‘কবি জসীম উদ্দীন ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার দৃঢ় সমর্থক’

‘বাংলা কবিতার আবহমান ধারায় কবি জসীম উদ্দীন’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা গতকাল জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনলাইনে সেমিনার ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক বিশিষ্ট কবি ড. বিমল গুহ।

এছাড়া সম্মানিত আলোচক হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজ বিজ্ঞানী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি বলেন, কবি জসীম উদ্দীন ছিলেন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার একজন দৃঢ় সমর্থক। তার সৃষ্টি নকশী কাঁথার মাঠ ও সোজন বাদিয়ার ঘাট বাংলা ভাষার গীতিময় কবিতার উৎকৃষ্টতম নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম। জীবনের প্রতি ছিল অসীম দরদ ও মমত্ববোধ। তার রচনা তাই আধুনিক যুগেও সবার কাছে গ্রহণীয় হয়েছিল। পল্লীর পরিবেশ ও আবহের যথার্থ রূপদানে তার প্রচেষ্টা অতুলনীয়।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে ড. বিমল গুহ বলেন, বাংলার কবি জসীম উদ্?দীন বাঙালির কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন কবিতায় লোকজ উপকরণ ব্যবহারের জন্যই শুধু নয়, বরং তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন। লোকমানসের ভাব-ভাষা-কল্পনাপ্রবণতা ও মেজাজকে যথার্থভাবে বুঝতে পেরেছিলেন বলে তিনি বাঙালির লোকজীবনকে পরিমার্জিতরূপে আধুনিক সাহিত্যের উপজীব্য করেছিলেন। তার কবিমানসে লোকজীবন ও লোক ঐতিহ্য কোন কিছুর প্রতিক্রিয়ার ফল নয় বরং তা বৃহত্তর বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয়ের ফসল।

আলোচনায় অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, জসীম উদ্?দীন মূলত প্রকৃতির কবি। তিনি তার কবিতায় স্বতন্ত্র ভাবধারা সার্থকভাবে সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। তার কবিতার চরণ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় তিনি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে লিখতেন। আধুনিক সংস্করণ তার কবিতায় পরিলক্ষিত হয়। অনেক গভীরভাবে কবি জসীম উদ্দীনকে পড়তে হবে। তা না হলে কবির অনেক কিছুই আমাদের কাছে অনাবিষ্কৃত হয়ে থাকবে।

মো. বদরুল আরেফীন বলেন, বাংলা কবিতার কিংবদন্তি কবি জসীম উদ্দীন। পল্লীকবি বলেও অভিহিত করি আমরা। তার কবিমানসে লোকজীবন ও লোকঐতিহ্য- বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির প্রত্যক্ষ সম্পর্কের লক্ষ করা যায়। লোকায়ত-জীবন প্রসঙ্গই ছিল তার কবিতার মূল উপাদান এবং লোকজীবন প্রসঙ্গ ছিল কাব্যের মূল স্রোত। লোকজ বিষয় ব্যবহারে জসীম উদ্?দীন যে সফলতা লাভ করেছেন, অন্য কারও তেমনভাবে তা সম্ভব হয়নি।

সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, কবি জসীম উদ্দীনের কাব্যের পটভূমি ও উপজীব্য ছিল পল্লীজীবন। পল্লীপ্রেম, দেশপ্রেম ছিল তার রচনার মূল ভিত। তার কৃতিত্ব- তিনি লোকসাহিত্যের ঐতিহ্যকে যুগের মর্জিমাফিক প্রয়োগ করতে পেরেছিলেন আধুনিক সাহিত্যে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।

রবিবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২১ , ১৭ মাঘ ১৪২৭, ১৭ জমাদিউস সানি ১৪৪২

‘কবি জসীম উদ্দীন ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চেতনার দৃঢ় সমর্থক’

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

‘বাংলা কবিতার আবহমান ধারায় কবি জসীম উদ্দীন’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভা গতকাল জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনলাইনে সেমিনার ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ, এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. বদরুল আরেফীন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক বিশিষ্ট কবি ড. বিমল গুহ।

এছাড়া সম্মানিত আলোচক হিসেবে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজ বিজ্ঞানী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় জাদুঘর বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি বলেন, কবি জসীম উদ্দীন ছিলেন প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার অধিকারী এবং সমাজতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার একজন দৃঢ় সমর্থক। তার সৃষ্টি নকশী কাঁথার মাঠ ও সোজন বাদিয়ার ঘাট বাংলা ভাষার গীতিময় কবিতার উৎকৃষ্টতম নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম। জীবনের প্রতি ছিল অসীম দরদ ও মমত্ববোধ। তার রচনা তাই আধুনিক যুগেও সবার কাছে গ্রহণীয় হয়েছিল। পল্লীর পরিবেশ ও আবহের যথার্থ রূপদানে তার প্রচেষ্টা অতুলনীয়।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে ড. বিমল গুহ বলেন, বাংলার কবি জসীম উদ্?দীন বাঙালির কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন কবিতায় লোকজ উপকরণ ব্যবহারের জন্যই শুধু নয়, বরং তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন। লোকমানসের ভাব-ভাষা-কল্পনাপ্রবণতা ও মেজাজকে যথার্থভাবে বুঝতে পেরেছিলেন বলে তিনি বাঙালির লোকজীবনকে পরিমার্জিতরূপে আধুনিক সাহিত্যের উপজীব্য করেছিলেন। তার কবিমানসে লোকজীবন ও লোক ঐতিহ্য কোন কিছুর প্রতিক্রিয়ার ফল নয় বরং তা বৃহত্তর বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ পরিচয়ের ফসল।

আলোচনায় অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, জসীম উদ্?দীন মূলত প্রকৃতির কবি। তিনি তার কবিতায় স্বতন্ত্র ভাবধারা সার্থকভাবে সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। তার কবিতার চরণ পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় তিনি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে লিখতেন। আধুনিক সংস্করণ তার কবিতায় পরিলক্ষিত হয়। অনেক গভীরভাবে কবি জসীম উদ্দীনকে পড়তে হবে। তা না হলে কবির অনেক কিছুই আমাদের কাছে অনাবিষ্কৃত হয়ে থাকবে।

মো. বদরুল আরেফীন বলেন, বাংলা কবিতার কিংবদন্তি কবি জসীম উদ্দীন। পল্লীকবি বলেও অভিহিত করি আমরা। তার কবিমানসে লোকজীবন ও লোকঐতিহ্য- বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির প্রত্যক্ষ সম্পর্কের লক্ষ করা যায়। লোকায়ত-জীবন প্রসঙ্গই ছিল তার কবিতার মূল উপাদান এবং লোকজীবন প্রসঙ্গ ছিল কাব্যের মূল স্রোত। লোকজ বিষয় ব্যবহারে জসীম উদ্?দীন যে সফলতা লাভ করেছেন, অন্য কারও তেমনভাবে তা সম্ভব হয়নি।

সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, কবি জসীম উদ্দীনের কাব্যের পটভূমি ও উপজীব্য ছিল পল্লীজীবন। পল্লীপ্রেম, দেশপ্রেম ছিল তার রচনার মূল ভিত। তার কৃতিত্ব- তিনি লোকসাহিত্যের ঐতিহ্যকে যুগের মর্জিমাফিক প্রয়োগ করতে পেরেছিলেন আধুনিক সাহিত্যে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।