোরো আবাদের ধুম
সালথায় পাঁচ গ্রামের ভরসা সেতু ঝুঁকিপূর্ণ
কনকনে শীতে কাঁপছে উত্তর
চরফ্যাশনে ছাত্রী ধর্ষণ : মামলা
বদরগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে বোরো আবাদ

মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২১ , ১২ মাঘ ১৪২৭, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪২

পীরগাছায় ৪০ দিনের কর্মসূচির অর্থ জনপ্রতিনিধির পকেটে!

প্রশাসন নীরব

প্রতিনিধি, পীরগাছা (রংপুর)

রংপুরের পীরগাছায় ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচির শ্রমিক অনুপস্থিত থাকলেও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার যোগসাজসে উপস্থিত দেখিয়ে মজুরির টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। ফলে গ্রামীণ রাস্তাঘাটের মেরামত কার্যক্রম ভেস্তে যেতে বসেছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৯ ইউনিয়নে গ্রামীণ রাস্তাঘাট মেরামতের জন্য ৪ হাজার ১শত ৪২ জন শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়। শ্রমিকের ভাতা হিসেবে বরাদ্দ দেয়া হয় ৩ কোটি ৩১ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকি না থাকায় প্রায় ইউনিয়নে শ্রমিকরা কাজ না করে অনুপস্থিত থাকেন। অনুপস্থিত শ্রমিকদের কৌশলে উপস্থিত দেখিয়ে শ্রমিকের মজুরি উত্তোলন করে তা আত্মসাত করে আসছেন। ফলে কয়েক দফায় বন্যায় উপজেলা গ্রামীণ রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হলেও শুধু কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও তদারকি না করায় রাস্তাঘাটের মেরামত হয়নি। সরেজমিনে গত রোববার উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে খোঁজ নিয়ে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র, ওই ওয়ার্ডে বন্যার কারণে অনেক রাস্তাঘাট ভেঙ্গে গেছে। ওই ওয়ার্ডে দুটি মৌজা মিলে শ্রমিক রয়েছে ৮৬ জন। বর্তমানে গাবুড়ার নেছাবউদ্দিন বাজারে পার্শের রাস্তার কাজ করছে ৪০ জন শ্রমিক। কর্মরত শ্রমিক আফসার আলী বলেন, ৮৬ জন শ্রমিকের মধ্যে আমরা ৪০ থেকে ৪২ জন শ্রমিক কাজ করছি। বাস্তবে সেখানে শ্রমিক পাওয়া যায় মাত্র ৩৫ জন।

সেখানে ৫১ জন শ্রমিক অনুপস্থিত থাকে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শ্রমিক জানান। তারা আরো বলেন, অনুপস্থিত শ্রমিক উপস্থিত দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ শ্রমিকের মজুরির টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন।

উপজেলা তাম্বুলপুর ইউনিয়নে কয়েকটি ওয়ার্ডে ঘুরে দেখা গেল, তাম্বুলপুর ইউনিয়নের রহমতচর মৌজার ৭নং ওয়ার্ডের খোঁজ নিয়ে দেখা যায় তাদের শ্রমিকের সংখ্যা ৮০ জন। এর মধ্যে ৭০ জনের মতো নিয়মিত কাজ করলেও অজ্ঞাত কারণে মজুরি উত্তোলন হয় ৮০ জন শ্রমিকের। তাম্বুলপুর মৌজা ৯নং ওয়ার্ডে শ্রমিক ৭২ জন হলে নিয়মিত কাজ করেন ৫০ থেকে ৬০ জন। শ্রমিকের মজুরি উত্তোলন হয় ৭২ জনের। অপরদিকে তাম্বুলপুর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শ্রমিক রয়েছে ৬৭ জন। এরমধ্যে সোনারায় মহিরিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ৪০ জন শ্রমিক ও মেম্বারের বাড়ি নিকটে কাজ করছে ৬ জন শ্রমিক বলে জানান ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল গফুর। বাকি ২১ জন শ্রমিকের বিষয়ে পশ্চিম সোনারায় সুশান্তের হরিবাসর এলাকায় কাজ করার কথা বললেও সেখানে কোন শ্রমিক পাওয়া যায়নি। ৫নং ওয়ার্ডের শ্রমিক সরদার আতাউর রহমান কড়া ভাষায় বলেন, আপনার দেখার এখতিয়ার আছে, আপনি কেন এখানে আসছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল আজিজ এই প্রতিনিধির কাছে অনুপস্থিত শ্রমিকদের তালিকা চান। তালিকা পেলে আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।