ভিডিও করে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় চক্র : গ্রেপ্তার ৬

উত্তরার ব্যবসায়ী আনোয়ারুল ইসলাম গত ২৯ জানুয়ারি বাসায় ফেরার পথে অপহৃত হন। এরপর অপহরণকারী চক্রের নারী সদস্যদের ব্যবহার করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এসব ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা নেয়। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে তার পরিবারের কাছে থেকে সাড়ে ৩ লাখ আদায়ও করে। পরে রাস্তায় ফেলে যায়।

শুধু আনোয়ারুল ইসলামই নয়, এ চক্রটি কয়েকদিনের ব্যবধানে ৪/৫ জনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছে। গত শনিবার ঢাকা মহানগর অপরাধ তথ্য ও গোয়েন্দা বিভাগ রাজধানীর দক্ষিণখান থানার চেয়ারম্যান পাড়া থেকে এ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. সাদেকুল ইসলাম, মো. ইফরান, মোহাম্মদ আলী রিফাত, মো. কুতুব উদ্দিন, মো. মাছুম রানা ও গোলাম রাব্বি। তাদের হেফাজত হতে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলিভর্তি ম্যাগজিন, একটি ছুরি, একটি মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ডিবি। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার এ অপহরণকারীদের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, গত ২৯ জানুয়ারি উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্বপাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন আনোয়ারুল ইসলাম। এ সময় অপহরণ চক্রের ৪-৫ জন সদস্য মাইক্রোবাসে তার কাছ আসে। তারা আনোয়ারুলকে কৌশলে গাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে অপহরণকারীরা তার স্ত্রী ও বড় ভাইয়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। টাকা পাওয়ার পর চক্রটির সদস্যরা তাকে উত্তরার ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি উত্তর বিভাগের একটি দল এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে। এর আগেও এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় ‘চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়ভাবে অপহরণ করে আসছিল। অপহরণের পর টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে চক্রের নারী সদস্যদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলত। ভিডিও ধারণ করে রাখত। এসব ভিডিও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা নিত। অনেকে এমন ঘটনার শিকার হলেও মানসম্মানের ভয়ে বিষয়গুলো নিয়ে পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ করতেন না। এমনও ঘটনা ঘটেছে একজন ব্যক্তি একাধিকবার টাকা দিয়েও চুপচাপ থেকেছে। তাই ‘আমরা ভুক্তভোগীদের উদ্দেশে বলতে চাই, কেউ যদি এই চক্রটির মাধ্যমে অপহৃত হয়ে থাকেন, তবে গোপনে আমাদের কাছে আসেন। আমরা সক্রিয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের পর ভিকটিমরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এখন পর্যন্ত চারজন ভিকটিম আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

চক্রটি রাজধানীর কোন এলাকায় কার্যক্রম চালাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উত্তরা ও ঢাকা দক্ষিণের কিছু এলাকায় তাদের কার্যক্রমের ছাপ আমরা পেয়েছি। যখন সেখানে সুবিধা পায়, সেই জায়াগায় অবস্থান নিয়ে চক্রটি অপহরণ করে। মূলত এরা মাইক্রোবাস নিয়ে ঘুরতে থাকে। একজন গাড়ি চালালেও বাকিরা যাত্রীবেশে গাড়িতে বসে থাকে। কোন ব্যক্তি গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে অথবা গাড়ির জন্য দাঁড়িয়েও পাচ্ছে না এমন ব্যক্তিদের টার্গেট করে কাছে যায়। তখন কোথায় যাবে জানতে চেয়ে বলে আমরাও সেখানে যাব। আপনি ইচ্ছে করলে গাড়ির ভাড়ায় আমাদের সঙ্গে যেতে পারেন। এভাবে কাউকে গাড়িতে তুলতে পারলে তাকে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে যায়। এরপর নারী সদস্যদের সঙ্গে বিবস্ত্র অবস্থায় ছবি তোলে ও ভিডিও করে টাকা দাবি করে। কখনও কখনও গাড়ির মধ্যেই মারধর করে টাকা নিয়ে যায়।

আরও খবর
দক্ষ নেতৃত্বের অভাবে বিরোধীদলগুলো জনগণের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী
২৭ মার্চ হতে পারে হাসিনা-মোদির বৈঠক
তালিকায় ডব্লিউএইচও থুনবার্গ ও নাভালনি
সাম্প্রদায়িক অপশক্তি সরকারি দল ও প্রশাসনের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অবস্থান করছে নির্মূল কমিটি
দেশে করোনায় আরও ১৬ জনের মৃত্যু
মাসব্যাপী অনলাইন একুশে বইমেলা উদ্বোধন
লালদীঘি পার্কে জ্যোৎস্না উৎসব
জাতীয় প্রেসক্লাবে কবিতাপত্রের কবিতা পাঠ
বিদ্রোহী হামলা থেকে চীনা শ্রমিকদের রক্ষা করল বাংলাদেশ শান্তিরক্ষীরা
প্রাথমিকে চালু হচ্ছে ইংরেজি ভার্সন
১৩ মার্চ সীমিত পরিসরে খুলছে ঢাবি হল
সাঈদ খোকনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ২৪ ফেব্রুয়ারি
পাপুলসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন ১০ মার্চ
ফুল বিক্রেতা কিশোরীকে ধর্ষণ ও হত্যা : যুবক আটক
সমন্বয়ের অভাবে চট্টগ্রাম আজ বিপন্ন মেয়র রেজাউল

সোমবার, ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১৮ মাঘ ১৪২৭, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪২

অপহরণ করে নিয়ে

ভিডিও করে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় চক্র : গ্রেপ্তার ৬

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

উত্তরার ব্যবসায়ী আনোয়ারুল ইসলাম গত ২৯ জানুয়ারি বাসায় ফেরার পথে অপহৃত হন। এরপর অপহরণকারী চক্রের নারী সদস্যদের ব্যবহার করে আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে। এসব ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা নেয়। অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে তার পরিবারের কাছে থেকে সাড়ে ৩ লাখ আদায়ও করে। পরে রাস্তায় ফেলে যায়।

শুধু আনোয়ারুল ইসলামই নয়, এ চক্রটি কয়েকদিনের ব্যবধানে ৪/৫ জনকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করেছে। গত শনিবার ঢাকা মহানগর অপরাধ তথ্য ও গোয়েন্দা বিভাগ রাজধানীর দক্ষিণখান থানার চেয়ারম্যান পাড়া থেকে এ চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. সাদেকুল ইসলাম, মো. ইফরান, মোহাম্মদ আলী রিফাত, মো. কুতুব উদ্দিন, মো. মাছুম রানা ও গোলাম রাব্বি। তাদের হেফাজত হতে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলিভর্তি ম্যাগজিন, একটি ছুরি, একটি মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ডিবি। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার এ অপহরণকারীদের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেন।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, গত ২৯ জানুয়ারি উত্তরা হাউজ বিল্ডিং এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পূর্বপাশে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন আনোয়ারুল ইসলাম। এ সময় অপহরণ চক্রের ৪-৫ জন সদস্য মাইক্রোবাসে তার কাছ আসে। তারা আনোয়ারুলকে কৌশলে গাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। পরে অপহরণকারীরা তার স্ত্রী ও বড় ভাইয়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে ৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। টাকা পাওয়ার পর চক্রটির সদস্যরা তাকে উত্তরার ল্যাবএইড হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায়। এ ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ডিবি উত্তর বিভাগের একটি দল এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে। এর আগেও এই চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় ‘চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়ভাবে অপহরণ করে আসছিল। অপহরণের পর টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে চক্রের নারী সদস্যদের সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলত। ভিডিও ধারণ করে রাখত। এসব ভিডিও ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা নিত। অনেকে এমন ঘটনার শিকার হলেও মানসম্মানের ভয়ে বিষয়গুলো নিয়ে পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ করতেন না। এমনও ঘটনা ঘটেছে একজন ব্যক্তি একাধিকবার টাকা দিয়েও চুপচাপ থেকেছে। তাই ‘আমরা ভুক্তভোগীদের উদ্দেশে বলতে চাই, কেউ যদি এই চক্রটির মাধ্যমে অপহৃত হয়ে থাকেন, তবে গোপনে আমাদের কাছে আসেন। আমরা সক্রিয়ভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব। তবে এই চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের পর ভিকটিমরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এখন পর্যন্ত চারজন ভিকটিম আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

চক্রটি রাজধানীর কোন এলাকায় কার্যক্রম চালাচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উত্তরা ও ঢাকা দক্ষিণের কিছু এলাকায় তাদের কার্যক্রমের ছাপ আমরা পেয়েছি। যখন সেখানে সুবিধা পায়, সেই জায়াগায় অবস্থান নিয়ে চক্রটি অপহরণ করে। মূলত এরা মাইক্রোবাস নিয়ে ঘুরতে থাকে। একজন গাড়ি চালালেও বাকিরা যাত্রীবেশে গাড়িতে বসে থাকে। কোন ব্যক্তি গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে অথবা গাড়ির জন্য দাঁড়িয়েও পাচ্ছে না এমন ব্যক্তিদের টার্গেট করে কাছে যায়। তখন কোথায় যাবে জানতে চেয়ে বলে আমরাও সেখানে যাব। আপনি ইচ্ছে করলে গাড়ির ভাড়ায় আমাদের সঙ্গে যেতে পারেন। এভাবে কাউকে গাড়িতে তুলতে পারলে তাকে সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে যায়। এরপর নারী সদস্যদের সঙ্গে বিবস্ত্র অবস্থায় ছবি তোলে ও ভিডিও করে টাকা দাবি করে। কখনও কখনও গাড়ির মধ্যেই মারধর করে টাকা নিয়ে যায়।