ভোটে সহিংসতায় নিহত ১

ইভিএম ভাঙচুর, গুলি : কেন্দ্র ঘেরাও করে হামলা

ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাইয়ের হাতে ভাই খুন, ইভিএম ভাঙচুর, গুলিতে নিহত, ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে হামলার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। গতকাল সকাল ৮টা থেকে একযোগে সব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলে। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম ও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন সকালে নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোট দিয়ে এই দুই প্রধান মেয়র প্রার্থী স্ব-স্ব অভিযোগ তুলে ধরেছেন। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ পাওয়া গেলেও ভোটারদের মাঝে আগ্রহের কোন ঘাটতি ছিল না। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোটাররা সকাল থেকেই জড়ো হন বিভিন্ন কেন্দ্রে। তবে এবার ইভিএম পদ্ধতি থাকায় অনেক কেন্দ্রেই ভোটাররা ভোট দিয়ে দ্রুত চলে যেতে পেরেছেন। নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরে সন্তুষ্ট ভোটাররা। ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে হামলা, ইভিএম ভাঙচুরের অফিযোগে পাথরঘাটায় বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে খুলশিতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, মোটরসাইকেল ভাঙচুর, লালখানে কাউন্সিলর প্রার্থী ও মনোনয়ন বঞ্চিতের সমর্থকদের সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত, ভাইয়ের হাতে ভাই খুনের মতো ঘটনা ঘটেছে। এদিকে নির্বাচনী সহিংসতায় চমেকে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৪০ জনের মতো।

নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এদের মধ্যে নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন। মোট ২৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭১ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৭ জন। মেয়র পদে ৭ প্রার্থী হলেনÑ নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন। এছাড়া মিনার প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন, আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আবুল মনজুর, হাত পাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম, চেয়ার প্রতীক নিয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ ও হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে খোকন চৌধুরী নির্বাচন করছেন। তবে এবারের নির্বাচনে ২টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এরমধ্যে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিমের মৃত্যুতে ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি। এছাড়া ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্র্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিদায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থী মো. হারুনুর রশিদ।

তবে গতকাল নির্বাচন চলাকালে দেখা গেছে, বাইরে দলীয় কর্মীদের জটলা, ভেতরে দেখা নেই ভোটারদের। গতকাল সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর ২ ঘণ্টা পার হলেও ভোটারদের দেখা মিলেনি ভোটকেন্দ্রে। তবে কেন্দ্রের বাইরে দলীয় কর্মীদের জটলা দেখা গেছে। চকবাজার ওয়ার্ডের কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন মহিলা কলেজ, কাতালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ কেন্দ্রসহ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রের চিত্র এটি। সকালে মাকে সালাম করে ভোট দেয়ার জন্য নগরের পশ্চিম বাকলিয়ায় গেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী সিটি ডা. শাহাদাত হোসেন। সকাল সাড়ে ৯টায় নগরের বাদশা মিয়া রোডের বাসা থেকে বের হন তিনি। ডা. শাহাদাত সকাল ১০টায় পশ্চিম বাকলিয়ার বিএড কলেজে ভোট দেন। বাসা থেকে বের হওয়ার পথে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পশ্চিম বাকলিয়া, পাথরঘাটা ও জামালখানে আওয়ামী লীগ কর্মীরা ভোটকেন্দ্র দখল করে রেখেছে। রাতে বাকলিয়ার ৭ জন এজেন্টকে মারধর করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ভোটে আমি শেষ পর্যন্ত থাকব। তাদের ভোট ডাকাতির মুখোশ সারাবিশ্বে জানাব। প্রশাসন আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে জয়ী করতে উঠেপড়ে লেগেছে। প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করছে না।

এদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী সকাল ৯টায় নগরের এখলাসুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন।

এ সময় মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ভোট দেয়ার পর রেজাউল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দরভাবে ভোট দিয়েছি। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে আসছেন। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। সারাদিন সুষ্ঠু ভোট হবে বলে আশা করি। বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বিএনপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। তারা সবসময় এমন অভিযোগ করে আসছে। এটা তাদের নিয়ম। সারাবছরই তারা শুধু অভিযোগ করে আসছে।

এদিকে নগরীর কোতোয়ালি থানার ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ইসমাইল বালিকে আটক করেছে পুলিশ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) পলাশ কান্তি নাথ এ খবর নিশ্চিত করেছেন। উপকমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান জানান, দুপুর ১২টার দিকে পাথরঘাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার লাইনে হামলা, বিশৃঙ্খলা ও ভোটগ্রহণে ব্যবহৃত ইভিএম মেশিন ভাঙচুরের অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে উত্তর পাহাড়তলী ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী জহুরুল ইসলাম জসিমকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তার সমর্থকরা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

বিকেল ৪টার দিকে উত্তর পাহাড়তলীর বিশ্বব্যাংক কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।

এদিকে নগরীর খুলশি থানার ঝাউতলা এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিতে একজন নিহত হওয়ার পর সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে র‌্যাব ও সোয়াত টিমকে।

জানা গেছে, ভোটগ্রহণ শুরুর প্রথম দেড় ঘণ্টা যাওয়ার পরই শুরু হয় উত্তেজনা। ওই ওয়ার্ডের সরকারদলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী ও বিদ্রোহী প্রার্থী মাহমুদুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. আলম (২৮) নামে একজন নিহত হন। এরপরও সংঘর্ষ থেমে নেই। দুপুর ১২টা পর্যন্তও সেখানে থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছিল। এ সাংবাদিকের মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে সংঘর্ষে জড়ানো উত্তেজিত নেতাকর্মীরা।

এছাড়া ১৪ নম্বর ওয়ার্ড লালখান বাজার এলাকায় আওয়ামী সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল এবং মনোনয়ন বঞ্চিত দিদারুল আলম মাসুমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সকাল ৯টার দিকে লালখান বাজার শহীদ নগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় পাথর নিক্ষেপ ও লাঠি নিয়ে হামলায় জড়ায় দুই পক্ষ। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খুলশি থানার ওসি শাহিনুজ্জামান বলেন, কেন্দ্রের বাইরে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছিল। পুলিশ-বিজিবি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

এছাড়া পাহাড়তলী থানার পশ্চিম নাছিরাবাদ বার কোয়ার্টার এলাকায় ভাইয়ের হাতে ভাই খুন হয়েছেন। দুই ভাই দুই কাউন্সিলর প্রার্থীকে সমর্থন করতেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই ভাইয়ের মধ্যে আগে থেকে বিরোধ ছিল। নিহতের নাম নিজাম উদ্দীন মুন্না। অভিযুক্ত তার ভাই সালাউদ্দীন কামরুল। এদের মধ্যে নিজাম উদ্দীন মুন্না সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবের আহমদের সমর্থক ও অভিযুক্ত সালাউদ্দীন কামরুল আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নরুল আমিনের সমর্থক।

পাহাড়তলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম বলেন, বার কোয়ার্টার এলাকায় ছুরিকাঘাতে নিজাম উদ্দীন মুন্না নামে একজন নিহত হয়েছে। তার ভাই সালাউদ্দীন কামরুল ছুরিকাঘাত করেছে বলে জানতে পেরেছি। তিনি বলেন, মুন্না ও সালাউদ্দীন কামরুলের মধ্যে আগে থেকে বিরোধ ছিল। অভিযুক্তকে আটকের চেষ্টা চলছে।

নির্বাচনে ১৪, ১৫ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী মনোয়ারা বেগম মনি নিজের ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি। প্রতিবাদে মনোয়ারা বেগম মনি নির্বাচন বর্জন করেছেন। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটের দিকে লালখানবাজার মোড়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মনোয়ারা বেগম মনি। এ সময় তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। মনোয়ারা বেগম মনি অভিযোগ করেন, আমি নিজের ভোটই দিতে পারিনি। আমার এজেন্টদের মেরে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা হয়েছে। মনোয়ারা বেগম মনি তার মতো সব বিএনপি প্রার্থীকেও নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, এখনই এ নির্বাচন স্থগিত করতে হবে। এছাড়া নির্বাচনে ভোট থেকে সরে দাঁড়ালেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম। দুপুর আড়াইটার দিকে রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে দেখা করে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। মেয়র প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম বলেন, আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। বারবার নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনকে ফোন করেও আমরা কোন হেল্প পাইনি। সব জায়গায় নৌকার এজেন্টরা অবস্থান করছিল। এ কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।

নির্বাচন চলাকালে বিভিন্নস্থানে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় চমেক হাসপাতালে প্রায় ৪০ জন ভর্তি হয়েছেন। শুধুমাত্র লালখানবাজার ওয়ার্ডেই নির্বচনী সহিংসতায় গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০ জন। এছাড়া ১৩নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে সংঘর্ষে ১০ জন, চান্দগাঁও ওয়ার্ডে ৪ জন, পাথরঘাটা ও চকবাজার ওয়ার্ডে ৫জন গুরুতর আহত হয়ে চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গুরুত আহতাবস্থায় চমেক হাসপাতালে ভর্তিদের মধ্যে রয়েছেনÑ ১৩নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে সংঘর্ষে বিএনপির প্রার্থীর এজেন্ট মো. হোসেন (৩৫), আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থক ইমরান (২৫), রাকিব মাহমুদ, মো. রাজু, বাবু (৪০), আবু তাহের (৪২), রাজু, হৃদয় (১৬), বহিরাগত জামশেদ (২৬), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক ফারুক (২০) ও মাহমুদুল হাসান। এছাড়া লালখানবাজার এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে মো. হোসেন (৩৫), মহসিন (২৪), আনসার সদস কামাল (২২), বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক সেলিনা (৫৫), আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিল প্রার্থীর সমর্থক তারেক (২১), মোক্তার হোসেন (৩৫), অভিজিৎ চৌধুরী অভি (৫০), লুজক লুক (৩১), রাকিব ও দেলোয়ারকে (২৬)। এছাড়া চান্দগাঁও ওয়ার্ডে বিএনপি কর্মীদের হামলায় আহত হয়েছেন সাইফ উদ্দীন (৩৪), ইলিয়াস (২৮), আবু সাঈদ (২৮) ও ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোবারক আলীর অনুসারী আলমগীর (৪০)। ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থক আবু তাহের (৩০), চকবাজার ওয়ার্ডে ইদ্রিস হোসেনকে (৪৫) ?গুরুতর আহতাবস্থায় চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারী ২০২১ , ১৪ মাঘ ১৪২৭, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪২

ভোটে সহিংসতায় নিহত ১

ইভিএম ভাঙচুর, গুলি : কেন্দ্র ঘেরাও করে হামলা

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম

image

চট্টগ্রাম : পাহাড়তলী ওয়ার্ডের আমবাগান কেন্দ্রে গুলিতে নিহত আলাউদ্দিন আলমের স্বজনদের আহাজারি

ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ভাইয়ের হাতে ভাই খুন, ইভিএম ভাঙচুর, গুলিতে নিহত, ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে হামলার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। গতকাল সকাল ৮টা থেকে একযোগে সব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলে। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম ও বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন সকালে নিজ নিজ কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। ভোট দিয়ে এই দুই প্রধান মেয়র প্রার্থী স্ব-স্ব অভিযোগ তুলে ধরেছেন। বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ পাওয়া গেলেও ভোটারদের মাঝে আগ্রহের কোন ঘাটতি ছিল না। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোটাররা সকাল থেকেই জড়ো হন বিভিন্ন কেন্দ্রে। তবে এবার ইভিএম পদ্ধতি থাকায় অনেক কেন্দ্রেই ভোটাররা ভোট দিয়ে দ্রুত চলে যেতে পেরেছেন। নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পেরে সন্তুষ্ট ভোটাররা। ভোটকেন্দ্র ঘেরাও করে হামলা, ইভিএম ভাঙচুরের অফিযোগে পাথরঘাটায় বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে খুলশিতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, মোটরসাইকেল ভাঙচুর, লালখানে কাউন্সিলর প্রার্থী ও মনোনয়ন বঞ্চিতের সমর্থকদের সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত, ভাইয়ের হাতে ভাই খুনের মতো ঘটনা ঘটেছে। এদিকে নির্বাচনী সহিংসতায় চমেকে ভর্তি হয়েছেন প্রায় ৪০ জনের মতো।

নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন। এদের মধ্যে নারী ভোটার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন। মোট ২৩৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে মেয়র পদে ৭ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৭১ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৭ জন। মেয়র পদে ৭ প্রার্থী হলেনÑ নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের এম রেজাউল করিম চৌধুরী, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপির ডা. শাহাদাত হোসেন। এছাড়া মিনার প্রতীক নিয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের এমএ মতিন, আম প্রতীক নিয়ে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) আবুল মনজুর, হাত পাখা প্রতীক নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম, চেয়ার প্রতীক নিয়ে ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ ও হাতি প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র হিসেবে খোকন চৌধুরী নির্বাচন করছেন। তবে এবারের নির্বাচনে ২টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি। এরমধ্যে ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিমের মৃত্যুতে ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে। যা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি। এছাড়া ১৮ নম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্র্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিদায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন কাউন্সিলর প্রার্থী মো. হারুনুর রশিদ।

তবে গতকাল নির্বাচন চলাকালে দেখা গেছে, বাইরে দলীয় কর্মীদের জটলা, ভেতরে দেখা নেই ভোটারদের। গতকাল সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর ২ ঘণ্টা পার হলেও ভোটারদের দেখা মিলেনি ভোটকেন্দ্রে। তবে কেন্দ্রের বাইরে দলীয় কর্মীদের জটলা দেখা গেছে। চকবাজার ওয়ার্ডের কাপাসগোলা সিটি করপোরেশন মহিলা কলেজ, কাতালগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ কেন্দ্রসহ কয়েকটি ভোটকেন্দ্রের চিত্র এটি। সকালে মাকে সালাম করে ভোট দেয়ার জন্য নগরের পশ্চিম বাকলিয়ায় গেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী সিটি ডা. শাহাদাত হোসেন। সকাল সাড়ে ৯টায় নগরের বাদশা মিয়া রোডের বাসা থেকে বের হন তিনি। ডা. শাহাদাত সকাল ১০টায় পশ্চিম বাকলিয়ার বিএড কলেজে ভোট দেন। বাসা থেকে বের হওয়ার পথে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, পশ্চিম বাকলিয়া, পাথরঘাটা ও জামালখানে আওয়ামী লীগ কর্মীরা ভোটকেন্দ্র দখল করে রেখেছে। রাতে বাকলিয়ার ৭ জন এজেন্টকে মারধর করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ভোটে আমি শেষ পর্যন্ত থাকব। তাদের ভোট ডাকাতির মুখোশ সারাবিশ্বে জানাব। প্রশাসন আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে জয়ী করতে উঠেপড়ে লেগেছে। প্রশাসন আমাদের সহযোগিতা করছে না।

এদিকে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী সকাল ৯টায় নগরের এখলাসুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেন।

এ সময় মহানগর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। ভোট দেয়ার পর রেজাউল করিম চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দরভাবে ভোট দিয়েছি। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে আসছেন। জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। সারাদিন সুষ্ঠু ভোট হবে বলে আশা করি। বিএনপির অভিযোগ প্রসঙ্গে রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বিএনপির অভিযোগ ভিত্তিহীন। তারা সবসময় এমন অভিযোগ করে আসছে। এটা তাদের নিয়ম। সারাবছরই তারা শুধু অভিযোগ করে আসছে।

এদিকে নগরীর কোতোয়ালি থানার ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ইসমাইল বালিকে আটক করেছে পুলিশ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (দক্ষিণ) পলাশ কান্তি নাথ এ খবর নিশ্চিত করেছেন। উপকমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান জানান, দুপুর ১২টার দিকে পাথরঘাটা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার লাইনে হামলা, বিশৃঙ্খলা ও ভোটগ্রহণে ব্যবহৃত ইভিএম মেশিন ভাঙচুরের অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া নির্বাচনে উত্তর পাহাড়তলী ৯ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী জহুরুল ইসলাম জসিমকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তার সমর্থকরা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

বিকেল ৪টার দিকে উত্তর পাহাড়তলীর বিশ্বব্যাংক কলোনিতে এ ঘটনা ঘটে। বিকেল ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।

এদিকে নগরীর খুলশি থানার ঝাউতলা এলাকায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে গুলিতে একজন নিহত হওয়ার পর সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে র‌্যাব ও সোয়াত টিমকে।

জানা গেছে, ভোটগ্রহণ শুরুর প্রথম দেড় ঘণ্টা যাওয়ার পরই শুরু হয় উত্তেজনা। ওই ওয়ার্ডের সরকারদলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী ও বিদ্রোহী প্রার্থী মাহমুদুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে এই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মো. আলম (২৮) নামে একজন নিহত হন। এরপরও সংঘর্ষ থেমে নেই। দুপুর ১২টা পর্যন্তও সেখানে থেমে থেমে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছিল। এ সাংবাদিকের মোটরসাইকেলসহ বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে সংঘর্ষে জড়ানো উত্তেজিত নেতাকর্মীরা।

এছাড়া ১৪ নম্বর ওয়ার্ড লালখান বাজার এলাকায় আওয়ামী সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত মোহাম্মদ বেলাল এবং মনোনয়ন বঞ্চিত দিদারুল আলম মাসুমের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সকাল ৯টার দিকে লালখান বাজার শহীদ নগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে এই ঘটনা ঘটে। এ সময় পাথর নিক্ষেপ ও লাঠি নিয়ে হামলায় জড়ায় দুই পক্ষ। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খুলশি থানার ওসি শাহিনুজ্জামান বলেন, কেন্দ্রের বাইরে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছিল। পুলিশ-বিজিবি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।

এছাড়া পাহাড়তলী থানার পশ্চিম নাছিরাবাদ বার কোয়ার্টার এলাকায় ভাইয়ের হাতে ভাই খুন হয়েছেন। দুই ভাই দুই কাউন্সিলর প্রার্থীকে সমর্থন করতেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, দুই ভাইয়ের মধ্যে আগে থেকে বিরোধ ছিল। নিহতের নাম নিজাম উদ্দীন মুন্না। অভিযুক্ত তার ভাই সালাউদ্দীন কামরুল। এদের মধ্যে নিজাম উদ্দীন মুন্না সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাবের আহমদের সমর্থক ও অভিযুক্ত সালাউদ্দীন কামরুল আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নরুল আমিনের সমর্থক।

পাহাড়তলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাশেদুল ইসলাম বলেন, বার কোয়ার্টার এলাকায় ছুরিকাঘাতে নিজাম উদ্দীন মুন্না নামে একজন নিহত হয়েছে। তার ভাই সালাউদ্দীন কামরুল ছুরিকাঘাত করেছে বলে জানতে পেরেছি। তিনি বলেন, মুন্না ও সালাউদ্দীন কামরুলের মধ্যে আগে থেকে বিরোধ ছিল। অভিযুক্তকে আটকের চেষ্টা চলছে।

নির্বাচনে ১৪, ১৫ ও ২১ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী মনোয়ারা বেগম মনি নিজের ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন।

তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দলীয় সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাকে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি। প্রতিবাদে মনোয়ারা বেগম মনি নির্বাচন বর্জন করেছেন। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটের দিকে লালখানবাজার মোড়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মনোয়ারা বেগম মনি। এ সময় তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। মনোয়ারা বেগম মনি অভিযোগ করেন, আমি নিজের ভোটই দিতে পারিনি। আমার এজেন্টদের মেরে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা হয়েছে। মনোয়ারা বেগম মনি তার মতো সব বিএনপি প্রার্থীকেও নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, এখনই এ নির্বাচন স্থগিত করতে হবে। এছাড়া নির্বাচনে ভোট থেকে সরে দাঁড়ালেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম। দুপুর আড়াইটার দিকে রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে দেখা করে তিনি এ সিদ্ধান্তের কথা জানান। মেয়র প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম বলেন, আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। বারবার নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসনকে ফোন করেও আমরা কোন হেল্প পাইনি। সব জায়গায় নৌকার এজেন্টরা অবস্থান করছিল। এ কারণে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।

নির্বাচন চলাকালে বিভিন্নস্থানে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় চমেক হাসপাতালে প্রায় ৪০ জন ভর্তি হয়েছেন। শুধুমাত্র লালখানবাজার ওয়ার্ডেই নির্বচনী সহিংসতায় গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১০ জন। এছাড়া ১৩নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে সংঘর্ষে ১০ জন, চান্দগাঁও ওয়ার্ডে ৪ জন, পাথরঘাটা ও চকবাজার ওয়ার্ডে ৫জন গুরুতর আহত হয়ে চমেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। গুরুত আহতাবস্থায় চমেক হাসপাতালে ভর্তিদের মধ্যে রয়েছেনÑ ১৩নং দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডে সংঘর্ষে বিএনপির প্রার্থীর এজেন্ট মো. হোসেন (৩৫), আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থক ইমরান (২৫), রাকিব মাহমুদ, মো. রাজু, বাবু (৪০), আবু তাহের (৪২), রাজু, হৃদয় (১৬), বহিরাগত জামশেদ (২৬), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক ফারুক (২০) ও মাহমুদুল হাসান। এছাড়া লালখানবাজার এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় আহত অবস্থায় ভর্তি করা হয়েছে মো. হোসেন (৩৫), মহসিন (২৪), আনসার সদস কামাল (২২), বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থক সেলিনা (৫৫), আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিল প্রার্থীর সমর্থক তারেক (২১), মোক্তার হোসেন (৩৫), অভিজিৎ চৌধুরী অভি (৫০), লুজক লুক (৩১), রাকিব ও দেলোয়ারকে (২৬)। এছাড়া চান্দগাঁও ওয়ার্ডে বিএনপি কর্মীদের হামলায় আহত হয়েছেন সাইফ উদ্দীন (৩৪), ইলিয়াস (২৮), আবু সাঈদ (২৮) ও ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মোবারক আলীর অনুসারী আলমগীর (৪০)। ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থক আবু তাহের (৩০), চকবাজার ওয়ার্ডে ইদ্রিস হোসেনকে (৪৫) ?গুরুতর আহতাবস্থায় চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।