বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের রেকর্ড

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথম ছয় মাসে প্রায় ৩ বিলিয়ন বা ৩০০ কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তা ছাড় করেছে সরকার। অর্থবছরের ছয় মাসে অর্থ ছাড়ের এই পরিমাণ দেশের ইতিহাসে যেকোন সময়ের তুলনায় বেশি।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মোট ২৯৯ কোটি ২৮ লাখ ডলারের ঋণ ও অনুদান মিলে বৈদেশিক সহায়তা ছাড় করেছে। এই অঙ্ক গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ কোটি ৫২ লাখ ডলার বেশি। চলতি পুরো অর্থবছরে ৭ বিলিয়ন বা ৭০০ কোটি ডলার ছাড় করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। সে হিসাবে অর্থবছরের বাকি ছয় মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার ছাড় করতে হবে। তবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন পিছিয়ে পড়ায় বৈদেশিক সহায়তার লক্ষ্য ৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইআরডি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও দেশগুলোর কাছ থেকে নতুন প্রতিশ্রুতি পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। এই সময়ে সরকার দাতাদের কাছ থেকে নতুন প্রতিশ্রুতি আদায় করতে পেরেছে মোট ২৪০ কোটি ২৮ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে নতুন প্রতিশ্রুতি আদায় হয়েছিল ৩১২ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে সরকারের ৬ বিলিয়ন ডলারের নতুন প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

ইআরডি’র একজন কর্মকর্তা বলেন, আসলে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি চুক্তি কোন টাইম ফ্রেম দিয়ে করানো যায় না। হতে পারে দুই মাস কোন প্রতিশ্রুতি নেই। আবার পরের মাসেই দেখা গেল এক বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতির চুক্তি হয়ে গেছে। প্রতিশ্রুতির টার্গেট পূরণ করা তেমন কঠিন কিছু নয়।

চলতি অর্থবছরের বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে অর্থছাড়ের দিক দিয়ে জাপান সব দাতাকে ছাড়িয়ে যাওয়া। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে জাপান এককভাবে সর্বোচ্চ ৭৯ কোটি ২৭ লাখ ডলার ছাড় করেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৬ কোটি ১৪ লাখ ঋণ সহায়তা ছাড় করেছে বিশ্ব ব্যাংক। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৩ কোটি ২৩ লাখ ডলার ছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

এছাড়াও চীন ৪৬ কোটি ডলার এবং ভারত ৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার ছাড় করেছে। গত ছয় মাসে দাতাদের পুঞ্জীভূত পাওনা থেকে বাংলাদেশ সরকার পরিশোধ করেছ ৯০ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় পর্যন্ত পরিশোধ করতে হয়েছিল ৮৪ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে দাতাদের কাছে পাওনা পরিশোধের পর নিট বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ছাড় হয়েছে ২০৯ কোটি ২৫ লাখ ডলার।

শনিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২১ , ১৬ মাঘ ১৪২৭, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের রেকর্ড

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথম ছয় মাসে প্রায় ৩ বিলিয়ন বা ৩০০ কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তা ছাড় করেছে সরকার। অর্থবছরের ছয় মাসে অর্থ ছাড়ের এই পরিমাণ দেশের ইতিহাসে যেকোন সময়ের তুলনায় বেশি।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মোট ২৯৯ কোটি ২৮ লাখ ডলারের ঋণ ও অনুদান মিলে বৈদেশিক সহায়তা ছাড় করেছে। এই অঙ্ক গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ কোটি ৫২ লাখ ডলার বেশি। চলতি পুরো অর্থবছরে ৭ বিলিয়ন বা ৭০০ কোটি ডলার ছাড় করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। সে হিসাবে অর্থবছরের বাকি ছয় মাসে ৪ বিলিয়ন ডলার ছাড় করতে হবে। তবে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়ন পিছিয়ে পড়ায় বৈদেশিক সহায়তার লক্ষ্য ৬ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ইআরডি’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও দেশগুলোর কাছ থেকে নতুন প্রতিশ্রুতি পাওয়ার ক্ষেত্রে সরকার কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। এই সময়ে সরকার দাতাদের কাছ থেকে নতুন প্রতিশ্রুতি আদায় করতে পেরেছে মোট ২৪০ কোটি ২৮ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে নতুন প্রতিশ্রুতি আদায় হয়েছিল ৩১২ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে সরকারের ৬ বিলিয়ন ডলারের নতুন প্রতিশ্রুতি আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

ইআরডি’র একজন কর্মকর্তা বলেন, আসলে বৈদেশিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি চুক্তি কোন টাইম ফ্রেম দিয়ে করানো যায় না। হতে পারে দুই মাস কোন প্রতিশ্রুতি নেই। আবার পরের মাসেই দেখা গেল এক বিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতির চুক্তি হয়ে গেছে। প্রতিশ্রুতির টার্গেট পূরণ করা তেমন কঠিন কিছু নয়।

চলতি অর্থবছরের বৈদেশিক সহায়তা ছাড়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে অর্থছাড়ের দিক দিয়ে জাপান সব দাতাকে ছাড়িয়ে যাওয়া। চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে জাপান এককভাবে সর্বোচ্চ ৭৯ কোটি ২৭ লাখ ডলার ছাড় করেছে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৬ কোটি ১৪ লাখ ঋণ সহায়তা ছাড় করেছে বিশ্ব ব্যাংক। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৩ কোটি ২৩ লাখ ডলার ছাড় করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।

এছাড়াও চীন ৪৬ কোটি ডলার এবং ভারত ৩ কোটি ৯৬ লাখ ডলার ছাড় করেছে। গত ছয় মাসে দাতাদের পুঞ্জীভূত পাওনা থেকে বাংলাদেশ সরকার পরিশোধ করেছ ৯০ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময় পর্যন্ত পরিশোধ করতে হয়েছিল ৮৪ কোটি ৪৩ লাখ ডলার। সে হিসাবে চলতি অর্থবছরের ছয় মাসে দাতাদের কাছে পাওনা পরিশোধের পর নিট বৈদেশিক সহায়তার অর্থ ছাড় হয়েছে ২০৯ কোটি ২৫ লাখ ডলার।