বিপাকে পড়েছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে রংপুরে এক নারীর মৃত্যু
শ্রীমঙ্গলে গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৯ সালে ২ জানুয়ারি পঞ্চগড়ে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ছিল ৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৬৪ সালের ৩১ জানুয়ারি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়।
গত দু’দিন ধরে সারাদেশে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। যা আরও দুই-তিনদিন থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর এই তীব্র শৈত্যপ্রবাহের ফলে হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমেনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হঠাৎ করেই আবহাওয়া নিম্নগামী হওয়ায় বিপাকে পড়েছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। নিম্ন আয়ের মানুষরা দুর্ভোগে পড়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান। রংপুরে তীব্র শীতে থেকে রক্ষা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে মারা গেছে এক নারী। আহত অবস্থায় ১০ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছরের গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত রোববার ছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনুভূত হচ্ছে। তাই প্রায় সারা দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। গত রোববার রংপুর বিভাগের রাজারহাটে তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫, যা এ মৌসুমে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজারহাটেই ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে হলেও চুয়াডাঙ্গায় ছিল ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়া রংপুরের রাজারহাট, রাজশাহী, বগুড়া, ঈশ্বরদী ও সৈয়দপুরের তাপামাত্রা ছিল ৬ ডিগ্রিতে। ৭ ডিগ্রিতে ছিল ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, কুমিল্লা, বদলগাছি, তাড়াশ, রংপুর, দিনাজপুর, তেঁতুলিয়া, ডিমলা, যশোর ও বরিশাল। তবে টাঙ্গাইল, নিকলি, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কুমারখালী ও ভোলার তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৯ ডিগ্রির মধ্যে ছিল রাঙামাটি, ফেনী, সাতক্ষীরা, খুলনা, পটুয়াখালী ও খেপুপাড়া। ১০ ডিগ্রির মধ্যে ছিল রাজধানী ঢাকাসহ সন্দ্বীপ, হাতিয়া, চাঁদপুর, সিলেট ও মোংলার মাত্রা।
এদিকে, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় নীলফামারী, চুয়াডাঙ্গা ও মৌলভীবাজার জেলার ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগসহ সীতাকুণ্ড, রাঙামাটি, কুমিল্লা, ফেনী, সন্দ্বীপ, হাতিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের কিছু এলাকা বাদ দিয়ে সারা দেশের ওপর দিয়েই তীব্র ও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ মৌসুমে এটাই সবচেয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। আগামী তিন দিন পর্যন্ত এই শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব কার্যকর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, এরপর কমে আসবে। এই তাপমাত্রা এবারের শীতের সর্বনি¤œ। এর আগে ডিসেম্বর মাসে এর কাছাকাছি তাপমাত্রা ছিল। এ মৌসুমে আর এমন তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা নেই। চলতি মাসের মাঝ নাগাদ উত্তরাঞ্চলের দু-একটি জায়গায় হয়তো বিচ্ছিন্নভাবে শীতের তীব্রতা কিছু বাড়তে পারে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। অন্যদিকে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সর্বনি¤œ তাপমাত্রা বিরাজ করছে শ্রীমঙ্গলে। হিমশীতল তীব্র শৈত্যপ্রবাহে দুর্ভোগে পড়েছেন নি¤œ আয়ের মানুষরা। এর আগে গত ১৭ জানুয়ারিও শ্রীমঙ্গলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীত মৌসুমে শ্রীমঙ্গল উপজেলার চা বাগানগুলোতে শীতের তীব্রতা তুলনামূলক বেশি। কনকনে ঠাণ্ডা আর ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন পুরো জেলা।
জেলা বার্তা পরিবেশক, কুড়িগ্রাম জানিয়েছেন, কুড়িগ্রামে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আরও দুইদিন থাকতে পারে। তীব্র শীতে অনেকে কম্বল পেলেও সামান্য কম্বলে শীত নিবারণ করতে পারছে না। ফলে ভীষণ ঠাণ্ডায় দিন ও রাত কাটছে তাদের। বিকেল হলেই তীব্র ঠাণ্ডা হাওয়ায় বাইরে বের হওয়া কষ্ট হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকেই ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির মতো ঝড়তে থাকে শিশির। সকালটা ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকায় কৃষক ও দিনমজুরদের মাঠে কাজ করতে ভীষণ সমস্যা হচ্ছে। অসুস্থ্য হয়ে পরছেন তারা।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, ‘মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের ফলে হাসপাতালে ডায়েরিয়া ও নিউমেনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে রোগীরা ভালো আছে। হঠাৎ করেই আবহাওয়া নিম্নগামী হওয়ায় বিপাকে পরেছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর আধিক্য।’
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক রংপুর জানিয়েছেন, রংপুর হাড় কাঁপানো শৈত্যপ্রবাহ চলছে। গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে রংপুর আবহাওয়ার অফিস। শীতের সঙ্গে প্রচণ্ড ঘনকুয়াশা আর হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। শীতের কারণে সবরেচয়ে কষ্টে আছে দিনমজুরসহ সহায়-সম্বলহীন মানুষ যাদের শীত নিবারনের মতো পর্যাপ্ত শীত বস্ত্র নেই। তারা কাজের সন্ধানে বেড়াতে পারছেনা। ফলে রোজগার না থাকায় অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতরভাবে দিন কাটছে তাদের।
রংপুর নগরীর ডাঙ্গিরপাড় এলাকায় শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে কাপড়ে আগুনে লেগে যায় মোমেনা খাতুনের। দগ্ধ অবস্থায় রংপুর মেডিডেকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন তিনি। তার শরীরে ৫৫ ভাগ দগ্ধ হওয়ায় শ্বাস নালী পুড়ে যাওয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকালে মারা যান তিনি। গৃহবধূর বাড়ি রংপুর নগরীর ডাঙ্গিরপাড় এলাকায় তার স্বামীর নাম কামাল উদ্দিন। আগুন পোহাতে গিয়ে আরও ১০ জন নারী দগ্ধ হয়ে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধিন হয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কা জনক বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়।
মঙ্গলবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ১৯ মাঘ ১৪২৭, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪২
বিপাকে পড়েছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে রংপুরে এক নারীর মৃত্যু
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
শ্রীমঙ্গলে গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০১৯ সালে ২ জানুয়ারি পঞ্চগড়ে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ছিল ৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ১৯৬৪ সালের ৩১ জানুয়ারি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানায়।
গত দু’দিন ধরে সারাদেশে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। যা আরও দুই-তিনদিন থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আর এই তীব্র শৈত্যপ্রবাহের ফলে হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমেনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। হঠাৎ করেই আবহাওয়া নিম্নগামী হওয়ায় বিপাকে পড়েছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। নিম্ন আয়ের মানুষরা দুর্ভোগে পড়েছেন বলে স্থানীয়রা জানান। রংপুরে তীব্র শীতে থেকে রক্ষা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়ে মারা গেছে এক নারী। আহত অবস্থায় ১০ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, চলতি বছরের গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গত রোববার ছিল ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অনুভূত হচ্ছে। তাই প্রায় সারা দেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। গত রোববার রংপুর বিভাগের রাজারহাটে তাপমাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫, যা এ মৌসুমে সর্বনিম্ন। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজারহাটেই ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা শ্রীমঙ্গলে হলেও চুয়াডাঙ্গায় ছিল ৫ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এছাড়া রংপুরের রাজারহাট, রাজশাহী, বগুড়া, ঈশ্বরদী ও সৈয়দপুরের তাপামাত্রা ছিল ৬ ডিগ্রিতে। ৭ ডিগ্রিতে ছিল ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, কুমিল্লা, বদলগাছি, তাড়াশ, রংপুর, দিনাজপুর, তেঁতুলিয়া, ডিমলা, যশোর ও বরিশাল। তবে টাঙ্গাইল, নিকলি, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, কুমারখালী ও ভোলার তাপমাত্রা ছিল ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৯ ডিগ্রির মধ্যে ছিল রাঙামাটি, ফেনী, সাতক্ষীরা, খুলনা, পটুয়াখালী ও খেপুপাড়া। ১০ ডিগ্রির মধ্যে ছিল রাজধানী ঢাকাসহ সন্দ্বীপ, হাতিয়া, চাঁদপুর, সিলেট ও মোংলার মাত্রা।
এদিকে, তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় নীলফামারী, চুয়াডাঙ্গা ও মৌলভীবাজার জেলার ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগসহ সীতাকুণ্ড, রাঙামাটি, কুমিল্লা, ফেনী, সন্দ্বীপ, হাতিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এটি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ আবদুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের কিছু এলাকা বাদ দিয়ে সারা দেশের ওপর দিয়েই তীব্র ও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এ মৌসুমে এটাই সবচেয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। আগামী তিন দিন পর্যন্ত এই শৈত্যপ্রবাহের প্রভাব কার্যকর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে, এরপর কমে আসবে। এই তাপমাত্রা এবারের শীতের সর্বনি¤œ। এর আগে ডিসেম্বর মাসে এর কাছাকাছি তাপমাত্রা ছিল। এ মৌসুমে আর এমন তীব্র শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা নেই। চলতি মাসের মাঝ নাগাদ উত্তরাঞ্চলের দু-একটি জায়গায় হয়তো বিচ্ছিন্নভাবে শীতের তীব্রতা কিছু বাড়তে পারে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমি লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। অন্যদিকে, মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সর্বনি¤œ তাপমাত্রা বিরাজ করছে শ্রীমঙ্গলে। হিমশীতল তীব্র শৈত্যপ্রবাহে দুর্ভোগে পড়েছেন নি¤œ আয়ের মানুষরা। এর আগে গত ১৭ জানুয়ারিও শ্রীমঙ্গলের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শীত মৌসুমে শ্রীমঙ্গল উপজেলার চা বাগানগুলোতে শীতের তীব্রতা তুলনামূলক বেশি। কনকনে ঠাণ্ডা আর ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন পুরো জেলা।
জেলা বার্তা পরিবেশক, কুড়িগ্রাম জানিয়েছেন, কুড়িগ্রামে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আরও দুইদিন থাকতে পারে। তীব্র শীতে অনেকে কম্বল পেলেও সামান্য কম্বলে শীত নিবারণ করতে পারছে না। ফলে ভীষণ ঠাণ্ডায় দিন ও রাত কাটছে তাদের। বিকেল হলেই তীব্র ঠাণ্ডা হাওয়ায় বাইরে বের হওয়া কষ্ট হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকেই ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির মতো ঝড়তে থাকে শিশির। সকালটা ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকায় কৃষক ও দিনমজুরদের মাঠে কাজ করতে ভীষণ সমস্যা হচ্ছে। অসুস্থ্য হয়ে পরছেন তারা।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, ‘মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের ফলে হাসপাতালে ডায়েরিয়া ও নিউমেনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে রোগীরা ভালো আছে। হঠাৎ করেই আবহাওয়া নিম্নগামী হওয়ায় বিপাকে পরেছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর আধিক্য।’
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক রংপুর জানিয়েছেন, রংপুর হাড় কাঁপানো শৈত্যপ্রবাহ চলছে। গতকাল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে রংপুর আবহাওয়ার অফিস। শীতের সঙ্গে প্রচণ্ড ঘনকুয়াশা আর হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে জনজীবন অচল হয়ে পড়েছে। শীতের কারণে সবরেচয়ে কষ্টে আছে দিনমজুরসহ সহায়-সম্বলহীন মানুষ যাদের শীত নিবারনের মতো পর্যাপ্ত শীত বস্ত্র নেই। তারা কাজের সন্ধানে বেড়াতে পারছেনা। ফলে রোজগার না থাকায় অনাহারে অর্ধাহারে মানবেতরভাবে দিন কাটছে তাদের।
রংপুর নগরীর ডাঙ্গিরপাড় এলাকায় শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে কাপড়ে আগুনে লেগে যায় মোমেনা খাতুনের। দগ্ধ অবস্থায় রংপুর মেডিডেকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি হন তিনি। তার শরীরে ৫৫ ভাগ দগ্ধ হওয়ায় শ্বাস নালী পুড়ে যাওয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকালে মারা যান তিনি। গৃহবধূর বাড়ি রংপুর নগরীর ডাঙ্গিরপাড় এলাকায় তার স্বামীর নাম কামাল উদ্দিন। আগুন পোহাতে গিয়ে আরও ১০ জন নারী দগ্ধ হয়ে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধিন হয়েছেন। এদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কা জনক বলে হাসপাতাল সূত্র জানায়।