করোনার ভ্যাকসিন : অপেক্ষার অবসান

করোনা ভ্যাকসিনের জন্য মুখিয়ে আছে বাংলাদেশের মানুষ। অনেকের মনে প্রশ্ন ছিল- বাংলাদেশ কি করোনা ভ্যাকসিন পাবে, নাকি অপেক্ষা করতে হবে বহুদিন?

অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দেশে এসেছে সিরাম ইনস্টিটিউটের করোনা ভ্যাকসিন। পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী ২০ লাখ ডোজ টিকা বিনামূল্যে বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছে ভারত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা ভ্যাকসিনের প্রথম চালান ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। সরকার করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রমের জন্য অনলাইন নিবন্ধন শুরু করেছে। আজ থেকেই শুরু হবে টিকা প্রদান।

প্রথম ধাপে করোনা টিকার জন্য ৭৩৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় অর্থ বিভাগ। যার মধ্যে ভ্যাকসিন কিনতে ৬৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আনুষঙ্গিক খরচ হিসাবে বাকি ৯৯ কোটি ৯৯ লাখ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সর্বশেষ ১৩ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৭১৯ কোটি ৩১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

ভ্যাকসিন দেশে আসার পূর্বেই বলা হচ্ছে, ভ্যাকসিন দেয়ার ক্ষেত্রে অনুসরণ করা হবে অগ্রাধিকার ভিত্তি। এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে ১০ ধরনের অগ্রাধিকার তালিকা। প্রথমে এ তালিকা থেকে কারা, কতজন পাবেন তাও নির্ধারণ প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। অগ্রাধিকার দেয়া তালিকায় মধ্যে আছেনÑ মুক্তিযোদ্ধা, করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, শিক্ষাকর্মী এবং গণপরিবহন কর্মী। তবে অগ্রাধিকারের জন্য অন্যান্য দেশকে অনুসরণের কথাও বলছে অনেক বিশেষজ্ঞ। তবে এক্ষেত্রে ফিল্ড ওয়ার্কে থাকা লোকদের অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন দেশের সচেতন মহল।

ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে ৪২ হাজার কর্মীকে। সেইসঙ্গে প্রস্তুত করা হয়েছে ৭ হাজার জনের একটি বিশাল টিম। আগামী ২৫ জানুয়ারি করোনা টিকা আসার কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মা, শিশু ও কিশোর স্বাস্থ্য কর্মসূচির আওতায় পরিচালনা করা হবে ভ্যাকসিন বিষয়ক কর্মসূচি। তাদের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির কর্মীরা এ কার্যক্রমে অংশ নেবেন।

করোনা ভ্যাকসিন দেশে আনার পরে যথাযথ সংরক্ষণ, পরিবহন এবং বণ্টন করতে পারলে বাংলাদেশও করোনা মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন করবে বলে আশা করা যায়। সিরামের সাথে চুক্তি অনুযায়ী সব ভ্যাকসিন দেশে এনে সঠিক বণ্টন নিশ্চিত করতে পারলে অচিরেই দূর হবে করোনার আতঙ্ক, খুলে যাবে বন্ধ হওয়া হাজারও প্রতিষ্ঠান।

জুবায়ের হাসান রাব্বি

বুধবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২১ , ১৩ মাঘ ১৪২৭, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪২

করোনার ভ্যাকসিন : অপেক্ষার অবসান

image

করোনা ভ্যাকসিনের জন্য মুখিয়ে আছে বাংলাদেশের মানুষ। অনেকের মনে প্রশ্ন ছিল- বাংলাদেশ কি করোনা ভ্যাকসিন পাবে, নাকি অপেক্ষা করতে হবে বহুদিন?

অবশেষে সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে দেশে এসেছে সিরাম ইনস্টিটিউটের করোনা ভ্যাকসিন। পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী ২০ লাখ ডোজ টিকা বিনামূল্যে বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছে ভারত।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বেক্সিমকোর মাধ্যমে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে কেনা ভ্যাকসিনের প্রথম চালান ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে। সরকার করোনা ভ্যাকসিন কার্যক্রমের জন্য অনলাইন নিবন্ধন শুরু করেছে। আজ থেকেই শুরু হবে টিকা প্রদান।

প্রথম ধাপে করোনা টিকার জন্য ৭৩৫ কোটি ৭৬ লাখ ৮২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় অর্থ বিভাগ। যার মধ্যে ভ্যাকসিন কিনতে ৬৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আনুষঙ্গিক খরচ হিসাবে বাকি ৯৯ কোটি ৯৯ লাখ ৩২ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। সর্বশেষ ১৩ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপে ৭১৯ কোটি ৩১ লাখ ৪৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

ভ্যাকসিন দেশে আসার পূর্বেই বলা হচ্ছে, ভ্যাকসিন দেয়ার ক্ষেত্রে অনুসরণ করা হবে অগ্রাধিকার ভিত্তি। এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে ১০ ধরনের অগ্রাধিকার তালিকা। প্রথমে এ তালিকা থেকে কারা, কতজন পাবেন তাও নির্ধারণ প্রায় চূড়ান্ত হয়েছে। অগ্রাধিকার দেয়া তালিকায় মধ্যে আছেনÑ মুক্তিযোদ্ধা, করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী, সম্মুখসারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী, বয়োজ্যেষ্ঠ জনগোষ্ঠী, শিক্ষাকর্মী এবং গণপরিবহন কর্মী। তবে অগ্রাধিকারের জন্য অন্যান্য দেশকে অনুসরণের কথাও বলছে অনেক বিশেষজ্ঞ। তবে এক্ষেত্রে ফিল্ড ওয়ার্কে থাকা লোকদের অগ্রাধিকার দিতে বলেছেন দেশের সচেতন মহল।

ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য এরই মধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে ৪২ হাজার কর্মীকে। সেইসঙ্গে প্রস্তুত করা হয়েছে ৭ হাজার জনের একটি বিশাল টিম। আগামী ২৫ জানুয়ারি করোনা টিকা আসার কথা রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৫ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মা, শিশু ও কিশোর স্বাস্থ্য কর্মসূচির আওতায় পরিচালনা করা হবে ভ্যাকসিন বিষয়ক কর্মসূচি। তাদের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির কর্মীরা এ কার্যক্রমে অংশ নেবেন।

করোনা ভ্যাকসিন দেশে আনার পরে যথাযথ সংরক্ষণ, পরিবহন এবং বণ্টন করতে পারলে বাংলাদেশও করোনা মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন করবে বলে আশা করা যায়। সিরামের সাথে চুক্তি অনুযায়ী সব ভ্যাকসিন দেশে এনে সঠিক বণ্টন নিশ্চিত করতে পারলে অচিরেই দূর হবে করোনার আতঙ্ক, খুলে যাবে বন্ধ হওয়া হাজারও প্রতিষ্ঠান।

জুবায়ের হাসান রাব্বি