অধ্যক্ষ তার দায় এড়াতে পারবে না তদন্ত প্রতিবেদন

সিলেটের এমসি (মুরারিচাঁদ) কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনায় অধ্যক্ষ তার দায় এড়াতে পারেন না। যদিও এ ঘটনায় মূলত হোস্টেল সুপার ও প্রহরীদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল বলে তদন্ত কমিটির সুপারিশে বলা হয়।

গত সেপ্টেম্বরে দেশব্যাপী আলোচিত গণধর্ষণের এ ঘটনা আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন। শুনানি শেষে ২৯ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন। এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলা নিরূপণে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়ে তা অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দেয়া হয়। গত ২০ অক্টোবর ওই কমিটি আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার সময় কলেজ বন্ধ থাকার পরও কয়েকজন ছাত্র ও সাবেক ছাত্র হোস্টেলে অবস্থান করেন। একজন সাবেক ছাত্র ৫ নম্বর ব্লকের হোস্টেল সুপারের বাসভবন দখল করে থাকেন।

সাবেক ওই ছাত্ররা অবৈধভাবে কলেজে হোস্টেলের সিট দখল করে থাকার কারণে এবং সাবেক ছাত্র সাইফুর রহমান কর্তৃক হোস্টেল সুপারের বাসভবন জোর করে দখল করে থাকার কারণেই তারা কলেজের হোস্টেল এলাকায় গণধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ করার সাহস পায়। ফলে ঘটনার তারিখে হোস্টেল ক্যাম্পাসে ওই ঘটনার নেপথ্যে মূলত হোস্টেল সুপারদের তদারকির ঘাটতি ও দায়িত্বে অবহেলাই দায়ী। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে কলেজের অধ্যক্ষের ওপরও এ দায়ভার চলে আসে।

চার সদস্যের কমিটিতে ছিলেন সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মমিনুন নেসা, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন সুলতানা। এছাড়াও ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য ১৫ দফা সুপারিশ করেছে চার সদস্যের ওই কমিটি। যেখানে কলেজের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের চাহিদার ভিত্তিতে হোস্টেলে আসন নিশ্চিত করতে হবে এবং অছাত্র বা সাবেক ছাত্রদের হোস্টেলে বসবাস কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আগামী ২৮ জানুয়ারি বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন এক গৃহবধূ। এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছে।

বুধবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২১ , ১৩ মাঘ ১৪২৭, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪২

এমসি কলেজে গণধর্ষণ

অধ্যক্ষ তার দায় এড়াতে পারবে না তদন্ত প্রতিবেদন

বিশেষ প্রতিনিধি, সিলেট

সিলেটের এমসি (মুরারিচাঁদ) কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের ঘটনায় অধ্যক্ষ তার দায় এড়াতে পারেন না। যদিও এ ঘটনায় মূলত হোস্টেল সুপার ও প্রহরীদের দায়িত্বে অবহেলা ছিল বলে তদন্ত কমিটির সুপারিশে বলা হয়।

গত সেপ্টেম্বরে দেশব্যাপী আলোচিত গণধর্ষণের এ ঘটনা আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ মিসবাহ উদ্দিন। শুনানি শেষে ২৯ সেপ্টেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ আদেশ দেন। এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণী ধর্ষণের ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের অবহেলা নিরূপণে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়ে তা অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দেয়া হয়। গত ২০ অক্টোবর ওই কমিটি আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার সময় কলেজ বন্ধ থাকার পরও কয়েকজন ছাত্র ও সাবেক ছাত্র হোস্টেলে অবস্থান করেন। একজন সাবেক ছাত্র ৫ নম্বর ব্লকের হোস্টেল সুপারের বাসভবন দখল করে থাকেন।

সাবেক ওই ছাত্ররা অবৈধভাবে কলেজে হোস্টেলের সিট দখল করে থাকার কারণে এবং সাবেক ছাত্র সাইফুর রহমান কর্তৃক হোস্টেল সুপারের বাসভবন জোর করে দখল করে থাকার কারণেই তারা কলেজের হোস্টেল এলাকায় গণধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধ করার সাহস পায়। ফলে ঘটনার তারিখে হোস্টেল ক্যাম্পাসে ওই ঘটনার নেপথ্যে মূলত হোস্টেল সুপারদের তদারকির ঘাটতি ও দায়িত্বে অবহেলাই দায়ী। তবে প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে কলেজের অধ্যক্ষের ওপরও এ দায়ভার চলে আসে।

চার সদস্যের কমিটিতে ছিলেন সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ মো. বজলুর রহমান, অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মমিনুন নেসা, চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেম ও সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শারমিন সুলতানা। এছাড়াও ভবিষ্যতে এ ধরণের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য ১৫ দফা সুপারিশ করেছে চার সদস্যের ওই কমিটি। যেখানে কলেজের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের চাহিদার ভিত্তিতে হোস্টেলে আসন নিশ্চিত করতে হবে এবং অছাত্র বা সাবেক ছাত্রদের হোস্টেলে বসবাস কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আগামী ২৮ জানুয়ারি বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের দ্বারা গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন এক গৃহবধূ। এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবাইকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছে।