বাংলাদেশের অবকাঠামো খাত বিনিয়োগের জন্য সম্ভাবনাময় : মিশরের রাষ্ট্রদূত

বাংলাদেশের অবকাঠামো ও নির্মাণ খাত বিনিয়োগের জন্য সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ্য করেছেন, মিশরের রাষ্ট্রদূত হিথাম গোবাসি। সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিশরের রাষ্ট্রদূত মান্যবর হিথাম গোবাসি সম্প্রতি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতনসহ-সভাপতি এনকেএ মবিন, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং মিশর দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মারিয়ামএমরাগেই এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের (ওআইআই) তথ্য মতে, সারাবিশে^ অনলাইনভিত্তিক কর্মীর সংখ্যার হিসেবে পৃথিবীতে দ্বিতীয় অবস্থানের রয়েছে বাংলাদেশ এবং বিশাল এ দক্ষ মানবসম্পদ কেমিশরের ই-কমার্স খাতে কাজের সুযোগ তৈরি করে দেয়ার জন্য তিনি রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানান। ডিসিসিআই সভাপতি উল্লেখ করেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ মিশরে ২৮.৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, বিপরীতে ৬১.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করছে, যার মধ্যে পাট ও পাটজাতপণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩১.৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি বাংলাদেশ হতে আরও বেশিহারে সূতা, অর্গানিক কেমিক্যাল, নিটওয়্যার, ওভেন গার্মেন্টস, পাদুকা, প্লাস্টিকজাত পণ্য, ঔষধ, হোমটেক্সটাইল এবং সিরামিক প্রভৃতি পণ্য আমদানির প্রস্তাব করেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত কল্পে সরকার ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপন করছে, যেখানে মিশরের উদ্যোক্তারা সম্ভাবনাময় খাত সমূহে বিনিয়োগ করতে পারে। তিনি ডিসিসিআইতে একটি ‘মিশর হেল্প ডেস্ক’ স্থাপনে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন, যার মাধ্যমে দু’দেশের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের সম্ভাব্য খাত ও প্রয়োজনীয় নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যাদি পেতে পারবেন। দু’দেশের উদ্যোক্তাদের সম্পর্ক উন্নয়নে ডিসিসিআই সভাপতি কায়রো চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং ঢাকা চেম্বারের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়ন এবং অনলাইনভিত্তিক কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কোর্স আয়োজনের প্রস্তাব করেন।

মিশরের রাষ্ট্রদূত হিথাম গোবাসি বলেন, দেশি-বিনিয়োগ আকর্ষণ ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য মানসম্মত অবকাঠমো খাতের কোন বিকল্প নেই এবং বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতের সার্বিক উন্নয়নে মিশরের উদ্যোক্তাদের বেশ আগ্রহ রয়েছে বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন। এছাড়া বাংলাদেশের নির্মাণ খাতকে বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, এ খাতের প্রয়োজনীয় বিকাশে মিশর ও বাংলাদেশের সরকারি এবং বেসরকারি খাত যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, করোনা মহামারীতে বৈশি^ক অর্থনীতিতে যে মন্দাভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা মোকাবিলায় মিশর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আগ্রহী এবং এ লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ল্যাটিন আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে পণ্য রপ্তানিতে মিশর শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে এবং এ সুযোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে এদেশের উদ্যোক্তাদের মিশরে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২১ , ১৪ মাঘ ১৪২৭, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

বাংলাদেশের অবকাঠামো খাত বিনিয়োগের জন্য সম্ভাবনাময় : মিশরের রাষ্ট্রদূত

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

বাংলাদেশের অবকাঠামো ও নির্মাণ খাত বিনিয়োগের জন্য সম্ভাবনাময় বলে উল্লেখ্য করেছেন, মিশরের রাষ্ট্রদূত হিথাম গোবাসি। সম্প্রতি ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমানের সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত মিশরের রাষ্ট্রদূত মান্যবর হিথাম গোবাসি সম্প্রতি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা চেম্বার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ওই সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতনসহ-সভাপতি এনকেএ মবিন, সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন এবং মিশর দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন মারিয়ামএমরাগেই এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকালে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের (ওআইআই) তথ্য মতে, সারাবিশে^ অনলাইনভিত্তিক কর্মীর সংখ্যার হিসেবে পৃথিবীতে দ্বিতীয় অবস্থানের রয়েছে বাংলাদেশ এবং বিশাল এ দক্ষ মানবসম্পদ কেমিশরের ই-কমার্স খাতে কাজের সুযোগ তৈরি করে দেয়ার জন্য তিনি রাষ্ট্রদূতের প্রতি আহ্বান জানান। ডিসিসিআই সভাপতি উল্লেখ করেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ মিশরে ২৮.৩৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, বিপরীতে ৬১.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করছে, যার মধ্যে পাট ও পাটজাতপণ্য রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩১.৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তিনি বাংলাদেশ হতে আরও বেশিহারে সূতা, অর্গানিক কেমিক্যাল, নিটওয়্যার, ওভেন গার্মেন্টস, পাদুকা, প্লাস্টিকজাত পণ্য, ঔষধ, হোমটেক্সটাইল এবং সিরামিক প্রভৃতি পণ্য আমদানির প্রস্তাব করেন। ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত কল্পে সরকার ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ স্থাপন করছে, যেখানে মিশরের উদ্যোক্তারা সম্ভাবনাময় খাত সমূহে বিনিয়োগ করতে পারে। তিনি ডিসিসিআইতে একটি ‘মিশর হেল্প ডেস্ক’ স্থাপনে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন, যার মাধ্যমে দু’দেশের উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের সম্ভাব্য খাত ও প্রয়োজনীয় নীতিমালা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যাদি পেতে পারবেন। দু’দেশের উদ্যোক্তাদের সম্পর্ক উন্নয়নে ডিসিসিআই সভাপতি কায়রো চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এবং ঢাকা চেম্বারের মধ্যকার সম্পর্ক উন্নয়ন এবং অনলাইনভিত্তিক কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কোর্স আয়োজনের প্রস্তাব করেন।

মিশরের রাষ্ট্রদূত হিথাম গোবাসি বলেন, দেশি-বিনিয়োগ আকর্ষণ ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নের জন্য মানসম্মত অবকাঠমো খাতের কোন বিকল্প নেই এবং বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতের সার্বিক উন্নয়নে মিশরের উদ্যোক্তাদের বেশ আগ্রহ রয়েছে বলে তিনি মতপ্রকাশ করেন। এছাড়া বাংলাদেশের নির্মাণ খাতকে বিনিয়োগের জন্য অত্যন্ত সম্ভাবনাময় হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি বলেন, এ খাতের প্রয়োজনীয় বিকাশে মিশর ও বাংলাদেশের সরকারি এবং বেসরকারি খাত যৌথ বিনিয়োগে এগিয়ে আসার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, করোনা মহামারীতে বৈশি^ক অর্থনীতিতে যে মন্দাভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে, তা মোকাবিলায় মিশর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণে আগ্রহী এবং এ লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ল্যাটিন আমেরিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে পণ্য রপ্তানিতে মিশর শুল্কমুক্ত সুবিধা পেয়ে থাকে এবং এ সুযোগ গ্রহণ করে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণে এদেশের উদ্যোক্তাদের মিশরে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।