উপকূলের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ দূর করুন

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর আট মাস পেরিয়ে গেলেও উপদ্রুত এলাকার পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। এখনও ভেঙে যাওয়া রাস্তা আর বেড়িবাঁধের কাদা পানিতেই স্থানীয়দের বসবাস। বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ হয়নি। নেই সুপেয় পানি আর স্যানিটেশন ব্যবস্থা। নেই আয়ের উৎস।

আম্পানে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করায় সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো সংস্কার না করায় অন্যান্য সমস্যাও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এসব এলাকায় দারিদ্র্যের হার বাড়তে পারে।

বাঁধ মেরামতের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা দরকার। বাঁধ যেন টেকসই হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। মৃতপ্রায় নদী, খাল, বিল পুনঃখনন করে সচল করতে হবে, যাতে বৃষ্টির সময় জলাবদ্ধ পরিস্থিতি না হয়।

উপকূলকে বসবাসের উপযোগী রাখার জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই। এর সমাধান শুধু বাঁধ নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ বা পুনর্বাসনে নেই। দুর্যোগ থেকে সুরক্ষার জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।

পলি ব্যবস্থাপনা না করে বাঁধ নির্মাণ করায় ঝড় এলেই বাঁধগুলো ভাঙছে। পলি ব্যবস্থাপনায় অবাধ জোয়ারভাটা পদ্ধতিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে বাঁধ কেটে দেয়া হয়। এতে নদীর পানি নিচু বিল অঞ্চলে প্রবেশ করে। আর ভাটার টানে সে পানি আবার বেরিয়ে যায়। এতে জলাবদ্ধতা দূর হয়। নদীর নাব্যতাও বাড়ে। সে জন্য বাঁধের পাশাপাশি জোয়ার-ভাটার মতো প্রাকৃতিক উপায়গুলোর প্রয়োগ করতে হবে। এ ধরনের সমাধানকে এ অঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মূল পরিকল্পনায় আনতে হবে।

উপকূলীয় ভূমি ব্যবহার প্রকৃতিবান্ধব হওয়া প্রয়োজন। ধান, মাছ ও গবাদিপশু-এই তিনের মিশ্রণে ভূমির ব্যবহার প্রয়োজন। প্রাকৃতিকভাবে যেখানে চিংড়ি চাষ সম্ভব, শুধু সেখানেই তা করতে দেয়া উচিত। জোর করে লবণ পানি বাঁধের ভেতরের আবাদি জমিতে ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ পরিহার করা দরকার। উপকূলের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ দূর করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে দ্রুত।

শুক্রবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১ , ২২ মাঘ ১৪২৭, ২২ জমাদিউস সানি ১৪৪২

উপকূলের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ দূর করুন

ঘূর্ণিঝড় আম্পানের পর আট মাস পেরিয়ে গেলেও উপদ্রুত এলাকার পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ কমেনি। এখনও ভেঙে যাওয়া রাস্তা আর বেড়িবাঁধের কাদা পানিতেই স্থানীয়দের বসবাস। বাঁধ মেরামতের কাজ শেষ হয়নি। নেই সুপেয় পানি আর স্যানিটেশন ব্যবস্থা। নেই আয়ের উৎস।

আম্পানে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি প্রবেশ করায় সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলো সংস্কার না করায় অন্যান্য সমস্যাও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এসব এলাকায় দারিদ্র্যের হার বাড়তে পারে।

বাঁধ মেরামতের কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা দরকার। বাঁধ যেন টেকসই হয় সেদিকে নজর দিতে হবে। মৃতপ্রায় নদী, খাল, বিল পুনঃখনন করে সচল করতে হবে, যাতে বৃষ্টির সময় জলাবদ্ধ পরিস্থিতি না হয়।

উপকূলকে বসবাসের উপযোগী রাখার জন্য সমন্বিত পরিকল্পনা ছাড়া অন্য কোন বিকল্প নেই। এর সমাধান শুধু বাঁধ নির্মাণ, পুনর্নির্মাণ বা পুনর্বাসনে নেই। দুর্যোগ থেকে সুরক্ষার জন্য প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজতে হবে।

পলি ব্যবস্থাপনা না করে বাঁধ নির্মাণ করায় ঝড় এলেই বাঁধগুলো ভাঙছে। পলি ব্যবস্থাপনায় অবাধ জোয়ারভাটা পদ্ধতিতে অস্থায়ী ভিত্তিতে বাঁধ কেটে দেয়া হয়। এতে নদীর পানি নিচু বিল অঞ্চলে প্রবেশ করে। আর ভাটার টানে সে পানি আবার বেরিয়ে যায়। এতে জলাবদ্ধতা দূর হয়। নদীর নাব্যতাও বাড়ে। সে জন্য বাঁধের পাশাপাশি জোয়ার-ভাটার মতো প্রাকৃতিক উপায়গুলোর প্রয়োগ করতে হবে। এ ধরনের সমাধানকে এ অঞ্চলের অবকাঠামোগত উন্নয়নের মূল পরিকল্পনায় আনতে হবে।

উপকূলীয় ভূমি ব্যবহার প্রকৃতিবান্ধব হওয়া প্রয়োজন। ধান, মাছ ও গবাদিপশু-এই তিনের মিশ্রণে ভূমির ব্যবহার প্রয়োজন। প্রাকৃতিকভাবে যেখানে চিংড়ি চাষ সম্ভব, শুধু সেখানেই তা করতে দেয়া উচিত। জোর করে লবণ পানি বাঁধের ভেতরের আবাদি জমিতে ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষ পরিহার করা দরকার। উপকূলের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ দূর করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে হবে দ্রুত।