পাউবোর জমিগুলো পুনরুদ্ধার করুন

দখলদারদের হাতে চলে গেছে ঢাকা শহর সমন্বিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় সাড়ে ১৮ কিলোমিটার এলাকার দুই দিকের জমি। এসব জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)। একইভাবে দেশজুড়ে বেদখল হয়ে পড়েছে পাউবোর প্রায় সাত হাজার একর জমি, যার আনুমানিক দাম প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি সংস্থার জায়গায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনার তালিকাসহ একটি প্রতিবেদন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে পাউবো। এতে এই চালচিত্র উঠে এসেছে।

পাউবোর জমি দখলের চিত্রটি হতাশাজনক। তবে এ অবস্থা একদিনে হয়নি। বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রভাবশালী দখলদাররা এসব জায়গা নিজেদের কব্জায় রেখেছেন। পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনরকম ব্যবস্থা নেয়নি। বরং অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পাউবো ও ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এসব জমি বেদখল করা হয়েছে। দখলদাররা এসব জমিতে গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবন, বিপণিবিতান, স্কুল-কলেজ, ডেইরি ফার্ম, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। নিয়ম অনুযায়ী, পাউবোর জমি বার্ষিক ইজারা নিয়ে ভোগদখল করা যায়। তবে সেখানে স্থায়ী পাকা ভবন নির্মাণ করা যায় না। বোঝাই যাচ্ছে, স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না।

সম্প্রতি পাউবো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের বেদখল হওয়া জমির তালিকা প্রস্তুত করেছে। এটা ভালো উদ্যোগ। তবে শুধু তালিকা করলেই হবে না। দখলদার উচ্ছেদে জোরেশোরে অভিযান চালাতে হবে। দখলদাররা যেন কোন ছলছুতোয় উচ্ছেদ কার্যক্রম ব্যাহত করতে না পারে সেজন্য আইন সংস্কার করে মামলা করার পথ বন্ধ করতে হবে।

দখলদার উচ্ছেদে পাউবো কর্তৃপক্ষ দ্রুত উদ্যোগ নেবে- সেটা আমাদের প্রত্যাশা। এ ধরনের অপতৎপরতা রোধে স্থানীয় প্রশাসনকেও সক্রিয় হতে হবে। দখলবাজদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যারা তাদের এসব অপকর্মে সহায়তা করছে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

শনিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২১ , ১৬ মাঘ ১৪২৭, ১৬ জমাদিউস সানি ১৪৪২

পাউবোর জমিগুলো পুনরুদ্ধার করুন

দখলদারদের হাতে চলে গেছে ঢাকা শহর সমন্বিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের প্রায় সাড়ে ১৮ কিলোমিটার এলাকার দুই দিকের জমি। এসব জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)। একইভাবে দেশজুড়ে বেদখল হয়ে পড়েছে পাউবোর প্রায় সাত হাজার একর জমি, যার আনুমানিক দাম প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। সম্প্রতি সংস্থার জায়গায় গড়ে ওঠা বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনার তালিকাসহ একটি প্রতিবেদন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে পাউবো। এতে এই চালচিত্র উঠে এসেছে।

পাউবোর জমি দখলের চিত্রটি হতাশাজনক। তবে এ অবস্থা একদিনে হয়নি। বছরের পর বছর ধরে রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রভাবশালী দখলদাররা এসব জায়গা নিজেদের কব্জায় রেখেছেন। পাউবোসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনরকম ব্যবস্থা নেয়নি। বরং অভিযোগ রয়েছে, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে পাউবো ও ভূমি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এসব জমি বেদখল করা হয়েছে। দখলদাররা এসব জমিতে গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবন, বিপণিবিতান, স্কুল-কলেজ, ডেইরি ফার্ম, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। নিয়ম অনুযায়ী, পাউবোর জমি বার্ষিক ইজারা নিয়ে ভোগদখল করা যায়। তবে সেখানে স্থায়ী পাকা ভবন নির্মাণ করা যায় না। বোঝাই যাচ্ছে, স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না।

সম্প্রতি পাউবো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের বেদখল হওয়া জমির তালিকা প্রস্তুত করেছে। এটা ভালো উদ্যোগ। তবে শুধু তালিকা করলেই হবে না। দখলদার উচ্ছেদে জোরেশোরে অভিযান চালাতে হবে। দখলদাররা যেন কোন ছলছুতোয় উচ্ছেদ কার্যক্রম ব্যাহত করতে না পারে সেজন্য আইন সংস্কার করে মামলা করার পথ বন্ধ করতে হবে।

দখলদার উচ্ছেদে পাউবো কর্তৃপক্ষ দ্রুত উদ্যোগ নেবে- সেটা আমাদের প্রত্যাশা। এ ধরনের অপতৎপরতা রোধে স্থানীয় প্রশাসনকেও সক্রিয় হতে হবে। দখলবাজদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। যারা তাদের এসব অপকর্মে সহায়তা করছে তাদেরও শাস্তির আওতায় আনতে হবে।