চাটমোহরে জমির উর্বর মাটি ইটভাটার গ্রাসে

নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে খনন হচ্ছে ফসলি জমি। খননের মাটির বেশিরভাগই যাচ্ছে যত্রতত্র গড়ে ওঠা লাইসেন্সবিহীন ইটভাটায়। খননে কমছে ফসলি জমির পরিমাণ, ইটভাটায় ব্যাহত হচ্ছে ফল-ফলাদিসহ ফসল উৎপাদন, আর ঘটছে বায়ু দূষণ। একইসাথে অবৈধভাবে স্থাপিত ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে পুড়ছে কাঠ। জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কিভাবে প্রকাশ্যে এই বেআইনী কর্মকাণ্ড চলছে। ঘটনাটি ঘটছে পাবনার চাটমোহর উপজেলায়। সংশ্লিষ্ট জমির মালিকের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে খননের কাজটা করে দিচ্ছেন মাটির ব্যবসায়ীরা। তারাই টাকার বিনিময়ে মাটি সরবরাহ করছেন ইটভাটায়, নির্মাণাধীন বিভিন্ন স্থাপনায়। ফসলি জমি খননে বেশি লাভবান হচ্ছে ইটভাটা ও মাটি ব্যবসায়ীরা। ফসলি জমি খননে জড়িত মাটি ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনলে বন্ধ হবে এই কর্মযজ্ঞণ্ড এমনটাই মনে করছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসী জানায় বিভিন্ন প্রলোভনে ফসলি জমি খনন করতে জমির মালিকদের উদ্বুদ্ধ করছেন মাটি ব্যবসায়ীরা। জমির মালিক রাজি হলে ভেকু মেশিন দিয়ে খনন কাজ শুরু করছেন তারা। ফলে অল্পদিনের ভেতরেই জমির রুপ পরিবর্তন হয়ে পরিণত হচ্ছে পুকুরে। বেশিরভাগ সময় খননের মাটি পরিবহন করা হচ্ছে মেঠো সড়কে। ফলে একদিকে মানুষের ব্যবহারের অনুপযোগী হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সড়ক, অন্যদিকে মাত্রারিক্ত ধুলা সৃষ্টি হওয়ায় ঘটছে বায়ু দূষণ। অ্যাজমাসহ শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছেন স্থানীয়রা। সম্প্রতি গুনাইগাছায় আঞ্চলিক পাকা সড়কে ইট বহনকারী ট্রলির সঙ্গে সংঘটিত দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন একজন মোটরসাইকেল মালিক। দুর্ঘটনাস্থল থেকে অল্প দূরুত্বেই রয়েছে একটি লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় ইটভাটা রয়েছে ১১টি। এসব ইটভাটা গড়ে ওঠেছে ফসলি জমির মাঠে, পাকা সড়ক আর বসতি এলাকার পাশেই। কিছু ইটভাটার পাশে আছে বাজারও। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী-এসব ইটভাটার একটিরও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের লাইসেন্স নেই। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র আর পণ্যে মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসটিআই’র অনুমদোন আছে মাত্র একটি। বাকিগুলো দিব্যি ব্যবসা করছেন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নেয়া ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে। বিধান রয়েছে বসতি এলাকা ও পাকা সড়কের ধারের কাছে ইটভাটা করা যাবে না। এ সকল ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। রাতেই কাঠ পোড়ানোর উৎসব চলে। কৃষিবিদরা জানিয়েছেন, ইটভাটার ধোয়া ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। প্রভাব ফেলেছে নানা জাতের দেশীয় ফল উৎপাদনেও।

আরও খবর
রাতে জলকপাট খুলে রেখেছে দুর্বৃত্ত : শুকিয়ে কয়েক হাজার একর বোরো
বাঁশখালীতে লবণের ন্যায্যমূল্য দাবি চাষিদের
আধুনিক পদ্ধতিতে বোরোর বীজতলা-রোপণ-কর্তনে ব্যাপক সাড়া
পীরগঞ্জে সালিসি বৈঠকে প্রতিপক্ষের হামলায় হত ১
পঞ্চগড়ে এক বছরে নারী-শিশু নির্যাতন মামলা ২৯৯
বায়োফ্লকে মাছ চাষে সাফল্য : বাণিজ্যিক সম্ভাবনা উজ্জ্বল
কাজিহাটায় রাস্তার কার্পেটিং তুলে ফেলল ভবনের মালিক
গাইবান্ধায় একতা’র সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন
বরিশালে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা হচ্ছে ডিজিটালাইজড
মাধবদীতে প্রতীক পেয়ে জমজমাট প্রচার
কালকিনিতে আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী বহিষ্কার
ময়মনসিংহে অজ্ঞাত দেহের রহস্য উন্মোচন
দুপচাঁচিয়ায় অভিযানেও বন্ধ হচ্ছে না বালু তোলা : হুমকিতে জনপদ
চাষাবাদের ট্রাক্টর ট্রলি বানিয়ে অবাধে ইট-বালি পরিবহন
বরেন্দ্র অঞ্চলে আম বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা

রবিবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২১ , ১৭ মাঘ ১৪২৭, ১৭ জমাদিউস সানি ১৪৪২

চাটমোহরে জমির উর্বর মাটি ইটভাটার গ্রাসে

প্রতিনিধি, চাটমোহর (পাবনা)

নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে খনন হচ্ছে ফসলি জমি। খননের মাটির বেশিরভাগই যাচ্ছে যত্রতত্র গড়ে ওঠা লাইসেন্সবিহীন ইটভাটায়। খননে কমছে ফসলি জমির পরিমাণ, ইটভাটায় ব্যাহত হচ্ছে ফল-ফলাদিসহ ফসল উৎপাদন, আর ঘটছে বায়ু দূষণ। একইসাথে অবৈধভাবে স্থাপিত ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে পুড়ছে কাঠ। জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে কিভাবে প্রকাশ্যে এই বেআইনী কর্মকাণ্ড চলছে। ঘটনাটি ঘটছে পাবনার চাটমোহর উপজেলায়। সংশ্লিষ্ট জমির মালিকের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে খননের কাজটা করে দিচ্ছেন মাটির ব্যবসায়ীরা। তারাই টাকার বিনিময়ে মাটি সরবরাহ করছেন ইটভাটায়, নির্মাণাধীন বিভিন্ন স্থাপনায়। ফসলি জমি খননে বেশি লাভবান হচ্ছে ইটভাটা ও মাটি ব্যবসায়ীরা। ফসলি জমি খননে জড়িত মাটি ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনলে বন্ধ হবে এই কর্মযজ্ঞণ্ড এমনটাই মনে করছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসী জানায় বিভিন্ন প্রলোভনে ফসলি জমি খনন করতে জমির মালিকদের উদ্বুদ্ধ করছেন মাটি ব্যবসায়ীরা। জমির মালিক রাজি হলে ভেকু মেশিন দিয়ে খনন কাজ শুরু করছেন তারা। ফলে অল্পদিনের ভেতরেই জমির রুপ পরিবর্তন হয়ে পরিণত হচ্ছে পুকুরে। বেশিরভাগ সময় খননের মাটি পরিবহন করা হচ্ছে মেঠো সড়কে। ফলে একদিকে মানুষের ব্যবহারের অনুপযোগী হচ্ছে সংশ্লিষ্ট সড়ক, অন্যদিকে মাত্রারিক্ত ধুলা সৃষ্টি হওয়ায় ঘটছে বায়ু দূষণ। অ্যাজমাসহ শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছেন স্থানীয়রা। সম্প্রতি গুনাইগাছায় আঞ্চলিক পাকা সড়কে ইট বহনকারী ট্রলির সঙ্গে সংঘটিত দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন একজন মোটরসাইকেল মালিক। দুর্ঘটনাস্থল থেকে অল্প দূরুত্বেই রয়েছে একটি লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় ইটভাটা রয়েছে ১১টি। এসব ইটভাটা গড়ে ওঠেছে ফসলি জমির মাঠে, পাকা সড়ক আর বসতি এলাকার পাশেই। কিছু ইটভাটার পাশে আছে বাজারও। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী-এসব ইটভাটার একটিরও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের লাইসেন্স নেই। পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র আর পণ্যে মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিএসটিআই’র অনুমদোন আছে মাত্র একটি। বাকিগুলো দিব্যি ব্যবসা করছেন ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নেয়া ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে। বিধান রয়েছে বসতি এলাকা ও পাকা সড়কের ধারের কাছে ইটভাটা করা যাবে না। এ সকল ইটভাটায় অবাধে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। রাতেই কাঠ পোড়ানোর উৎসব চলে। কৃষিবিদরা জানিয়েছেন, ইটভাটার ধোয়া ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। প্রভাব ফেলেছে নানা জাতের দেশীয় ফল উৎপাদনেও।