শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

শিশু-বৃদ্ধসহ নানা বয়সী প্রতিদিন অসুস্থ হচ্ছে ঠাণ্ডায়

তীব্র শৈত্যপ্রবাহে সারাদেশে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হিম শীতে সবচেয়ে দুর্বিষহ অবস্থায় পড়েছেন কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, রংপুরসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ। বিশেষত দিনমজুর, নিম্ন আয়ের ও চরাঞ্চলের মানুষ রয়েছেন চরম বিপাকে। গতকাল দেশে সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কুড়িগ্রামে। শিশু ও বৃদ্ধসহ নানা বয়সের মানুষ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে শিশুসহ ৪ হাজারের ও বেশি মানুষ চিকিৎসা নিয়েছে। গত ৩ মাসে এ সংখ্যা ৩ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। ঠাণ্ডাজনিত রোগে গতকাল পর্যন্ত শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় গতকাল কুড়িগ্রামে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আরও ৩/৪ দিন থাকতে পারে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দেবব্রত বণিক বলেন, ঠাণ্ডায় শিশুদের জ্বর, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগ বেড়েছে। সর্দিজ্বর, ঠাণ্ডা ও কাঁশি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসদের পরামর্শ নিতে হবে। রোগীদের প্যারাসিটামল ও এন্টি হিস্টামিন ছাড়া অন্য কোন ওষুধ প্রাথমিকভাবে খেতে না দেয়া ভালো।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় নিউমোনিয়া, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, ডায়রিয়া, জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ, জ্বর, গলাব্যাথা, কান ব্যাথা, কাশিসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে ৮৫৬ জন, ডায়রিয়ায় ১৪৬৮ জন, জন্ডিস, আমাশয় চোখের প্রদাহে ১৮০৬ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, গত নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে ৫৯ হাজার ৯৬১ জন, ডায়রিয়ায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭৯১ জন, জন্ডিস, আমশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ ও জ্বরে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৪৬১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বা চিকিৎসা নিয়েছেন। এ সময় ৬ জন অসুস্থজনিত কারনে মারা গেছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, করোনা ভাইরাসের লক্ষণ ও আর ঠাণ্ডাজনিত ভাইরাস জ্বর, সর্দ্দি, কাশি, গলাব্যাথা লক্ষণ একই ধরনের হওয়ায় এটা ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কে করোনায় আর কে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত তা নির্ণয় করা কঠিন।

কুড়িগ্রাম জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, কুড়িগ্রামে হিম শীতে কর্মজীবীরা পড়েছে চরম বিপাকে। বিশেষত দিনমজুর, নিম্ন আয়ের ও চরাঞ্চলের মানুষ রয়েছে চরম বিপাকে। জেলা প্রশাসন ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, হঠাৎ করেই কুড়িগ্রামে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কুড়িগ্রামে রেকর্ড করা হয়। যা এ মৌসুমেরও সর্বনি¤œ তাপমাত্রা। এই অবস্থা আরও ৩/৪ দিন থাকতে পারে বলে তিনি জানান।

লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, শিশু ও বৃদ্ধরা এই শীতে ঘর থেকে বেরুতে পাড়ছে না। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। এদিকে লালমনিরহাটে দেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রোববার সকাল ১০টায় লালমনিরহাটে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিসের ওই কর্মকর্তা জানান, গত ২০ বছরের মধ্যে লালমনিরহাটের এটি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তবে এ আবহাওয়া ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখ পর্যন্ত থাকবে।

রংপুর থেকে নিজস্ব বার্তা পরিবেশক জানান, রংপুরে স্মরণকালের প্রচণ্ড হাঁড়কাপানো শৈত্যপ্রবাহ চলছে। রংপুরের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এবারের শীতের মধ্যে প্রথম।

প্রচণ্ড শীতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই শিশু কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। প্রচণ্ড শীতে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দুই শিশু মারা গেছে, যাদের বয়স ৪ থেকে ৬ মাস। তারা কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।

রাজশাহী জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, রাজশাহীতে তাপমাত্রা নেমেছে ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের এখন পর্যন্ত রেকর্ড সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে চলতি শীত মৌসুমে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ বেড়েছে ছিন্নমূল মানুষের। বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন ও পথের ফুটপাতের ওপর খোলা আকাশের নিচে থাকা এসব মানুষের দিন-রাত কাটছে অবর্ণনীয় কষ্টে। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে নিদারুণ দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।

গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চরম দুর্ভোগে পড়েছে বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ। জেলার চরাঞ্চলের অভাবি মানুষের শীত নিবারণে অগ্নিকুণ্ডই একমাত্র ভরসা হয়ে আছে। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী এসব মানুষের অধিকাংশই ভাসমান- যাদের কোন শীতবস্ত্র নেই। পরিণতিতে তারা শীত নিবারণের জন্য চট, ছালা, খড়ের লেপ ব্যবহারসহ সারারাত ধরে অগ্নিকুণ্ড ব্যবহার করছে। একদিকে প্রচণ্ড শীত, অন্যদিকে কনকনে বাতাসে শীতের তীব্রতা বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।

আমাদের বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানান, নওগাঁর বদলগাছীতে গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

সোমবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১৮ মাঘ ১৪২৭, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২

শৈত্যপ্রবাহে বিপর্যস্ত জনজীবন

শিশু-বৃদ্ধসহ নানা বয়সী প্রতিদিন অসুস্থ হচ্ছে ঠাণ্ডায়

বাকী বিল্লাহ

image

শীতে জবুথবু সাধারণ মানুষ -সোহরাব আলম

তীব্র শৈত্যপ্রবাহে সারাদেশে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। হিম শীতে সবচেয়ে দুর্বিষহ অবস্থায় পড়েছেন কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, গাইবান্ধা, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, রংপুরসহ দেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষ। বিশেষত দিনমজুর, নিম্ন আয়ের ও চরাঞ্চলের মানুষ রয়েছেন চরম বিপাকে। গতকাল দেশে সর্বনিম্ন ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কুড়িগ্রামে। শিশু ও বৃদ্ধসহ নানা বয়সের মানুষ ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে শিশুসহ ৪ হাজারের ও বেশি মানুষ চিকিৎসা নিয়েছে। গত ৩ মাসে এ সংখ্যা ৩ লাখ ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে। ঠাণ্ডাজনিত রোগে গতকাল পর্যন্ত শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় গতকাল কুড়িগ্রামে। তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আরও ৩/৪ দিন থাকতে পারে।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. দেবব্রত বণিক বলেন, ঠাণ্ডায় শিশুদের জ্বর, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগ বেড়েছে। সর্দিজ্বর, ঠাণ্ডা ও কাঁশি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসদের পরামর্শ নিতে হবে। রোগীদের প্যারাসিটামল ও এন্টি হিস্টামিন ছাড়া অন্য কোন ওষুধ প্রাথমিকভাবে খেতে না দেয়া ভালো।

মহাখালী স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় নিউমোনিয়া, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, ডায়রিয়া, জন্ডিস, আমাশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ, জ্বর, গলাব্যাথা, কান ব্যাথা, কাশিসহ ঠাণ্ডাজনিত রোগে প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে ৮৫৬ জন, ডায়রিয়ায় ১৪৬৮ জন, জন্ডিস, আমাশয় চোখের প্রদাহে ১৮০৬ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, গত নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে ৫৯ হাজার ৯৬১ জন, ডায়রিয়ায় ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭৯১ জন, জন্ডিস, আমশয়, চোখের প্রদাহ, চর্মরোগ ও জ্বরে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৪৬১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বা চিকিৎসা নিয়েছেন। এ সময় ৬ জন অসুস্থজনিত কারনে মারা গেছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, করোনা ভাইরাসের লক্ষণ ও আর ঠাণ্ডাজনিত ভাইরাস জ্বর, সর্দ্দি, কাশি, গলাব্যাথা লক্ষণ একই ধরনের হওয়ায় এটা ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কে করোনায় আর কে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত তা নির্ণয় করা কঠিন।

কুড়িগ্রাম জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, কুড়িগ্রামে হিম শীতে কর্মজীবীরা পড়েছে চরম বিপাকে। বিশেষত দিনমজুর, নিম্ন আয়ের ও চরাঞ্চলের মানুষ রয়েছে চরম বিপাকে। জেলা প্রশাসন ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, হঠাৎ করেই কুড়িগ্রামে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। গতকাল সকাল ৬টায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কুড়িগ্রামে রেকর্ড করা হয়। যা এ মৌসুমেরও সর্বনি¤œ তাপমাত্রা। এই অবস্থা আরও ৩/৪ দিন থাকতে পারে বলে তিনি জানান।

লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, শিশু ও বৃদ্ধরা এই শীতে ঘর থেকে বেরুতে পাড়ছে না। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। এদিকে লালমনিরহাটে দেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রোববার সকাল ১০টায় লালমনিরহাটে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিসের ওই কর্মকর্তা জানান, গত ২০ বছরের মধ্যে লালমনিরহাটের এটি সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তবে এ আবহাওয়া ফেব্রুয়ারির ৩ তারিখ পর্যন্ত থাকবে।

রংপুর থেকে নিজস্ব বার্তা পরিবেশক জানান, রংপুরে স্মরণকালের প্রচণ্ড হাঁড়কাপানো শৈত্যপ্রবাহ চলছে। রংপুরের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গতকাল রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা এবারের শীতের মধ্যে প্রথম।

প্রচণ্ড শীতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই শিশু কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। প্রচণ্ড শীতে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দুই শিশু মারা গেছে, যাদের বয়স ৪ থেকে ৬ মাস। তারা কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে।

রাজশাহী জেলা বার্তা পরিবেশক জানান, রাজশাহীতে তাপমাত্রা নেমেছে ৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের এখন পর্যন্ত রেকর্ড সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এর আগে চলতি শীত মৌসুমে রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর ৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ বেড়েছে ছিন্নমূল মানুষের। বাস টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন ও পথের ফুটপাতের ওপর খোলা আকাশের নিচে থাকা এসব মানুষের দিন-রাত কাটছে অবর্ণনীয় কষ্টে। প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের অভাবে নিদারুণ দুর্ভোগে পড়েছেন তারা।

গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানান, শীতের প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে চরম দুর্ভোগে পড়েছে বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষ। জেলার চরাঞ্চলের অভাবি মানুষের শীত নিবারণে অগ্নিকুণ্ডই একমাত্র ভরসা হয়ে আছে। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী এসব মানুষের অধিকাংশই ভাসমান- যাদের কোন শীতবস্ত্র নেই। পরিণতিতে তারা শীত নিবারণের জন্য চট, ছালা, খড়ের লেপ ব্যবহারসহ সারারাত ধরে অগ্নিকুণ্ড ব্যবহার করছে। একদিকে প্রচণ্ড শীত, অন্যদিকে কনকনে বাতাসে শীতের তীব্রতা বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে।

আমাদের বদলগাছী (নওগাঁ) প্রতিনিধি জানান, নওগাঁর বদলগাছীতে গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।